The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 53

অর্পনকে চমকে দিয়ে ফেন্সি এসে বসে ওর সামনে।এখানে অবাক হওয়ার বিষয় হলো আগের ফেন্সি আর এই ফেন্সির মাঝে বিশাল ব্যাবধান।ফেন্সি সব সময় শর্ট ড্রেস পড়তো চুলে বিভিন্ন রং দিয়ে কালার করতো তবে এই ফেন্সি বেশ মার্জিত।শর্ট ড্রেস পাল্টে ডিজাইনার স্যালোয়ার কামিজ তবে মানানসই,উটকো সাজের বদলে এসেছে চোখে কাজল আর হালকা লিপস্টিক,চুলে ডার্ক ব্রাউন কালার।লম্বা নখ গুলো ছোট হয়ে এসেছে।হাঁটার মাঝে ও বেশ পরিবর্তন।হাতে ছোট্ট পার্স আর একটা ফাইল।দেখে মনেই হচ্ছে একজন পিওর বিজনেস ওম্যান।
অর্পন হা করে ফেন্সিকে দেখছিলো।ফেন্সি হালকা হেসে গলা পরিষ্কার করলো।গলা পরিষ্কারের শব্দে বাস্তবে ফিরে এলো অর্পন।
ওর বিশ্বাসই হচ্ছেনা ফেন্সি এতোটা বদলে যাবে।কি করে সম্ভব?
-সো মিস্টার অর্পন আজহার তাকিয়েই থাকবেন নাকি মিটিং এ ও কনসেন্ট্রেশন দিবেন?
-আসলে!!!!!আ’ম সারপ্রাইজড ফেন্সি।এতো পরিবর্তন!!!
-সময় সবাইকে বদলে দেয় মিঃ অর্পন আজহার।লেট ইট গো।মিটিং শুরু করা যাক।
-ইয়াহ ওকে।কথাটা বললেও অর্পনের মাথায় ফেন্সির হঠাৎ পরিবর্তনের ব্যাপারটা ঘুরছে।
আরাভ রোয়েনের পাশে বসে।বাবা আর ছেলে মিলে গল্প করতে শুরু করে।এদিকে রুহী পাকঘরে এসেছে এতোবছর পর ছেলে ফিরে আসছে।কিছুতো বানাতেই হবে।ইয়ারাবী রুহীর পাশে দাঁড়ায়। ইয়ারাবীর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে হাসে রুহী,
-কিরে আম্মু এখানে কি করিস?
-তোমাকে হেল্প করবো খালামনি।
-এই একদম না।গিয়ে তোর আরাবী আপু কে কল দিয়ে আরাভের কথা জানা।
-আপু আসতেছে বাসায়।বলে উঠে ইয়ারাবী।
-বাহ বলে ও দিলি!!!তা আমার আম্মুটা এখন কি খাবে?
-কিছুনা খালামনি। চলো তোমাকে সাহায্য করতে দাও।
-কাজ করতে চাইবি খবর আছে তোর।শাশুড়ি লাগি এখন।কথা মানতেই হবে আম্মুজান।
রুহীর মুখে শাশুড়ী কথায় লজ্জায় লাল হয়ে যায় ইয়ারাবী।আসলেই তো খালামনি আর জেঠু এখন ওর শ্বশুর শাশুড়ি।ব্যাপারটা লজ্জাজনক হলে ও বেশ লাগছে।পুরো শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে।তবে এই খুশি শুধু একবছরের জন্য।যা একবছর পর শেষ হয়ে যাবে।মুহূর্তেই মন খারাপ হয়ে যায় ইয়ারাবীর।চোখের কোনে জমে উঠে অশ্রুকনা।রুহী আতঙ্কিত হয়ে জিজ্ঞাস করলো,
-কিরে আম্মু মন খারাপ কেন?
-না খালামনি ঠিক আছি আমি।মলিন হেসে বলল ইয়ারাবী।
-শরীর খারাপ করছে তোর?জিজ্ঞাস করে রুহী।
-না খালামনি।মাথা নাড়ায় ইয়ারাবী।
রুহী হেসে কাজে মন দিলো।কিছুক্ষনের মাঝেই আরাবী এসে পৌছুলো রোয়েনের বাসায়।আরাবী রোয়েনের রুমে চলে যায়।সেখানে আরাভকে দেখে খুব খুশি হয়।গল্পে মেতে উঠে ওরা।রাতের ডিনার সেড়ে উঠে দাঁড়ায় আরাভ।
-বাবাই মা আমাদের যেতে হবে।
-কেন আরাভ?তুই থাকবিনা আমাদের কাছে?জিজ্ঞাস করে রুহী?
