বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড

বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 12

আবিরঃ আমায় না ধরে চলে যাচ্ছো মিস বকবক
তিথিঃ লুচ্চা হারামি একটা,,ইচ্ছে তো করছে আটার মত ফিসে ফেলি হু
আবির ঠিক বুজতে পারছে তিথি আবিরকে ইচ্ছে মত বকা দিচ্ছে,, আবির মুচকি হাসে আর তিথির যাওয়া দেখে,,,
তিথি একটা গাড়িও পাচ্ছে না,,,মন টা এমনিতেই খারাপ আবিরের কান্ডতে,,,,আনমনে হাঁটছে,,,আর ভাবছে আবির কি ভাবে তাকে এই ভাবে জোর করে কিস করলো,,এতো টা রাগ লাগছে তার কারণ সে কিছু করতে ও পারে নাই,,,,
আবির ও ভার্সিটি থেকে বের হয়ে যায়,,,ড্রাইভ করছে আর গান শুনছে মনের আনন্দে,,,কিছু ক্ষন পর গাড়ি থামিয়ে একটা দোকান থেকে পানি কিনে খেতে লাগে,,,হঠাৎ নজর পড়ে রাস্তার ওই পাশে দেখে তিথি কিছু বাচ্চাদের সাথে অনেক হেসে হেসে কথা বলছে,,,,হাতে অনেক গুলো বেলুন নিয়ে,, দেখতে খুবই কিউট লাগছে,,,,
আবিরের কাছে কেন জানি দৃশ্য টা খুব সুন্দর লাগছে,,ফোন টা হাতে নিয়ে ঘুরাচ্ছে আর তিথির দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে আছে,,,কিছু না ভেবে তিথির কয়েকটা ছবি তুলে নেয়,,,
আবির তিথির সামনে যায়,,,তিথি তো আনমনে বাচ্চাদের সাথে হেসে হেসে গল্প করছে,,,আবির দাঁড়িয়ে আছে তিথির পাশে,,বাচ্চা গুলো তিথির গালে আসতে করে চুমি দিয়ে দূরে চলে যায়,,তিথি মুচকি হেসে উঠে দাঁড়ায়,,,হুট করে আবিরকে নিজের সামনে দেখে একটা ভয় পায়,,,বুকে ফুঁ দিয়ে আবিরের দিকে চোখ রাগিয়ে বলে
তিথিঃ আপনি এই খানে??
আবিরঃ কেন রাস্তা টা কি তোমার?
তিথিঃ হু আমার কেন হবে
আবিরঃ তাহলে আমি কি আসতে পারি না??

তিথিঃ তাও কথা(মুখ বাকিয়ে)
আবিরঃ মুখটা এই রকম কেন করলে?
তিথিঃ আমার মুখ আমার যেমন ইচ্ছে তেমন করবো এতে আপনার কি হু
আবিরঃ তাও কথা ঝগড়াটি এলিয়েনদের কি কিছু বলা যায়
তিথিঃ অই আপনার সমস্যা কি হুম, আমার নামের ১৩ টা কেন বাজালেন(প্রচন্ড রেগে গিয়ে)
আবিরঃ তুমি যে বাজাও তা?
তিথিঃ আমি কি আপনাকে ঝগড়াটে লাল কাক বলছি এক বার ও হুম
আবিরঃ লাল কাক তাও ঝগড়াটে রেলি???
তিথিঃ হু
আবিরঃ জীবনে দেখছো এই সব???
