The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 54

আরাবী সন্ধ্যা ছয়টায় বেরিয়ে আসে অফিস থেকে।বাহিরে এসেই অবাক হয়ে যায়।কারন আর্ভিন গাড়িতে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।ওকে দেখে পকেট থেকে হাত বের করে দুহাত বুকে আড়াআড়ি ভাবে বাঁধলো আর্ভিন।আরাবী এসে আর্ভিনের সামনে দাঁড়িয়ে গাড়ির দরজার দিকে চেয়ে আছে।মুখে হাসি রেখে আর্ভিন বলল,
-সারাদিন কেমন গেলো?
-আপনি জেনে কি করবেন?
-কতোবার বললাম তুমি ইসলামী শরিয়তে আমার বৌ।সো ব্যাপারটা আমার জানা প্রয়োজন তাইনা?এখন বলো কেমন কাঁটলো?
-ভালো।দরজা খুলুন।
-ওকে।
আর্ভিন দরজা খুলে আরাবী কে বসতে দিলো।তারপর নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে পড়লো।আরাবী আড়চোখে আর্ভিনকে দেখলো।কালো পাঞ্জাবী আর সাথে সাদা পায়জামা হাতে কালো বেল্টের ঘড়ি।বেশ ভালোই লাগছে লোকটাকে।আর তার শরীর থেকে ছড়ানো মিষ্টি ঘ্রান আরাবীর মন প্রান ছুঁয়ে দিচ্ছে।ওদের বর্তমান গন্তব্য হলো শপিংমল।আরাভ ইয়ারাবীর জন্য শপিং করবে ওরা।
কিছুসময়ের মাঝেই শপিংমলে পৌছে যায় ওরা।তারপর দুজনে মিলে শপিং করতে শুরু করে।আর্ভিন বারবার আরাবীকে জিজ্ঞাস করছিলো ওর কিছু লাগবে কিনা?কিন্তু আরাবী নাছোড়বান্দা কিছুই কিনবেনা।আর্ভিন তারপর ও জোর করে একটা ডায়মন্ড গলার সেট কিনেই দিলো।
এদিকে আরাভ ইয়ারাবীর দিকে কিছু সময় তাকিয়ে আলমারির কাছে এগিয়ে এলো।ইয়ারাবী ড্রেসিংটেবিলের আয়না দিয়ে স্বামীকে দেখছে।আরাভ চকলেট কালারের শেরওয়ানি বের করে হাতে নিয়ে ইয়ারাবীর দিকে আবার তাকিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
ইয়ারাবী নিজের গয়না গুলো একবার নেড়ে চেড়ে দেখলো।মিসেস আজহার আরাভের রুমে এলেন।ইয়ারাবী ওনাকে দেখে উঠে দাঁড়ায়। মিসেস আজহার ইয়ারাবীর হাতে একটা গয়নার বক্স ধরিয়ে দিলেন।
-তুমি আমার মেয়ে ইয়ারাবী।ছোট্ট উপহারটা এই মায়ের পক্ষ থেকে গ্রহন করো।
ইয়ারাবী বক্সটা হাতে নিয়ে মিসেস আজহারের পা ধরে সালাম করতে যেতেই ওনি ইয়ারাবীকে থামালেন।এসময়ে একেবারেই ঝুঁকবেনা।ইয়ারাবী মাথা ঝাঁকিয়ে থ্যাংকস জানালো মিসেস আজহারকে।আরাভ বেরিয়ে এসে ইয়ারাবীকে দেখতে পায় ইয়ারাবী লাগেজের চেইন লাগাচ্ছিলো।আরাভ ইয়ারাবীর পিছন থেকে ওর কোমড় জড়িয়ে ওকে সামনে ফিরিয়ে নিলো।তারপর ওকে টানতে টানতে আলমারির সাথে জাঁপটে ধরে ওর গলায় মুখ ডুবায়।ঘন ঘন চুমু দিতে থাকে ইয়ারাবীর গলায়।
কিছুসময় পর সরে আসে আরাভ।তারপর ইয়ারাবীর কপালে চুমু দিয়ে সরে আসে।ইয়ারাবী আলমারি থেকে একটু সরে আসে।মাথার ঘোমটা ঠিক করে লাগেজের কাছে এগিয়ে যায়।
