The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 51

“আমার সারাটা দিন মেঘলা আকাশ”
আমার সারাটা দিন, মেঘলা আকাশ,
বৃষ্টি – তোমাকে দিলাম
শুধু শ্রাবণ সন্ধ্যাটুকু তোমার কাছে চেয়ে নিলাম।
হৃদয়ের জানালায় চোখ মেলে রাখি
বাতাসের বাঁশিতে কান পেতে থাকি
তাকেই কাছে ডেকে, মনের আঙিনা থেকে
বৃষ্টি তোমাকে তবু ফিরিয়ে দিলাম,,,,,,,,,,,
জানালার কাছে বসে গান করছিলো আরাভ।শীত আসার আগের বৃষ্টিটুকু ঝড়ছে আকাশের বুক চিরে।আরাভের চোখজোড়া জ্বলজ্বল করছে।গানের মাঝেই দেয়ালে মাথা রাখে আরাভ।নিচে সবার থেকে বিদায় নিয়ে রুমের কাছে আসতেই আরাভের গান কানে আসে ইয়ারাবীর।দাঁড়িয়ে যায় ও সেখানে।আরাভের চোখে ভেসে উঠে বিকেলে ইয়ারাবীর বলা কথা গুলো।দুপুরে আরাভের সাথে কোন কথা বলে নি ইয়ারাবী।বিকেলে আরাভের কফি দরকার হয় সেটা জানা আছে ইয়ারাবীর।তাই এক মগ কফি নিয়ে আরাভের রুমে আসে ইয়ারাবী।আরাভ একজন আমেরিকান ক্লায়েন্টের সাথে মিটিং করছিলো।তখনই ইয়ারাবী রুমে আসে।আরাভ কথা বলার মাঝে আড়চোখে স্ত্রীকে দেখে নিলো।মেয়েটা মুখ মলিন করে আছে।আরাভ লোকটাকে বায় বলে বসে আছে।ইয়ারাবী কফির মগটা আরাভের পাশে রেখে যেতে নিলে আরাভ ওর হাত ধরে থামালো।
-ইয়ারাবী দেখো মাফ চাচ্ছি তোমার কাছে।প্লিজ মন খারাপ করোনা।
-আমি ঠিক আছি,ছাড়ুন।ইয়ারাবী আরাভের হাত ছাড়াতে চেষ্ট করে।
আরাভের হাত ইয়ারাবীর কবজি ছেড়ে ওর হাতের বাহুপাশ ছেড়ে আরো ওপরে উঠে কাঁধে চলে যায়।ইয়ারাবীকে সামনে ফিরায় আরাভ।ইয়ারাবী এতক্ষন বড় নিশ্বাস নিচ্ছিলো।কারন আরাভের হাত যতোই ওর হাত বেয়ে উপরে উঠছিলো ও ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছিলো।ইয়ারাবী দূর্বল চোখে আরাভের দিকে তাকায়।আরাভ বলল,
-তুমি ঠিক নাই ইয়ারাবী।আ’ম সরি এগেইন।
-দেখুন আমার কিছু হয়নি।খামোখা টেনশন করবেননা।আর শুধু শুধু সরি বলতে হবেনা।আপনার থাপড়ের জন্য আপনার বাচ্চার ক্ষতি আমি করবোনা।কারন বাচ্চাটা আমার ও।
কথা গুলো বলে ইয়ারাবী আরাভের হাত ছাড়িয়ে নিচে চলে যায়।আরাভ ইয়ারাবীর যাওয়ার দিকে চেয়ে থাকে।তারপর থেকে আরাভ একদম চুপচাপ হয়ে যায়।বুঝতে পারছে না জেনে মেয়েটার গায়ে হাত তোলা একদম উচিৎ হয়নি।ইয়ারাবী ওর সদ্য বিয়ে করা বৌ।বিয়েটায় বেচারি খুব অবহেলা পেয়েছে।যেটা কখনোই কোন মেয়ে আশা করেনা।ইয়ারাবী আরাভের দিকে কিছু সময় চেয়ে বিছানার এক কোনায় শুয়ে পড়ে।আরাভ আরো কিছুসময় বসে উঠে দাঁড়াতেই ইয়ারাবীকে দেখতে পায়।তারপর এসে বিছানায় শুয়ে পড়ে আরাভ।ইয়ারাবীকে টেনে বুকের মাঝে নিয়ে নেয় ও।ইয়ারাবী নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করতেই আরাভ ওর হাত জোড়া ওকে জড়িয়ে ধরা হাত দিয়ে চেঁপে ধরে ওর কাঁধে নাক ঠেঁকিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
পরদিন সকালে নাস্তার টেবিলে আরাভ দুটো ট্রেনের টিকিট সেলিনা ফুপির সামনে রাখে।সেলিনা ফুপি টিকিট দেখে চোখ বড় করে আরাভের দিকে তাকায়।তারপর অবাক হওয়ার ভঙ্গিতে বলল,
-আরাভ এসব কি বাবা?
