The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 89 (Last-Part)

★★★★
পুরো চৌধুরী পরিবারে শোকের ছাঁয়া নেমে এলো।পরিবারের ছোট মেয়েটা কে পাওয়া যাচ্ছেনা।কারোর চোখে ঘুম নেই।ছোট্ট বাচ্চাটা কেঁদে কেঁদে হয়রান।তার খেতে হবেনা শুধু মাকে একটা নজর দেখা চাই।পুরো বাড়ি হাঁহাকার করছে।কোথাও শান্তি নামক শব্দটা হারিয়ে গেছে।থমকে গেছে পুরো পরিবেশ।এখনো খোঁজা হচ্ছে বাড়ি আদরের মেয়ে একমাত্র বৌমা ইয়ারাবীকে।রোয়েন বসে নেই।একে ওকে কল করে ইয়ারাবীর খবর জানতে চাচ্ছে।কথা বলতে গিয়ে কেঁদে দিচ্ছে।রেহান রুপন্তী খুব কাঁদছে।এতো আদরের মেয়ে কই চলে গেলো হঠাৎ।ছোট্ট আয়রানা কে দাদী সামলাচ্ছে।বাচ্চাটা কাঁদছে অনেক।ওর মুখের সামনে ফিডার দেয়ার পর ও খাচ্ছেনা।মুখ সরিয়ে নিচ্ছে আর উচ্চস্বরে কেঁদেই যাচ্ছে।আর্ভিন বেরিয়ে গেছে আরাভের খোঁজে।কারন আরাভ আজ একদিন হলো ঘরে নেই।সো নিরুদ্দেশ। থাকবেই কি করে ঘরে কি আর টানবে মন?আরাবী মেয়েকে ঘুম পাড়াচ্ছে আর অপর হাতে চোখ মুচ্ছে।
এদিকে ফেন্সি খাটের পাশে বসে কেঁদে যাচ্ছে।বেচারী বিয়ের শাড়ী ও পাল্টায়নি।চোখ মুখ ফুঁলে গেছে।বড় অপরাধ করেছিলো ইয়ারাবীর সাথে ও নিজে।মেয়েটাকে কতবড় ক্ষতির মুখে ফেলে দিয়েছিলো।আর আজ মেয়েটা নেই ওদের মাঝে।এই গায়েব হওয়ার কারন যদি ওর ভাই আর বাবা হয় তাহলে তাদের নিজ হাতে খুন করবে ফেন্সি।
এদিকে অর্পন আরাভকে একনাগাড়ে কল করে যাচ্ছে।সুইচড অফ আসছে আরাভের নম্বর।আকরাম আজহার আর সাদিয়া আজহার ড্রয়িং রুমে বসে আছে।তাদের সারা মুখ জুড়ে বিষাদের ছায়া।আর্ভিন রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলছে।আরাভ কে কোথাও পাচ্ছে না ও।
আর্ভিন ফোনের লাইট দিয়ে আরাভ কে খুঁজছে।রাত ১০ টা বাজতেই পুরো আকাশ কালো রং ধারন করলো।বাহিরে খুব শীত পড়েছে।আরাভটাকে ও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা।হঠাৎ আর্ভিনের নজর গেলো রাস্তার কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা একটা লোকের দিকে। আর্ভিনের মনে হতে লাগলো লোকটা আরাভ।তার গায়ে শেরওয়ানী পরানো ডার্ক ব্লু কালারের।আর্ভিন দৌড়ে আরাভের হাত ধরতেই আরাভ আর্ভিনকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করে।
.
.
-আরাভ! “!!
-আর্ভিন আমার ইয়ারাবী কই?কই কই খুঁজি নাই ওকে?পেলাম না ওকে।
-আরাভ ওকে ঠিক খুঁজে নিবো আমরা।তুৃমি এভাবে ভেঙ্গে পড়তে পারোনা আয়রানার কথা ভাবো।বাচ্চাটা খাচ্ছেনা কিছু।ঘরে চলো আরাভ।আয়রানার জন্য ঘরে চলো।
.
.
