The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 77

ফেন্সি আরাভকে ওর বেডের পাশের চেয়ারটায় বসায়।আরাভ কিছুটা রেগে ফেন্সির দিকে তাকায়।নিজের হাতটা সরিয়ে নিলো।ফেন্সি মাথা নিচু করে বলল,
.
.
-আরাভ তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
-ক্যারি অন।
-আমি অর্পনকে সত্যি খুব ভালোবাসি।এটা সত্যি ওর সাথে ডিলটা করা ওকে ফাঁসানোর জন্য ছিলো কিন্তু ওকে ভালোবাসি আমি।আর ঐদিন বিয়ারে নেশা দ্রব্য মিশানোর কথা ছিলো স্যাম্পেইনে না।তাই ওকে স্যাম্পেইনটা দেই বিয়ার সরিয়ে।কিন্তু আমার বাবা স্যাম্পেইনে নেশা দ্রব্য মিলিয়েছিলো।আর ভিডিও করবে সেটা জানতাম না আমি।আমার সাথে ধোঁকা করেছে ওরা।আমি ওদের প্ল্যান জানি।
-কি প্ল্যান?ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে আরাভ।
.
.
ফেন্সি আরাভকে প্ল্যানের কথা জানায়।আরাভ উঠে দাঁড়ায়।তারপর ফেন্সির দিকে তাকায়,
.
.
-এখানে থাকো আমি আবার আসবো।একটা জরুরি কাজ করতে হবে।আসি!!
-ওকে।
.
.
আরাভ বেরিয়ে গেলো।কিছু গোপন ফাইল বানাবে।রাতে ঘরে ফিরে আসে আরাভ।রুহীর সাথে গল্পে মেতে ছিলো ইয়ারাবী।রুহী ল্যাপটপে ইয়ারাবী কে নিয়ে একটা মুভি দেখছিলো।আরাভের ফোনের কথার শব্দ শুনতে পেরে ইয়ারাবী সার্ভেন্টকে কফি পাঠাতে বলে রুমে এলো।ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ পেয়ে ইয়ারাবী বুঝতে পারলো আরাভ ফ্রেশ হচ্ছে।ইয়ারাবী আরাভের কাপড় চোপড় ঠিক করে বিছানায় গুছিয়ে রাখলো।শরীরটা এখন একটু ও ভালো লাগেনা।পায়ে খুব ব্যাথা হয় এখন।ইয়ারাবী পা উঠিয়ে সোজা হয়ে বসতে চেষ্টা করতে থাকে।হঠাৎ আরাভ এসে পাজোড়া খাটে উঠিয়ে দিলো।তারপর ইয়ারাবীর পিছনে একটা বালিশ দিয়ে ওকে হেলান দিয়ে বসালো।ইয়ারাবী স্বামীর দিকে ভিজা চোখে তাকায়।আরাভ উঠে দাঁড়ায়।তারপর ইয়ারাবীর কাছে এসে ওর কপালে চুমু খায়।ইয়ারাবী আরাভের উন্মক্ত বুকখানির দিয়ে চেয়ে আছে।সেখানে বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে।আরাভ উঠে কাপড় পাল্টে নিলো।সার্ভেন্ট কফি নিয়ে এলো।আরাভ কফি খাওয়ার মাঝে ইয়ারাবীর পায়ের পাতা চেঁপে দিলো।বেশ আরাম হচ্ছিলো ইয়ারাবীর।
একসময় ঘুমিয়ে গেলো ইয়ারাবী।আরাভ উঠে ব্যালকনি তে চলে এলো।ফোন নিয়ে রাফি আশরাফ কে কল দিলো। রাফি আশরাফ Eagle Mafia lord.বেশ পাওয়ারফুল মাফিয়া লর্ড ও।তবে আরাভের সাথে বেশ ভালো কানেকশান আছে ওর।এমনকি রাফির মতো আরো অনেক পাওয়ারফুল মাফিয়া লর্ডদের সাথে আরাভের ভালো সম্পর্ক আছে।রাফির নম্বরে কল দিলো আরাভ।অপরপাশ থেকে বেশ গম্ভীর একটা কন্ঠে কেউ কথা বলে উঠে।
.
