Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 72

আজিজ রায়হান মেয়েকে ডাকতে গেলেই রুপন্তী দৌড়ে চলে গেলো।আজিজ রায়হান মেয়ের পিছু নিলো।রুপন্তী চোখ মুছে যাচ্ছে অনবরত।ছোটকাল থেকে যাকে বাবা হিসেবে জেনে আসছে।
যার এতো মায়া মমতায় বড় হয়েছে এখন সে যদি নিজের বাবা না হয় সে কষ্টটা রুপন্তী তীব্র আকারে টের পাচ্ছে।
বুকের ভিতর কে যেন সুঁই দিয়ে খোঁচাচ্ছে।বাগানে এসে দাঁড়ালো রুপন্তী।মুখে হাত চেঁপে অনবরত কেঁদে যাচ্ছে।
আজিজ রায়হান মেয়ের পাশে এসে দাঁড়ালেন।রুপন্তীর মাথায় হাত রাখতেই রুপন্তী সরে গেলো।যাও তুমি আমার বাবা না।আমি তোমার কেউ না।এখান থেকে চলে যাও।মা তো থেকে ও নেই।আজ জানলাম বাবা ও নেই।আল্লাহ কেন নিয়ে যায় না আমাকে?বলেই ভীষন কাঁদতে লাগলো রুপন্তী।
আজিজ রায়হান রুপন্তীকে বুকে জড়িয়ে নিলেন।এই পাগল মেয়ে এভাবে বলছিস কেন?তোর কি ছোট বেলার কথা মনে নেই? আমার কাঁধে চড়ে বাজারে যেতি,এটা ওটা কিনার বায়না ধরতি।স্কুল থেকে ফিরে আমার কোলে উঠে যেতি।তোর কি এসব মনে পড়ে না মা?কেন এসব বলছিস রুপন্তী?তুই আমারই মেয়ে সোনা মা আমার।কাঁদিসনা।মানলাম,তোকে জন্ম দেইনি কিন্তু নিজলর সন্তান হিসেবে ভালোবাসিরে মা।তুই তো আমারই মেয়ে।কাঁদতে কাঁদতে বললেন আজিজ রায়হান।
-সরি বাবা।তুমি তো আমারই বাবা।আমি জানি তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো বাবা।বাকে জাড়িয় কাঁদতে লাগলো রুপন্তী।
কিছুক্ষন পর মেয়ের থেকে সরে এলেন আজিজ রায়হান।যা মা অনেক রাত হয়েছে।খেয়েছিস?জিজ্ঞেস করে উঠলেন আজিজ রায়হান।
না বাবা এখনো খাইনি।বলে উঠে রুপন্তী।
কি বলিস মা?এখনো খাস নি?চল খেয়ে নিবি।বলে উঠে আজিজ রায়হান।রুপন্তী ম্লান হেসে বাবার সাথে ডাইনিং এ চলে এলো।আজিজ রায়হান মেয়েকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলেন।
খাওয়া শেষে দুজনে যে যার রুমে চলে গেলো।রুপন্তী রুমে আসতেই কেউ ওকে পিছন থেকে জড়িয়ে কাঁধে মুখ ডুবালো।
রুপন্তীর নিশ্বাস ভারি হয়ে এলো।রুপন্তীর ঘাড়ে ঘন ঘন চুমু বর্ষন করছে।রুপন্তী রেহানকে সরিয়ে সামনে ফিরলো।রেহান রুপন্তীর দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকালো।
রুপন্তীর চোখের কোনে জমে থাকা এক ফোঁটা অশ্রু হাতে নিয়ে রেহান বলল কাঁদছিলে কেন?কেউ কিছু বলেছে?বলো তো?