আরাভ সরে এলো।তারপর আর্ভিনের সাথে ঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।ঘরে পৌছাতেই অর্পন দৌড়ে ভাইকে জড়িয়ে ধরলো।আরাভকে যাই জিজ্ঞেস করা হচ্ছে কোন জবাব দিচ্ছে না ও।শুধু একনজরে মেয়ের দিকে চেয়ে আছে।রোয়েন আর রুহী ছেলেকে দেখে ওর কাছে এসে অনেক কিছু জিজ্ঞেস করলো আরাভ কিছু বলছেনা।ওর চোখজোড়া ছলছল করছে।আরাভ রুহীর থেকে মেয়ে কে কোলে তুলে নিলো আর ওর ফিডার হাতে নিয়ে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে কিছু টা হারিয়ে যাওয়ার মতো রুমে চলে এলো।রুমে এসে আয়রানাকে বুকে চেঁপে ধরলো আরাভ।বুক ফাঁটা কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো আরাভ।কিছুসময় পর মেয়েকে খাইয়ে ফোন চার্জে দিলো আরাভ।
এদিকে রুহী ছেলের এমন অবস্থা মেনে নিতে পারছেনা।রোয়েনকে একটু কিনারে এনে বলল,
.
.
-তোমার আগের রুপে ফিরে যাও প্লিজ আমাদের বাচ্চাদের তোমার সাহায্য লাগবে রোয়েন।কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।
-রুহীকে বুকে টেনে নিলো রোয়েন।রোয়েনের চোখজোড়া ছলছল করছে।তারপর বলল অবশ্যই ফিরে যাবো রুহী।আমার সন্তানদের জন্য ফিরে যাবো।
.
.
আয়রানা কে গোসল করিয়ে আরাভ গোসল করে রুমে এলো।মেয়ের পাশে বসে ওকে বুকে টেনে নিলো।কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো বুঝতে পারেনি আরাভ।পরদিন সকাল ঘুম ভাঙ্গে আরাভের ফোনের শব্দে।আয়রানা ঘুমোচ্ছে।আরাভ ফোন চার্জ থেকে খুলে দেখলো ফারহান কল করছে।ফোন রিসিভ করলো আরাভ।
.
.
-হ্যালো!!
-মিঃ আরাভ রোয়েন চৌধুরী কেমন লাগছে বৌ বিহীন বিছানা।
-হোয়াট দা হেল।
-ইয়েস তোমার বৌ আমার কাছে।সে আমার বেড পার্টনার হবে।
-কই রেখেছিস আমার বৌকে?
– জানাতে হলে নিতামনা।বায়।
-হ্যালো!!!!!
.
.
কল কেঁটে গেলো।আরাভ রেগে ফোন চেঁপে ধরলো।তারপর একে ওকে কল দিয়ে ইয়ারাবীকে খুঁজতে লাগলো।সালাম ব্যাপারী ও কিছু বলতে পারলো না।অনেকটা সময় কেঁটে যায় এভাবে।আরাভ নিজের লোক দিয়ে ফারহানের নম্বর ট্রেস করালো।কিছুসময় পর আরাভ জানতে পারলো ওর ইয়ারাবী কই আছে?আর্ভিনকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো আরাভ দেরী না করে।
.
.
-হ্যালো রফিক কেমন আছো?
-এই তো স্যার আলহামদুলিল্লাহ।আপনি এতোদিন পর কল করলেন স্যার খুব ভালো লাগছে।
-হুম।রফিক আমার আরাভের ওয়াইফ গায়েব।ইয়ারাবী পাচ্ছিনা কোথাও।
-স্যার আমরা জানি ইয়ারাবী মামনি কই আছে কার কাছে আছে?
-গেট রেডি।আমি ও বের হচ্ছি।
-জি স্যার।
.
.
আরাভ আর আর্ভিন ফারহানদের আস্তানায় পৌছে গেলো।আরাভের শার্টে একটা ক্যামেরা লাগানো আছে যেটায় ছোট্ট স্পিকার ও ফিট করা।আরাভ কই যাবে ওর আর আশেপাশের সবার কথা শুনতে পারবে আর্ভিন নিজের কানের ছোট হেডফোন টা দ্বারা।এদিকে ফারহান আর হানিফ খান পুরো জায়গায় সিসিক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছে।আরাভ আর আর্ভিনকে ঠিক দেখতে পেলো ওরা।এদিকে আরাভের লোকেরা চারদিকে ছড়িয়ে গেছে।আরাভ ভিতরে আসতেই ওকে ফারহান আর কিছু লোক আটকে ফেললো।ফারহান ছাদের দিকে ইশারা করে বলল,
.
