The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 76
সেদিন ঘরে ফিরে আসে আরাভ।চোখজোড়ার নিচ প্রচন্ড লাল বর্ন ধারন করে আছে।তবে চেহারায় রাগ নেই।মলিন লাগছে সুন্দর মুখ খানা।ইয়ারাবী পাকঘর থেকে আরাভ কে দেখতে পায়।রুহীর রান্না দেখছিলো ও।হঠাৎ আরাভ এভাবে আসতে দেখে ইয়ারাবী পানি নিয়ে খুব কষ্টে উপরে এলো।অন্য সময়ে আরাভ ফ্রেশ হতে চলে যেত কিন্তু আজ খাটের ওপর মাথা নুইয়ে বসে আছে আরাভ।ইয়ারাবী আরাভের সামনে এসে পানির গ্লাস ধরলো।আরাভ ঠিক আগের মতোই বসে আছে।
.
.
-আরাভ!!পানি।
.
.
আরাভ ঠিক আগের মতো বসে আছে।কোন সাড়া দিচ্ছেনা ইয়ারাবীর ডাকে।ইয়ারাবী আরাভের পাশে বসে ওর হাত ধরে, তারপর আরাভের গালে হাত ছুঁইয়ে বলল,
.
.
-কি হলো আপনার?কথা বলছেননা কেন?
-আরাভ তাকায় ওর দিকে।আরাভের চেখ জ্বলজ্বল করছে।বলো!!
-মন খারাপ কেন আপনার?চোখে পানি কেন?
-ও কিছুনা।আমি ঠিক আছি ইয়ারাবী।
-আপনি ঠিক নেই।বলেন কি হয়েছে?
-চোখে কি যেন পড়েছে।আর কাজের একটু প্রেশার আছে দ্যাটস ইট।
.
.
ইয়ারাবী আরাভের হাতে পানি দিলো।আরাভ পানি টুকু খেয়ে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।ইয়ারাবী আরাভের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষন তারপর আরাভের বুকে মাথা রাখে।আরাভ ইয়ারাবীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বুকে জড়িয়ে রাখে কিছু সময়।তারপর উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায়।
ইয়ারাবী প্রত্যেকটা সময় স্বামীর আশেপাশেই ছিলো।লোকটা কেমন মনমরা হয়ে আছে।ভালো লাগছেনা ইয়ারাবীর।
রাতের খাবার সেড়ে আরাভ রুমে এসে একটা সিগারেট ধরিয়ে ব্যালকনিতে এলো।ইয়ারাবী নেই রুমে।তাই সিগারেট ধরাতে প্রবলেম হবে না।ইয়ারাবী রুহীর সাথে একটু আধটি কাজ করে রুমে এসে আরাভকে পেলোনা।ব্যালকনির দরজা লাগানো দেখে খানিকটা অবাক হয় ইয়ারাবী।খাটের পাশের জানালা দিয়ে তাকায় ইয়ারাবী।লোকটা ধুমপান করছে আর বাহিরে দেখছে।ইয়ারাবী ব্যালকনির দরজা নক করে।ইয়ারাবীর উপস্থিতি টের পেয়ে আরাভ সিগারেট ফেলে দরজা খুলে আবার ও আগের জায়গায় দাঁড়ায়।
ইয়ারাবী হেঁটে এসে আরাভের পাশে দাঁড়ায়।
.
.
-ঘুমুবেননা?
-আসছেনা।তুমি ঘুমাও।
-আমার ঘুম হবেনা আপনার বুক ছাড়া।
-ইয়ারাবী!!!
-জি।
-আমি কি খুব লোভী?
-না একদম না।হঠাৎ একথা কেন বলছেন?
-এমনি।যাও শুয়ে পড়ো আমি আসছি।
-বলেননা কি হয়েছে আপনার?
-কিছুনা।আসো ঘুমোবে তুমি।
-কিছু লুকাচ্ছেননা তো?
-আরাভ এসে ওকে কোলে নিয়ে বলল চুপ।বললাম কিছু হয়নি।একটু ধমক দিলো আরাভ।
.
.
