হারিয়ে খুজবে আমায়

হারিয়ে খুজবে আমায় !! Part- 08

অনুদের বাসা থেকে বেরিয়ে সেদিন সন্ধ্যায় কানাডার বিভিন্ন ভার্সিটিতে স্কলারশিপের জন্য আবেদন করে সাদাত। কারণ কানাডাতে সাদাতের বড় চাচা ফুল ফ্যামিলি নিয়ে থাকেন। সেখানেই বিজনেস তার। অনু সেখানে গেলে সে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে। কারণ তার বড় চাচা চাচী খুবই অমায়িক লোক। আমাদের একটা মেয়েও আছে আর তারা অনু কেও নিজের মেয়ের মত দেখবে খেয়াল রাখবে এটা তার বিশ্বাস। তাছাড়া সে তাদের সাথে কথা বলেছেন এবং তারা তাকে আশ্বাস দিয়েছে অনুর সম্পূর্ণ খেয়াল রাখার। আর অনুর খোঁজখবরও তাদের কাছ থেকে সহজে পাওয়া যাবে।

দেখতে দেখতে অনুর এক্সাম এর রেজাল্ট দিয়ে দিল। বিবিএর রেজাল্টে পয়েন্ট ভালো থাকায় আর এক্সাম ভালো দেয়ায় সে তিনটি ভার্সিটিতে টিকল। এই কয়দিন অনু দিনরাত এক করে শুধু পড়েছে। আর তার ফলও সে পেয়েছে। তার বাবা-মা এবং সাদাত ভাই তাকে সাপোর্ট করেছেন। যেসব বিষয়গুলো জটিল ছিল তা নিমিষেই সাতদ ভাই সমাধান করে দিয়েছেন।

সাদাত এর চাচ্চুর বাসা থেকে কিছুদূর যে ভার্সিটি আছে সেখানেই এডমিশন ফরম ফিলাপ করে মেইলের মাধ্যমে এবং তারা সকল আনুষ্ঠানিক নিয়ম-কানুন জানিয়ে দেয়। ভিসার ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরীর জন্য এক মাস থেকে ২মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান হয়।

এরমধ্যে অনু আর সাদাত ব্যস্ত হয়ে যায় সকল কাগজপত্র পাসপোর্ট সহ সব কিছুর ব্যবস্থা করার জন্য।

এভাবেই অনুর দিনগুলো কাটেতে থাকে।

দেখতে দেখতে ইরার ফ্রেন্ডের বার্থডে পার্টির দিন এসে পড়ে। সেদিনের রাগ ভাঙ্গানোর ভর্তুকি হিসেবে ইরাকে নীল রঙের দামি গাউন কিনে দিতে হয় যেটা সে আজ পড়বে। আর শাফিনের ড্রেসকোড নীল স্যুট প্যান্ট ও ব্ল্যাক শু সেট করে দেয় ইরা।

সকাল থেকেই ফোনে শাফিনকে এটা সেটা বলে যাচ্ছে ইরা কিন্তু শাফিন তা কানে নিচ্ছে না সেটা সে বেশ ভালই বুঝতে পারছে শুধু হু হা আর না তে উত্তর দিচ্ছে সে। সে কয়েকদিন ধরে শাফিনকে লক্ষ করছে আগের মতো সেই দুষ্ট প্রাণোচ্ছ্বল ছেলেটা আর নেই সে যাকে দেখে ইরা প্রেমে পড়েছিল। চেহারাও কেমন যেন মিলিয়ে গেছে চোখ দেখে মনে হয় কত রাত ঘুমায় না সে। কথাবার্তাও কম বলে। আগের মত ঘুরতে বের হয়না অফিস টাইম এরপর ডিনারে যায় না।কিছু বললেই বিয়ের কথা বলে। তাই ইরা ও কথা বাড়ায় না। এত তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে চায় না সে। আগে লাইফটাকে এনজয় করতে চায়। সে জানে বিয়ে করলেই বাঁধা পড়ে যাবে। ইরা ফোনটা রেখে এইসব ভাবতে থাকে‌।