.
-বৌকে দেখ আরাভ।কেমন করে বেঁধে রেখেছি।একটু ভুল হলেই ছয়তলা থেকে পড়ে যাবে নিচে।
.
.
আরাভ উপরে তাকায় ওর মায়াময়ীকে বদমাশ গুলো আটকে রেখেছে।ইয়ারাবী কাঁদছে জোরে জোরে।
দুজন লোক এসে আরাভের হাত পা বেঁধে ওর জুতোজোড়া খুলে নিলো।তারপর আবার ও হাত পা খুলে দিলো।আরাভ ঘরে একটু উঁচু স্যান্ডেল পরে থাকতো।খালি পায়ে হাঁটতে প্রচুর কষ্ট হয় ওর।
এদিকে রোয়েন এসে আরাভ কে দেখে ফেললো এ অবস্থায়।ছেলেটা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছে।রোয়েন একটু সরে এসে সুযোগ খুঁজছে ভিতরে যাওয়ার।
.
.
-এখন যাও আরাভ।স্ত্রীকে বাঁচিয়ে আনো দশ মিনিটের মাঝে।বলে উঠে ফারহান।
.
.
আরাভ খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে সিড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো কিন্তু ফারহান দৌড়ে ওর সামনে এলো।তারপর যতোবারই আরাভ উঠতে চায় ততোবারই ফারহান আরাভকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিতে থাকে।এক পর্যায়ে ফারহান বাহিরে এনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।আরাভ উঠে দাঁড়ায়।তবে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছেনা এদিকে আর্ভিন শুনতে পেলো আরাভকে ওরা ধরে ফেলেছে ঢুকতেই তারমানে ওরা আরাভকে এখানে আগেই দেখে ফেলেছে।আর্ভিন পুরো জায়গায় ঢুঁ মারতে লাগে।তখন ওর চোখে পড়লো অনেকগুলো সিসিটিভি ক্যামেরা।আর্ভিন ওর একজন হ্যাকারকে সিসিটিভ ক্যামেরা হ্যাক করে নষ্ট করে দিতে বলল।আর্ভিন এবার পুরো জায়গা ঘুরে ভিতরে এলো নিজের দলবল নিয়ে।তারপর ফারহান আর লোকদের দিকে বন্দুক তাঁক করলো।ফারহান বলল,
.
.
-আমার ক্ষতি করবা।উপর থেকে তোমাদের ইয়ারাবী পড়ে যাবে।
.
.
আর্ভিন নিজের লোকদের বন্দুক নিচু করতে বলল।নিজে ও নামিয়ে নিলো।তখনই হানিফ খান এসে আরাভের থুতনি চেঁপে ধরে বলল,
.
.
-আজ তোদের এঅবস্থা একমাত্র তোর বাবার কারনে।আজ আমার এ অবস্থা তোর বাবার কারনে।না তোর বাপ আমার ভাইকে মারতো না আমার পুরো পরিবার নির্বংশ হতো।আমার পরিবারে আমার ছেলে মেয়ে আর আমি ছাড়া কেউ নেই।তোর আর তোর বাবার কারনে আমার মেয়ে আমার থেকে দূরে।তোদের বাপ ছেলের কারনে আমার মেয়েকে শুট করতে হয়েছে আমাকে।আজ তোর বৌকে আগে মারবো তারপর তোকে এরপর তোর বাপকে শাস্তি দিবো।
-সেদিন ভুল ছিলাম।তোর ভাইয় প্রনয় খানের সাথে তোকে ও মারার দরকার ছিলো।দয়া করে তোকে ছেড়ে দিয়েছিলাম।নাহলে আজ আমার বাচ্চাদের এতবড় বিপদে পড়তে হতো না।তবে আজ তুই বাঁচবি না হানিফ খান।ভিতরে ঢুকে কথা গুলো বলল রোয়েন।
.
