শালুক ফুলের লাজ নাই

শালুক ফুলের লাজ নাই !! Part- 26

নিজেদের সব জিনিসপত্র গুছিয়ে নিয়ে হাসনা বেগম অপেক্ষা করতে লাগলেন ভ্যান আসার।জিনিসপত্র তেমন কিছু না।জামাকাপড়, বইখাতা, নিজের কিছু হাড়ি পাতিল।
আদিবা বেগম শক্ত হয়ে বসে আছেন চেয়ারে। হাসনা বেগমের বাড়ি থেকে চলে যাবার সিদ্ধান্ত জানার পর থেকে তার মন ভীষণ উতলা হয়ে আছে।
একবার ছেলের ঘরে গিয়ে অত্যন্ত বিশ্রীভাবে কিছু কথা ও বলে এসেছেন তিনি।কিন্তু শেষ পর্যন্ত হিসেব করে দেখলেন মেয়ে দুটো কে ভালো রাখতে হলে এর চাইতে উত্তম সিদ্ধান্ত আর কিছু নেই।
আদনানকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিতে চাইলেই কি আদনান যাবে?
তার যদি লজ্জা থাকতো তবে সে প্রথম দিনে এরকম ঘটনা ঘটানোর পরেই লজ্জায়,অপমানে চলে যেতো বাড়ি থেকে। কিন্তু সে যায় নি কোথাও, গাঁট হয়ে বসে ছিলো।
আর যদি যায় ও এখন বাড়ি ছেড়ে, তবুও কতোদিন? ২ মাস,৩ মাস,৪মাস,১ বছর…..
সেই তো বাড়িতে সে আসবেই।তখনও যদি ওর স্বভাব ভালো না হয়?
একই বাড়িতে থাকলে ও যদি আবারও এরকম প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে কারো কোনো ক্ষতি করে?
শাপলা, শালুককে তিনি নিজের মেয়ের মতো দেখেছেন।আফিফা আর ওদের মধ্যে কখনো বিভেদ করেন নি।
তেমনই ব্যবহার করেছে হাসনা তার ছেলে মেয়েদের সাথে। তিন জা বোনের মতো ছিলেন।কেউ কখনো কারো বাচ্চাকে বাঁকা চোখে দেখে নি।
সেখানে শাপলা শালুকের কোনো ক্ষতি হলে তার কলিজায় গিয়ে লাগবে এটাই স্বাভাবিক। আর এটা স্বাভাবিক বলেই তেমনি হাসনা বেগম আদনানকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য কাউকে বলছেন না।
মায়ার বন্ধনের মতো কঠিন কোনো শিকল কি এই দুনিয়ায় আছে আর?
বাজারে একটা চার রুমের বাসা ঠিক করে ফয়েজ সাহেব ভ্যান নিয়ে এলেন বাড়িতে।ভ্যান চালককে সাথে নিয়ে নিজে সবকিছু ভ্যানে তুললেন।
বিদায় বেলায় হাসনা বেগম শাশুড়ী মা’কে জড়িয়ে ধরে বিলাপ শুরু করে দিলেন।কাঁদতে কাঁদতে অচেতন হয়ে গেলেন প্রায়।তারপর হুঁশ ফিরতেই স্বামীকে চিৎকার করে বললেন, “আমি যাবো না। আমি এই সংসার ছেড়ে, আব্বা,আম্মা,ভাবীদের ছেড়ে কোথাও যাবো না। এই বাড়ির প্রতিটি দেয়ালে, প্রতিটি ইটের কণার মধ্যে আমি ভালোবাসার ছবি দেখেছি। আমি এই বাড়ি থেকে কোথাও যাবো না। ”
নুরুল ইসলাম সাহেব পুত্রবধূর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,”পাগলামি করো না বউ মা।আমাদের সবার জন্য ভালো হবে এটা।আমার নাতনিরা নিরাপদে থাকবে।”
হাসনা বেগম বললেন, “আমি পারবো না আব্বা।আমি মরেই যাবো। একা একা আমি থাকতে পারবো না। রোজ সকালে সবার জন্য নাশতা বানানো, মায়ের সুপারি কেটে দেওয়া, সবাইকে বেড়ে খাওয়ানো, অলস বিকেলে সবাই মিলে গল্প করা।কাজ করা নিয়ে ফরিদার সাথে অভিমান করা,বড় ভাবী রান্নাঘরে দেরিতে আসলে মুখ ফুলিয়ে রাখা,মায়ের জন্য অল্প ঝালে অল্প মশলায় আমি ছাড়া কে রান্না করবে আব্বা?