ইরার সাথে কথা বলে যেই শাফিন ফোনটা রাখতে যাবে তখনই কলিং বেল বেজে উঠল। দরজা খুলে দেখল তার মা দাঁড়িয়ে আছে। এই কয়দিনে সে তার কথা ভুলেই গিয়েছিল। আনু থাকতে তার সাথে নিয়মিত কথা বলত। নিজের জন্য না হলেও অনুর জন্য। মিসেস রাহেলা অনু পছন্দ করেন না বিধায় অনুর সাথে ঠিক ভাবে কথা বলতেন না। তাই শাফিন কে দিয়ে কথা বলাত।অনুর কথা অনুযায়ী এখানে এক কাজে দুই কাজ হত। খোঁজ খবরও নেয়া হল আবার মা ছেলের সম্পর্ক ভালো হল।এ বিষয় টি মিসেস রাহেলা ঠিক বুঝতেন কিন্তু কখনো কিছু বলে নি। আচ্ছা মা অনুর কথা জিজ্ঞেস করলে তাকে কি জবাব দিবে। পরক্ষনেই ভাবল মা তো অনু কে পছন্দ করেন না তাই বেশি সমস্যা হবে না। পরে না হয় একসময় ইরার সাথে দেখা করিয়ে দেবে।

ছেলেকে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে তার দিকে একটানা তাকিয়ে থাকতে দেখে মিসেস রাহেলা ভ্রু কুচকালো।

রাহেলা:ঘরে ঢুকতে দিবি নাকি আবার চলে যাব? মায়ের কথায় শাফিনের ধ্যান ভাঙল। সে দরজার সামনে থেকে সরে দাঁড়ালো।

ঘরে ঢুকার সাথে সাথে মিসেস রাহেলার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। একি হাল ঘরের? জিনিসপত্র এখানে-সেখানে ছড়ানো-ছিটানো সারা ঘরে সিগারেটের ছাই আর ময়লা পড়ে আছে। চিপসের প্যাকেট বিস্কিটের প্যাকেট বাসি খাবার দিয়ে ডাইনিং রুম ভরা। সেখানে মাছি ভনভন করছে।তারপর সে কোনরকম ব্যাগ রেখে শাফিনের ঘরে গেল, এখানেও একই অবস্থা কাপড়চোপড় সারা ঘর ছিটিয়ে রাখা সিগারেটের ছাই ফেলা আলমারি আর কাবার্ডের জিনিসপত্র এলোমেলো হয়ে আছে। এবার সে সামনের দিকে তাকানো।শাফিন মাথা নিচু করে দারিয়ে আছে।

রাহেলা: ঘরের এক কি অবস্থা শাফিন? যেন কয়েক বছর ধরে ঘরটা খালি পড়ে আছে? তুই এইসব ছাইপাশ কবে থেকে খাওয়া শুরু করেছিস?আর অনু কই তার মা কি সুস্থ হয়নি প্রায় 20 দিন যাবত তুই আমাকে ফোনও দিচ্ছিস না। ফোন দিলে ফোন ধরিস না কথা বলিস না কি হয়েছে তোর। আর চেহারার এই অবস্থা কেন?

মায়ের একের পর এক এ প্রশ্ন শুনে শাফিন থতমত খেয়ে গেল ,

শাফিন: আসলে মা ব্যস্ত ছিলাম ফোন দিতে পারিনি। আর ফোনের দিকে তো খেয়াল করিনি কখন ফোন দিয়েছো। আর চেহারা তো ঠিকই আছে। আর ঘর গোছানোর কেউ ছিল না তো তাই এই অবস্থা তুমিতো জানাই আমি কতটা অগোছালো। হতাশ কার কন্ঠে উত্তর দিল শাফিন।

রেহালা: শাফিন কি হয়েছে তোর এমন করে কথা বলছিস কেন। অনুর সাথে কি কিছু হয়েছে? আর তুই যে কতটা অগোছালো তাতো আমি জানি তাই অনুকে রেখে নিশ্চিন্তে গিয়েছিলাম কিন্তু একি হাল করে রেখেছিস তোর? আর অনুই বা কোথায়?আমি কয়েকবার ওর নাম্বারে ফোন দিয়েছি তুই ফোন ধরছিলি না দেখে কিন্তু প্রত্যেকবার নাম্বার বন্ধ পেয়েছি।