.
সবাই পিছে ফিরে রোয়েনকে দেখে ফেললো।রোয়েন সামনে আগাতে থাকলো।আর্ভিন আর আরাভ বেশ অবাক।আর্ভিন বলল,
.
.
-বাবা সামনে যাবেননা ওনারা আপনাকে শুট করবে।
-মিঃ রোয়েন চৌধুরী তুমি এসে গেছো? এতো দেরি করলে কেন?তোমার কারনে তোমার ছেলে আর বৌ কতো কষ্ট পেয়েছে।বলে উঠেন হানিফ খান।
-এইতো চলে এসেছি।ওদের ছেড়ে দে।আমাকে মেরে ফেল।বলে উঠে রোয়েন।
-উহুম।তোমাকে মারলে তোমার পরিবার কষ্ট পাবে।কিন্তু আমি তোমাকে কষ্ট দিতে চাই।আগে তোমার বৌ তারপর তোমার ছেলেকে মারবো।তারপর তোমাকে কান্না করতে দেখবো খুব মজা লাগবে আমার।এই ইয়ারাবী কে ফেলে দে।বলে উঠেন হানিফ খান।
-না বাবা ওকে মারতে পারোনা।ওকে আমি ভালোবাসি।তুমি ওদের মারো ইয়ারাবীকে না।বলে উঠে ফারহান।
.
.
.
.
.
ছেলের কথায় গাল ভেংচি দিলেন হানিফ খান।তারপর বললেন,
-আমি তোর বাপ।তোর প্রেম বাঁচাতে আসিনি আমার ভাইয়ের মৃত্যুর প্রতি প্রতিশোধ নিতে এসেছি।আমি ওকে মারবোই।
.
.
ইয়ারাবীকে নিয়ে বাবা আর ছেলের মাঝে তর্ক বিতর্ক লেগে গেলো।এরই সুযোগে আর্ভিন নিজের লোকদের ফারহান আর হানিফ খানকে ঘিরে ধরতে বলল।আরাভ গিয়ে জুতা পায়ে দিয়ে ছয়তলায় উঠে গেলো।ইয়ারাবীকে একদম কোনায় বেঁধে রাখা আছে।আরাভ দৌড়ে ইয়ারাবীকে খুলে দিলো।ইয়ারাবী ভয় পেয়ে পিছনে তাকাতেই স্বামীকে দেখতে পায়।তারপর কিছু না ভেবে আরাভের ঠোঁটে চুমু দিয়ে কেঁদে দিলো।আরাভ জড়িয়ে ধরে ইয়ারাবীকে।হঠাৎ ওর মনে হলো নিচে ওর বাবা আর্ভিন আছে।আরাভ সরিয়ে দিলো ইয়ারাবীকে।
.
.
-চলো নিচে বাবাই আছে ইয়ারাবী।
.
.
ইয়ারাবীকে কোলে নিয়ে নিচে নেমে এলো আরাভ।এদিকে হানিফ খানের হুঁশ হলো ওদের ঝগড়ার মাঝে অনেক সর্বনাশ হয়ে গেছে।হানিফ খান আর ফারহান দেখলো ওদের ঘিরে রেখেছে দশজন কালো পোষাক পরিহিত লোক।আরাভ ইয়ারাবীকে নিচে এনে দাঁড় করাতেই একজন লোক ইয়ারাবীর দিকে শুট করতেই আরাভ ইয়ারাবী কে ধাক্কা দিলো আর্ভিনের দিকে।যার কারনে আরাভের হাতে গুলি লাগলো।আর্ভিন ইয়ারাবীকে ধরে আরাভের দিকে তাকায়।
.
.
-ইয়ারাবী আমার নাহলে আর কারোর হবেনা।
.
.