.
-হ্যালো আরাভ হোয়াটস আপ ম্যান!!
-গুড।তোমার কি খবর?
-এইতো আছি।জানোই তো প্রচুর ব্যাস্ত থাকতে হয়।
-আই নো। শুনো কাল তোমরা আমার সাথে দেখা করো।একটা মিটিং করবো।কথা আছে।
-ওদের সাথে কথা বলে জানাবো নে।ওকে?
-বাট প্লিজ একটু জলদি।
-ইয়াহ সিওর।
.
.
আরাভ এসে ইয়ারাবীর পাশে শুয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে।সেদিনই রাফি জানায় ওরা কাল মিটিং করবে আরাভের সাথে।কথা মতো পরদিন সবাই এলো।ওদের গোপন স্থানে রাফির মতো আর ও অনেক শক্তিশালী মাফিয়ারা এলো আরাভের সাথে মিটিং করতে।
আরাভ সবার সামনে বসে আছে।
.
.
-ফারহান আয়মান খান,তার বাবা হানিফ খান আজ মিটিং এর মুখ্য বিষয় ওনার।
-ওকে।কাহিনী কি আরাভ?বলে উঠে বিজয় রায়।
-কাহিনী হলো আমার ভাই অর্পন হানিফ খানের মেয়ে ফেন্সির সাথে রিলেশনে আছে।তাদের একটা ডিনার এ্যারেঞ্জমেন্ট করা হয়।সেই ডিনারে ওদের ওয়াইনের সাথে নেশা ঔষধ দেয়া হয়।যার কারনে ওরা ইন্টিমেট হয়।এবং ওদের সেই সময়টার ভিডিও হয় হানিফ খানের লুকিয়ে রাখা ভিডিও ক্যামেরায়।এবং সেই ভিডিপ দিয়ে ওরা আমাকে আর আমার ছোট ভাইকে ব্ল্যাকমেইল করছে সেগুলো নেটে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে।কি করা যায় তোমরা বলো।
-ফারহানকে চিনি আমি।ওর দলের এক লোকের সাথে পরিচয় আছে আমার।সে লোক হ্যাকার।তুমি ওর সাথে কথা বলে ভিডিও সব ডিলিট করাতে পারো।বলে উঠে রাফি।
-ওকে কল করে এখানে আসতে বলো।
-আচ্ছা।রাফি কাকে যেন কল দিয়ে আসতে বলল।
-কিছু সময়ের মাঝে ও চলে আসবে আরাভ।
.
.
আধঘন্টার মাঝে একজন লোক এলো কালো মোটা করে।রাফি বলল,
.
.
-আরাভ এই যে ও হলো সালাম ব্যাপারী।ওর কথাই বলেছি।
.
.
আরাভ লোকটার দিকে এগিয়ে এলো।তারপর বলল,
.
.
-ফারহানের ল্যাপটপ ফোন সব কিছু থেকে অর্পন আর ফেন্সির ভিডিও ডিলিট হওয়া চাই।
-ফারহানের জন্য কাজ করি আমি।
-সেটা আমি জানি।আর তোমাকে দিয়ে কাজটা হবে।
-আমি কি পাবো তাহলে?
-আরাভ এবার পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে দিলো সালামের হাতে।হয়ে যাওয়া চাই।কাজ হয়ে গেলে বাকি পঞ্চাশ হাজার ও পেয়ে যাবে।
-ওকে স্যার।রাতে কল দিবো আমি।
-থ্যাংক ইউ।
.
.
সালাম বেরিয়ে গেলো।আরাভ অফিসে চলে যায়।সেদিন রাতেই ফারহানের মোবাইল আর হানিফ খানের ফোন ফরম্যাট করে দিলো সালাম। এমনকি ওদের ল্যাপটপের ভিডিও গুলো ও ডিলিট করে আরাভ কে কল দিলো সালাম।
.
.