শাফিন: অনু নেই মা চলে গেছে।

রেহালা: চলে গেছে মানে ঝগড়া হয়েছে তোদের? ঝগড়া করে চলে যাওয়ার মত মেয়ে তো অনু না।আর ঝগড়া করলেই চলে যেতে হবে কেন। ঝগড়া তো সব স্বামী স্ত্রীর মধ্যে হয়। সত্যি করে বল বাবু অনু কোথায় আর তুই কি বলেছিস অনুকে যে মেয়েটা রাগ করে চলে গেল কদিন হয়েছে সে গেছে? শাফিন ছোট্ট করে উত্তর দিল, প্রায় তিন সপ্তাহ।

কথাটা শুনে রেহালা আৎকে উঠলো।যে ছেলের অনুকে ছাড়া একদিন থাকতে পারে না সে ছেলে আজকে প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে একা থাকছে তাইতো চেহারার এই অবস্থা। অনু মেয়েটার উপর রাগ হচ্ছে তার।সবকিছু জেনে বুঝে সে তার ছেলের সাথে এমন করতে পারল ?এবার আসলে বেশ করে কয়েকটা কথা শুনিয়ে দেবে সে।

সাহেলা সামনাসামনি যতই কথা বলুক না কেন মনে মনে অনু কে খুব ভালোবাসে সে জানে তার ছেলে এবং সংসারের জন্য অনু ঠিক আছে কিন্তু আদর করলে যদি মাথায় উঠে যায় তাই সে সব সময় টাইট দিয়ে রাখে। কথায় আছেনা শক্তের ভক্ত নরমের যম। কিন্তু এবারের অনুর টা কাজটা শাহেলার পছন্দ হয়নি যত রাগ থাকুক না কেন তার ছেলেকে একা রেখে চলে যাবে এটা কেমন কথা।

শাহেলা: ফোন দে ওকে আমি কথা বলব ওর সাথে আর বল রেডি হয়ে থাকতে কালকে আমি আনতে যাচ্ছি ওকে।তারপর দুজনের কথা শুনে বিচার করব।

ফোন নেই মা বাসায় রেখে গেছে। সে আর আসবেনা আমার কাছে আমি নিজে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছি।

শাহেলা: তাড়িয়ে দিয়েছিস মানে?

শাফিন:তাড়িয়ে দিয়েছি মানে তাড়িয়ে দিয়েছি ভালোবাসি না আমি ওকে। ওকে আর ভালো লাগেনা আমার আমি অন্য কাউকে ভালোবাসি আর তাকে বিয়ে করতে চাই। তাই তাকে তাড়িয়ে দিয়েছি খুব জলদি আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে।আর তুমি এত ব্যস্ত হচ্ছ কেন ওর জন্য। তুমি তো তাকে দু’চোখে দেখতে পারো না তোমার তো খুশি হওয়ার কথা।ঘর থেকে একটা আপদ বিদায় হয়েছে। ঘরে আর কোন অশান্তি হবে না।তুমি তো এটাই চাইছিলে।

শাহেলা: শাহেলা এসব কথা শুনে অবাক এর চরম পর্যায়ে চলে গেল কি বলছে তার ছেলে সে অনুকে ভালবাসে না। কথাটা বলার সময় ও তো তাই চোখ টলমল করছিল তার জন্য ভালোবাসা দেখতে পারছিল সে শুধু মুখ দিয়ে অস্বীকার করছে।

আমাকে সব খুলে বল শাফিন কি হয়েছিল? কেন এসব কথা বলছিস বাবু?তারপর শাফিন শুরু থেকে সব খুলে বলে শুধু ইরাকে তার সাথে দেখে ফেলায় কথাটা কৌশলে এড়িয়ে যায়।

ছেলের মুখে এসব কথা শুনে শাহেলা নিজেকে ঠিক রাখতে পারলোনা সে কষে একটা চড় লাগিয়ে দিল শাফিনের গালে।