ফারহান ইয়ারাবীর দিকে বন্দুক ধরতেই আরাভ নিজের বন্দুক দিয়ে ফারহানকে শুট করলো আর রোয়েন নিজের শটগান দিয়ে হানিফ খানের কপাল ছিন্নভিন্ন করে দিলো।এর মাঝে পুলিশ এসে পড়লো।হানিফ খানের সব লোককে নিয়ে গেলো।রোয়েনের শুট দেখে আরাভ আর্ভিন ইয়ারাবী অবাক।ওনি বয়স্ক তারপর ও এতোসুন্দর করে শুট করলেন এতো নিখুঁতভাবে। ইয়ারাবীর কাছে এলো আরাভ।ইয়ারাবী আরাভ কে জড়িয়ে ধরলো কিছু না ভেবে।আরাভ ইয়ারাবীকে ধরে গাড়িতে এনে বসায়।রোয়েন আরাভের কাছে এসে বসলো।আর্ভিন ড্রাইভ করছে।রোয়েন নিজের ফাস্টএইড বক্স থেকে ছুড়ি, তুলা ঔষধ বের করলো।তারপর আরাভের হাত থেকে বুলেট বের করে ঔষধ লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করে দিলো।সেই সময়টায় আরাভ ছলছল চোখে পিতাকে দেখছিলো।ঘরে আসার পর ফ্রেশ হয়ে নিলো সবাই।ইয়ারাবীকে পেয়ে সবাই খুশি।ইয়ারাবীকে মেয়েকে কোলে নিয়ে আরাভের হাতে একটু খেয়ে নিলো।সবাই খেয়ে দেয়ে একটু জিরিয়ে নিলো। আর্ভিন আরাভ রোয়েনকে ধরে বসলো বিকেলে।আর্ভিন জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-বাবা আপনি এতো সুন্দর করে শুট করলেন কি করে।আর হানিফ খান কি বলছিলো ওনার ভাইকে আপনি মেরেছেন।
-সেটা সত্যি বলেছে হানিফ।
-কি হয়েছিলো বাবাই?জিজ্ঞেস করে আরাভ।
-রোয়েন সব খুলে বলল।
-বাবাই তাহলে তুমি মাফিয়া ছাড়লে কেন।এভাবেই তো নিজের হাসপাতাল বাঁচাতে পারতে।
-মাফিয়া না ছাড়লে তোরা বিপদে পড়তি।কেউ খুশি থাকতে পারতামনা আমরা।
-বাবা!!!আরাভ রোয়েনকে জড়িয়ে কেঁদে দিলো।
.
.
এরপর ফেন্সি অর্পন আর আকরাম আজহাররা সবাই চলে গেলো।আরাবী আর্ভিন ও নিজেদের ঘরে চলে গেলো আয়েশা মাহবুব সমেত।দুদিন পর আজ ফেন্সি অর্পনের বাসর সাজানো হচ্ছে।ফেন্সি আজ বৌ সেজেছে।আরাভ আর্ভিন ঘর সাজিয়ে দিলো।আরাবী আর ইয়ারাবী ফেন্সিকে রুমে এনে অনেক দুষ্টুমি করে বেরিয়ে পড়লো।ফেন্সি মুচকি হেসে অর্পনের অপেক্ষা করছে।কিছুসময় পর অর্পন এসে ফেন্সির সামনে বসলো।ফেন্সি লজ্জা পেয়ে কিছু টা সরে গেলো।অর্পন ফেন্সির হাত চেঁপে ধরলো।ফেন্সি কেঁপে উঠে।
.
.
-বৌ এতো লজ্জা পাচ্ছো কেন?
-জানিনা অর্পন।সব স্বপ্নের মতো লাগছে।স্বপ্ন এতো সুন্দর হলে সারাজীবন স্বপ্নকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।
-চলো নতুন কিছু স্বপ্ন বুনি।নতুন দুনিয়া গড়ে তুলি দুজনের।অর্পন মুখ এগুলো ফেন্সির দিকে।
.
.
ফেন্সি দুহাতে মুখ গুঁজে দিলো। অর্পন ফেন্সির দুহাতে চুমু দিয়ে হাতজোড়া সরিয়ে ওর ঠোঁটে চুমু দিলো।ফেন্সি হারিয়ে গেলো অর্পনের ভালবাসার রাজ্যে।আজ আবার ও নতুন করে বাঁচতে শিখবে সবাই।আর কোন দূরত্ব থাকবেনা।
,
,
,
,
★★★★★
পাঁচ বছর পর,
-মাম্মা!!! মাম্মা!!!!!গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছে আয়রানা।
.
