শালুক ফুলের লাজ নাই

শালুক ফুলের লাজ নাই !! Part- 21

ধ্রুবর ভীষণ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। এতো ব্যস্ততার মধ্যে ও শরতকালের স্নিগ্ধতার মতো মন মেজাজ সবসময় তার ফুরফুরে থাকে। দিনের শুরু হয় প্রিয় মানুষের মুখ দেখে আবার দিনের শেষ ও হয় প্রিয় মানুষের মুখ দেখে। ভোর রাতে উঠে আবার নিজের পড়াশোনা করে কিছুক্ষণ। প্রচুর ধকল যায় ধ্রুবর উপর দিয়ে।
শালুকের সাথে তার সম্পর্ক এখন অনেকটা প্রেমিক প্রেমিকার সম্পর্কের মতো। শালুক আজকাল ধ্রুবকে ভীষণ মিস করে। প্রতিদিন ধ্রুব বের হওয়ার সময় হাজার বার বলে যেতে হয় যে খুব শীঘ্রই সে ফিরে আসবে।
সারাক্ষণ একে অন্যকে টেক্সট করে। শালুক নিজেকে দেখে নিজে অবাক হয় ধ্রুব তার সাথে এরকম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যাবে,সে ধ্রুবর জন্য এতো বেশি উতলা হবে তা কি কখনো শালুকের ভাবনাতে ছিলো!
অথচ আজকাল এই মানুষটা বাসায় ফিরতে একদন্ড দেরি হলে শালুকের কেমন হাঁসফাঁস লাগে।মনে হয় অক্সিজেনের যেনো ভীষণ অভাব।
সকালে বের হবার সময় ধ্রুব প্রতিদিন টুপ করে একটা আলতো করে চুমু খেয়ে যায় শালুককে।তারপর আর পিছনে না তাকিয়ে হনহন করে বের হয়ে যায় সিঁড়ি দিয়ে।
নিচে গিয়ে একবার তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে বিদায় দেয়।
সারাদিন শালুকের কেমন উৎকন্ঠা নিয়ে কাটে।মাঝেমাঝে ভীষণ মন খারাপ হয় শালুকের। বাড়ির জন্য কান্না পায়,সবার কথা ভীষণ মনে পড়ে।
আজকে শুক্রবার। আগামীকাল থেকে শালুকের স্কুলে টেস্ট এক্সাম শুরু হবে।
ধ্রুব আজকে বাসায় আছে।সকালে দুজন মিলে নাশতা বানিয়ে নিলো।ধ্রুবর থেকে শালুক টুকটাক কাজ করা শিখেছে।শালুকের ভীষণ খারাপ লাগে সব কাজ ধ্রুব একা করে বলে।তাই শালুকের জোরাজুরিতে ধ্রুব টুকটাক হেল্প নেয় শালুকের।
ধ্রুব রুটি বানিয়ে দিলো,শালুক তাওয়ায় করে রুটি সেঁকে নিলো।এরপর শালুক পেঁয়াজ মরিচ কেটে দিলো ধ্রুব ডিম ভেজে নিলো।চা ধ্রুব নিজে বানায়।শালুক একদিন চা বানাতে গিয়ে প্রায় এক কাপের মতো চা পাতা ব্যবহার করেছে।
সবসময় যেখানে রান্নাঘরের চৌহদ্দির মধ্যে যায় নি একটা মেয়ে,তার জন্য রান্নাবান্নার কাজ ভীষণ কঠিন।
এরপর ধ্রুব দেখিয়ে দিয়েছে শালুককে।কিন্তু লজ্জায় শালুক আর চেষ্টা করে নি।
নাশতা করতে গিয়ে শালুকের আজ আবারও বাড়ির কথা মনে পড়ে গেলো। কতোদিন হয়ে গেছে মা বাবাকে দেখে না।
শালুকের নিরব কান্না ধ্রুব খেয়াল করলো। কিন্তু কিছু বললো না।