আরাভ ইয়ারাবী আর বাকি সবাইকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো রোয়েনের বাসার উদ্দেশ্যে।কিছুক্ষনের মধ্যেই ওরা পৌছে গেলো রোয়েনের বাসায়।গাড়ির শব্দে রোয়েন বাসার মেইন ডোর খুলে দেখার চেষ্টা করে কে এসেছে।তারপর আরাভের গাড়ি দেখতে পেয়ে সবাই কে ডাকতে লাগলো,
-রুহী, রুপন্তী, রেহান,আরাবী কই তোরা?ওরা চলে এসেছে কিন্তু।
সবাই এসে হাজির হলো।আর্ভিন বাহিরে এসে ওদের গাড়ির কাছে দাঁড়ায়।আরাভ বেরিয়ে ইয়ারাবীর দিকে হাত বাঁড়ায়।
আরাভের হাত ধরে বেরিয়ে আসে ইয়ারাবী।বাকি সবাই বেরিয়ে রোয়েনের বাসার উদ্দেশ্যে হাঁটতে শুরু করে। ইয়ারাবী সবাইকে দেখলো একবার।ওর পাপা মাম্মা ও এসেছে।কিন্তু রুপন্তী রেহান ওদের ওয়েলকাম না জানিয়ে কাজের বাহানা দিয়ে অন্যদিকে চলে গেলো।
সবাই ওদের দিকে ফুল মারছে।আরাভ আর ইয়ারাবী দরজার সামনে আসতেই ওদের জুস আর একটু মিষ্টি খাওয়ানো হলো।আরাভ ঘরে ঢুকে বাবা কে জড়িয়ে ধরে।রোয়েন আরাভ ইয়ারাবী দুজনকেই বুকে জড়িয়ে নিলো।রুহী ও ঠিক একইভাবে ছেলে আর ভাগনীকে জড়িয়ে নিলো বুকে।ইয়ারাবী কে আরাবী আলিঙ্গন করলো।আরাভ ও বোনকে জড়িয়ে ধরলো।এরপর আরাবী আর্ভিন ইয়ারাবী আর আরাভকে স্টেজে এনে পাশাপাশি বসালো।
সবাই এসে ওদের সাথে ছবি তুলছে।ইয়ারাবীর চোখজোড়া খুঁজছে ওর পাপা মাম্মাকে।কিছুসময় পর রোয়েন মাইক হাতে আরাভ আর ইয়ারাবীর হাত ধরে সবার সামনে এসে দাঁড়ায়।
তারপর গলা একটু পরিষ্কার করে বলতে শুরু করলো
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-আজকের দিনটা খুব স্পেশাল আমার জন্য।আজ সাড়ে দশবছর পর আমার একমাত্র ছেলে আরাভ আমার কাছে ফিরে এসেছে।একটু মিসআন্ডার্স্ট্যান্ডিং এর কারনে ও দূরে ছিলো আমাদের থেকে।এন্ড নাউ ফাইনালি আমি ছেলে এসেছে আমার কাছে।তবে সে একা আসেনি।সে আমার জন্য ছোট্ট টুকটুকে একটা বৌ নিয়ে এসেছে যে আসলে আমারই মেয়ে।ইয়ারাবীকে কাছে টেনে নিলো রোয়েন ও আমার ছোট মেয়ে ইয়ারাবী আমার ছোট ভাইয়ের মেয়ে যে এখন আমার ঘরের লক্ষী।
আপনারা সবাই ওদের সুন্দর জীবনের জন্য দোয়া করবেন,ধন্যবাদ।
আরাভ আর ইয়ারাবী আবার স্টেজে গিয়ে বসলো।রোয়েন আর রুহী এলো ওদের সাথে ছবি তুলতে।আরাবী আর্ভিন ও এলো।একটা মজার বিষয় হলো আরাভের স্কুলের বেশির ভাগ ফ্রেন্ডরা আসছে।আরাভ ভীষন খুশি আর অবাক হলো।কারন ও ওদের ডাকেনি।
তখন বিধান বলল,
-আরে শালা তুই আমাদের ইন্ভাইট করিস নি তো কি হয়েছে?আঙ্কেল আমাদের বলেছে তোদের এই কিপ্টা ফ্রেন্ডের রিসিপশন।তোরা চলে আয়।
