The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 87

সে রাত আরাভ ইয়ারাবী মেয়ের চিৎকারে ঘুমাতে পারেনি।ইয়ারাবী দাদাকে ডাকতে ডাকতে মাঝে মাঝে কেঁদে উঠছিলো।আরাভ আর সহ্য করতে না পেরে উঠে বসে পড়ে।ইয়ারাবী মেয়েকে ঘুম পাড়াচ্ছে।ওর চোখে ঘুম ঘুম ভাব। আরাভ ও পাশে শুয়ে ইয়ারাবীর সাথে মেয়ে কে ঘুমপাড়াতে থাকে।কিছুসময় পর আয়রানা ঘুমিয়ে গেলে ইয়ারাবী আরাভের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন আরাভ অফিস থেকে জলদি বের হয়ে আকরাম আজহারের বাসার জন্য বেরিয়ে পড়লো ফেন্সিকে নিয়ে।আকরাম আজহার আরাভকে দেখে হেসে ফেলেন।
.
.
-কেমন আছো আব্বু?
-এই তো আঙ্কেল আলহামদুলিল্লাহ। আপনারা কেমন আছেন।
-ভালো আব্বু।আয়রানা দাদুমনি কেমন আছে?
-ভালোই আছে।দাদা বলতে শিখেছে মেয়েটা।
-ভালোই রোয়েন ভাইকে খুব পছন্দ ওর।তা ইয়ারাবী মামনি ভালো আছে?
-এই তো ভালোই।
.
.
এদিকে সাদিয়া আজহার আরাভকে দেখে ভীষন খুশি হন।হাতের কাজ ফেলে আরাভের পাশে এসে বসে পড়েন।
.
.
-ভালো আছো আরাভ?
-এইতো আন্টি।আপনি কেমন আছেন?
-ভালো।তা রোয়েন ভাই আর রুহী ভাবি কেমন আছেন?
-ভালোই।আপনাদের কাছে একটা কথা ছিলো আমার।
-বলো আব্বু।নড়ে চড়ে বসেন আকরাম আজহার আর সাদিয়া আজহার।
-অর্পন যেহেতু বিজনেসে মন দিয়েছে।ওর বয়স ও হয়েছে।এবার আমরা ওর বিয়ের ব্যাপারে ভাবতে পারি।
-আমরা মেয়ে দেখা শুরু করি।তুমি ও বড় ভাই ওর। তোমার চোখে কোন ভালো মেয়ে থাকলে আমাদের বলো।
-ওটা করতে হবেনা।অর্পন একজনকে খুব পছন্দ করে।মেয়েটাও বেশ ভালো।
-কে সে?অর্পন তো আমাদের কিছু জানায়নি।
-অর্পন আমাকে জানিয়েছে।আর বলেছিলো আপনাদের ও ব্যাপারটা জানাতে।
-তা বাবা মেয়ের নাম কি?
-ফেন্সি।
-হোয়াট!!! রেগে গেলেন দুজনে।
-আমার পুরো কথাটা শুনুন।ফেন্সির সাথে আগে দেখা করুন তারপর যেকোন ডিসিশন নিন।অর্পন!!!!
.
.
সাথে সাথে সবাইকে অবাক করে দিয়ে অর্পন ফেন্সিকে নিয়ে ঘরে প্রবেশ করলো।আকরাম আজহার আর সাদিয়া আজহার দাঁড়িয়ে গেলেন ফেন্সিকে দেখে।ওরা ভীষন অবাক ফেন্সিকে দেখে।আগের ফেন্সি আর এখনের ফেন্সির মাঝে আকাশ পাতাল তফাৎ।সেদিন যেমন ফেন্সি মিনি জিন্স প্যান্ট আর হালকা পেট দেখানো টিশার্ট পরে এসেছিলো আর আজ সেই মেয়েটি শাড়ী পরে এসেছে।মাথায় ঘোমটা দেয়া ওর।ব্লাউজ কুনুই পর্যন্ত।
অর্পন আর ফেন্সি পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে।
ফেন্সি আলতো পায়ে হেঁটে একটু সামনে এগুলো আকরাম আজহার আর সাদিয়া আজহারের।তারপর নিজের হাতদুটি জোড় করে ওদের পায়ের সামনে বসে কেঁদে দিয়ে বলল,
.
.