খাওয়ার পর ধ্রুব বের হলো কিছু কেনাকাটা করার জন্য। নামাজ পড়ে বাহিরে থেকে খাবার নিয়ে ফিরবে বাসায় দুপুরে।শালুককে পড়তে বলে গেলো। আজকে বিকেলের ট্রেনে দুজন গ্রামে যাবে।
শালুক বই নিয়ে বসলো। মোটামুটি প্রস্তুতি ভালো শালুকের এবার।কারো হেল্প না পেলেও অন্তত ৩.৫০ এর উপরে পাবে এবার এসএসসিতে শালুক সেই ভরসা আছে নিজের উপর।
শালুক বাংলা নৈর্ব্যক্তিক পড়ছে।শালুকের ভীষণ ইচ্ছে করছে আগামীকাল গ্রামে গেলে বাড়িতে যেতে।কিন্তু ধ্রুবকে বলতে পারছে না।
শালুক জানে ধ্রুব কিছুতেই বাড়িতে যাবে না,শালুককেও বাড়িতে যেতে দিবে না।
এতো কাছাকাছি গিয়েও আপন কাউকে দেখবে না মনে পড়লেই শালুকের নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসে যেনো।
পাশের ফ্ল্যাটে খুব চিৎকার, চেঁচামেচি শুরু হয়ে গেছে ইতোমধ্যে। শালুক খেয়াল করেছে প্রায় দিনেই ওই ফ্ল্যাটে ভীষণ ঝগড়া হয়।এরপর মারের শব্দ শোনা যায়,শোনা যায় নারী কণ্ঠের চিৎকার, বাচ্চার কান্না,পুরুষের রাগী কন্ঠস্বর।
শুধু শুক্রবার হতো না এরকম।কিন্তু আজকে তাও হচ্ছে। বাচ্চার কান্না আজকে খুব জোরে শোনা যাচ্ছে। শালুকের কেমন জানি কষ্ট হতে থাকলো।নিধির কথা মনে পড়ে গেলো। এই বাচ্চাটা হয়তো নিধির বয়সী।
আহারে,নিধি থাকে সবার কোলে কোলে,চোখের তারায়।আর এই বাচ্চাটাকে আদর করার জন্য মনে হয় কেউ-ই নেই।
হঠাৎ করেই কাঁচের কোনো কিছু পড়ে ভেঙ্গে যাবার শব্দ হলো। তার একমুহূর্ত পর বাচ্চাটার কান্না আরো জোরে শোনা গেলো। শালুক আর বসে থাকতে পারলো না। ঠিক করলো আজকে ধ্রুব আসলে বলবে ব্যাপারটা তাকে।ধ্রুবকে এখনো জানায় নি শালুক প্রতিবেশী ফ্ল্যাটে কি হয় এসব।
ছোট বাচ্চাটার কান্না কেউ থামাচ্ছে না।শালুক আর না পেরে বের হলো ফ্ল্যাট থেকে। কিছুটা ভয় ভয় লাগছে শালুকের।
এই প্রথম শালুক একা বাসা থেকে বের হয়েছে। যার সাথে কখনো কথা হয় নি তার কাছে যাচ্ছে।
দরজায় নক হতে ভেতরে মারার শব্দ,নারী কন্ঠের গোঙানির শব্দ থেমে গেলো। বাচ্চার কান্না থামলো না।ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে একজন বছর ৩৪-৩৫ এর লোক এসে দরজা খুলে দিলো। শালুককে দেখে কিছুটা চমকালো লোকটা।
তারপর বাজখাঁই গলায় জিজ্ঞেস করলো, “কি চাই?কে আপনি? ”
শালুক ঢোক গিলে বললো, “আমি আপনাদের পাশের ফ্ল্যাটে থাকি।”
লোকটা আবারও জিজ্ঞেস করলো , “এখানে কি তাহলে? যান আপনার বাসায়।”
শালুক এবার অবাক হলো। লোকটা এভাবে কথা বলছে কেনো তার সাথে?