বড় ভাবীর মাথা ব্যথা শুরু হলে আমি না থাকলে কে তার মাথা মালিশ করে দিবে?
এই যে ফরিদা এতো বড় হয়েছে, এখনো পায়ের নখ সুন্দর করে কাটতে পারে না, আমি না থাকলে কে ওর পায়ের নখ কেটে দিবে সুন্দর করে?
রাত বিরাতে ছেলে মেয়েরা পড়তে বসলে যখন বলবে ছোট চাচীর হাতের নুডলস খাবো,পাস্তা খাবো তখন কে বানিয়ে দিবে ওদের?
বড় ভাবী চুলার পাশে বেশিক্ষণ থাকতে পারেন না,গরমে তার মাথা ব্যথা করে। ফরিদা এখনো রান্নার লবন চাখতে জানে না,মতির মা তরকারি কাটতে গেলে বছর লাগিয়ে দেয়,আমি না থাকলে তো বড় ভাবীকে সারাক্ষণ চুলার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে,ফরিদা লবণ কম বেশি বুঝবে না।
আমি কিভাবে যাবো আব্বা?আমার যে কতো দায়িত্ব আছে এই বাড়ির সবার প্রতি।
স্বার্থপর মানুষের মতো কিভাবে নিজের সুখ,নিজের ভালো থাকার কথা চিন্তা করে সবাইকে ছেড়ে যাবো আব্বা?
আমার তো আব্বা আম্মা মারা গেছেন, আপনারাই আমার আব্বা আম্মা,আমি যে মন ভরে আব্বা আম্মা বলে ডাকতে পারবো না।নিজের মা’কে মনে পড়লে আম্মার পায়ের পাশে গিয়ে বসে থাকতে পারবো না। আমি এতো কিছুর অভাব সহ্য করতে পারবো না আব্বা।”
কেউ কোনো কথা বলতে পারলো না। সবার কপোল বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে।
ফয়েজ আহমেদ স্ত্রীকে কোনোভাবে বুঝাতে পারলেন না।সকালে হাসনা যেসব যুক্তি দেখিয়েছে সব যুক্তি তিনি হাসনাকে দেখালেন,হাসনা তাকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছে। অবশেষে ভ্যান চালককে বিদায় করে দেওয়া হয়েছে।
আদিবা বেগম হাসনা বেগমকে শক্ত করে বুকে জড়িয়ে ধরে আছেন।যেনো ছেড়ে দিলেই হাসনা বেগম হারিয়ে যাবে।
যৌথ পরিবারে থাকা মানুষগুলো জানে শূন্যতা কেমন পীড়াদায়ক। একই সাথে একই ছাদের নিচে যে মানুষের সাথে বছরের পর বছর কাটানো হয়,সেই মানুষটা যখন আলাদা হয়ে যেতে চায় তখন বুকটা ফেটে যায় যন্ত্রণায়।
এক শূন্যতা এসে গ্রাস করে। বুকের ভেতরটা পাথরের মতো ভারী মনে হয়।
শালুকের পরীক্ষা শেষ হবার পর দেখলো মেজো চাচা দাঁড়িয়ে আছে। এই মানুষটা এখন তার শ্বশুর। ভাবতেই শালুকের কেমন লজ্জা লাগছে।
মেজো চাচা শালুকের জন্য আইসক্রিম কিনলেন,চিপস কিনলেন,একটা সেভেন আপ কিনলেন হাফ লিটারের।শালুকের কেমন কান্না চলে এলো। তার পিএসসি, জেএসসি পরীক্ষার সময় একদিন বড় চাচা,একদিন মেজো চাচা,একদিন নিজের বাবা যেতেন তার সাথে। প্রতিদিন হল থেকে বের হলে দেখতো সবাই এটা ওটা হাবিজাবি খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তার জন্য।
আজ আবারও শালুকের মনে হলো সে ভীষণ ছোট এখনও। মেজো চাচা শালুককে আগে আইসক্রিম খেতে দিলেন।তারপর দুজনে মিলে গল্প করতে করতে বাড়িতে ফিরলো।চাচার থেকেই শালুক জানতে পারলো তারা বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে না কোথাও।শুনে শালুকের স্বস্তি হলো। শালুক জানে এমনিতে ও সে বাড়িতে বেশিদিন থাকতে পারবে না।বছরে এক আধবার আসবে হয়তো। ধ্রুব আগেই বলে রেখেছে ইন্টারে ঢাকায় ভর্তি করাবে শালুককে।তখন কালেভদ্রে বাড়িতে আসতে পারবে হয়তো।
তার জন্য এভাবে বাড়ি থেকে বাবা মা আলাদা হয়ে যাবে এটা শালুক কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলো না।
