The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 78

আরাভ ওটির সামনে দাঁড়িয়ে আছে।ওর মনে এখন শুধু ইয়ারাবীর চিন্তা।বাবুটার এ অবস্থা।আল্লাহ আমার সন্তানকে রক্ষা করো।আরাবী হেঁটে এসে আরাভের কাঁধে হাত রাখে।আরাভ নিজের কাঁধে কারোর ছোঁয়া পেয়ে পিছনে তাকায়।আরাবী ঠোঁটে হাসি টেনে এনে বলল,
.
.
-এতো টেনশন করিস না ভাই।ইয়ারাবী ভালো আছে।
-আল্লাহর কাছে হাজার শোকর।আমার মেয়েটা খুব কষ্ট পাচ্ছে আরাবী।
-ও ভালো হয়ে যাবে।তুই একটু খেয়ে নে।
-ইয়ারাবীর জ্ঞান আসুক।ওকে নিয়ে খাবো।
-অনেক রাত হবে আরাভ।তুই অনেক সময় না খেয়ে আছিস।
-কিছু হবেনা আমার।ও উঠুক।
-ওকে।
.
.
আরাবী আর আরাভ থেকে গেলো হাসপাতালে।দুজনে ওটির বাহিরে দুটো চেয়ারে বসে আছে।কিছুসময় পর নার্স এসে আরাভ আর আরাবী কে উদ্দেশ্য করে বলল,
.
.
-পেশেন্ট কে তিনশত দুই নং কেবিনে শিফট করা হবে।
.
.
আরাবী কে নিয়ে আরাভ কেবিনে চলে এলো।কিছু সময় পর ইয়ারাবীকে হুইল চেয়ারে করে কেবিনে এনে শুইয়ে দিলো।ইয়ারাবীর চোখজোড়া ফুলে গেছে।সুন্দর মুখ খানা ফ্যাকাসে হয়ে গেছে।ইয়ারাবীর মাথায় হাত রাখে আরাবী,
.
.
-কেমন লাগছে তোর?
-মাথা ব্যাথা করছে আপু।
-আরাবী ইয়ারাবীর মাথা আলতো করে চাপতে শুরু করে।
.
.
আরাভ নিঃশব্দে স্ত্রীকে দেখে চলেছে।আরাবী বেশ কিছুক্ষন বোনের মাথা চেঁপে জিজ্ঞেস করে কিছু খাবে কিনা।ইয়ারাবী মাথা ঝাঁকায়।আরাবী এবার আরাভের দিকে ইশারা করলো ইয়ারাবীকে খাওয়াতে।আরাবী বাহিরে বেরিয়ে গেলো ফোনে কথা বলার উদ্দেশ্যে। আরাভ ইয়ারাবীর পাশে বসে।ইয়ারাবী অসুস্থ চোখজোড়া দিয়ে আরাভের দিকে তাকায়।আরাভ ইয়ারাবীর কপালে চুমু দিলো।
.
.
-আমার মেয়ে কই আরাভ।
-ওকে আলাদা একটা কেবিনে শিফট করেছে।
-ওকে দেখবো আমি।
-তুমি আগে সুস্থ হও ইয়ারাবী।তারপর দেখো ওকে।একদম পরী আমাদের বাচ্চাটা।পুরো তোমার মতো।
-ইয়ারাবী চোখ বুজে হাসে।ওকে দেখতে ইচ্ছে করছে আরাভ।
.
.
আরাভ প্লেট খাবার বেড়ে নিলো ইয়ারাবীর জন্য।তারপর ওর সামনে এসে বসলো।ইয়ারাবীর মুখে একলোকমা ভাত তুলে দিলো আরাভ।ইয়ারাবী খেতে লাগে।ইয়ারাবী কে খাইয়ে ওর মুখ মুছে দিলো আরাভ।
.
.
-তুমি খাবেনা?
-হুম খাচ্ছি।
.
.
আরাভ খেয়ে নিলো।আরাবী রুমে আসে।এ কেবিনে আলাদা খাট আর বড় একটা সোফা আছে।আরাভ আরাবীকে বলল,
.
.
-তুই বিছানায় শুয়ে পড়।
-তুই কই শুবি?
-সোফা আছে।
-আরাভ তুই বিছানায় ঘুমা।আমি আছি।ইয়ারাবীকে দেখবো।
-আরাবী বেশি বুঝিস।বিছানায় শুয়ে পড়।আমি আছি তো।
.
.
এক পর্যায় আরাবীকে কোনমতে রাজি করায় আরাভ বিছানায় ঘুমুতে।আরাভ সোফায় এসে শরীর এলিয়ে দিলো।ইয়ারাবী বিছানায় শুয়ে আরাভ কে দেখছে।এভাবে দেখার মাঝে বেশ খানিকটা সময় পার হয়।আরাবী ঘুমে কাতর।আরাভ হেঁটে এসে ইয়ারাবীর পাশে বসলো।ইয়ারাবী আরাভের শার্টের কলার খাঁমচে নিজের কাছে টেনে আনলো।আরাভ নিজেকে কোনমতে সামলিয়ে নিলো।
.