-মা আমাকে আজহার আঙ্কেল অনেক আদর দিয়েছে একদম নিজের ছেলের মতো।ওনার থেকে তো বিদায় নিতে হবে।
-তা ঠিক বলেছিস আব্বু।আচ্ছা শোন তাহলে কালই ছোট্ট একটা রিসিপশন পার্টি দিবো তোদের জন্য।আমি আমার ছেলে আর আমার মেয়েকে খুব সুন্দর করে ওয়েলকাম করতে চাই।বলে উঠে রোয়েন।
-তাই হবে বাবাই।এখন আসি আমরা অনেক রাত হয়ে গেলো।বলে আরাবীর দিকে তাকায় আরাভ।তারপর বলল তুই ও চল।তোকে নামিয়ে আমরা চলে যাবো।
-ওকে। বাবাই মা তাহলে আমি ও যাই।খেয়াল রেখো নিজেদের। কথা গুলো আরাবী আরাভ আর ইয়ারাবীর সাথে বেরিয়ে পড়লো।
আরাবীকে নামিয়ে আরাভ ইয়ারাবী বাসায় চলে আসে।আকরাম আজহার আর মিসেস আজহারের সাথে কথা বলে আরাভ জানতে পারলো অর্পন ঘুমিয়ে গেছে।তাই আরাভ ওকে আর না জাগিয়ে ইয়ারাবীকে নিয়ে রুমে আসে।ইয়ারাবী ঘরে ঢুকেই দেখলো খাটের মাঝে অনেক গিফটস সাজানো।অনেক অনেক চকলেট আছে সেখানে।আরাভ অবশ্য রুমে এখনো আসেনি।ইয়ারাবী দৌড়ে এসে চকলেট খেতে শুরু করে।
রুমে এসে বৌয়ের বাচ্চাপনা দেখে হাসে আরাভ।তারপর ইয়ারাবীকে পিছন থেকে ওর কোমড় জড়িয়ে বলল
-আমার বাবুরা কেমন আছে?
-ইয়ারাবী থমকে যায় আরাভের স্পর্শে তারপর কাঁপন ধরা গলায় বলল ভালো।
-ইয়ারাবী”!!
-হুম!!!
-থ্যাংকস।
-বেশ অবাক হয় ইয়ারাবী। কেন?
-সেদিন তোমায় মারার পর তুমি আমাকে যদি না বুঝাতে তাহলে হয়ত এ দিনটা আজ আসতোনা।
-ইয়ারাবীর চোখে পানি চলে আসে।
ইয়ারাবীর কাঁধে ঠোঁট ডুবিয়ে চুমু খায় আরাভ তারপর বলল এসব চকলেট তোমার সেদিন থাপড় দেয়ার পর নিজেকে অপরাধি মনে হয়েছে খুব।ইয়ারাবী সরে আসতে চায় কিন্তু আরাভ ওকে বুকের মাঝে জাপটে ধরে আছে।
-ঘুম আসছে আমার।বলে উঠে ইয়ারাবী।
আরাভ সরে এলো।ইয়ারাবী চকলেট গুলো ঠিক করে রেখে ফ্রেশ হতে চলে যায়।আরাভ দীর্ঘনিশ্বাস টেনে নিয়ে ইয়ারাবীর যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকে।তারপর ল্যাপটপে কাজ করতে বসে যায়।
কিছুক্ষনের মধ্যে ফ্রেশ হয়ে আসে ইয়ারাবী।তারপর বিছানার এককোনায় শুয়ে পড়ে ও।আরাভ নিজে ফ্রেশ হয়ে এসে ইয়ারাবীর পাশ ঘেঁষে শুয়ে ওকে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিলো।
ইয়ারাবী আরাভের দিকে চেয়ে আছে।আরাভ একটু এগিয়ে এসে ইয়ারাবীর ঠোঁটের ওপর বেশ গাঢ়ো চুমু খেয়ে নিচে নেমে আসে তারপর পেটের ওপর থেকে শাড়ী সরিয়ে সেখানে মুখ ডুবায়।ঘনঘন চুমুতে ভরিয়ে দিতে থাকে ইয়ারাবীর পেট।
আরাভের গেঞ্জী খামচে ধরে আছে ইয়ারাবী।
এতোদিন লোকটা বড় মিস করছিলো ও।কিছুক্ষন পর উপরে উঠে আসে আরাভ।তারপর ইয়ারাবীকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে যায় আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