ইয়ারাবীকে বুকে নিয়ে শুয়ে আছে আরাভ।কিছুসময় পর আরাভ বুঝতে পারলো ওর বুকে কারোর ঠোঁট খুব দ্রুত নিজের অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে।আরাভ চোখ বুজে নিলো।এ যেন অন্যরকম এক অনুভূতি।আরাভ ইয়ারাবীকে সরিয়ে বালিশে শোয়ায়।তারপর ওপর একটু উঁবু হলো।
.
.
-কি করছো টা কি?
-ভালো লাগছেনা আমার।
-তোমার ও কি লাগবে তাহলে?
-কি?
-একটু আগে যা করলে।
-না।
.
.
আরাভ ইয়ারাবীর গলার খাঁজে ঠোঁট চেঁপে চুমু খেতে লাগে।ইয়ারাবী আরাভের গেঞ্জী খাঁমচে ধরে।
.
.
এদিকে পরদিন সকালে আরাভের সাথে দেখা করতে চলে আসেন আকরাম আজহার।আরাভ দুকাপ কফির অর্ডার করে দিলো।
.
.
-অর্পনের কি হয়েছে আরাভ?
-জানিনা আঙ্কেল।
-কাল এসে অদ্ভুত আচরন শুরু করে দিলো।বুঝতে পারছিনা কিছু।
-আমি ও বুঝতে পারছিনা।আঙ্কেল!!
-জি।
-আপনাদের কোম্পানীতে আমার আশি ভাগ শেয়ারের পঞ্চাশ ভাগ কাউকে দিতে চাই আমি।
-দাও।
-যা করছি অর্পনের ভালোর জন্য।
-আমি জানি আরাভ।তুমি অর্পনকে কতোটা ভালোবাসো।
.
.
এদিকে অর্পন আরাভের সাথে দেখা করতে এসে নিজের বাবা আর আরাভের সম্পূর্ন কথা শুনতে পায়।আরাভ কোন অধিকারে ওদের কোম্পনীর শেয়ার আরেকজন কে দিচ্ছে।অর্পনকে না দিয়ে কাকে দিচ্ছে?ভাবতেই রাগ হলো অর্পনের।
কিছু সময় পর আকরাম আজহারকে বের হতে দেখা গেলো।
অর্পন আরাভের রুমে এলো।
আরাভ অর্পনকে দেখতে পেয়ে মলিন হাসলো।
-আপনি আমাদের কোম্পানীর শেয়ার কাকে দিচ্ছেন আমাদের না জানিয়ে?রেগে বলল অর্পন।
-সেটা তোর না জানলে ও চলবে।
-আসলে পর তো পরই হয়।আর আপনি তো রাস্তার ছেলে ছিলেন।যাকে আমার বাবা দয়া করে ঘরে আশ্রয় দিয়েছিলো।এতো বড় কোম্পানীর আশি পার্সেন্ট শেয়ারের মালিক বানালো।আসলে রাস্তার ছেলে তো রাস্তার ছেলেই হয়।
.
.
.
.
.
আরাভ ভাবতে পারছেনা।অর্পন ওকে এসব কি বলছে?আর সহ্য করতে পারেনা আরাভ।উঠে অর্পনের গালে সজোরে চড় বসায়।
.
.
-Enough is Enough. Just shut up orpon.
-সত্যি কথা বলাতে আমার গায়ে হাত তুললেন আপনি?
-সত্যি কথা আমাকে বল।ফেন্সির সাথে কি সম্পর্ক তোর যে এতো জলদি বিছানা পর্যন্ত চলে গেলি।
-হোয়াট!!কি বলেন এসব?
.
.
আরাভের ফোনে ভিডিও টা ফারহান শেয়ার করেছিলো।ফোনটা অর্পনের চোখের সামনে ধরে আরাভ।
এদিকে ঘরের দরজা খোলার শব্দে বাহিরে তাকায় ফেন্সি।চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে।কাজের মেয়ে তুলি দরজা খুলে দিয়েছে।ফেন্সির দিকে একটা ভাতমাখানো প্লেট এগিয়ে দিলো তুলি,
.
.
-আপু খেয়ে নিন।
-বাবা আর ভাইয়া কই?
-বাহিরে গেছে।
.
.
কথাটা শোনামাত্র ফেন্সি আর দেরি করেনি।দৌড়ে পরনের জামায় বেরিয়ে গেলো।পিছন থেকে তুলি অনেক ডাকে।সাড়া দেয়নি ফেন্সি।ওর গন্তব্য আরাভের অফিস।
.