শাহেলা: তুই আমার ছেলে ভাবতেও গা ঘিন ঘিন করছে আমার।ছি ছি আমি এমন ছেলে জন্ম দিয়েছি যে কিনা একটা মেয়ের জীবন নিয়ে খেলা করছে। না আর এক মুহূর্ত না এখানে।এখনি চলে যাব শুধু যাওয়ার আগে একটা কথা বলবো খুব বড় ভুল করছিস তুই।একদিন পস্তাবি খুব করে পস্তাবি মুখে ভালোবাসি না বললেও আমি স্পষ্ট তোর চোখে ভালোবাসা দেখতে পাচ্ছি তুই এই মুহূর্তে অন্ধ হয়ে গেছিস। কোনটা ভালোবাসা আর কোনটা মোহ তুই চিনতে পারছিস না। মোহকে ভালোবাসা ভেবে আঁকড়ে ধরতে চাচ্ছিস আর ভালোবাসা কে দূরে ঠেলে দিচ্ছিস।চিন্তা করিস না তোর পস্তানোর দিন বেশি দূরে নেই। যখন সব মোহ কেটে যাবে। কাউকে পাবি না বেঁচে থাকার জন্য ভালোবাসার জন্য।সেদিন আমি তোকে ফিরিয়ে দেবো না বেশি কষ্ট হলে আমার কাছে চলে আসবি। আসি।

শাফিন: মা তুমি এই প্রথম আমার গায়ে হাত তুললে, হয়তো তোমার কথাগুলো ঠিক। আমি একটা মেয়ের জীবন নষ্ট করেছি। কিন্তু আমি সত্যিই ইরাকে ভালোবাসি অনুকে না।ভালোবাসাহীন সম্পর্কে শুধু শুধু নিজেকে আটকে রাখার কোনো মানেই হয় না তাই তাকে মুক্ত করতে চাইছি। আর তুমি কোথাও যাবে না আমি একা থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছি।আর না। তুমি একবার ইরার সাথে কথা বল তুমি দেখো ও একদম আমার জন্য পারফেক্ট অনু না। তুমি একবার কথা বললেই বুঝতে পারবে প্লিজ মা।

ছেলের এমন অবস্থা দেখে সোহেল আর কিছু বলবো না শুধু মনে মনে আফসোস করতে লাগলো তার ছেলের পরিণতির কথা ভেবে।তারপর কোন কথা না শুনেই বাসা ত্যাগ করল। সে জানে তার ছেলে তার ভুল বুঝতে পেরে খুব জলদি আসবে তার কাছে আনুকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু তখন হয়তো খুব দেরি হয়ে যাবে সে অনুকে হারে হারে চেনে। এতকিছুর পর অনু তার কাছে কখনোই ফিরবেনা।

ঘন্টাখানেক পর আবার কলিংবেল বেজে উঠল। শাফিন দরজা খুলে দেখে ইরা একটা মোটামুটি বয়সের মহিলা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তারা ভিতরে ঢুকলো। আর মহিলাটিকে ইরা ঘর পরিষ্কারের কাজে লাগিয়ে দিল। শাফিন দেখল ইরা তার দেওয়া গাউনটা পড়েছে মুখে ভারী মেকআপ আর চুলগুলো ছেড়ে দেওয়া। করা পারফিউমের স্মেল আসছে শরীর থেকে।

নিজের বিষন্ন মনকে শান্ত করার জন্য সে তাকে জড়িয়ে ধরতে গেল কিন্তু তার আগেই ইরা তাকে সরিয়ে দিল।সে পরিপাটি হয়ে এসেছে এখন শাফিনের সাথে জরাজরি করলে সব নষ্ট হয়ে যাবে।এত কষ্ট করে মেকওভার করেছে ফ্রেন্ডদের কাছ থেকে প্রশংসা না শুনেই তা নষ্ট করতে চায় না সে। তই তাকে ঠেলে ওয়াশরুমে পাঠালো গোসলের জন্য তারপর শাফিনের জন্য আনা কাপড় গুলো বের করে রাখলো। 10 মিনিটের মাথায় শাফিন গোসল করে শুধুমাত্র একটা টাওয়াল পরে বের হলো। চুল থেকে পানি পড়ছে ফর্সা গায়ে বিন্দু বিন্দু পানি গুলো মুক্তার মত ছড়িয়ে আছে। ইরার ইচ্ছে করছে শাফিনকে খেয়ে ফেলতে। ছেলেটা এত সুন্দর কেন চোখ দুটো দেখলে ডুব দিতে ইচ্ছে করে আর ঠোট টা তো একদম মেয়েদের মত। মেকআপ নষ্ট হওয়ার ভয়ে আর কিছু করল না শুধু হালকাভাবে শাফিনের ঠোটে ঠোট লাগালো। তারপর তাকে রেডি হতে পাঠিয়ে দিল।