-হ্যালো সালাম বলো।
-স্যার কাজ হয়ে গেছে।ওদের ল্যাপটপের সব কিছু ডিলিট আর ফোন গুলো ফরম্যাট হয়ে গেছে।
-থ্যাংকস।কাল আমার অফিসে এসে টাকা নিয়ে যেও।
-ওকে স্যার।
.
.
ফারহান রুমে আসে বেশ রাত করে।ফ্রেশ হয়ে ফোন নিয়ে খাটে শুয়ে পড়ে।ভালোমতো খেয়াল হতেই বেশ অবাক হয় ফারহান।ওর ফোন খালি কিছুই নেই।ফোন নম্বর গুলো ও গেছে। মাথায় বাজ পড়লো ফারহানের।চটজলদি ল্যাপটপ বের করে।সেখানে ও একই অবস্থা।বেশ চিন্তায় পড়ে গেছে ও।কি করবে এখন।কাল আরাভ ওকে শেয়ার দিবে।আর এখন এ ভিডিও গুলো নেই।পরক্ষনেই ফারহান ভাবলো ভিডিও নেই ব্যাপারটা খালি ও নিজে জানে আরাভ নয়।তাহলে ওর কাজ এখনো হতে পারে।
এদিকে আরাভ ফেন্সিকে নিয়ে এলো নিজের ঘরে।ইয়ারাবী ফেন্সিকে দেখে ভীষন অবাক।ও কোনমতেই মেনে নিতে পারছেনা ফেন্সির আগমন।আরাভ ফেন্সিকে গেস্ট হাউজে থাকতে বলে।রুহী ফেন্সির জন্য সুপ রান্না করে নিয়ে গেছে ফেন্সির রুমে।
আরাভ রুমে আসতেই ইয়ারাবী আরাভকে টেনে ধরলো,
.
.
-ওনি এখানে কেন?
-এক্সিডেন্ট করেছে।
-আময়দের এখানে কেন?ওনার ঘরে যায়নি কেন?
-এতো কিছু বলতে পারবোনা।জাস্ট জেনে রাখো আমি তোমার থাকবো সারাজীবন।
-সত্যি!!!
-এনি ডাউট?ভ্রু কুঁচকায় আরাভ।
-একদম না।
.
.
ইয়ারাবী আরাভকে জড়িয়ে ধরলো।আরাভ ও বৌকে জড়িয়ে নিলো।
.
.
.
.
.
পরদিন সকালেই ফারহান এলো আরাভের কাছে।আরাভ হেসে বসতে বলল ফারহানকে।ফারহান একটা চেয়ারে বসে বলল,
.
.
-পেপারস!!
-আরাভ একটা ফাইল এগিয়ে দিলো।সাইন ইট।
ফারহান পড়া ছাড়াই সাইন করলো।আরাভের মুখে শয়তানি হাসি।আসলে পেপার গুলো হলো এমন আমি ফারহান আয়মান খান নিজের বোন ফেন্সি খান আর আরাভ রোয়েন চৌধুরীর ছোট ভাই অর্পন আজহারের অন্তরঙ্গের ভিডিও করে আরাভ আর অর্পনকে ব্ল্যাকমেইল করে সম্পত্তি হাতানোর চেষ্টা করেছি।এমতাবস্থায় আমার জন্য আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করা হলে সেই শাস্তি মাথা পেতে নিবো আমি কোনরকমের প্রতিবাদ করা ছাড়া।আরাভ বাঁকা হেসে ফারহানের দিকে চেয়ে আছে।
.
.
-তো আজ থেকে পঞ্চাশ পার্সেন্ট শেয়ার আমার।
-অবশ্যই।তবে ভিডিও ডিলিট হওয়া চাই।
-অবশ্যই। আসি তাহলে।
.
.