.
-চুমু দিন।
-আরাবী আছে।
-আমার কি?দিন চুমুৃ।
.
.
আরাভ হেসে ইয়ারাবীর গালে কপালে চুমু দিয়ে ওর গালে ঠোঁট ছোঁয়ায়।তারপর ওর গলায় ঠোঁট ডুবায়।হঠাৎ পাশে খাট নড়ে উঠে আরাভ সরে এলো ইয়ারাবীর কাছ থেকে।ওরা খেয়াল করলো আরাবী ঘুমের মাঝেই নড়ছে।আরাভ ইয়ারাবী দুজনে হেসে দিলো।এদিকে বাবুকে পাইপের মাধ্যমেই খাওয়ানো হচ্ছিলো।দুইদিন পেরিয়ে গেলো।আরাভ ইয়ারাবীকে নিয়ে ওদের মেয়ের কেবিনে এলো।ইয়ারাবী কেঁদে দিয়েছে।বাবুকে ছুঁতে পারছেনা ও।
.
.
-ওর হাত পায়ের আকার একটু বেড়েছে।
-আগে আরো ছোট ছিলো?
-হুম।একদম পাখির হাত পায়ের মতো।
.
.
ইয়ারাবী কাঁদছে বাবুকে দেখে।আরাভ ইয়ারাবীর কান্না বন্ধ করার জন্য বলল,
.
.
-আমাদের পরীর টার কি নাম রাখবে ইয়ারাবী।
-আমি ঠিক করেছিলাম।
-কি?
-আয়রানা চৌধুরী।
-বাহ চমৎকার।তবে ডাকনাম রাখতে হয়।
-হুম।ওকে তো আমরা খুব ভালোবাসবো আরাভ।
-হুম।তাহলে কি রাখবে আদর?
-হুম।
-আয়রানা চৌধুরী আদর আমাদের পরী মাটার নাম।
.
.
আরাভের বুকে ইয়ারাবী মাথা রাখে।সাতটাদিন পার হয়ে গেলো।ওরা বাবুকে নিয়ে ঘরে এলো।আরাবী আর্ভিন রুপন্তী রেহান সবাই এলো।সবাই বাবুকে ঘিরে ধরে আছে।রোয়েন নাতনীকে কোলে তুলে নিলো।রেহান নাতনীকে আদর করছে।ইয়ারাবীর পাশে বসে আছে আরাবী।আর্ভিন এসে বলল,
.
.
-সবার জন্য একটা খবর আছে।
-কি আর্ভিন?জিজ্ঞেস করে আরাভ।
-আমি বাবা হতে চলেছি আরাভ।
.
.
আরাবী লজ্জা পেয়ে মায়ের পিছে মুখ লুকায়।
ইয়ারাবী বোনকে জড়িয়ে ধরে বলল,
.
.
-কংগ্রাচুলেশনস আপু।
-থ্যাংকস ইয়ারাবী।
.
.
রুহী রোয়েন আর সবাই ভীষন খুশি হলো।এভাবে একটা খুশির সংবাদ পেয়ে যাবে ভাবতেই পারেনি ওরা কেউ।রুহী রুপন্তী আরাবীকে আদর করতে শুরু করে।এটা ওটা বলতে থাকে।
আরায়না ঘরে আসার দুদিন পর ঘরে মিলাদ রাখা হলো।ঘরে সবাই এলো।হুজুর কুরআন শরীফ পড়ছেন।এতিম খানায় মিষ্টি দেয়া হয়েছে। রোয়েন ঘরের দিকটা সামলাচ্ছে। রেহান আর আরাভ এতিম খানা আর বৃদ্ধাশ্রমে মিষ্টি দিচ্ছে।ঘরে ও মাদ্রাসার ছেলেরা ও এসেছে।সময় গুলো চলে যেতে থাকে।যেতে থাকে আরাভ ইয়ারাবীর সাথে একমাত্র কন্যা আরায়নার সময় গুলো খুব ভালো ভাবে।আরাভ অফিস থেকে খুব জলদি ফিরে আসতো।
ফিরেই মেয়ের সাথে দুষ্টুমি শুরু করতো।আয়রানা বাবাকে একটু বেশি ভালোবাসতো তবে দাদার সাথে ওর ক্লোজনেস খুব বেশি ছিলো।রোয়েন ঘরে এসে একটু কথা বললেই আরায়না ছটফট শুরু করতো।মাথা ঘুরিয়ে হাত পা ছিটাতো।রোয়েন কোলে না নেয়া পর্যন্ত ওর শান্তি হতোনা। আরাভ মেয়ের সামনে বসে কোলে না নিলে কান্না শুরু করতো।রুপন্তী রেহানের সাথে ও ঘনিষ্ঠতা ছিলো খুব।ভীষন আদরে ছিলো আরায়না।তবে রাতে ও কেঁদে উঠলে কখনো ইয়ারাবী উঠতো আর কখনো আরাভ।আবার কখনো রুহী এসে কোলে করে নিয়ে যেতো।
.