এখন চাচার কথা শুনে সে ভারমুক্ত হলো যেনো।
আদনানের বাবা নুরুল ইসলাম সাহেবকে নিয়ে আদনানের রুমে গেলো। তারপর সোজাসাপ্টা জিজ্ঞেস করলো, “তুই কেনো গতরাতে এরকম কাজ করেছিস তার স্পষ্ট কারণ বল এই মুহুর্তে। তা যদি না বলিস তবে আমি নিজ হাতে তোকে পুলিশের হাতে তুলে দিবো নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে।আমি ভুলে যাবো তুই আমার ছেলে।”
আদিবা বেগম নিজেই স্বামীকে বলেছেন ছেলেকে এই কথা বলতে, হয় সে তার উউদ্দেশ্য পরিষ্কার করে বলবে আর নয়তো তিনি ছেলেকে জেলে পাঠিয়ে দিবেন।
নিজের ছেলে বলে বারবার তার অপরাধ ক্ষমা করে দিলে আল্লাহর কাছে তিনি সবচেয়ে বড় অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন।
শালুকের জায়গায় যদি আফিফা থাকতো তখন কি তিনি চুপ করে সহ্য করতে পারতেন?হাসনার জায়গায় তিনি থাকলে কিছুতেই কি মুখ বুঁজে সহ্য করতে পারতেন?
পারতেন না কিছুতে।
বাবা আর দাদার কথাকে আদনান তেমন গুরুত্ব দিলো না। আদিবা বেগম নিজে থানায় গেলেন শালুককে নিয়ে। সন্ধ্যা বেলায় পুলিশ এলো একটা জীপে করে। ১০ মিনিটের মধ্যে আদনানকে ধরে নিয়ে গেলো। শালুকের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় আদনান কেমন ভরসাহীন চোখে শালুকের দিকে তাকালো। সেই চোখে হয়তো মিশে ছিলো হতাশা,না পাওয়া,ক্ষোভ,প্রতিহিংসা।
আদনানকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে এতে যেনো কারো কোনো সমস্যা নেই। সবাই কেমন রিল্যাক্স মুডে আছে।বিশেষ করে বড় চাচী যেনো একেবারে নির্ভার আজ।
অন্য দিনের চাইতে আজকে তাকে বেশ প্রফুল্ল লাগছে।
সবাই মিলে চা খেলো,ঝালমুড়ি খেলো।এরপর রাতের রান্না বসাতে গেলো তিন জা মিলে।
শালুক পড়তে বসলো। একটু আগে ধ্রুবর সাথে কথা বলেছে।ধ্রুবকে সব জানিয়েছে শালুক,ধ্রুব সব শুনে বললো, “অন্তত তোমার পরীক্ষা শেষ হওয়া পর্যন্ত যাতে থানায় আটকে রাখে।তাহলেই আমি নিশ্চিন্ত। ”
নিশাকে পড়াতে যাওয়ার সময় ধ্রুব কিছুক্ষণ ভেবে চিন্তে নিলো।আজ যদি নিশা আগের দিনের মতো করে তবে ধ্রুব আজকেই টিউশনি ছেড়ে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো। টাকার মায়া করে নিজেদের সম্পর্কের মধ্যে ধ্রুব তৃতীয় ব্যক্তির আগমন কিছুতেই সহ্য করবে না।না হয় খুব অভাবে দিন কাটাবে স্বামী স্ত্রী দুজনে তবুও যেই কারণে নিজেদের সম্পর্কে ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হতে পারে সেই রিস্ক ধ্রুব নিবে না।
নিশা আজও আগেই এসে বসে আছে। ধ্রুব গিয়ে চেয়ারে বসলো। তারপর হিসাববিজ্ঞান বই বের করে নিশাকে গম্ভীরমুখে বললো, “এই অংকটা করো।গতকাল একটা করিয়েছি এটার মতোই।”
নিশা ড্রয়ার থেকে একটা বক্স বের করলো।তারপর ধ্রুবর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো, “এটা আপনার জন্য। ”
ধ্রুব রাগী স্বরে জিজ্ঞেস করলো, “কি এটা?”
নিশা মাথানিচু করে বললো, “একটা ফোন।আমার বাবা পাঠিয়েছেন আপনার জন্য। ”
ধ্রুব নিশার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো, “তোমার বাবা কি আমাকে দেখেছেন কখনো? আমাকে চেনেন তিনি?”