সাথে সাথে আরাভ আর ওর ফ্রেন্ডরা হাসতে শুরু করলো।ইয়ারাবী ঠোঁট টিপে হাসে।
জাদিন বলল,
-দেখ আরাভ ভাবি অনেক সুন্দরী।এতো সুন্দরী বৌ পেয়ে আমাদের ভুলে যাসনে।
-আরে বৌ বৌয়ের জায়গায় বন্ধুরা বন্ধুদের।তোদের ভোলার প্রশ্নই উঠেনা।বলে উঠে আরাভ।
তখনই পাশ থেকে শুভ বলে উঠলো,
-আরাভ তুই উঠ।আমরা ভাবির সাথে ছবি তুলবো।
-অনেক জায়গা আছে তোরা পাশ দিয়ে বসে পড়না।একসাথেই ছবি তুললাম।
-দেখলি জাদিন বৌয়ের পাশ থেকে সরতেই চায়না আরাভ।বলে উঠে শুভ।
-জাদিন বলল বাদ দেনা।আমরা এভাবেই ছবি তুলবো।ভাবি হয়ত আনইজি ফিল করছে তাই আরাভ উঠছেনা।এভাবেই অন্য বন্ধুরা আরাভকে খোঁচাতে থাকে।
সবাই মিলে আরাভ আর ইয়ারাবীর সাথে ছবি তুলল।ইয়ারাবীর তিনজন বান্ধুবী এসেছে।আস্মিতা,স্নিগ্ধা আর ইস্পিতা।ইয়ারাবী ওদের দেখা মাত্রই তিনজনকে জড়িয়ে ধরলো।
ইয়ারাবী আর আরাভের সাথে ওর ছবি তুলল।এরপর পালা এলো কাপল ড্যান্সের।আরাভ ইয়ারাবী রোয়েন রুহী রুপন্তী রেহান দাঁড়ায় কাপল ড্যান্সের জন্য।কিন্তু আরাবী কোনমতে আসবেইনা।শেষমেষ মায়ের ধমকে আরাবী কাপল ড্যান্সের জন্য রাজি হলো।আর্ভিনের সাথে দাঁড়ায় আরাবী।
আর্ভিন মজা করে আরাবীর কোমড়ে হাত রাখে।আরাবী রাগী ভাবে তাকিয়ে ও লাভ হয়নি।
Aankhein teri, aaaa
Aankhein teri, kitni haseen
Ke inkaa aashiq, mein ban gayaa hoon
Mujhko basaa le, inn mein tu..
Ishq hai…
Maula mere, maula mere, maula mere, maula mere
Ke inkaa aashiq, mein ban gayaa hoon
Mujhko basaa le, inn mein tu..
Mujhse yeh har ghadi, meraa dil kahe
Tum hi ho uski aarzoo
Mujhse yeh har ghadi, mere lab kahe
Meri hi ho sab guftagoo..
ইয়ারাবীকে বুকে টেনে ওর কপালে চুমু খেয়ে নাচতে থাকে আরাভ।ইয়ারাবীর বুক ধুকপুক করছে।আরাবী আর্ভিনের দিকে তাকাচ্ছে ও না।
আরাভ ইয়ারাবীর শাড়ী ভেদ করে ওর কোমড় স্পর্শ করলো।ইয়ারাবীর শরীরে শিহরন বয়ে গেছে।এসির কারনে আরাভের হাত প্রচুর ঠান্ডা।যার কারনে ইয়ারাবীর পুরো শরীর কেঁপে উঠলো।আরাভের কাছে চলে এলো ইয়ারাবী।কর পাঞ্জাবী খাঁমচে ধরলো।সেই সুযোগে আরাভ ওকে জড়িয়ে নিলো।
নাচ শেষে সবাই ডিনারের জন্য গেলো।ইয়ারাবী একবার ও ওর মা বাবাকে পেলোনা।চোখের অশ্রু আড়াল করে নেয় ইয়ারাবী।অনুষ্ঠান শেষে গেস্টরা চলে গেলো।আরাভ আর ইয়ারাবীকে নিজেদের রুমে নিয়ে আসে রোয়েন।তারপর শুরু হয় গল্প।অবশ্য ইয়ারাবী চুপ ছিলো।গল্প বেশিক্ষন স্থায়ী হয়নি।ইয়ারাবীকে রুমে দিয়ে পুরো বাড়ি ঘুরে আসে আরাভ।সারাবাড়িতে জড়িয়ে আছে ওর শৈশব কৈশর কাল।