নাহ কিছুনা এমনি।এসময়ে আমার রুমে কেন?বলে উঠলো রুপন্তী।
হবু বৌয়ের রুমে একটু দুষ্টুমি করতে এলাম।রুপন্তীর গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো রেহান।
রেহান ভালো লাগছেনা আমার।এখন না প্লিজ।তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো।রেহান কে সরিয়ে দিয়ে বলল রুপন্তী।
-তোমার কি শরীর খারাপ নাকি?রুপন্তীর গালে কপালে হাত ছুঁয়ে বলল রেহান।
-নাহ এমনিই ভালো লাগছেনা।প্লিজ যাও।বলে উঠলো রুপন্তী।
-ওকে যাচ্ছি।গুড নাইট।বলে চলে গেলো রেহান।
ভোরের আলো ফু্ঁটতে শুরু করেছে।চারিদিক সূর্যের আলোকিত করা হাসিতে ভরে গেছে।চারদিক থেকে পাখির কলকাকলিতে মুখরিত।
ঠোঁটে উষ্ণ রসালো ছোঁয়া পেয়ে চোখ খুলে রুহী।রোয়েন রুহীর দিকে উঁবু হয়ে বাঁকা হেসে তাকিয়ে আছে।রুহীর ঠোঁটের চারপাশ ভিজে আছে।সেটা দেখতে ভীষন ভালো লাগছে রোয়েনের।
-Good morning my dear husbandমিষ্টি গলায় বলে উঠে রুহী।
-Good morning dear wife.রুহীর কপালে চুমু খেয়ো বলে রোয়েন।রুহীর মুখে মিষ্টি হাসি ফুঁটে উঠেছে।রোয়েন এবার রুহীর উপর থেকে সরে খাটে বসলো।রোয়েন উঠে যেতেই রুহী উঠে বসে বুকের ওপর ভালো মতো চাদর টা টেনে দিলো।রোয়েন রুহীর দিকে ফিরে বলে উঠলো ফ্রেশ হয়ে এসো ব্রেকফাস্ট করতে যেতে হবে।
-রুহী মাথা ঝাঁকিয়ে বুকের চাদরটি সহ ওয়াশরুমে চলে গেলো।
রোয়েন উঠে গায়ে চকোলেট কালার শার্টটি জড়িয়ে নিলো।গায়ে ল্যাভেন্ডার স্মেলের দামি পারফিউম টি মাখিয়ে নিয়ে চুল আঁচড়ে নিলো।
রুহী গায়ে রয়েল ব্লু রংয়ের শাড়ীটি জড়িয়ে বেরিয়ে পড়লো।গালের সাথে ভিজা চুল লেপ্টে আছে।রোয়েনের ভীষন লোভ হচ্ছে বৌটাকে দেখে।রোয়েন ধীরপায়ে রুহীর কাছে এসে দাঁড়ালো।রুহী চোখ নামিয়ে নিয়েছে।রোয়েনের হাত রুহীর চুলের ভিতর হারিয়ে গেলো।রুহীর কাঁধে রোয়েন হাত পরশ বুলাচ্ছে।রুহীর চোখ বুজে যেতে চাইছে।রোয়েন রুহীর কপালে চুমু দিয়ে সরে এলো।রুহী রোয়েনের দিকে তাকায়।
-চলো নাস্তা করে আসি।বলে উঠে রোয়েন।
-চুল গুলো একটু রেডি হয়ে নিই।পাঁচটা মিনিট বসো।বলে উঠে রুহী।
রোয়েন বাধ্য হয়ে বসে রুহীর রেডি হওয়া দেখছে।
রুহী রেডি হয়ে রোয়েনের সাথে নিচে নেমে এলো।সবাই ওদের জন্য অপেক্ষা করছে।রুহী গিয়ে রুপন্তীর পাশে বসে পড়লো।সবাই নাস্তা সেড়ে নিলো হালকা আড্ডার সাথেই।
নাস্তা সেড়ে সবাই কেওক্রাডং পাহাড়ের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো।পাহাড়ে পৌছে সবাই এর সৌন্দর্য দেখতে ব্যাস্ত হয়ে পড়লো।তানহা আজিম আজিজ রায়হানের সাথে লেগে আছেন।গল্প করছেন কখনো একসাথে সেল্ফি নিচ্ছেন।আনিলা বেগমের গা জ্বলে যাচ্ছে স্বামীর এসব দেখে।রুহী আর রুপন্তী আশেপাশে ঘুরছে সুন্দর জায়গা দেখে ছবি তুলার জন্য।রোয়েন রেহানের সাথে গল্প করছিলো আর আড়চোখে রুহীকে দেখছিলো।রেহানের সাথে কথা বলার ফাঁকে পাশে তাকায় রোয়েন।রুহীকে না দেখতে পেয়ে এবার পুরো ঘুরে দাঁড়ায় রোয়েন।রুহীকে কোথাও দেখতে পাচ্ছেনা।রোয়েনের কপালের রগ খাড়া হয়ে গেলো।