.
-ভাইয়া এই ভিডিও!!
-ফেন্সির ভাই পাঠিয়েছে।কি বলেছে জানিস ওকে পঞ্চাশ পার্সেন্ট শেয়ার না দিলে এই ভিডিও নেটে ছেড়ে দিবে।
.
.
আরাভের দিকে তাকায় অর্পন।এ লোকটা কে কতো কিছুনা শুনালো ও।ওকে বাঁচাতেই শেয়ার দিতে যাচ্ছিলো আরাভ।অর্পন ভাইয়ের পায়ের কাছে বসে পড়ে।তারপর আরাভের পা ধরে বলল,
.
.
-সরি ভাইয়া!!আমাকে মাফ করো।আমি বুঝতে পারিনি।কি করে এতো কিছু বললাম আমি?
-মাফ করে দিয়েছি তোকে।উঠে দাঁড়া।
.
.
অর্পন উঠে দাঁড়ায়।তারপর হানিফ খানের বলা কথা গুলো আরাভকে জানায়।তখনই রুমে কারো প্রবেশের শব্দ পেয়ে পিছনে তাকায় দুই ভাই।ফেন্সি রুমে ঢুকেছে।ঠিক মতো দাঁড়াতে পারছেনা ও।
.
.
-অর্পন তুমি!”!
-এখানে কেন তুই?চিৎকার করলো অর্পন।
-তোমার সাথে কথা আছে আমার।
-তুই চিট বাটপার একটা মেয়ে।শুধু ধোঁকা দিতে জানিস তুই।বের এখান থেকে।
-কি বলছো এসব?
.
.
অর্পন অারাভের ফোন নিয়ে ভিডিও টা ফেন্সির সামনে ওপেন করলো।
ফেন্সি জ্বলজ্বলে চোখ নিয়ে ভিডিও দেখে অর্পনের দিকে তাকায়।ফোন রেখে দেয় অর্পন।তারপর ফেন্সির হাত শক্ত করে চেঁপে ধরলো,
.
.
-কিভাবে পারলি এসব ভিডিও করতে?ছিহ।আবার এসব দিয়ে তোর ভাই আমার ভাই কে আর তোর বাপ আমাকে ব্লাকমেইল করে।তোর পুরো ফেমেলি ফ্রড।তোদের মতো মেয়েদের বিলিভ করা ঠিকনা।রাস্তার মেয়েদের চেয়েও জঘন্য তুই।বের হ।আই হেট ইউ!!!
-প্লিজ অর্পন আমার কথা শুনো।আরাভ!!!প্লিজ তুমি কথা শুনো।
.
.
আরাভ অন্যদিকে তাকায়।অর্পন ফেন্সিকে বের করে দিলো।ফেন্সি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে গেলো।এখন কই যাবে ও?ঘরে যেতে পারবেনা।ওর বাবার লোকেরা খুঁজছে ওকে।পেলে শেষ করে দিবে।ফেন্সি দৌড়াতে শুরু করে।হঠাৎ একটা গাড়ি দেখতে পায় সামনে।তারপর আর কিছু মনে নেই ওর।
ঘন্টাখানেক পর হাসপাতালের বেডে জ্ঞান ফিরে ফেন্সির।মাথা হাত পা প্রচুর ব্যাথায় ভরে আছে।হঠাৎ আরাভকে দেখতে পেয়ে চমকে উঠে ফেন্সি।ফেন্সি এ্যাক্সিডেন্ট করে একটা প্রাইভেট কারের সাথে।ওকে হাসপাতালে ভর্তি করালো গাড়ির মালিক।ফেন্সির ফোনের কল লগে আরাভের নাম্বার পেলো ওরা।তারপর আরাভকে জানালো ফেন্সির কথা।
.
.
-কেমন লাগছে এখন?
-একটু ভালো।
-বিল পে করে দিয়েছি।মেডিসিন কিনে দিয়েছি।নিজ দায়িত্বে ঘরে চলে যাবে।
.
.
বলে আরাভ চলে যেতে নিলে ফেন্সি ওর হাত টেনে ধরলো।
চলবে