The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 61
এদিকে সন্ধ্যা সাত টায় আরাবীর ঘুম ভেঙ্গে গেলো।ঘুমের ঘোর ভালোমতো কাঁটতেই নিজেকে আর্ভিনের বাহুডোরে আবিস্কার করলো।কালো চাদরে ওরা ঢেকে আছে।আর্ভিনের গায়ে কাপড় চোপড় নেই।আরাবী আর্ভিন থেকে সরে আসে।আরাবী জানে যা হবার ছিলো তাই হয়েছে।একয়টা দিন বেশ সংকোচ বোধ হচ্ছিলো লোকটার সাথে কথা বলতে।যার সাথে এতো দিন নাটক করলো,এতো বাজে ব্যাবহার করলো আর আজ সে আপন করে নিলো।আরাবী গায়ে চাদর চেঁপে ওয়াশরুমে এলো।
নিজেকে ফ্রেশ করাতে ব্যাস্ত হয়ে গেলো ও।
আর্ভিনের ঘুম ভাঙ্গলো আরাবী উঠে যাওয়ার এক ঘন্টা পর।আর্ভিনের ঠোঁটের কোনে একটু হাসি।শেষমেষ বৌকে নিজের করতে পেরেছে।
তবে একটা ভয় ওকে জেঁকে ধরেছে এই বিষয়টা আরাবী সহজে নিতে পারবে তো?নাকি আর্ভিনকে আরো বেশি ঘৃনা করবে।কিন্তু কি দোষ আর্ভিনের? বড় নেশা লাগছিলো বৌকে শাওয়ার নিতে দেখে।নিজেকে কিছুতেই আটকাতে পারছিলো না আরাবীকে কাছে পাওয়ার থেকে।কিছু সময়ের জন্য মনে হচ্ছিলো আরাবী রাজি ছিলো।
আর্ভিন আর ভাবতে পারছেনা।চটজলদি ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে আর্ভিন।
আরাবী ডিনার রেডি করছে ওদের। আরাবী আজ শাড়ী পরেছে তাও আবার গাঢ়ো নীল বর্নের।চুল গুলো পিঠের ওপর বিছানো।শাড়ীর আঁচল কোমড়ে গুঁজে রেখেছে আরাবী।বৌ বৌ লাগছে আজ মেয়েটাকে।
আর্ভিনকে একনজর দেখে চোখ নামালো আরাবী।আর্ভিন কিছু বলতে গিয়ে ও পারলোনা।অগত্যা সোফায় বসে নিউজ দেখতে শুরু করে।
খাবার টেবিলে আরাবী কে চুপ দেখতে একদমই ভালো লাগছেনা আর্ভিনের।
-আ’ম সরি তখন যা হলো আসলে,,,,,,,
-ইটস ওকে।আমার একটু সময় দরকার।
আবার চুপ হয়ে গেলো ওরা।
পরদিন সকাল থেকে আরাভের খোঁজ পেলো না ইয়ারাবী।কখনো এমন হয়নি।আজ কই গেলো লোকটা?অন্তত বলে তো যায় কোথাও গেলে।নাহ ইয়ারাবীর ভালো লাগছেনা।সময় যতো গড়াচ্ছে ইয়ারাবীর মাথা ভার ভার লাগছে ততোবেশি।আরাভকে কল দিতেই আরাভ ফোন কেঁটে দিলো।খালামনিকে ও জিজ্ঞেস করতে লজ্জা হচ্ছে ইয়ারাবীর।
দুপুরে ঘরে ফিরে আসে আরাভ লাঞ্চ সেড়ে রুমে এসে ল্যাপটপ নিয়ে বসে পড়ে আরাভ।আরাভের পিছু নিতে নিতেই রুমে চলে এলো ইয়ারাবী।তারপর আরাভের কাশে এসে বসলো ও।আরাভ একমনে কাজ করে যাচ্ছে।
ইয়ারাবী আড় চোখে আরাভকে দেখছে।এতো কিসের কাজ লোকের? কথা ও বলছেনা।উফ সে কি বুঝতে পারছেনা বৌ টা রেগে আছে।সে কি বুঝেনা তাকে সকালে কাছে না পেলে রাগ হয় ওর।তাহলে রাগ কেন ভাঙ্গাচ্ছেনা এই লোক?আরাভের সাদা শার্টের হাতা কুনুই পর্যন্ত গুটানো।বেশ লাগছে ওনাকে।ধুর বেটা খচ্চর কোথাকার কথা বলছেনা।
আরাভকে আড় চোখে দেখতে দেখতেই ভাবছিলো ইয়ারাবী।
শেষ মেষ না পেরে নিজেই কথা বলল ইয়ারাবী?
-হয়েছেটা কি?
-কিছুনা।
-কথা বলছেননা কেন?
-কাজ করছি।
বেশ মন খারাপ হয় ইয়ারাবীর।আরাভের পাশ থেকে সরে এসে বিছানার একপাশে শুয়ে পড়ে ও।আরাভ ল্যাপটপ অফ করে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।তারপর ইয়ারাবীর পাশে শুয়ে ওকে বুকে জড়িয়ে নিলো আরাভ।
|
|
|
|
সন্ধ্যায় আরাভের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে ইয়ারাবীর।আরাভ ইয়ারাবীর দিকে মুখ এগিয়ে এনে বলল,
-জলদি রেডি হও বের হবো।
-কই যাবেন?
আরাভের কাছ থেকে এর উত্তর পাওয়া গেলোনা।ইয়ারাবী উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নিলো।আরাভ ইয়ারাবীকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।গাড়িতে ইয়ারাবী বেশ কয়েকবার জিজ্ঞেস করছিলো কই যাচ্ছে ওরা?আরাভ কিছুই বলেনি।
হঠাৎ গাড়ি থেমে গেলো ওদের।ইয়ারাবী আশেপাশে তাকিয়ে জায়গাটা চেনার চেষ্টা করছে।পাশে কিছু দূরে বড় একটা বাড়ি।
আরাভ গাড়ি থেকে বেরিয়ে ইয়ারাবী কে বের করে আনলো।তারপর ইয়ারাবীর চোখজোড়া রুমালে বেঁধে দিয়ে ওর হাত ধরে বাড়িটির দিকে এগুতে লাগলো।বাড়ির সামনে এসে ইয়ারাবীর চোখ খুলে দিলো আরাভ।বাড়ির বাহিরের দরজায় একটা নেমপ্লেট লাগানো।সেখানে লিখা ”Mayamoyi Niketon”.
স্বামীর দিকে তাকায় ইয়ারাবী।
-এটা কার বাসা?
-আরাভ ইয়ারাবীর কাঁধে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল আমার মায়াময়ীর।
-মায়য়ময়ী কে আপনার?মুখ টিপে হাসছে ইয়ারাবী।
-যার মুখ দেখে সকালের ঘুম ভাঙ্গে।আই লাভ ইউ ইয়ারাবী।তুমি আমার মায়াময়ী বৌ।
ইয়ারাবী সামনে ফিরে আরাভকে জড়িয়ে কেঁদে দিলো।আমি ও খুব ভালোবাসি আরাভ।খুব ভালোবাসি আপনাকে।আরাভ ইয়ারাবীর মাথায় চুমু দিয়ে বলল
-ভিতরে চলো।
ইয়ারাবী চোখ মুছে একটু হেসে আরাভের সাথে ভিতরে এলো।বাড়িটার ভিতর খুব সুন্দর করে সাজানো।বিভিন্ন সৌখিন শোপিজ রয়েছে চারপাশের দেয়াল এটাচড শোকেজ গুলোয়।
-পছন্দ হয়েছে?ইয়ারাবীর কানে ফিস ফিস করে বলল আরাভ।
-হুম।খুব সুন্দর।
-চলো আরো কিছু ওয়েট করছে।
ইয়ারাবীর হাত ধরে আরাভ সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেলো।সেখানে একটা দরজার সামনে দাঁড়ালো ওরা।আরাভ ইয়ারাবীর গালে ছোট্ট চুমু খেয়ে বলল,
-তুমি কি প্রস্তুত আমাদের সোনা বাচ্চাটার রুম দেখার জন্য?
ইয়ারাবী কি বলবে বুঝতে পারছেনা। ও ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।আরাভ দরজা খুলে দিতেই ইয়ারাবী দেখলো রুমটা ভীষন সুন্দর করে সাজানো।পুরো রুম ভর্তি খেলনা।আর দেয়ালে অনেক কিউট কিউট বাচ্চাদের ছবি।ইয়ারাবী আরাভের সামনেই দৌড়ে ভিতরে ঢুকে গেলো।
-ইয়ারাবী!!!আবার দৌড় দিলে রেগে গেলো আরাভ।
পরক্ষনেই চুপ হয়ে গেলো আরাভ।বৌটাকে এতোটা খুশি লাগছে যে না করতে পারছেনা আরাভ নিজেই।ইয়ারাবী দোলনাটা নাড়াচাড়া করছে আর বলছে,
-এখানে ও ঘুমুবে তাইনা আরাভ?
-হুম।
-তখনতো আমি থাকবোনা।ওকে এখানে খেলতে দেখার জন্য।
আরাভ দৌড়ে এসে ইয়ারাবীকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে বলল এ অসভ্যের মতো কথা বলছো কেন?কিছু হবে না তোমার।
ইয়ারাবী চুপ হয়ে রইলো আরাভের বুকে।
এবার আরাভ বৌকে সামনে ফিরিয়ে বলল
-চলো আরো একটা সারপ্রাইজ আছে।
আরাভ ইয়ারাবীকে নিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসতেই ইয়ারাবীর চোখ বড় হয়ে গেলো।অনেক সুন্দর একটা সুইমিংপুল বাসার পিছনে।
-ওয়াও খুব সুন্দর তো?আপনি পারেন সাঁতার?
আরাভ ইয়ারাবীর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে গায়ের শার্ট খুলে নিলো একটানে।ইয়ারাবী অবাক আরাভের আচরনে।
আরাভ দৌড়ে সুইমিংপুলে ঝাঁপ দিলো।নরমালি ঝাঁপ দেয়নি ও।হাত জোড়া সোজা করে কিছুটা উড়ে গিয়ে পড়লো যেন মাছ লাফিয়ে উঠেছে।তারপর আরাভ বিভিন্ন ভঙ্গিতে সাঁতার কেঁটে দেখালো ইয়ারাবীকে।ইয়ারাবী একটু কাছে এগিয়ে গেলো।আরাভ ও ভেসে ভেসে সামনে এলো।
-আমি পারিনা সুইমিং করতে।
-শিখবে?
-না না ঠিক আছে।
-অন্তত পানি পা ডুবিয়ে বসতে পারো।
-তা অবশ্য ঠিক।
ইয়ারাবী বসতেই আরাভ ওর হাত টেনে পানিতে নামিয়ে ইয়ারাবীর কোমড় জড়িয়ে ধরলো।
-পানিতে আমার ভয় লাগে।
-এখনো লাগছে?ইয়ারাবীর কাছে একটু পানি ছিটিয়ে ওর অনেক কাছে এগিয়ে এসে ফিসফিসিয়ে বলল আরাভ।
-না লাগছেনা।আরাভের দিকে তাকাতে লজ্জা পাচ্ছে ইয়ারাবী।
আরাভ এগিয়ে এসে ইয়ারাবীর থুতনি তে চুমু খেয়ে পানি গুলো শুষে নিলো।
-জামা ভিজে গেছে যে?কাঁপা গলায় বলল ইয়ারাবী।
-সে চিন্তা তোমায় করতে হবেনা।আরাভ এবার ইয়ারাবীর ঠোঁটজোড়া নিজের মাঝে নিয়ে নিলো।
চলবে