কাঁপা কাঁপা গলায় শালুক বললো, “একটা বাচ্চার কান্না শুনলাম,এখনো তো কাঁদছে বাচ্চাটা।তাই এসেছি। ”
লোকটা ভীষণ রুক্ষভাবে বললো, “দূর বেডি,যান এখান থেকে।আমার মাইয়া কানতাছে আমি বুঝমু।আপনার এতো সমস্যা ক্যান?বেশি পন্ডিতি দেখাইতে আসবেন না বলে দিলাম।মায়ের চাইতে মাসির দরদ বেশি যেনো।”
শালুকের ভীষণ রাগ হলো। এতোক্ষণে হওয়া ভয়টা কেটে গেলো।শালুক শুনতে পেলো ভেতরে মহিলাটা মেয়েকে মানানোর চেষ্টা করছে।
ধমকে উঠে শালুক বললো, “ভদ্রভাবে কথা বলুন,নিজের আচরণ সংযত রাখুন।আপনি প্রতিদিনই বাসায় মারধোর করেন সবটাই শুনতে পাই আমি।বাসায় একটা ছোট বাচ্চা রেখে আপনার লজ্জা লাগে না এরকম করতে?”
তেড়ে এসে লোকটা বললো, “তোর বাপের কি তাতে?আমার বাসায় আমি যা খুশি তা করমু।”
শালুক হেসে বললো,”আপনার যেমন যা খুশি তা করার অধিকার আছে,আমার ও পুলিশে কমপ্লেইন করার অধিকার আছে। আবারও যদি এরকম শুনি আমি সোজা পুলিশে খবর দিবো।১৪ শিকের ভাত খাবেন যখন বুঝবেন যে নারী নির্যাতনের আসল মজা।”
লোকটা হা করে রইলো শালুকের কথা শুনে।শালুক আর দাঁড়ালো না। নিজেদের বাসায় চলে গেলো। বাসায় যাওয়ার পর শালুক টের পেলো তার সারা শরীর কাঁপছে থরথর করে। জীবনে এই প্রথম সে এরকম করে কারো সাথে বলেছে।
গোসল করে নামাজ পড়ে নিলো শালুক। ধ্রুব এলো কিছুক্ষণ পর। খাবার নিয়ে এলো ধ্রুব।শালুকের মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, “কি হয়েছে তোর? ”
শালুক চুপ করে রইলো। শালুকের বিমর্ষ চেহারা ধ্রুবকে ভীষণ পীড়া দিতে লাগলো। চিবুক তুলে ধরে জিজ্ঞেস করলো, “আমাকে বলবি না,কি হয়েছে বল?”
শালুক মাথা নিচু করে বললো, “পাশের ফ্ল্যাটে যারা থাকে,ওই লোকটা তার স্ত্রীকে ভীষণ মারধোর করে। ওদের বাসায় ছোট একটা বাচ্চা ও আছে মনে হয় জানেন।আজকে বাচ্চাটার ভীষণ কান্নার শব্দ পেয়ে আমি গিয়েছিলাম আপনার কথা অমান্য করে। লোকটা ভীষণ চামারের মতো ব্যবহার করেছিলো আমার সাথে। আমি ও তাকে পুলিশে দেয়ার ভয় দেখিয়ে এসেছি, বলেছি আবারও এরকম মারধোরের শব্দ পেলে পুলিশে কল দিবো।”
ধ্রুব বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে রইলো শালুকের দিকে।তারপর বললো, “আমার বোকাফুল তো অনেক বড় হয়ে গেছে দেখছি।তবে তোর একা ওখানে যাওয়া উচিত হয় নি শালুক।উচিত ছিলো বাড়িওয়ালা কে ডেকে নিয়ে যাওয়া।লোকটা যদি তোকে একা পেয়ে আরো খারাপ ব্যবহার করতো?”