তিথিঃ হুম দেখছি
আবিরঃ হুম তুমি তো দেখতে পারো,,,ঝগড়াটি এলিয়েন যে এতে আমার বিন্দু মাত্র আর সন্দেহ নাই,,,,
তিথিঃ কিইই
আবিরঃ আস্তে চিল্লাও পরে মানুষ ভাববে পাবনার পাগল এখানে চলে আসছে
তিথিঃ ইউউউউউউ
আবিরঃ আমি কি হুম,,,,
তিথি রেগে ওই খান থেকে চলে যেতে লাগে,,পাথর এর সাথে বারি খেয়ে নিচে পড়ে যায় পা মুচড়ে যায়,,,উঠে দাঁড়াতে ও পারছে না,,,তার মধ্যে জুতা টা ও ছিড়ে যায়,,,
আবির হাত বারিয়ে তিথির দিকে দেয় উঠতে,,তিথি আবিরের হাত থাপ্পড় মেরে সরিয়ে দেয়,,,,আবির হাত টা ঝাকুনি নিয়ে বলে
আবিরঃ জঙ্গলি বিলাই আসলে
তিথি পায়ের ব্যাথায় প্রায় কেঁদে দেয় বাচ্চাদের মত,,,,কান্না করার অবস্থায়,,,আবির চারপাশে তাকিয়ে দেখে অনেকে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে,,,তিথি রাস্তায় বসে পায়ে হাত দিয়ে যে ভাবে কান্না করছে
তিথিঃ ওহ আম্মুরে আমার পা গেছে গা😭আম্মু আমি এখন কি ভাবে হাঁটবো,,,আমার পাআয়ায়া জোরে জোরে কেঁদে)
আবির তাকিয়ে আছে তিথির দিকে,,,ঠোঁট উল্টিয়ে বাচ্চাদের মত কান্না করছে,,পুরো বাচ্চা ভাব চেহারায়,,,তিথির কান্না যেন আবিরের মোটে ও পছন্দ হয় নাই,,,,সাত পাঁচ না ভেবে তিথিকে কোলে তুলে নেয়,,,,তিথিফ পুরো শকড হয়ে যায় আবির কি করছে,,,,আবিরের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে যাবে তার আগে আবির নিজে বলে
আবিরঃ তোমআর বকবযদি শুরু করো তাহলে কোল থেকে আছাড় মারবো এমন যাতে বকবক পুরো বন্ধ হয়ে যায়৷ এখন তুমি ভেবে নাও চুপচাপ থাকবে নাকি বকবক করবে?
তিথি ভয়ে চুপসে যায়,,যে ছেলে মারতে ও পার এই ভয়ে তিথি চুপ করে থাকে,,এই প্রথম তিথি আবিরের এতো টা কাছে,,আবিরের কলারটা এক হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে আছে আর এক হাত আবিরের ঘাড় ধরে আছে,,,আবির তিথিকে নিয়ে হাঁটতে থাকে আর তিথি আবিরের দিকে পলকহীন ভাবে চেয়ে থাকে,,এই প্রথম তিথি আবিরের খোচা খোচা দাঁড়ি খেয়াল করে, ফর্সা চেহারা,,,কপালে পড়ে থাকে ছোট ছোট চুল,,যা এক কথায় আবিরকে খুবই হ্যান্ডসাম লাগছে,,,আবিরের বুকে মাথা টা রেখে চুপ করে তাকিয়ে আছে তিথি আবিরের দিকে,,, মনে হচ্ছে এই জায়গা টা সবচেয়ে শান্তির একটা জায়গা,,,,তিথির কেন জানি এক ভালো লাগা কা করে এই ভাবে থাকতে,,,,,,
আবির তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে তিথি তার দিকে তাকিয়ে আছে,,,আবিরের চোখে চোখ পড়ায় অনেক টা লজ্জা পায় তিথি,,,এই প্রথম আবির তিথির লজ্জামাখা চেহারা দেখে,,,পুরো কিউট এর ডিব্বা লাগছে লজ্জা মাখা চেহারায়,,,,,আবির তিথির দিকে ভতু কুচকে জিজ্ঞেস করে কি,,,তিথি মাথা নাড়িয়ে কিছু না বলে আবিরের বুকে মুখ লুকায়,,,,
আবির মুচকি হেসে গাড়ির পাশে যায়,,,দরজা খুলবে কি ভাবে এখন এই বিপদ,,,তিথিকে নিচে নামালে তো সে দাঁড়াতে ও পারবে না এই ভেবে আবির চিন্তায় পড়ে যায়,,,পাশে এক লোক কে দেখে বলে
আবিরঃ এই যে ভাই একটা সাহায্য করবেন প্লিজ
লোকটিঃ জ্বি বলুন
আবিরঃ আসলে দরজা টা একটু খুলে দিবেন,,,
লোক টি দরজা খুলে দিয়ে বলে
লোকটিঃ ভাই আপনার বউয়ের কি হয়ছে?