.
.
এদিকে ইয়ারাবী অনেকদিন বের হতে পারছিলো না।খুব বোরিং হচ্ছিলো ও।তবে বের তো হওয়া সম্ভব ও নয়।বাবু খুব ছোট।তাই আরাভ সেদিন দুটো সিম এনে ইয়ারাবীকে দিলো।আর নিজের ফোনে ঢুকালো।ইয়ারাবী ভীষন অবাক।
.
.
-এগুলো কেন?
-পরে দেখবে কেন এনেছি।
-ওহ।
.
.
পরদিন সকাল আরাভ অফিসে চলে গেলো।ইয়ারাবী রুহী বাবুকে নিয়ে বসে আছে।রুহী বাবুকে কোলে করে এটা ওটা বলছে।বাবুকে চুমু খাচ্ছে কখনো কখনো।তখনই ফোন আসে ইয়ারাবী তবে একটি আননোন নম্বর থেকে।ইয়ারাবী ফোন রিসিভ করে কানে রাখে,
অপর পাশ থেকে একটা গান শুনতে পাচ্ছে ও,
.
.
-দিল কাহে কেয়া রাজ হ্যা জানে কেয়া কারগায়ে, জ্যাসে আন্ধেরো মে তুম জানে কিউ ভারগায়ে,,,,,,,
-হ্যালো!!অবাক হয় ইয়ারাবী।
-হ্যালো!!
.
.
ইয়ারাবী খাট থেকে নেমে বেরিয়ে এলো।তারপর অবাক হয়ে বলল,
.
.
-আরাভ আপনি?
-শশশ তুমি আমাকে চিনোনা আমি ও তোমায় চিনিনা।একে অপরের জন্য অপরিচিত আমরা।
-মানে?
-নতুন করে প্রেমে পড়ি চলো।
-জি!!!!”ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি ইয়ারাবীর।
-জি।এখন না আমি তোমার হাজবেন্ড না তুমি আমার ওয়াইফ।
-হুম।তা আপনি আমার কেউ নন এখন।তাহলে কথা বলবো কেন?অপরিচিত কারোর সাথে কথা বলিনা।
.
.
কল কেঁটে দিলো ইয়ারাবী।তারপর ঠোঁট টিপে হেসে রুহীর কাছে এলো।তারপর মেয়ের মুখে চুমু খেলো।আবার ও ফোন বাজছে।আরাভ সেই নম্বর থেকে আবার কল করছে।
কল ধরছেনা ইয়ারাবী।নম্বর দেখে ঠোঁটের কোনা দিয়ে হেসে আবার ও বাবুর দিকে তাকায়।
.
.
-কে ফোন করছে আম্মু?
-না মা কেউনা।(এতোদিনে ইয়ারাবী রুহীকে মা আর রোয়েনকে বাবা বলতে শুরু করেছে)।
.
.
বাবু ঘুমিয়ে গেলে রুহী বেরিয়ে গেলো।ইয়ারাবী ফোন হাতে নিতেই আরাভের মেসেজ পেলো,
.
.
-এতো বার কল দেয়ার পর ও ফোন ধরলেননা যে?
-আমি স্ট্রেঞ্জারদের সাথে কথা বলিনা সরি।
-বন্ধুত্বটাই করবো জাস্ট।কল টা ধরুন।
-ইয়ারাবী ব্ল্যাংক মেসেজ পাঠায়।
-মৌনতা কিন্তু সম্মতির লক্ষন।
.
.
খানিক পরই আরাভের কল এলো।তারপর শুরু হলো অপরিচিতদের মতো ফোন আলাপ।কথা চলতে থাকলো।বিকেলে আবার ও আরাভ কল দিলো নতুন নম্বর থেকে।
কথা বলার মাঝে আরাভ বলল,
.
.
-আপনার সাথে পরে কথা বলছি।ঘরে এসেছি আমি।
-ওকে বায়।
.
.
কিছু সময় আরাভ ফিরে এসে ইয়ারাবীকে জড়িয়ে ওর কপালে চুমু দিলো।
.
.
-মিঃ স্ট্রেঞ্জার আপনি আমাকে এভাবে চুমু খেলেন কেন?
-ঘরে আমার বৌ তুমি।আমার জান।
চলবে