-ট্রেনের টিকিট।শান্ত গলায় বলল আরাভ।
-কে যাচ্ছে বাবা?জিজ্ঞাস করেন সেলিনা ফুপি।
-বাড়িতে শুনেছি দাদি তারান্নুমের দাদি অসুস্থ। সো আপনি বড় বৌ হিসেবে আপনার দায়িত্ব ওখানে যাওয়া তাই না ফুপি?
-তখনই আকরাম আজহার বললেন,সেলিনা আরাভ ঠিকই বলছে।তোর শ্বাশুড়ি অসুস্থ।বাড়িত চলে যা।
-আরাভ নাস্তা সেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলল আজ বিকেল চারটায় ট্রেন আসবে।
ইয়ারাবীর দিকে তাকায় আরাভ।ইয়ারাবী চুপচাপ খাওয়া শেষ করে উঠে দাঁড়ায়।আরাভ সামনে এগুতে এগুতে বলল,
-ইয়ারাবী এসো আমার সাথে।
ইয়ারাবী চুপচাপ আরাভের সাথে বাসার দরজার সামনে এলো।আরাভ যাওয়ার সময় ইয়ারাবীর কপালে চুমু দিয়ে বেরিয়ে পড়লো।ইয়ারাবী আরাভের যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে দরজা লাগিয়ে রুমে চলে এলো।ইয়ারাবী খাটে বসে চোখ বুজে রেখেছে।মাথা কেমন যেন ঘুরছে ওর।
-কিরে মা শরীর খারাপ লাগছে?জিজ্ঞাস করেন আরাভের আন্টি।
-না মা।কিছু লাগবে?হেসে জিজ্ঞাস করে ইয়ারাবী।
-নারে মা।তোমার ক্লাশ হচ্ছে না?কলেজে যাওয়া শুরু করছো না কেন?
-জি মা কাল থেকেই যাবো।বলল ইয়ারাবী।
-আচ্ছা ঠিক আছে।
দুজন বৌ শাশুড়ি মিলে বেশ কিছুক্ষন গল্প করে।সেদিন বিকেলে সেলিনা ফুপি আর তারান্নুম চলে যায়।আরাভ ঘরে ফিরে ফোনেই কথা বলছে শুধু।তবে ইয়ারাবীর যত্নে কোন প্রকার ত্রুটি রাখেনি ও।পরদিন সকাল আরাভ অফিসের জন্য বের হতে নিবে তখন আন্টি ইয়ারাবীকে নিয়ে এলো,
-আরাভ ওকে নিয়ে যা কলেজে।
-আরাভ বলল চলো।গাড়িতে যেয়ে বসলো আরাভ।
কিছু সময় পর ইয়ারাবী গাড়িতে বসলো আরাভের পাশে।ইয়ারাবীকে কলেজে নামিয়ে আরাভ অফিস চলে যায়।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
রাতে আরাভ ঘরে ফিরে আসে।ইয়ারাবী পানি নিয়ে রুমে ঢুকতেই খেয়াল করলো ড্রেসিংটেবিলের ওপর প্লেনের টিকিট।কিছুটা থমকে যায় ইয়ারাবী।আরাভের হাতে পানি দিয়ে খাটে এসে বসে ইয়ারাবী।বারবার টিকিটের দিকে তাকাচ্ছে ও।পানি টুকু খেয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায় আরাভ।ইয়ারাবী শুয়ে চোখ বন্ধ করে সময়খানিকের জন্য।কিছুক্ষন পর আরাভ বেরিয়ে লাগেজ গুছাতে শুরু করে।ইয়ারাবী আরাভকে দেখছে।লোকটা কি করছে?কই যাবে সে?নানান চিন্তা মাথায় ঘুরছে ইয়ারাবীর।হঠাৎ আরাভ বলল,
-সাত দিন থাকবোনা।নিজের খেয়াল রেখো।
-কই যাবেন?জিজ্ঞাস করে ইয়ারাবী।