বউ শব্দ টা শুনে দুইজনে শকড,,একে অপরের দিকে তাকাতে থাকে,,,,আবির কি বলবে বুজতে পারছে না, তারপর ও বলে
আবিরঃওই হাঁটতে গিয়ে পা মুচড়ে গেছে এই আর কি
লোকঃ অহ আচ্ছা,,,সাবধানে চলাফেরা করবেন ভাবি,,,
তিথি নাক ফুলিয়ে আবিরের দিকে তাকায়৷,, আবির ফেক হাসি দিয়ে তিথিকে গাড়িতে বসিয়ে অন্য পাশ দিয়ে গিয়ে নিজে ও বসে,,সিটে বসে তাকিয়ে দেখে তিথি সিট বেল্ট লাগায় নাই,,,আবির তিথিকে সিট বেল্ট লাগাতে বলে কিন্তু তিথি পাত্তা ও দেয় না,৷ আর কি আবির নিজে লাগায়,,,সিট বেল্ট লাগাতে গিয়ে দুইজনের চোখে চোখ পড়ায় দুইজনে চুপ৷ ,,,,, কিছু ক্ষন তাকিয়ে তাকে একে অপরের দিকে,,,,
পাশ দিয়ে এক পুলিশ যাচ্ছে হঠাৎ গাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে আবির আর তিথি অনেক টা কাছে,,সে ধরে বসলো উল্টো,,, গাড়ির গ্লাসে টকটক করে আওয়াজ করে,,,আবির তাড়াতাড়ি তিথির নজর থেকে নিজের নজর সরিয়ে গ্লাস নামিয়ে দেখে পুলিশ
আবিরঃ জ্বি
পুলিশঃ দিন দুপুরে এই খানে এই সব চলছে হুম
আবিরঃ কি চলছে?
পুলিশঃ বাহিরে বের হও দুইটারে জেলের ভিতর ডুকালে এই সব লোমাঞ্চ এর ভুঁত বের হয়ে যাবে,৷
তিথিঃ লোমাঞ্চ কি??(চিন্তার ভাব নিয়ে)
আবির এই বার বুজতে পারে পুলিশ কি মিন করতে চায়,,গাড়ি থেকে বের হয়ে বলে
আবিরঃ আপনি যা ভাবছেন তা না ওকে
পুলিশঃ হ্যাঁ হ্যাঁ তোরা রাস্তায় নষ্টামি করে বেরাস আর আমরা বললে ওই টা না তাই না
আবির এই বার ক্ষেপে যায়,,
আবিরঃ মুখ সামলিয়ে কথা বলবেন ওকে
পুলিশঃ তোরা এই সব নষ্টামি রাস্তায় করতে পারিস আর আমিরা বললে দোষ,,,শালা কয়েকদিন এর জন্য ভিতরে ডুকিয়ে দিলে টের পাবি৷,,,আর এই সব ফালতু মেয়েদের তো মুখে কালি মেখে রাস্তা দিয়ে জেলে নিয়ে যাওয়া উচিত,,,
আবির এই বার পুরো ক্ষেপে যায়,,এতো ক্ষন তো পুলিশ ফালতু কথা বলেই যাচ্ছে এই বার তিথির কথা বলায় আরো ক্ষেপে যায়,,,পুলিশ এর কলার চেপে ধরে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে বলে

আবিরঃ তোর সাহস হয় কি করে ওকে ফালতু বলার,,,নিজের লিমিট ভুলে গিয়ে ফালতু কথা কেন বলছিস হুম৷ জানিস আমি কে???
