The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 88

★★★★
-হ্যালো মিঃ আর্ভিন মাহবুব।আমি আপনার বাবার উকিল শামসুর রাহমান বলছি।
-জি বলুন।হঠাৎ আমাকে কল দিলেন?
-জি আপনার সাথে দেখা করতে হবে আমার।একটু আসুন আমার অফিসে।
-ওকে আসছি আমি।
-একটু জলদি আসবেন।আমাকে বের হতে হবে।
-এনিথিং আর্জেন্ট?
-ইয়েস।
-ওকে আম কামিং।
.
.
আর্ভিন ফোন কেঁটে বের হওয়ার সময় আরমান মাহবুবের মুখোমুখি হয়।আরমান মাহবুব আর্ভিনের দিকে তাকিয়ে একটু হেসে জিজ্ঞেস করেন,
.
.
-কই যাস?
-কাজে।
-কিসের কাজ।
-সেটার কৈফিয়ত আপনাকে দিবো কেন?
-সেটাই তো কথা। আচ্ছা যা।
-হুহ!
.
.
বেরিয়ে আসে আর্ভিন।শামসুর রাহমানের অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। শামসুর রাহমান আর্ভিন কে দেখে একটু হেসে বসতে বললেন।আর্ভিন সালাম জানিয়ে বসে পড়লো।
.
.
-কি নিবেন মিঃ আর্ভিন?
-কিছু না।খেয়ে এসেছি।তা কিসের জন্য ডাকলেন?
-কোথা ও যাচ্ছিলেন বুঝি?
-জি একচুয়ালি আরাবী একটু সিক।তাই ওর কাছে যাচ্ছিলাম।
-ওহ।আচ্ছা মিঃ আর্ভিন এই পেপারটা সাইন করুন।শামসুর রাহমান একটা পেপার সাইন করতে দিলেন আর্ভিনকে।
-এটা ডিভোর্স পেপার।আরাবীর সাইন এখানে কি করে এলো?বেশ অবাক হয় আর্ভিন।
-কি করে বলবো?আপনর বাবা রেডি করালো পেপারটা।
.
.
কথাটা শুনে আর্ভিন উকিলের দিকে কিছু সময় তাকিয়ে ছিলো।বিশ্বাস হচ্ছেনা ওর।কি হলো এগুলো?অবশ্য এ লোক আর ভালো কিছু করতে ও পারেনা।
শামসুর রাহমান আর্ভিনের দিকে চেয়ে বলতে শুরু করেন,
.
.
-আপনি জানতেন না?
-নাহ।
-আপনার ওয়াইফ সাইন করলো।
-এটায় কোন ষড়যন্ত্র আছে।
.
.
আর্ভিন সাইন করে দিয়ে শামসুর রাহমানকে পেপারটা লুুকিয়ে রাখতে বললো।শামসুর রাহমান মাথা নেড়ে সায় জানালো। আর্ভিন রোয়েনের ঘরে চলে এলো।রোয়েন মেয়ের জামাইকে সমাদরে বরন করে নিলো।রুহী ও খাবার প্রস্তুত করতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।
রোয়েন আর্ভিনের চেহারা দেখে কিছুটা চিন্তিত হয়।
.
.
-এনিথিং প্রবলেম আর্ভিন?তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?
-না বাবা আমি ঠিক আছি।
-ওহ।টায়ার্ড বুঝি?
-একটু।
-আরাবী আর আম্রিন রুমে আছে।যাও ওদের কাছে।
-ওকে বাবা।
.
.
আর্ভিন হেঁটে আরাবীর কাছে চলে এলো।আরাবী বাবুর বুকে হাত বুলাচ্ছে।মেয়েটা ঘুমাচ্ছে।আরাবী আর্ভিনকে দেখে হেসে দিলো।আর্ভিন স্ত্রীর পাশে বসে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁয়াতেই পাশ থেকে কেউ গলা খাঁকারি দিলো।আর্ভিন পাশে তাকিয়ে ইয়ারাবীকে দেখতে পেলো।ইয়ারাবী বাবুর ন্যাপি কাঁথা রোদে শুকিয়ে রুমে আসতেই আর্ভিন আরাবী কে চুম্বনরত অবস্থায় দেখে লজ্জা পেলো।
.
.