এদিকে আরাবীর শ্বশুর শাশুড়ী দুজনেই চলে গেছে লন্ডনে।আরাবী আর আর্ভিন দুজনেই নাস্তার টেবিলে বসে আছে।কারোর মুখে কোন কথা নেই।আর্ভিন আড়চোখে আরাবীকে দেখছে।আরাবী সেজে গুজে আছে।আরাবী নাস্তা শেষ করে বলল,
-আজ সন্ধ্যায় আরাভ আর ইয়ারাবীর রিসিপশন পার্টি আছে।আপনি চলে যাবেন।আমার অপেক্ষা করতে হবেনা।
-একসাথেই যাবো আমরা।
-আমার ফিরতে দেরি হবে।অফিস থেকে চলে যাবো আমি।
-ভাবছিলাম কিছু দিবো ওদের।বাসায় এতো বছর পর আসছে।বিয়েতেও তেমন কিছু দেইনি।তুমি থাকলে সুবিধা হতো গিফটস কিনতে।
আরাবী উঠে দাঁড়িয়ে চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিয়ে বলল
-আমি চেষ্টা করবো আসার।
-অপেক্ষায় থাকবো তোমার।
আরাবী চুপচাপ বেরিয়ে পড়লো।আর্ভিন উঠে নিজের কাজের জায়গায় চলে যায়।
এদিকে আকরাম আজহারের সাথে আরাভ বসে আছে।আরাভ বলল,
-আঙ্কেল আমি আমার বাবা মার কাছে ফিরে যাবো আজ।
-আরাভের কথায় মন খারাপ হলো আকরাম আজহারের। ভালো লাগছে আমার শুনে তুমি তোমার ভুল বুঝতে পেরেছো আরাভ।
-আমি হয়ত স্বার্থপর হয়ে গেলাম আজকে।
-একদম।তুমি রোয়েন ভাইয়ের আমানত ছিলা আমার কাছে।আর এ দিনটা একদিন না একদিন আসারই ছিলো।ওনারা তোমার বাবা মা আরাভ।আর কষ্ট দিও না।
-হুম।আপনাদের জন্য খুব খারাপ লাগছে আমার।
-আমরা ও তোমাকে খুব ভালোবাসি আরাভ।এখানে তোমার জায়গা সবসময় থাকবে।
-আরাভ হেসে বলল আপনাদের কাছে সবই পেয়েছি।বাবা মা আর ভাইয়ের ভালোবাসা।
-আকরাম আজহার আরাভ কে বুকে টেনে নিলেন।আরাভ নিজের রাগের ওপর নিয়ন্ত্রন আনবে।বৌটাকে কষ্ট দিওনা আর।বাচ্চা একটা মেয়ে ও।
-হুম।আপনাদের যেতে বলেছে বাবাই।আমাদের সাথে আসতে হবে আপনাদের।
-অবশ্যই আসবো।ছেলে বলল আর বাবা আসবেনা।সেটা কি হয়?
আরাভ মিসেস আজহারকে ও বলে ওদের যাওয়ার কথা।তা শুনে মিসেস আজহার ছেলেকে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।ইয়ারাবীকে ও ধরে কেঁদেছিলেন মিসেস আজহার।
মিসেস আজহার আরাভের পছন্দের ডিস বানিয়েছে।ছেলে চলে যাবে।এই মা বুঝি ভালো মন্দ কিছু খাওয়াবেনা তা কি হয়?
এদিকে বেচারা অর্পন সবার সামনে হাসি খুশি থাকলে ও লুকিয়ে লুকিয়ে কেঁদেছিলো।সবসময় যে ভাই চোখের সামনো থাকতো তার সাথে হয়ত এখন খুব কম দেখা হবে।দুপুরে সবাই একসাথে খেলো।তবে সবার মাঝেই একটু মনমরা ভাব।
অপরদিকে রুপন্তী রেহান কোনভাবেই আসতে রাজি হচ্ছিলোনা।কিন্তু ভাই বোনের জোর জবরদস্তিতে ওরা রাজি হলো আসতে।
বিকেলে ইয়ারাবী কে সাজাতে দুজন মেয়ে এলো।ইয়ারাবীকে মিষ্টি কালারের একটি লেহেঙ্গা পরানো হয়েছে।চুল কার্ল করে বেনি করে সামনে রাখা।আরাভের বাহির থেকে আনা গয়নায় ওর সাজ পরিপূর্নতা পেয়েছে।
আরাভ রুমে এসে বৌকে দেখে থেমে গেলো।ওর ভাবনার চেয়ে ও অতুলনীয় লাগছে ওর বৌকে।
চলবে