শাফিন রেডি হয়ে বের হল তারপর ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে চুল ঠিক করতে লাগলো। ইরার তো বেহুস হবার দশা।শাফিনকে নীল স্যুটে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল। সাফিনা মনে মনে ভাবল নীল অনুর পছন্দের রং ছিল যখনই শাফিনের জন্য কাপড় কিনত তার নীল রংয়ের কিছু না কিছু থাকতোই। শাফিনের ফর্সা গায়ে নীল রংটা মানাতো বেশ।

রাত নয়টার সময় তারা বের হল পার্টির উদ্দেশ্যে। প্রায় সাড়ে নটার দিকে তারা হল রুমে পৌঁছালো।হলরুমে পৌছেই এরা দৌড়ে গিয়ে একটা ছেলেকে টাইট ভাবে হাগ করল ছেলেটাও তাকে বিশ্রী ভাবে জড়িয়ে ধরল। যেটা শাফিনের মোটেও ভালো লাগলো না।

ইরার ডাকে শাফিন সেদিকে এগিয়ে গেল। সে তাকে পরিচয় করিয়ে দিল অন্য পাশে থাকা ব্যক্তিটিকে ব্যক্তির সাথে।

ইরা: শাফিন মীট মাই ফ্রেন্ড আয়াজ। এন্ড আয়াজ(শাফিনের হাতে হাত রেখে, আয়াজের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে) হি ইজ মাই ফিয়ান্সে শাফিন। Isn’t he so handsome and good looking.

আয়াজ বাঁকা হেসে শাফিনের সাথে হাত মিলালো তারপর ইরাকে বলল,

আয়াজ: ইয়াহ তোমাদের দেখে যে কেউ বলবে মেড ফর ইচ আদার। হি ইজ এ চার্মিং গাই এন্ড ডিভোর্সি অলসো। সরি টু সে বাট সত্যিটাই বললাম।

আয়াজের কথা শুনে ইরার মুখের হাসি মিলিয়ে গেল আর শাফিন চরম অপমানিত বোধ করলো। সে ইরার দিকে তাকিয়ে “তোমরা কথা বলো আমি আসছি” বলে চলে গেল বার সাইডে।

এ কথাটা কি ওর সামনে বলা খুব প্রয়োজন ছিল আয়াজ আমি তো জেনে শুনেই ওর সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছি তাহলে কেন অপমান করলি। তুই জানিস ও কতটা হাট হয়েছে?

আয়াজ বাঁকা হেসে ইরাকে বলল কুল বেবি কুল যা সত্যি তাই বলছিলাম সে কষ্ট পাবে জানলে বলতাম না কিন্তু একটা কথা ভেবে দেখ ওর আগে বিয়েটাও ছিল প্রেমের বিয়ে সেখানে দুই বছর রিলেশন এর পর বিয়ে করল আর বিয়ের দুই বছর এই ভালবাসার সব শেষ হয়ে গেল। আর তোদের রিলেশনে বয়স মাত্র দুমাস তোকে যে সে দুই মাস ইউজ করে তার প্রথম স্ত্রীর মতো ফেলে দেবে না তার কি ভরসা আছে? বলেই সে চলে গেল অন্যদিকে তার কাজ যতটুকু ছিল সে করে ফেলেছে বাকিটা ইরা নিজেই করবে।

আয়তের কথাগুলো শুনে ইরা ভাবনায় পড়ে গেল আয়াজের কথাগুলো ফেলে দেওয়ার মতন নয় যেখানে দুই বছরের ভালোবাসা টিকলো দুই বছর তাহলে তাদের দুই মাসে ভালোবাসা আর কদিনই বা টিকবে।সে অনুর গায়ে হাত তুলতে দুমিনিট ভাবলো না এমনকি ভরসা আছে কদিন পর তারা একই অবস্থা হবে না। তার শাফিনের সাথে কি আগানো উচিত? না কি সে বেশি ভাবছে। শাফিন খুব ভালো ছেলে অনু তার যোগ্য ছিল না তাই সে তাকে ছেড়ে দিয়েছে কিন্তু ইরার তো সব যোগ্যতা আছে তাহলে তাকে কেন ছাড়বে ভেবেই আয়াজের বলা কথাগুলো মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলল। তারপর শাফিনের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল…

চলবে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *