The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 55

ইয়ারাবীর দিকে এগিয়ে এলো আরাভ।ইয়ারাবী কাঁপছে।কারন আরাভের মুখ ক্রমশ ওর দিকে এগিয়ে আসছে।চোখ বুজে নিলো ইয়ারাবী তারপর ডাকতে লাগে,
-খালামনি খালামনি!!!!!
আরাভ রেগে ওর মুখ চেঁপে ধরলো।তারপর দাঁতে দাঁত চেঁপে বলল,
-একদম চুপ।আরো একবার চিৎকার করলে খুব খারাপ হবে।
ইয়ারাবী ঠোঁট ফুলায়।আরাভ বৌকে কোলে তুলে এনে খাটে বসায়।ইয়ারাবী আরাভের দিকে ভয়ে ভয়ে তাকায়।আরাভ রাগী চোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
এবার ইয়ারাবী নিজেকে কিছুটা সামলে বলল,
-আপনাকে এ চকলেট থেকে একটু দিবো।
-আরাভ নিশ্চুপ।আগের মতোই রাগী চোখে ইয়ারাবীকে দেখছে।
-একটু থেকে বেশি দিবো।
-আরাভের চেহারায় কোন রিএ্যাকশন না পেয়ে ইয়ারাবী বলল,
-অর্ধেকটা দিবো আপনাকে।তবে পুরো টা খাইয়েননা আপনি।কারন আপনার সিক্সপ্যাক ওয়ালা বডি নষ্ট হয়ে যাবে।
-এবার ও আরাভ কিছু বললনা।
-ইয়ারাবী বলল আচ্ছা বাবা অর্ধেকটা খেয়ে নিবেন।
-বেশি কথা বলো তুমি।আমি আমার মতো খেয়ে নিবো।এগুলো আমেরিকা থেকে আনছি আমি।
-খোটা দিলেন আপনি আমাকে।সামান্য একটা চকলেটের খোটা আপনার মতো সাকসেসফুল বিজনেস ম্যানের মুখে মানায় না আরাভ।আর আপনি এই চকলেটের খোটা দিচ্ছেন আপনার বৌকে।মন খারাপ করে ইয়ারাবী।
-বেশি কথা বলো তুমি।খোটা কেন দিবো তোমাকে?রেগে গেলো আরাভ।
-ইয়ারাবী হেসে ফেলল।তাহলে ঠিক আছে।
ইয়ারাবী চকলেট খুলে খেতে শুরু করলো।মাঝে মধ্যে উমম শব্দ ও করছে।বাচ্চাদের মতো করছে ইয়ারাবী।মুখের চারপাশে চকলেট লেগে ভরে গেছে।চকলেট খাওয়া শেষে ইয়ারাবী সুন্তুষ্টির হাসি দিলো।হঠাৎ আরাভ ওর গালে চুমু খেতে শুরু করে।মাঝে মাঝে লিক ও করছে।
-কি করছেন আপনি?
-বলেছিলাম না নিজের মতো খেয়ে নিবো আমি?খেতে দাও আমাকে।
কথা গুলো বলে আরাভ ইয়ারাবীর গালের চকলেট গুলো খেয়ে ওর ঠোঁটজোড়া শুষে নিতে শুরু করে।শরীরের ব্যালেন্স নিতে না পেরে ইয়ারাবী শুয়ে পড়ে।আরাভ ওর ওপর নিজের ভর ছেড়ে দিলো।ইয়ারাবীর ঠোঁটে চুমু খেতে খেতে ওর বুকে ঘুমিয়ে যায় আরাভ।
ঘুমিয়ে আছে অর্পন।ভাইকে বড্ড মিস করছে ও।কিন্তু যা হয়েছে ভালোই হয়েছে।কারন ভাইকে তার বাবা মায়ের বেশি দরকার।কিন্তু ও দশবছর ভাইয়ের সাথে কাঁটিয়েছে।ভাই ভীষন আদর করতো ওকে।কখনো কোন কিছুর অভাব বোধ হয়নি অর্পনের আমেরিকা থাকা কালীন।বাবার অভাব কিছুটা হলে ও ভাই পূরন করেছে।বড় একটা নিশ্বাস নেয় অর্পন।আচমকা ওর ঘোর কাঁটে ফোনের রিংটোনের শব্দে।শোয়া থেকে উঠে ফোন চেক করে অর্পন।ওর পিএস কল করেছে।হাই তুলে ফোন কানে রাখে অর্পন,
-হ্যালো!!!
-স্যার ব্রাদার্স কোম্পানীর এমডি আপনার সাথে মিটিং করতে চেয়েছে।আপনাকে এগারোটার মাঝেই ওনার অফিসে থাকতে বলেছে।ওনি নাকি সময়ের ব্যাপারে খুব সচেতন।
-ঘড়ির দিকে তাকায় অর্পন।দশটা বেজে ত্রিশ মিনিট।ওকে যাচ্ছি আমি।
লাফিয়ে শোয়া থেকে উঠে যায় অর্পন।ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ে ব্রাদার্স কোম্পানীর উদ্দেশ্যে।বাংলাদেশের ট্রাফিক জ্যামের ওপর বিশ্বাস করতে নেই।জনাব পারলে আপনাকে পাঁচমিনিট কিংবা পাঁচঘন্টা ও বসিয়ে রাখতে পারে।তাই হলো অর্পনের সাথে আধঘন্টা জ্যামে কাঁটিয়ে দিলোও।মনে মনে পিএসের চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছে ও।অফিসে পৌছুতে অর্পনের আধঘন্টা লেট হলো।রিসিপশনে গিয়ে ফেন্সির কেবিনের কথা জিজ্ঞাস করতেই ওরা বলল ম্যাম মিটিং এ আছেন আপনি বসুন।অর্পন সোফায় বসে পড়লো।আজকাল ফেন্সিডিল ও ওকে অপেক্ষা করায়। ভাবা যায়!!!!
মিনিট চল্লিশের পর অর্পনের ডাক পড়লো।উঠে দাঁড়িয়ে ফেন্সির কেবিনের দিকে এগোয়।
এদিকে আরাবী অফিসে চলে গেছে। নাস্তা না করেই চলে গেছে।আর্ভিন ওকে বারবার বলছিলো খেয়ে যেতে।কিন্তু ম্যাডাম ওর কথা একেবারেই শুনেনা।তারপর ও ধৈর্য ধরতে হবে ম্যাডামের মন পেতে।রাত ১০ টা বেজে গেলো।আরাবীর কোন খবর নেই।আর্ভিন আরাবীর নম্বরে অনেক কল দিলো।ফোন বন্ধ আসছে আরাবীর।ওর অফিসে ও কল দিয়েছিলো অার্ভিন।ওরা জানালো অারাবী সাতটায় বেরিয়ে গেছে।মাথা কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে আর্ভিনের।আরাবী কই?কি হলো ওর?কই চলে গেছে?
সাড়ে এগারোটায় আরাবী বাসায় এলো।আর্ভিন ড্রয়িং রুমের সোফাতেই বসা ছিলো।আরাবীকে দেখে ও দাঁড়িয়ে হেঁটে আরাবীর কাছে এলো।আর্ভিনের চোখে মুখে তীব্র রাগ প্রকাশ পেয়েছে।
-কই ছিলে?
-যেখানে ইচ্ছে সেখানে।কৈফিয়ত আপনাকে দিতে হবে নাকি?রাগী গলায় বলল আরাবী।
-জাস্ট শাট আপ।কিছু বলছিনা দেখে বেশি বাড় বেড়েছো।ঠিক মতো উত্তর না দিয়ে এসব কি বলো?চিৎকার করে বলল আর্ভিন।
-আপনি চুপ থাকেন।কার সাথে চিৎকার করে কথা বলছেন?আপনার চাকর না আমি যে আপনাকে সব কৈফিয়ত দিতে হবে।
আরাবী আর্ভিনের পাশ কেঁটে যেতে নিতেই আরাবীর বাহু চেঁপে ওকে সামনে আনলো আর্ভিন।তারপর রাগী গলায় বলল,
-ইউ আর মাই ওয়াইফ।সো তোমার ভালো মন্দ দেখার দায়িত্ব ও আমার।
-নিজের কাজে কাজ রাখেন।আমার ভালো মন্দ আমিই দেখতে পারি।ছাড়েন আমার হাত।ঝাড়ি দিয়ে বলল আরাবী।
আর্ভিন আরাবীর হাত আরো জোরে চেঁপে ধরলো।চিনো না আমাকে।তবে নিজেকে চিনাতে এক সেকেন্ড সময় ও লাগবেনা আমার মিসেস আরাবী মাহবুব চৌধুরী।
আপনাকে না চিনার কি আছে?আপনি যে লুচ্চা সেটা ভালোমতোই জানা আছে আমার।আর্ভিনের এবার ভীষন রাগ হলো।আরাবীকে কাছে টেনে বলল
-আমি লুচ্চা তাইনা?তাহলে আমার লুচ্চামি তো তোমাকে দেখাতেই হয়।
-আরাবী রাগী চোখে আর্ভিনকে দেখছে।
আর্ভিন জোর করে আরাবীর ঠোঁটজোড়া মুখে তুলে নিলো।রুডলি কিস করতে শুরু করে আর্ভিন আরাবীকে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
অর্পন ফেন্সির সামনে বসতেই ফেন্সি বলল,
-১১টার টাইম দিয়েছিলাম আপনাকে।
-একচুয়ালি এতো জ্যাম ছিলো!!!
-নো এক্সকিউজ উইল বি এলাউড।এগারোটা মানে ১২.৩০ টা নয়।
-লিসেন মিস ফেন্সিডিল!!!
-অনলি ফেন্সি।সো সাম রেসপেক্ট মিঃ অর্পন আজহার।
-ওকে(রাগ দমিয়ে)
ফেন্সি অর্পনের সামনে একটা ফাইল দিয়ে বলল রিড ইট।অর্পন ফাইলটা হাতে নিয়ে দেখতে শুরু করে।তারপর অর্পন বলল,
-এটা বনানীর প্রজেক্ট ফাইল।
-রাইট।জায়গাটা আমার নানার।এন্ড আমি চাচ্ছি এই প্রজেক্টে আপনার কোম্পানী আমার সাথে কাজ করবে।
-আমার কোম্পানীর লাভ কি হবে?
-লাভ তো অবশ্যই আছে।প্রজেক্ট ফাইনাল হলে এর সিক্সটি পার্সেন্ট আপনার এ্যাকাউন্টে চলে যাবে এ্যাম আই ক্লিয়ার?
-ইয়াহ।
-সো ডিলটা কি ফাইনাল মনে করতে পারি?
-শিওর।
ফেন্সি একটা ফাইল অর্পনের দিকে ধরে বলল,
-এখানে কিছু রুলস আছে যেগুলো আপনাকে মানতে হবে।পড়ে সাইন করুন।
-ওকে।অর্পন রুলস পড়ে সাইন করে দিলো।
এদিকে ইয়ারাবীকে সকালে প্রতিদিনকার মতোই ফ্রেশ করালো আরাভ তারপর ওর চুল মুছে নিচে নিয়ে এলো।রুহী টেবিলে নাস্তা সাজিয়ে ছেলে আর বৌকে দেখে মিষ্টি হাসে।ইয়ারাবী এসে খালার পাশে দাঁড়ায়।
-সরি খালামনি এতো সময় কখন হয়ে গেলো বুঝতেই পারিনি।
-ইয়ারাবী তুই আমার মেয়ে।তোর শরীর ভালোনা।তোকে এখন অনেক বিশ্রাম নিতে হবে।তোর যখন ভালো লাগবে উঠে যাবি।কাজের কথা একদম চিন্তা করবিনা?বুঝলি মামনি?
-থ্যাংকস খালামনি।হেসে বলল ইয়ারাবী।
রোয়েন নিচে নেমে এলো।ছেলে আর ছেলের বৌকে দেখে মনটা মুহূর্তেই ভালো হয়ে গেলো ওর।নিচে এসে পেপার হাতে নিয়ে বলল,
-রুহী নাস্তা বাড়ো।
-ইয়ারাবী বলল খালামনি তুমি বসো।আমি নাস্তা দিচ্ছি সবাইকে।
-ওকে মা।তুই দে তাহলে রুহী বসে পড়লো রোয়লনের পাশে।
ইয়ারাবী ওদের নাস্তা দিয়ে নিজে বসে পড়লো অারাভের ডান পাশে।ওর বাঁ পাশে রোয়েন বসে আছে।
নাস্তার টেবিলে হঠাৎ কেঁশে উঠলো ইয়ারাবী।তারপর ভয়ার্ত দৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকালো।আরাভ ওর দিকে আড় চোখে তাকিয়ে দুষ্টু হাসলো।ইয়ারাবী খেতে পারছেনা।কারন আরাভ দিচ্ছেনা।আরাভের পা ওর পায়ে স্লাইড করতে করতে শাড়ী বেশ উপরে উঠিয়ে দিয়েছে।আর এক হাতে ইয়ারাবীর হাত ধরে আছে।
-ইয়ারাবী খাস না কেন মা?জিজ্ঞাস করে রুহী।
-চামচে করে একটু খিচুরি মুখে নিয়ে ইয়ারাবী বলল এই তো খাচ্ছি খালামনি।
আরাভ ইয়ারাবীর বা হাতের পাতায় সুড়সুড়ি দিচ্ছে।ইয়ারাবী আরাভের দিকে মলিন চোখে তাকায়।আরাভ হেসে ইয়ারাবীর হাতে জোরে চাঁপ দিতেই,
-আহ!!!চিৎকার করেই থেমে যায় ইয়ারাবী।
রোয়েন রুহী ইয়ারাবীর দিকে চেয়ে আছে অবাক চোখে।
-কি হলো আম্মু?কি হয়েছে?জিজ্ঞাস করে রোয়েন।
-জ জ জেঠু ক ক কিছুনা।
আরাভ হেসে হাত ছেড়ে দিয়ে খেতে লাগলো।রুহী ছেলের দিকে তাকিয়ে বলল,
-বাবা আরেকটু নে।
-না মা।অনেক হয়েছে আরনা।বাহিরে যেতে হবে কাজ আছে।
-কালই তো এলি।আজকেই কাজে যাবি?জিজ্ঞাস করে রোয়েন।
-বাবাই একটা প্রেজেন্টশন আছে।না গেলেই নয়।
-ওকে জলদি ফিরে আসিস আব্বু।বলে উঠে রোয়েন।
-ওকে বাবাই।ইয়ারাবী আমার সাথে এসো।
মাথা নামিয়ে আরাভের পিছে যেতে থাকে ইয়ারাবী।দরজার সামনে থামলো ওরা।তারপর ইয়ারাবীর দিকে তাকায় আরাভ।ইয়ারাবীর থুতনি ধরে কাছে টেনে নিলো আরাভ।তারপর ওর কপালে চুমু খেয়ে বলল
– বায়
-বায়।মলিন হেসে বলল ইয়ারাবী।
আরাভ বেরিয়ে গেলো।আজ আরাভ বেরিয়ে যাওয়ার থেকেই অস্থির লাগছে ইয়ারাবীর।মনে কু ডাকছে ওর।অজনা ভয় ওর মনে চেঁপে বসেছে।ইয়ারাবী রুহীর সাথে রান্নায় একটু হাত লাগালো।তবে ভিতর ভিতর কেমন জানি লাগতে থাকে ওর।এটা নতুন নয় যে আরাভ অফিসে যায়।তারপর ও কেমন একটা অশান্তি অস্থিরতা বিরাজ করছে ওর মনে।এর অর্থ জানা নাই ওর।
সন্ধ্যায় রোয়েন ঘরে এলো হাসপাতাল থেকে।ঘরে এসে রুহী কে বলল,
-আরাভ কই?
-এখনো আসেনি।কল দিয়েছিলাম বলল কাছে আছে।দশমিনিট লাগবে।
-ও আসলে বলো আমার রুমে আসতে।
-আচ্ছা।
-রুহী!!!
-হুম!!!
-আমার কফি নিয়ে আসো।
-ওকে।
রোয়েন রুমে এসে ফ্রেশ হতে যাবে তখনই ফোন বেজে উঠে ওর।আরাভ কল করছে।রোয়েন ফোন রিসিভ করতেই অপরিচিত কারোর কন্ঠ শুনতে পেলো।
-হ্যালো কে বলছেন?
-আমি হাসিব।ল্যাবেইডের সামনে থেকে বলছি।একটা কালো গাড়ি এ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে।গাড়ির মালিকের কন্টাক্ট লিস্টে আপনার নম্বর বাবাই দিয়ে সেভ করা পেলাম।
চলবে