-যা করেছিলাম এর মাফ হয় না কখনো।কিন্তু আপনারা বাবা মা।বড় হৃদয়ের মানুষ আপনারা।প্লিজ মাফ করে দিন।
-উঠো ফেন্সি।সাদিয়া আজহার বলে উঠেন।
-ধন্যবাদ আন্টি।ফেন্সি উঠে দাঁড়ায়।
-অর্পন ওকে সোফায় বসতে বল।বলে উঠেন সাদিয়া আজহার।
.
.
অর্পন ফেন্সিকে সোফায় এনে বসায়।ওনারা ফেন্সির সাথে একটু কথা বলে ওকে নিজেদের ঘরে থাকার জন্য বললেন।ফেন্সিকে তারা কয়েকদিন দেখে তারপর নিজেদের মতামত জানাবেন।কিছু সময় সেখানে কাঁটানোর পর বেরিয়ে এলো।ঘরে ফিরে আয়রানাকে রুহীর কোলে পেলো আরাভ।মেয়েটা দাদীর কোলে খেলছে।তবে ওর চোখ জোড়া বলছে একটু আগে খুব কাঁদছিলো।
.
.
-আসছিস বাবা?
-জি মা।ও কাঁদছিলো?
-আর বলিস না।তোর বাবাইয়ের কোলে এতসময় ছিলো।ওর কাজ এসে পড়েছে হাসপাতালে।সেজন্য বেরিয়ে পড়তেই কাঁদতে লাগলো।আর চিৎকার করে দাদা ডাকছে আমার দাদুটা।নাতনীর গালে চুমু খেলো রুহী।
-মা কাল রাত থেকেই দাদা ডাকছে।
-আরাভ বাবা ফ্রেশ হয়ে নে।খাবার দিচ্ছি।
-মা আজহার আঙ্কেলের ঘরে গিয়েছিলাম।তো ওনারা খাওয়ালেন।
-ওনার বাসায় হঠাৎ?
-অর্পনের বিয়ের কথা বার্তা চলছিলো।
-তাই নাকি?মেয়েটা কে?
-ফেন্সি মা।
-তা ওনারা রাজি?
-এখন পর্যন্ত না।তবে হয়ে যাবেন।
-ওহ আচ্ছা।যা রুমে যা।
-জি মা।মেয়েকে একটু আদর করে সিড়ি বেয়ে উঠে গেলো আরাভ।
.
.
রুমে ঢুকে ইয়ারাবীকে না পেয়ে কিছুটা চিন্তিত হয় আরাভ।আশেপাশে তাকিয়ে রুমে আসতেই পিঠে ঝাঁপিয়ে পড়লো কেউ।আরাভের গলা জড়িয়ে ওর গালে শব্দ করে চুমু খাচ্ছে পাগলী বৌটা।
.
.
-ইয়ারাবী নামো।ফ্রেশ হবো।
-একদম চুপ।আমি চুমু খাচ্ছি দেখছেননা।
-গায়ে ময়লা ইয়ারাবী।
-আমার কাজ করতে দিন আমাকে।
.
.
ইয়ারাবী নিজের কাজে ব্যাস্ত হয়ে রইলো।আরাভ ওকে বিছানায় ফেলে ওর ওপর নিজের ভর ছাড়লো।তারপর ইয়ারাবী গালে কপালে ইচ্ছেমতো চুমু খেয়ে ওর গলায় মুখ ডুবায়।ইয়ারাবী চোখবুজে আরাভের স্পর্শ গুলো উপভোগ করছে।কিছুসময় পর সরে এলো আরাভ।ইয়ারাবীর পেটে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।ইয়ারাবী কতক্ষন এভাবে শুয়েছিলো বলতে পারবেনা।যতসময় লোকটার স্পর্শ পাচ্ছিলো নিজের মাঝেই ছিলো না ও।
,
,
,
,
,
এদিকে আর্ভিনকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছিলো কয়েকদিন।আরাবীর শরীরটা ও খারাপের দিকে যাচ্ছে।ডেলিভারির সময় ও ঘনিয়ে এসেছে।আর্ভিন এখন ঘর থেকে ও বের হয়না।আরাবীর পাশাপাশি থাকছে প্রত্যেকটা সময়।আরাবী এখন আর সেভাবে চলা ফেরা করতে পারেনা।বেশ বড় হয়েছে ওর পেটটা।আর্ভিন আরাবীকে নিয়ে শুয়ে আছে।আরাবীর পেটে চিনচিনে ব্যাথা হচ্ছে।বেশ শীত পড়ে গেছে।আরাবী চুপচাপ আর্ভিনের বুকে লেপ্টে রইলো।ব্যাথাকে তেমন পাত্তা দেয়নি ও।
সকালে ও পেইন হচ্ছিলো। তারপর ও নিজের কাজ শেষ করেছে ও।দুপুরের দিকাটায় লাঞ্চ সেড়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই প্রচন্ড পেইন শুরু হয়ে গেলো।আরাবী কাঁদতে শুরু করেছে।অবস্থা বেগতিক দেখে অার্ভিন কে কল দিলো একজন মেইড সার্ভেন্ট।আর্ভিন ঘরে এসে আরাবীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো।সেখানে কিছু সময়ের মাঝে আরাভ ইয়ারাবী আয়রানা আর বাকি সবাই চলে এলো।রুপন্তী রেহান ও এসে গেছে।রোয়েন ডাক্তারের সাথে কথা বার্তা বলছে।ডাক্তার রোয়েনের স্টুডেন্টদের মধ্যে একজন।ডাক্তার রোয়েনের সাথে কথাবার্তা ঠিক করে নরমাল ডেলিভারির কেবিনে ঢুকে গেলো।
কিছুসময় অতিবাহিত হওয়ার পর নার্স একটা বাবুকে নিয়ে বেরিয়ে এলো।তার মুখে উজ্জ্বল হাসি।
.