শালুক কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললো, “কোনো একদিন যদি আপনি ও ওই লোকের মতো ব্যবহার করেন আমার সাথে?আমি তাহলে মরেই যাবো হয়তো। চেনা মানুষের অচেনা রুপ বড়ই কষ্ট দেয়।”
ধ্রুব শালুককে কাছে টেনে নিয়ে জড়িয়ে ধরে শালুকের মাথা নিজের বুকের উপর এনে রাখলো।তারপর বললো, “গাছের বুকে ফুল যেমন নিরাপদে থাকে শালুক,আমার বুকে তুই ও তেমনি নিরাপদে থাকবি শালুক।তোকে বউ করেছি নিজের রাজ্যের রানী করে রাখার জন্য। তোকে যদি কষ্ট দিই তবে সেটা হবে আমার নিজেকে কষ্ট দেওয়া,নিজের সত্ত্বাকে কষ্ট দেওয়া। নিজেকে নিজে কষ্ট দিয়ে আমি কিভাবে বাঁচবো বল?”
শালুক জবাব দিতে পারলো না। খাবার পর ধ্রুব শালুকের ব্যাগ গুছিয়ে নিলো। তারপর বাসার সব ময়লা বাহিরে ঝুড়িতে রেখে চুলা,লাইট,ফ্যান,টয়লেটের ট্যাপ সবকিছু ভালো করে দেখে দুজন বের হলো।
ট্রেনের টিকিট কাটা আছে ধ্রুবর। শালুককে নিয়ে বের হলো কমলাপুর রেলস্টেশনের উদ্দেশ্যে।
দুই ঘন্টা পর জ্যাম পেরিয়ে দুজনে কমলাপুর পৌঁছায়। ট্রেন এলো বিকেল ৫.৩০ এ।শালুক বসলো জানালার পাশে। বুক কেমন ভারী হয়ে আছে শালুকের।ধ্রুব বলেছে শালুককে দিয়ে এসে সে চলে আসবে।ধ্রুবর একটা মেয়ে ফ্রেন্ডের বাসায় থেকে শালুক পরীক্ষা দিবে।একে তো বাবা মা’কে দেখবে না,তার উপর ধ্রুব ও চলে আসবে।উপায় নেই ধ্রুবর ও।নিজের চাকরি,তিনটি টিউশনি এতো দিন মিস দিতে পারবে না সে।
সব মিলিয়ে শালুকের খুব খারাপ লাগছে।
বাতাসে শালুকের চুল উড়ে আসছে ধ্রুবর মুখে। ব্যাগ থেকে একটা পাঞ্চক্লিপ বের করে ধ্রুব শালুকের চুলে লাগিয়ে দিলো। শালুকের কাঁধ সমান চুল এখন ৫-৬ ইঞ্চি লম্বা হয়েছে।
শালুক ধ্রুবর হাত ধরে বসে আছে।
একটা স্টেশনে ট্রেন থামতেই বাদাম নিয়ে এলো এক লোক।ধ্রুব বাদাম কিনে নিলো।তারপর বাদাম ভেঙে নিজে ও খেতে লাগলো, শালুককে ও খাওয়ালো।
ঝিকঝিক শব্দে ট্রেন চলছে।শালুক একটা চাদর জড়িয়ে নিয়েছে গায়ে ধ্রুবর গায়ে একটা হুডি।
শীত পড়তে শুরু করেছে।সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে শালুক যেতে লাগলো।
আকাশের বুকে কেমন করে সূর্য হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। শালুক আচমকা ধ্রুবকে বললো, “এই সূর্যের মতো করে যদি আমি পারতাম আপনার বুকের ভেতর হারিয়ে যেতে।”
ধ্রুবর ভীষণ অবাক লাগলো শালুকের কথা শুনে। শালুকের মাথা টেনে নিয়ে নিজের কাঁধের উপর রাখলো।তারপর বললো, “আমি প্রমিস করেছি না শালুক।আল্লাহ যতোদিন বাঁচিয়ে রাখে দুজনে এক সাথে থাকবো।”
আরেক স্টেশনে নেমে ধ্রুব রাতের খাবার জন্য বিরিয়ানি নিয়ে এলো।দুজনে খেয়ে শালুক ধ্রুবর কাঁধের উপর মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়লো।