-জিজু আমি আছি কিন্তু।
-আর্ভিন সরে এসে বলল সরি দেখতে পাইনি।ভালো আছো ইয়ারাবী।
-জি জিজু।তা ঘরে এসেই বৌকে আদর করছেন।একটা শালী আছে।তার খবর নিবেন নাকি?
-শালীর খবর সবসময়ই নেই।একটা মাত্র শালী বলে কথা।
.
.
আরাবী লজ্জায় মাথা অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিলো।ইয়ারাবী আর্ভিনের জন্য খাবার ব্যাবস্থা করতে নিচে গেলো।ইয়ারাবী নিচে যেতেই আর্ভিন স্ত্রীর দিকে তাকায়।তারপর মেয়ের কথা জানতে চায়।কেমন আছে ওদের ছোট্ট আম্রিন।আরাবী জানায় বেশ ভালোই।তবে শীতের কারনে একটু কাশি হচ্ছে।একমুহূর্তে আর্ভিন চুপ হয়ে যায়।যেন কিছু নিয়ে ভাবছে।আর্ভিনকে এমন চুপ হয়ে যেতপ দেখে আরাবী একটু চিন্তিত হয়ে পড়ে।আরাবী কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই কি ভেবে আর্ভিন জিজ্ঞেস করে,
.
.
-বাবা তোমাকে কোন পেপার সাইন করিয়েছিলো?
-হ্যা আমাদের জন্য একটা নতুন কোম্পানী খুলেছে সেটার জন্য।তোমাকে ও সাইন করিয়েছে বুঝি?
-হুম।তবে ডিভোর্স পেপার ছিলো সেটা।
-হোয়াট অার্ভিন কি বলছো এটা?
-হুম এটাই সত্যি।বিশ্বাস করতে মানা করেছিলাম।
-এখন কি হবে আর্ভিন?কেঁদে বলল আরাবী।
-ডোন্ট ওয়ারি সব ঠিক হয়ে যাবে।এসবের টেনশন একদম করবেনা।এখন শুধু তোমার শরীর আর আমাদের আম্রিনের কথা ভাবো।
-হুম।
.
.
এদিকে ইয়ারাবী পাকঘরে এসে খেয়াল করলো রুহী সমুচা রোল ভাজছে।আর অপর একচুলোয় চা বসিয়ে দিয়েছে।বৌ কে দেখে আদরীয় হাসলো রুহী।
.
.
-কিরে মা কিছু লাগবে?
-না মা।জিজু এসেছে।ওনি খাবে সেজন্য আসছি।
-এগুলো দিবো আর্ভিনকে।
-রাতে খেয়ে যাবে ওনি।
-বলে দেখি।
-তা মা কিছু ব্যাবস্থা করে রাখতে হবে।
-ঠিক বলেছিস।আরাভ এসেছে তোকে মনে হয় খুঁজছিলো।
-ওহ।আমি দেখছি মা।
.
.
লজ্জা পেয়ে গেলো ইয়ারাবী।তারপর আর কিছু না বলে রুমে এলো।আরাভ ফ্রেশ হচ্ছে।বাথরুমে পানির শব্দ হচ্ছে।আয়রানা ঘুম থেকে উঠে বসে কাঁদতে শুরু করে দিয়েছে।হামাগুড়ি দিয়ে খাটের বেশ কিনারে চলে এসেছে।ইয়ারাবী দৌড়ে মেয়েকে ধরে কোলে নিলো।কাঁদতে কাঁদতে আয়রানার মুখ লাল হয়ে গেছে।ইয়ারাবী বুকে নিলো মেয়েকে।
.
.
-সরি আম্মু।মাকে মাফ করে দাও মা।
.
.
আয়রানাকে কাঁধে নিয়ে ওর কান্না থামাচ্ছে ইয়ারাবী।কোনমতে কান্না থামলো আয়রানার।ইয়ারাবী ওকে পুতুল দিয়ে বসিয়ে আরাভের কাপড় বের করে বিছানায় গুছিয়ে রাখলো।কিছু সময় পর বেরিয়ে এলো আরাভ।
.
.
-কই ছিলা এতক্ষন?মেয়ে একা ছিলো কেন?
-কাজে ছিলাম।মেয়ে উঠার সাথে সাথে রুমে এসেছি।
-হুম।আমি আসলে রুমে থাকবা কতোবার বলেছি।
-কাজ ছিলো বললাম তো।
-তো!!
-তো কি আবার?
-আমার ঘরে ফিরার কিসের কি হবে?
-হুহ ঢং।সরে যাচ্ছিলো ইয়ারাবী।
.
.
আরাভ ইয়ারাবীর কোমড় চেঁপে নিজের কাছে আনলো। ইয়ারাবী সরে যেতে চাইছে।আরাভ ওর গাল চেঁপে ধরলো।তারপর বলতে শুরু করলো,
.
.
-প্রবলেম কি?সরে যাচ্ছো কেন?
-আপনার শার্ট পরেননি।
-নো প্রবলেম।
-আম্রিনের ন্যাপি কাঁথা ধুয়েছি গায়ে ময়লা আরাভ।
-ইটস ওকে।
-খারাপ লাগবে আপনার।
-লাগবেনা।নাউ শাট আপ।
.
.
ইয়ারাবীকে আর কথা বলার সুযোগ দিলো না আরাভ।ওর ঠোঁটজোড়ায় নিজের ঠোঁট ডুবায় আরাভ।আয়রানা পুতুল মুখে নিয়ে বাবা মাকে দেখে হঠাৎ খিলখিলিয়ে হেসে দিলো।আরাভ সরে এসে মেয়ের কাছে বসে ওকে কোলে নিয়ে চুমু খেলো।
.
.
-আমার আম্মুটা দুষ্টু হচ্ছে তো?
-ববববববুুু!!!!দুহাত মুখে গুঁজিয়ে বলল আয়রানা।
-আমি ফ্রেশ হয়ে নেই আরাভ।জিজু এসেছে যান ওনার কাছে।হুম যাচ্ছি।
.
.
আরাভ কাপড় চোপড় গায়ে জড়িয়ে আয়রানা কে নিয়ে আরাবীর রুমে এলো।আর্ভিন আরাভ কে দেখে বসতে বলল।দুজনে গল্পে মেতে উঠলো।
,
,
,
,
,
,
একে একে পনের দিন পেরিয়ে গেলো।আর্ভিন ডিভোর্স পেপার নিয়ে নিজের বাসায় এলো।দেশে ওর মাও ফিরে এসেছে তবে সেটা আরমান মাহবুব জানেন না।ঘরে ঢুকেই আর্ভিন জোরে চিৎকার করে ডাকতে লাগলো,
.
.
-মিঃ আরমান মাহবুব!!!!
-ছেলের চিৎকারে রুম থেকে বের হন আরমান মাহবুব।কি হলো চিৎকার করছিস কেন?
-আপনার এতোবড় সাহস কি করে হয় আমাদের ডিভোর্স পেপার রেডি করার।তারওপর আবার আরাবী কে ধোঁকা দিয়ে পেপার রেডি করানোর?
-সেটা আরো আগেই করাতাম।তখন পারিনি তাই আজ করাচ্ছি।কারন তোর নানার রেখে যাওয়া সব সম্পত্তি আমার চাই।যেগুলো ওনি তোর নামে দিয়ে গেছেন।
-ডিসগাস্টিং ইউ আর।কি করে এতো বড় লোভী হতে পারেন।সবসময় নিজের স্বার্থের জন্য চিন্তা করে গেছেন।
-যাই বলিস আর্ভিন যা হবার হয়ে গেছে।এখন আমি যা চাইবো তাই হবে।
-সত্যি!!!!বাঁকা হাসলো আর্ভিন।
-জি।
-পেপার কোথায় খুঁজুন।
.
.
আরমান মাহবুব নিজের রুমে গিয়ে পেপার খুঁজতে লাগলেন কিন্তু পাচ্ছেননা।তারপর হঠাৎ আলমারিতে একটা খয়েরি প্যাকেট পেয়ে আর্ভিনের দিকে হাসেন আরমান মাহবুব।তারপর প্যাকেট থেকে পেপার বের করে চমকে গেলেন আরমান মাহবুব।উকিল কে কল দিলেন আরমান মাহবুব। কিন্তু নম্বর ব্যাস্ত আসছে।আর্ভিন হাসছে।
.
.
