শালুক ফুলের লাজ নাই

নিজেদের সব জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে হাসনা বেগম অপেক্ষা করতে লাগলেন ভ্যান আসার।জিনিসপত্র তেমন কিছু না।জামাকাপড়, বইখাতা, নিজের কিছু হাড়ি পাতিল।

শালুক হাত দিয়ে খামচে ধরে রেখেছে আদনানের হাত,পা দিয়ে পেছন থেকে লাথি দিচ্ছে কিন্তু আদনান শালুকের মুখ ছাড়ছে না। ফিসফিস

ধ্রুবর মন বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে।একটু আগে শাপলা কল দিয়েছে শালুকের ফোন থেকে।আদনান যা যা করেছে সব বলেছে শাপলা ধ্রুবকে। তারপর

শালুক নিজের ফাইলপত্র সব শক্ত করে ধরে কোনো দিকে না তাকিয়ে হাটতে লাগলো সামনের দিকে।কিছুটা সামনে এগুতেই আদনান পিছু নিলো

ধ্রুব চলে যাওয়ার পর শালুক টলমল পায়ে মায়ের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। হাসনা বেগমের শীর্ণকায় দেহের দিকে তাকিয়ে শালুক বুঝতে পারলো

ধ্রুবর ভীষণ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। এতো ব্যস্ততার মধ্যে ও শরতকালের স্নিগ্ধতার মতো মন মেজাজ সবসময় তার ফুরফুরে থাকে। দিনের শুরু

আশা বসে আছে নিশ্চিন্ত ভঙ্গিতে। আদনানের পেটের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে।পেটে মোচড় দিয়ে উঠলো আশার কথা শুনে। আদনান কল্পনাও

আকাশ আজ অত্যধিক নীল লাগছে।বর্ষাকালের আকাশ হয় মেঘে ঢাকা, মুখ গোমড়া করে থাকে। কিন্তু আজকের আকাশ ভীষণ সুন্দর। মন ভালো

সময় তার নিজের আপন গতিতে কেটে যায়।তেমনি কাটছে ধ্রুব আর শালুকের সময়। শালুক আজ এক সপ্তাহ ধরে বই নিয়ে বসছে।

আজান হতেই ধ্রুবর চোখ খুলে গেলো আপনাতেই।ঘন্টাখানেক ঘুমিয়েছে সে।বাহিরে এখনো অন্ধকার।পাখিদের ডাক শোনা যাচ্ছে।শালুক ধ্রুবকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।