রুমে আসে আরাভ এক গ্লাস দুধ নিয়ে।ইয়ারাবী ফ্রেশ করিয়ে চলে গিয়েছিলো ও।ইয়ারাবী খাটে বসে আছে।পরনে মেরুন কালারের সুতির শাড়ী।একদম নতুন বৌ লাগছে ইয়ারাবীকে।আরাভ এসে ওর সামনে বসে গ্লাসটা ইয়ারাবীর মুখের সামনে ধরলো।
-খেয়ে নাও।
-আমার খেতে ইচ্ছে হচ্ছেনা।নাক শিটকিয়ে বলে ইয়ারাবী।
-দেখো না খেলে তোমার শরীরে শক্তি হবেনা।খেয়ে নাও।
-ভালো লাগছেনা।প্লিজ সরান।গ্লাসটাকে সরাতে চায় ইয়ারাবী
-এই চকলেট টা খাবা।একটা ডেইরিমিল্কের প্যাকেট দেখায় আরাভ।
-প্লিজ দিন না। খাবো।চকলেট টি ধরতে যায় ইয়ারাবী।
-তাহলে দুধটা খেয়ে নাও।বলে উঠে আরাভ।
-ইয়ারাবী নাক বন্ধ করে দুধটুকু খেয়ে বলল গবার দিন।
-এসময়ে চকলেট খাওয়া ঠিক না।পরে খেও।ঘুমিয়ে যাও।
-একদম না দিন চকলেট।আপনি বলেছেন দুধ খেলে চকলেট দিবেন।রেগে গেলো ইয়ারাবী।
-আমি কি বলেছি দিবোনা?দিবো বাট এখন না।কাল সকালে পেয়ে যাবে।
-নাহ এখনই দিন।নাহলে কান্না করবো।
-ইয়ারাবী বাচ্চামো করোনা।ঘুমিয়ে যাও।
-আগে দিন।পরে ঘুমাবো।
-বললাম কাল দিবো।রেগে বলল আরাভ।
ইয়ারাবী কাঁদতে লাগলো। ও নিচে নেমে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।রুহী আর রোয়েন সব লাইট অফ করে রুমে আসছিলো।তখন ইয়ারাবীকে এভাবে কাঁদতে দেখে ভয় পেয়ে যায় ওরা।দুজনেই ইয়ারাবীর কাছে এলো।
-কিরে মা কাঁদছিস কেন?জিজ্ঞাস করে রুহী।
-খালামনি তোমার ছেলে কে কিছু বলো।
-কি হয়েছে মা?কি করলো ঐ বদমাশটা?জিজ্ঞাস করে রোয়েন।
-আমাকে দুধ খাইয়েছে চকলেট দেখিয়ে।এখন চকলেট দিচ্ছেনা।
রোয়েন আর রুহী হেসে দিলো।ওকে নিয়ে আরাভের কাছে এলো ওরা।রুহী বলল,
সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
-এই বদমাশ ছেলে আমার মেয়েকে চকলেট দিসনা কেন?
-মা এসময়ে চকলেট?ইয়ারাবীর দিকে রাগী চোখে তাকায় আরাভ।
-দেখোনা খালামনি আমার দিকে কেমন করে তাকায়।কেঁদে কেঁদে বলল ইয়ারাবী।
-এই ছেলে আমার মেয়েকে একদম বকবিনা।চোখ নিচে রেখে বল ইয়ারাবী সরি আর এমন করবোনা। তোমার চকলেট নিয়ে খেতে থাকো।
-আরাভ অবাক।মা এসময়ে চকলেট দেয়া যাবেনা।
-তুই দিবি নাহলে তোর বাপ দিবে।দে আমার মেয়েকে চকলেট।
রোয়েন অবাক হয়ে রুহীর দিকে তাকায়।কি বলে? আরাভ চকলেট বের করতেই ইয়ারাবী দৌড়ে গিয়ে চকলেট নিয়ে আবার ও রুহীর কাছে এলো।ওর মুখে দুষ্টু হাসি।রোয়েন আর রুহী বেরিয়ে গেলো।আরাভ ইয়ারাবীর দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে বলল আমার নামে কম্পলেইন তাইনা দাঁড়াও তোমাকে এর শাস্তি পেতেই হবে।বলে ইয়ারাবীর দিকে এগুতে থাকে আরাভ।
চলবে