পুলিশ মাইর খাইতে থাকে,,আবির পুলিশ কে প্রচুর মারে আশেপাশের লোক জন সব এক হয়ে যায়,,তিথি ভয়ে পুরো ঘাবড়ে যায়,৷ হাঁটতে ও পারছে না ব্যাথায় তারপর ও অনেক কষ্ট করে গাড়ি থেকে বের হয়ে আবিরের কাছে যায়,,
আবিরঃ আবুর রহমান আমি ওকে(পুলিশ কে কয়েকটা ঘুষি দিয়ে)আর এই মেয়ে আমার ওয়াইফ,,পুলিশ হয়েছিস বলে যা ইচ্ছে বলে যাবি হুম(প্রচুর রেগে)
আবিরের মুখে ওয়াইফ শব্দ টা শুনে তিথি থমকে যায়৷, আবিরের রাগ এই প্রথম তিথি এতো দেখছে,,,কেউ এসে আবিরকে থামাছে ও না,,তিথি অনেক কষ্ট করে গিয়ে আবিরের হাতটি শক্ত করে ধরে ফেলে আর বলে
তিথিঃ প্লিজ উনাকে ছেড়ে দেন প্লিজ
আবিরঃ ওর সাহস হয় কি করে না বুজে তোমায় ফালতু মেয়ে বলার
তিথিঃ প্লিজ ছেড়ে দেন আনার জন্য,, মরে যাবে প্লিজ ছেড়ে দেন প্লিজ
আবির তারপর ও ছাড়ছে না,,তিথি আবিরের হাতটি শক্ত করে ধরে নিজের দিকে টানতে থাকে কিন্তু ছেলের শক্তির কাছে কি আর একটা মেয়ে পারে,,,তিথি আবিরকে অনেক রিকুয়েস্ট করে,,,আবিরের মাথায় যেন ভুঁত চেপে আছে গেছে,,,কি করচগে সে নিজে ও জানে না,,,তিথি আর না পেরে নিচে বসে যায় আর পা ধরে চিৎকার করে উঠে

তিথিঃ আমার পা😭বজ্জাত আমার পা😭
আবির তিথির চিৎকার শুনে তাড়াতাড়ি ঘুরে দেখে তিথি নিচে বসে আছে,,,পুলিশ কে ছেড়ে দৌড়ে তিথির পা ধরে বলে
আবিরঃ তুমি ঠিক আছো??বেশি ব্যাথা করছে,,,???
তিথি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে,,আবির আর না ভেবে তিথিকে কোলে করে গাড়িতে বসায়,,পুলিশ এর দিকে রাগী লুক দিয়ে গাড়িতে বসে,,গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ড্রাইভ করে চলে যায়,,,প্রায় কিছু ক্ষন পর একটা বড় মেডিকেলে আসে,,আবির তিথিকে আবার কোলে নেয়,,,তিথি তো পুরো চুপচাপ আবিরের এমন রুপ দেখে,,,বেচারি প্রচুর ভয় পায় আবির এর এতো রাগ দেখে,,,,
আবর ডাক্তার কে খুব জোরেই ডাকে,,ডাক্তার তাড়াতাড়ি এসে তিথির পা দেখে,,কিছু ওষুধ লেখে দেয়,,আবির ওষুধ গুলো নিতে যায়,,তিথি ডাক্তার এর কেবিনে এখনও বসে আছে
ডাক্তার দেখে মুচকি হেসে তিথিকে বলে
ডাক্তারঃ আপনি অনেক লাকি এমন কেয়ারিং হাজবেন্ড পেয়ে,,যে আপনাকে প্রচুর ভালোবাসে,,,
তিথি ডাক্তার কে কিছু বলে নাই,,চুপ করে ছিলো,, কেন জানি তার একদম ভালো লাগছে ডাক্তার এর কথা৷ কিন্তু কেন কারণ টা অজানা তার,,,
চলবে,,,,,,