.
-মিঃ আর্ভিন মাহবুব!!!
-আর্ভিন এগিয়ে এলো নার্সের কাছে।আমিই আর্ভিন মাহবুব।
-স্যার আপনার মেয়ে হয়েছে।
.
.
আর্ভিন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।সবাই এসে অার্ভিনের পাশে দাঁড়ায়।আর্ভিন মেয়েকে কোলে নিয়ে জানতে চাইলো আরাবীর কথা।নার্স জানালো আরাবী ভালো আছে।হয়ত কালই রিলিজ পেয়ে যাবে।আর্ভিন মেয়েকে দেখছে।রোয়েন আর রুহী নাতনীকে দেখে ভীষন খুশি হলো।সবাই বাবুকে দেখছে।আয়রানা নতুন বাবুকে দেখে ধরার চেষ্টা করছে।ইয়ারাবী কোনমতে মেয়েকে সামল দিয়ে আরাভের কোলে তুলে দিয়ে ভাগনীকে আদর করলো।
নার্স এসে বাবুকে নিয়ে গেলো কিছুক্ষন পর।সন্ধ্যায় আরাবীকে কেবিনে দেয়া হলো।মেয়েকে কাছে পেয়ে চোখের পানি ছেড়ে দিলো আরাবী।আর্ভিন আরাবী দুজনে মিলে মেয়ে কে দেখছে।বাবুকে আরাবীর পাশেই ছোট্ট একটা খাটে শুইয়ে রাখা হয়েছে।রুহী মেয়ের মাথার কাছে বসে কথা বলছে।রুপন্তী ও পাশে বসে আছে ভাগনীর।আরাভ ভাগনীকে দাঁড়িয়ে দেখছে।মাঝে মধ্যে আয়রানা কে বলছে,
.
.
-আয়ুু দেখো তোমার ছোট্ট একটা আপু এসেছে।
-আয়ুর খেলার সাথী চলে এসেছে আর্ভিন বলল।
.
.
এদিকে আয়রানা বাবুকে ধরতে চাইছে।না পেরে রাগী শব্দ করছে মুখ দিয়ে।
.
.
-আরাভ ধরতে দে ওকে।অসুস্থ গলায় বলল আরাবী।
-না আরাবী আয়ু খাঁমচি দেয়।
-কিছু হবেনা আরাভ খাঁমচি দিবেনা ও।
-বেশি বুঝিস না আরাবী রেস্ট কর।
.
.
এদিকে আরাবী বু বলে নিজের রাগ মেটাচ্ছে।আরাভের গায়ে থুথু লাগতেই চোখ রাঙ্গিয়ে মেয়ের দিকে তাকাতেই ঠোঁট ফুঁলিয়ে কাঁদতে লাগলো আয়রানা।রোয়েন চটজলদি নাতনীকে কোলে নিয়ে বাহিরে গেলো হাঁটতে।রুপন্তী আর রুহী আরাবীর সাথে থেকে গেলো।
পরদিন বিকেলে আরাবীকে রিলিজ দেয়া হলো।আরাবীকে রোয়েনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো।সপ্তাহ খানিক পর আর্ভিনের নম্বরে কল এলো।কল রিসিভ করতেই,,,,,,,
চলবে