.
ঘর ভর্তি মেহমান।সবাই এসেছে।আয়রানার ছয়বছর পূর্ন হলো আজ। তাই রোয়েনের পরিবারে আজ সবাইকে দাওয়াত দেয়া হয়েছে।আজহার পরিবার ও এসেছে।ফেন্সি নিজের ছেলে ফায়াজ কে সামলাচ্ছে।বড্ড দুষ্টু ছেলেটা।রুপন্তী বোনের সাথে গল্পে মেতে আছে।রেহান রোয়েনের সাথে বাহিরে গেছে কোন এক কাজে।ইয়ারাবী কোমড়ে আঁচল গুঁজে কাপড় কপালে টিপ পরতেই দুষ্টু আয়রানা মাকে জড়িয়ে ধরলো।
.
.
-আয়ু ছাড়। মা রেডি হচ্ছি।
-দাদু বাহিরে চলে গেছে।নিয়ে যায়নি।
-দাদুর কাজ আছে মা!!মেয়েকে কোলে নিয়ে বলল ইয়ারাবী।
-না আমি ও যাবো দাদুর সাথে।
-আয়ু জেদ করেনা আম্মু।দাদু আসলে যেও।
-না এক্ষুনি যাবো।
-আয়লানা তাপি তুমি তোতায়?আম্রিন খুঁজছে আয়রানাকে।
.
.
ইয়ারাবীর রুমে এলো আম্রিন মায়ের কোলে।আরাবী এসে বলল,
.
.
-আয়রানাকে খুঁজছে আসার পর থেকেই।
-আম্রিন কেমন আছো আম্মু?ইয়ারাবী আম্রিনের গালে চুমু খেলো।
-বালো মামী।তুমি তেমন আতো?
-ভালো আম্মু।আয়রানা যাও ওর সাথে খেলো খাটে বসে।
-ওকে মাম্মা।ফুপি আম্রিনকে খাটে বসাও। আমরা খেলবো।
-অবশ্যই মা।আরাবী আম্রিন কে খাটে বসিয়ে আয়রানকে চুমু খেলো।
.
.
আরাবী আর ইয়ারাবী কথা বলার মধ্যে আরাবী নিচে গেলো।ইয়ারাবী নিচে যেতে নিতেই আরাভ রুমে এসে ওকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে গেলো।
.
.
-কি করছো? বাচ্চারা আছে।
-শশশশ ওরা বুঝবেনা।
-তোমার মন্ডু।বাসা ভরা গেস্ট আর তার রোম্যান্স পাচ্ছে।
-গেস্ট দেখার জন্য সবাই আছে তুমি আমাকে সময় দাও।
-পারবোনা আরাভ ছাড়ো।আম্রিন আর আয়রানা দেখে রাখো।
.
.
আরাভ ইয়ারাবীকে জোর করে চুমু খেতেই চাইলে ইয়ারাবী আরাভকে জোর করে সরিয়ে নিচে যেতে লাগলো।পিছন থেকে আরাভ জোরে বলছে
.
.
-এখন ছাড়া পেলে।রাতে দেখে নিবো।
-রাতে কি করবে পাপা?মাম্মা কে মারবে?
-না মারবোনা মামনি আমরা ফুটবল খেলবো।
-আমি ও খেলবো পাপা।
-আচ্ছা খেলো।আরাভ পিছন থেকে ছোট্ট আম্রিনকে কোলে নিয়ে বসে ওদের সাথে খেলতে লাগলো।
.
.
কেক কাঁটা শেষে সন্ধ্যায় সবাই চলে গেলো।রাত হয়ে গেলো। আরাভ মেয়েকে কোলে নিয়ে বলল,
.
.
-দাদার কাছে ঘুমাও আজ।
-না ফুটবল খেলবো তোমাদের সাথে।
-না মা তুমি পড়ে ব্যাথা পাবে।দাদু দিদা গল্প শুনাবে তোমাকে।
-দাদুর সাথে রাগ করেছি।
-কেন মা?
-আমাকে রেখে বাহিরে গেছে।
-আর যাবেনা পাপা না করে দিবো।
-ওকে।
.
.
আরাভ মেয়ে কে রোয়েনের রুমে পাঠায়।রুহী নাতনীকে দেখে খুব খুশি হলো।
.
.
-দিদা আজ এখানে ঘুমাবো।
-ওকে।আসো দিদুমনি।
.
.
এর মধ্যে রোয়েন এসে নাতনীকে জড়িয়ে ধরলো।
.
.
-সরি দাদু ভাই।তোমাকে ছাড়া আর বের হবোনা।
-প্রমিজ করো আমাকে।
-প্রমিজ দাদু ভাই।
-আই লাভ ইউ দাদু।
-আই লাভ ইউ টু আয়ু।
-জানো দাদু দিদা আজ পাপা মাম্মা ফুটবল খেলবে।আমাকে নেয়নি।আমি নাকি পড়ে যাবো।
.
.
নাতনীর কথায় রুহী রোয়েন একে অপরের দিকে তাকায়।লজ্জা পেয়ে গেলো ওরা।অপরদিকে আরাভ রুমে এসে নিজে সাদা শার্ট আর সাদা প্যান্ট পরে রেডি হয়ে আছে।ইয়ারাবী রুমে আসে নি এখনো।আরাভ আলমারি থেকে সাদা শাড়ী বের করে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়।ইয়ারাবী রুমে খাটের ওপর থেকে শাড়ী নিয়ে বেশ অবাক হয়।তারপর সেটা নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়।ইয়ারাবী ওয়াশরুমে ঢুকতেই আরাভ রুমে এসে পুরো রুম ফুল আর মোমবাতি দিয়ে সাজালো।ইয়ারাবী বেরিয়ে আসতেই অবাক হলো।হঠাৎ আরাভের দিকে নজর গেলো ওর।সাদা শার্ট ভেদ করে খালি বুক দৃশ্যমান।লোকটা এতো সুন্দর কেন।আরাভ বৌকে দেখছে।ইয়ারাবীর ভিজা চুল ওর মাঝে নেশা জাগাচ্ছে।আরাভ এসে ইয়ারাবীর কোমড় জড়িয়ে নিজের সাথে লাগিয়ে নিলো।
.
.
-বলেছিলাম না রাতে ছাড়া পাবেনা।
-আয়ু কই?
-বাবাইয়ের কাছে।
-এগুলো ঠিক না আরাভ।
-শশশশশ ভালোবাসায় সব জায়েজ।
.
.
ইয়ারাবী লজ্জা পেয়ে মুখ লুকায়। আরাভ ওর কপালে চুমু দিয়ে কোলে তুলে খাটে শোয়ায়।তারপর নিজের ভর দিলো ইয়ারাবীর ওপর।
.
.
-বৌ!!!
-হুম!!!আজ রাতটা কি বলছে তোমায়?
-আপনাকে ভালোবাসতে চাইছে আমার মন।আজ রাতটা ও তাই বলছে আরাভ।
-চলো তাহলে আজ আয়ুর ছোট্ট খেলার সাথী ও নিয়ে আসি।
-জানিনা।লজ্জায় এতোটুকু হয়ে গেলো ইয়ারাবী।
.
.
আরাভ মুখ বাড়িয়ে ইয়ারাবীর কপালে চুৃমু দিয়ে ওর রসালো ঠোঁট শুষে নিতে শুরু করলো।ইয়ারাবীর শাড়ীর আঁচল সরিয়ে ওর গলায় মুখ ডুবায় আরাভ।আজ ভালবাসায় ভরিয়ে দিচ্ছে আরাভ ইয়ারাবীকে।আজ তাদের চোখে নতুন দিনের আলো ধরা পড়েছে।নতুন স্বপ্ন বুনছে সবাই ভালোবাসা দিয়ে।একে অপরকে ভালবেসে বেঁচে থাক সবাই।একে অপরের জন্য বাঁচবে সবাই।নতুন আগত ছোট্ট জান সবাইকে মাতিয়ে রাখুক সুখে আর উল্লাসে।
_________সমাপ্তি