-আমেরিকায়।ইম্পরট্যান্ট একটা কাজ পড়ে গেছে।না গেলেই নয়।
তারপর সব নিস্তব্ধ।আরাভ লাগেজ গুছিয়ে বিছানায় ইয়ারাবীর পাশ ঘেঁষে শুয়ে পড়ে।ইয়ারাবী অপর পাশ ফিরে শুয়ে আছে।ইয়ারাবীর লম্বা চুলের ফাঁকে ওর সাদা পিঠ দৃশ্যমান।আরাভ ঘোরে চলে গেছে।ঘন ঘন কয়েক নিশ্বাস নিয়ে ইয়ারাবীর পিঠে ঠোঁট ছোঁয়ায়।ইয়ারাবী চোখ খিচে বন্ধ করে চাদর খাঁমচে ধরে।আরাভ ইয়ারাবীর পিঠে ঘন ঘন চুমুর বন্যা বয়ে দিচ্ছে।ইয়ারাবীর নিশ্বাস ভারি হচ্ছে।আরাভ ইয়ারাবীর কাঁধে হালকা কামড় দিয়ে ভারি চুমু দিয়ে ওকে সামনে ফিরিয়ে নিজের দিকে নিলো।তারপর ওর গালে কপালে চুমুর বন্যা বয়ে দিতে শুরু করে।ইয়ারাবী পরম আরামে চোখ বুজে নিলো।আরাভ এবার ইয়ারাবীর ঠোঁটে আলতো করে চুমু খায়।ইয়ারাবীর একটু সাপোর্ট পেতেই আর দেরি করেনা আরাভ।নিজের ঠোঁটের ভাজে ইয়ারাবীর ঠোঁট জোড়া নিয়ে নিলো।ইয়ারাবী নিজে ও স্বামী কে চুমু দিচ্ছে।আরাভের হাত ইয়ারাবীর শাড়ী ভেদ করে ওর পেটে চলে যায়।তারপর সেখানে হালকা স্লাইড করতে থাকে।কিছুসময় পর আরাভ সরে এসে ইয়ারাবীর গলায় মুখ গুঁজে দুতিনেক চুমু দিয়ে ঐভাবেই ঘুমিয়ে যায়।
পরদিন সন্ধ্যায় বেরিয়ে যায় আরাভ।ইয়ারাবী আরাভের সামনে নিজেকে যথেষ্ঠ্য শক্ত রেখেছে।আরাভ ওকে এটা ওটা বুঝিয়ে বুকে জড়িয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়।আরাভ চলে যাওয়ার পর রুমে আসে ইয়ারাবী।ওর শান্তি লাগছেনা।অনেক একা একা লাগছে।একয়দিন অনেক ভরসা শক্তি পাচ্ছিলো লোকটার জন্য।যা নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো।পুরো রুম খাঁ খাঁ করছে।লোকটা চোখের আড়াল হলে মুহূর্তটা যে এতো বেদনাদায়ক হবে সেটা ভাবেইনি ইয়ারাবী।
রাতে সারা বিছানায় ছটফট করেছে ইয়ারাবী।শেষ রাতের দিকে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যায় ও।পরদিন কলেজে দিয়ে আসে অর্পন।কলেজ থেকে ফিরে শ্বাশুড়ির হাতে অল্প করে খেয়ে বিছানায় শরীর এলিয়ে দিতেই ইয়ারাবীর ফোন বেজে উঠে।দ্রুত ফোন হাতে নিলো ইয়ারাবী।আরাবী কল করছে। ফোন রিসিভ করে ও।
-হ্যালো ইয়ারাবী কই তুই?জিজ্ঞাস করে আরাবী।
-বাসায় আপু।কেন?জিজ্ঞাস করে ইয়ারাবী।
-আরাভ কই?ওকে ফোন দে।
-ওনি আমেরিকায় গেছেন কাল।বলোনা কি হয়েছে?জিজ্ঞাস করে ইয়ারাবী।
-বাবাই!!!
-উঠে বসে ইয়ারাবী।কি হয়েছে জেঠুর।
-বাবাই হার্ট এ্যাটাক করেছে।
চলবে