-নিজেকে যতো চালাক মনে করেন ততোটা আপনি নন।পেপার আপনার উকিল লুকিয়েছে খুব আগেই।আপনাকে ব্ল্যাংক পেপার পাঠিয়েছে।আর আপনি ও বোকার মতো চেক না করেই গুছিয়ে রেখেছেন নিজের কাবার্ডের ভিতর।
.
.
আর্ভিনের কথায় চিন্তায় পড়ে গেলেন আরমান মাহবুব।ঠিক তখনই চারজন পুলিশ অফিসার এলেন মিসেস মাহবুব সহ।আরমান মাহবুবের কাছে এগিয় এলেন মিসেস মাহবুব।তারপর ঘৃনা ভরা কন্ঠে বললেন,
.
.
-অনেক সুযোগ দিয়েছিলাম আরমান।তোমার ভালো হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু আমি ভুল ছিলাম।তোমার মতো জানোয়ারেরা কখনো বদলায় না।তোমার জায়গা জেলে হওয়া উচিৎ ছিলো আরো আগেই।অফিসার্স ওকে নিয়ে যান।
-আয়েশা কি বলছো এসব।তোমার হাসবেন্ড আমি।
-সেম অন ইউ আরমান।কোন সম্পর্ক নেই আমাদের।
.
.
অফিসারগন নিয়ে গেলেন আরমান মাহবুবকে।আয়েশা মাহবুব কাঁদতে লাগলেন।আর্ভিন মাকে জড়িয়ে ধরলো।মাকে নিয়ে রোয়েনের ঘরে এলো আর্ভিন।মা নিজের নাতনী কে দেখার ইচ্ছে পোষন করেছিলো তাই।আরাবী শাশুড়ি কে দেখে ওনার পা ধরে সালাম দিতে গেলে আয়েশা মাহবুব আরাবীকে বুকে টেনে নিলেন।তারপর আম্রিন কে কোলে টেনে নিয়ে আদর করতে শুরু করেন।এদিকে অর্পনের বাসার সবাই ফেসিকে পছন্দ করেছে।ফেন্সি আর অর্পনের বিয়ে নিয়ে ওনাদের আর কোন আপত্তি নেই।তাই আরাভ কে সেখানে যেতে বললেন আকরাম আজহার বিয়ের তারিখ ঠিক করতে।আরাভ সেখানে চলে গেলো।আকদ হলুদ আর বিয়ের তারিখ ঠিক হলো।আর পাঁচদিন পর এ্যাংগেজমেন্ট।আরাভের বাসার সবাই কে দাওয়াত করা হয়েছে।বেশ আনুষ্ঠানিকতার সাথেই আকদ হলুদ সম্পন্ন হলো অর্পন আর ফেন্সির।দুদিন পর বিয়ে।বিয়ের প্রস্তুতি চলছে বেশ হৈহুল্লোড় আর আনন্দের সাথে।ইয়ারাবী বড় বৌ হওয়ায় ওকে সেখানে যেতে হচ্ছে।কিছু দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
একে একে বিয়ের দিন ঘনিয়ে এলো।রোয়েনের পরিবার আর রেহান রুপন্তী আকরাম আজহারের ঠিক করা কনভেনশন সেন্টারে চলে এলো।ফেন্সি অর্পন দুজনকে খুব খুশি দেখাচ্ছে।বিয়ে সম্পন্ন হলো।বিদায়ের মুহূর্তে আরাভ আয়রানাকে নিয়ে রোয়েনের সাথে কথা বলছিলো।আয়রানা কাঁদতে শুরু করেছে।
.
.
-আরাভ ওর খিদে পেয়েছে ইয়ারাবীকে দিয়ে আয়।
-জি বাবাই।
.
.
আরাভ সরে এসে ইয়ারাবীকে খুঁজতে লাগলো।কিন্তু খোঁজ পাচ্ছেনা ইয়ারাবীর।আরাভ একে ওকে জিজ্ঞেস করলো কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছেনা।এদিকে মেয়েটা কাঁদতে শুরু করেছে চিৎকার করে।আরাভের আর ভালো লাগছেনা।ইয়ারাবীকে কল দিলো আর্ভিন।ওর ফোন অফ আসছে।
.
.
-আরাভ!!!!
-ইয়ারাবীর খবর পেয়েছো আর্ভিন?
-ওর সেল অফ।
চলবে