ফারহান ফাইল নিয়ে বেরিয়ে গেলো।এদিকে ইয়ারাবী বিকেলের নাস্তা সেড়ে রুমে এলো।ওর কেমন যেন পেট ব্যাথা করছে।ইয়ারাবী পেট চেঁপে ধরে।ধীরে ধীরে ব্যাথা বেড়ে চলছে যেন।ইয়ারাবী খাটে বসে পড়ে।পেট ধরে।এদিকে আরাভ কাজে শেষ করে বেরিয়ে গাড়িতে উঠে বসে।ড্রাইভিংয়ের মাঝে ফোন আসে আরাভের।আরাভ ফোন বের করে দেখে রোয়েন কল করছে।
.
.
-হ্যালো বাবাই বলো।
-বাবা হাসপাতালে আয়।ইয়ারাবীকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছি আমরা।ওর লেবার পেইন উঠেছে।
.
.
কথা শেষ করে দ্রুত গাড়ি ঘুরায় আরাভ।তারপর রোয়েনের হাসপাতালের দিকে গাড়ি ঘোরালো।ইয়ারাবীর আটমাস চলছে।এখনই লেবার পেইন উঠলো।ভয় হচ্ছে আরাভের।
হাসপাতালে পৌছালো আরাভ।সম্পা সার্জারি করবে ইয়ারাবীর।ইয়ারাবীকে বেডে মাত্রই শোয়ানো হয়েছে।আরাভ দেখলো রুপন্তী রেহান ও আছে।আরাবী আর আর্ভিন রাস্তায়।আরাভ দৌড়ে ইয়ারাবীর বেডের কাছে এলো।মেয়েটা কাঁদছে চিৎকার করে।
.
.
-ইয়ারাবী সব ঠিক হয়ে যাবে।
-সময় বেশি নেই আরাভ।আমি মারা যাবো।
-প্লিজ এমন কিছু বলোনা। কিছু হবেনা তোমার।
-আরাভ আপনাকে ছেড়ে থাকতে পারবোনা আমি।
-আই লাভ ইউ ইয়ারাবী।ইয়ারাবীর ঠোঁটে চুমু খেলো আরাভ।
.
.
চারপাশে কি হচ্ছে ওর খেয়াল নেই।ইয়ারাবীকে নিয়ে গেছে ওরা।আরাভ একদম অস্থির হয়ে আছে।হঠাৎ কাঁধে কারোর ছোঁয়া পেলো আরাভ।পিছনে তাকিয়ে দেখলো আর্ভিন।রুপন্তী রুহী কাঁদছে।আরাবী ওদের সামলাচ্ছে।রোয়েন বসে নেই।রেহান রোয়েনের সাথে কই যেন গেছে।
.
.
-ডোন্ট ওয়ারি ইয়াং ম্যান।
-আমার ভয় হচ্ছে আর্ভিন।ওকে জাস্ট আমি চাই।সারাজীবনের জন্য।
.
.
কিছু সময় পর সম্পা বেরিয়ে এলো।সবাই ওর কাছে এলো।আরাভকে সম্পা বলল,
.
.
-আপনার মেয়ে হয়েছে।কিন্তু!!
-কিন্তু কি?
-আটমাসে হয়েছে বাবুটা।ওর হাত পা খুব ছোট।আমরা ওকে আলাদা কেবিনে শিফট করেছি।
-আমার ওয়াইফ!”
-ওনি ভালো আছেন।তবে এখনো জ্ঞান ফেরেনি।
.
.
বাবুর কথায় রোয়েন আরাভের কথা মনে করে।সেদিন আরাভ কে ও ঠিক একই ভাবে আলাদা কেবিনে রাখা হয়েছিলো।আর আজ ওর নাতনী কে।আরাভের চোখে পানি।
.
.
-আমার মেয়েকে দেখবো।
-আসুন।
.
.
আরাভ সম্পার সাথে একটা রুমে এলো।সেখানে বাবুকে রাখা হয়েছে তুলার খাটে।খাটটাকে কাঁচ দিয়ে ঢাকা।হাত পা গুলো একদম ছোট আরাভ কাঁচ চেঁপে ধরলো।
.
.
-আমার মাটা কতোটা কষ্ট পাচ্ছিস তুই!!
-স্যার ও ঠিক হবে।সাত দিন থাকতে হবে এখানে।পাশ থেকে বলল সম্পা।
চলবে