নিশা ভয় পেয়ে গেলো। তারপর বললো, “চেনেন তো,আম্মু তো বলেছেন আপনার কথা বাবাকে।”
ধ্রুব জিজ্ঞেস করলো, “আমার জন্য ফোন উনি কেনো পাঠাবেন?”
নিশা বললো, “আপনার ফোনটা তো বাটন ফোন, তাই পাঠিয়েছেন। ”
ধ্রুব জিজ্ঞেস করলো, “আমার বাটন ফোন সেটা তোমার বাবা কিভাবে জানেন?”
নিশা ঘামতে লাগলো। ধ্রুব তাকে এতো প্রশ্ন করবে সে বুঝে নি।এটা মূলত তার জন্য পাঠিয়েছে, সে ধ্রুবর হাতে বাটন ফোন দেখে ঠিক করে রেখেছে এই ফোনটা ধ্রুবকে গিফট করবে।সে দিচ্ছে বললে নিশ্চয় ধ্রুব নিবে না নিশা জানে।তাই বাবার কথা বললো।
ধ্রুবর প্রশ্ন শুনে নিশা বললো, “আম্মু বলেছে বাবাকে।”
ধ্রুব সাথে সাথে নিশার মা’কে ডাকতে লাগলেন। নিশার মা আফসানা বেগম উদ্বিগ্ন মুখে জিজ্ঞেস করলেন,'”কি হয়েছে স্যার?”
ধ্রুব হেসে জিজ্ঞেস করলো, “এটা নিশার ফোন না আন্টি? ”
আফসানা বেগম বললেন, “হ্যাঁ স্যার,গত পরশু পাঠিয়েছে ওর বাবা ওর জন্য।ও গতমাসে ওর বাবাকে বলেছিলো ওর জন্য একটা ফোন দিতে।”
নিশা ভয়ে চমকে উঠলো। তড়িঘড়ি করে বললো, “কি বলছো আম্মু,এটা তো তুমি বলেছিলে বাবাকে স্যারের জন্য একটা ফোন পাঠাতে, স্যারের হাতে একটা বাটন ফোন দেখে। ”
আফসানা বেগম হতভম্ব হয়ে গেলেন।বুঝতে পারলেন মেয়ে কোনো গড়বড় করেছে তাই আমতা আমতা করে বললেন,”না মানে,হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম আসলে।আপনি নিন না ফোনটা।”
ধ্রুব হেসে ফেললো। নিশার মা যে মিথ্যা বলছে তা সে স্পষ্ট বুঝতে পারলো। হেসে বললো, “দেখুন আন্টি,আমি এখানে নিশাকে ফ্রী পড়াচ্ছি না।পড়ানোর বিনিময়ে বেতন নিচ্ছি।আমার যা আছে তাতেই আমি সন্তুষ্ট। আমার বাটন ফোনেই চলে,এন্ড্রয়েড ফোনের যেদিন প্রয়োজন মনে হবে সেদিন আমি নিজেই কিনে নিবো।কারো অনুগ্রহ আমার কখনোই সহ্য হয় না।আমার যা আছে তাই আমার জন্য যথেষ্ট।
আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত আন্টি।এই ফোনটা আমি নিতে পারছি না।আর আরেকটা কথা, আমি আগামীকাল থেকে আর আসবো না নিশাকে পড়াতে।আপনি প্লিজ অন্য টিচার দেখবেন ওর জন্য। আমি এখন আসছি।আসসালামু আলাইকুম। ”
নিশা,নিশার মা কিছু বুঝে উঠার আগেই ধ্রুব বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
রাস্তায় এসে ধ্রুব স্বস্তির নিশ্বাস ফেললো। তারপর হঠাৎ করেই শালুককে কল দিলো।
শালুক হ্যালো বলতেই ধ্রুব বললো,”আমি তোমাকে ভালোবাসি শালুক,আমি তোমাকে ভীষণ ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি।আজীবন আমি তোমাকে ভালোবাসবো শালুক।তুমি সারাজীবন আমার হয়ে থেকো।আমি প্রমাণ করে দিবো এক নারীতে আবদ্ধ থাকে যে পুরুষ সেই পুরুষের চাইতে সুখী আর কেউ নেই।
আমি তোমাকে ভীষণরকম ভালোবাসি। ”
তারপর শালুককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কল কেটে দিলো।
আনন্দে শালুকের দুচোখ টলমল করতে লাগলো। মনে হলো এই পৃথিবীতে সে সবচেয়ে সুখী মেয়ে,যার এরকম একটা স্বামী আছে যে তাকে ভীষণ ভালোবাসে।
চলবে…..
রাজিয়া রহমা