রাত সাড়ে এগারোটায় ধ্রুবরা ট্রেন থেকে নামলো। তারপর রিকশায় উঠে বসলো। শালুকের দুই চোখে রাজ্যের ঘুম নেমেছে। রিকশা কোথায় যাচ্ছে শালুকের হুঁশ নেই।তার মাথায় ঘুরছে ধ্রুব তাকে দিয়ে এসেই আবারও বাস ধরে চলে যাবে।যেটুকু সময় ধ্রুব আছে তার বুক দখল করে রাখবে শালুক।
ঘুম থেকে জেগে শালুক চমকালো তখন যখন দেখলো সে দাঁড়িয়ে আছে নিজেদের বাড়ির সামনে।
হতভম্ব হয়ে শালুক চিৎকার করে উঠলো। ততক্ষণে বাড়ির সদর দরজা খুলে দিয়েছে মতির মা।তারপর ভুত দেখার মতো চমকে সে ও চিৎকার করে উঠলো।
কান্নাকাটির রোল পড়ে গেলো হঠাৎ করেই। নিচে চেঁচামেচি শুনে আদনান এসে রুমের বাহিরে দাঁড়ালো।বুকের ভেতর আবারও অনুভূতির এক ঝড় উঠলো। শালুকের পাশে ধ্রুব দাঁড়িয়ে আছে। দুজনকে কেমন সুন্দর লাগছে দেখতে।
ওই ধ্রুবর জায়গায় তো তার দাঁড়িয়ে থাকার কথা ছিলো।
ধ্রুব দাদার সামনে গিয়ে বললো, “দাদা,শালুকের টেস্ট পরীক্ষা আগামীকাল থেকে। আমি চাইলেই পারতাম শালুকের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তাতে শালুকের ভীষণ কষ্ট হতো। এত কাছাকাছি থেকেও পরিবারের কাউকে সে দেখবে না এই অভিমান,এই যন্ত্রণা আমার ছোট্ট শালুক সহ্য করতে পারতো না। আমি চাই নি শালুক কষ্ট পাক।আমাকে না বললেও আমি বুঝতে পারি তার বুকের ভেতর কেমন ছটফট করে বাড়িতে আসার জন্য।
যে ক’টা দিন ওর পরীক্ষা ও বাড়িতেই থাকবে।আমি আপনার উপর ভরসা করে শালুককে রেখে যাচ্ছি। সেদিন আপনার কথা আমি রেখেছি আজ আপনি আমার অনুরোধ রাখবেন আশা করছি। আমার শালুকের যেনো কোনো ক্ষতি না হয়।আমি যেভাবে তাকে রেখে যাচ্ছি আপনি সেভাবে আমার আমানত আবারও আমার হাতে তুলে দিবেন।
শালুকের যদি বিন্দু পরিমাণ কোনো সমস্যা হয় তবে মনে রাখবেন দাদা এই ধ্রুবর চাইতে নিষ্ঠুর এই পৃথিবীতে আর কেউ হবে না।আজ শালুক এই বাড়ির মেয়ে না।এই বাড়ির মেয়েকে আমি রেখে যাচ্ছি না।আজ আমি রেখে যাচ্ছি আমার স্ত্রীকে, আমার অর্ধাঙ্গিনীকে।”
কারো সাথে কোনো কথা না বলে শালুকের সামনে দাঁড়িয়ে বললো, “আমি যাচ্ছি, যখনই কোনো সমস্যা হবে,মন খারাপ হবে,কোনো কিছু প্রয়োজন হবে আমাকে বলবে।আমি যেখানেই থাকি না কেনো তোমার সব সমস্যার সমাধান করে দিবো।মনে রেখ শালুক,এই পৃথিবীতে তোমার অনেক আপনজন থাকতে পারে কিন্তু আমার আর কেউ নেই তুমি ছাড়া। তুমি ছাড়া আমার জীবন একেবারে শূন্য। আমার জন্য হলেও সাবধানে থেকো,নিজের খেয়াল রেখো।
ঠিকমতো খাবার খেও,আসি আমি। ”
কেউ কোনো অনুরোধ করতে পারলো না ধ্রুবকে।ধ্রুব চলে গেলো।
চলবে…….
রাজিয়া রহমান