-ভাইয়া কি হলো?ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলো রেহান।
-ওরা কই?দাঁতে দাঁত চেঁপে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
-গেছে আশেপাশে চলে আসবে ভাইয়া।বলে উঠে রেহান।
-রোয়েন রেহানের কথায় কোনরকম পাত্তা না দিয়ে বেরিয়ে পড়লো রুহী আর রুপন্তীকে খুঁজতে।
রেহান ও ভাইয়ের পিছু নিলো।
রোয়েনের হাঁটার সাথে রেহান পেরে উঠছেনা।দৌড়ে হাঁটছে রোয়েন।
রেহান ও দৌড়ে হাঁটতে লাগলো।
রোয়েন একজায়গায় এসে থেমে গেলো।রুপন্তি প্রায় ধরে নিয়ে আসছে বোনকে।
রুহীকে ভালো মনে হচ্ছেনা।ওর মুখে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমে আছে।মনে হচ্ছে যেন ওর হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে।
ভাবি!!!রুপন্তী কি হলো ওনার?জিজ্ঞেস করলো রেহান।রোয়েন রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।
আপু আর আমি পাশেই গেলাম ছবি তুলতে।আপু বড় একটা পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ছবি তুলছিলো।হঠাৎ নেমে এসে দাঁড়ানো থেকে পড়ে গেলো।
তারপর খাও,,,কথা শেষ না করতেই রোয়েন রুহীকে কোলে তুলে নিলো।রুহীর মাথা রোয়েনের কাঁধে।রোয়েন রুহীকে সবার সামনে এনে একটা পাথরের ওপর বসালো।
রুহীর দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল একটা দিবো ধরে থাপড় দেখিয়ে বলল রোয়েন।রুহী ঠোঁট ফুঁলিয়ে কাঁদতে লাগলো।
রোয়েন রুহীর পায়ের ওপর থেকে একটু কাপড় সরালো।খুঁজতে লাগলো কোথাও ব্যাথা পেলো নাকি?
রুহী রোয়েনের শার্ট খামচে ধরে কাঁদছে।রোয়েন রুহীর হাত চেক করলো।নাহ কিছু হয়নি।
সাইফ রাহমান আর আজিজ রায়হান এসে দাঁড়ালো ওদের পাশে।
কি হলো রোয়েন?জিজ্ঞেস করে উঠলো আজিজ রায়হান।
রুহীর দিকে তাকিয়ে রোয়েন বলল কিছুনা বাবা।পরে গেছে ও।
কিরে মা ব্যাথা পেয়েছিস?জিজ্ঞেস করলেন ওনারা।রুহী মাথা নাড়লো।
রোয়েন উঠে দাঁড়িয়ে রুহীকে কোলে তুলে নিলো।
ওরা হাঁটতে হাঁটতে গাড়ির কাছে এসে দাঁড়ালো।কিছুক্ষনের মাঝে রোয়েনের হোটেলে এসে থামলো ওরা।রোয়েন রুহীকে কোলে নিয়ে রুমে এসে খাটে বসালো।
রুহী মুখ কালো করে খাটে বসে আছে।রোয়েন রুহীর দিকে পানি ধরলো।
-খেয়ে নাও।বলে উঠে রোয়েন।
রুহী মাথা নিচু করে বসে আছে।রোয়েন রুহীর মুখ ধরে পানি খাইয়ে দিলো।
রুহীর চোখজোড়া ছলছল করছে।
রোয়েন রুহীকে বুকে জড়িয়ে নিলো।আ’ম সরি রুহী।
রোয়েনকে জড়িয়ে ধরলো রুহী।আমার কেমন যেন লাগছিলো।খুব খারাপ লাগছিলো।কাঁদো গলায় বলে উঠলো রুহী।
রোয়েন রুহীর গালে কপালে চুমু দিয়ে ওর ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো।।
রাতে হাঁটতে বের হলো ওরা।হাঁটতে একটা চায়ের দোকানের সামনে এসে থামলো ওরা।সবাই মিলে চা খেলো।তারপর আবার হাঁটতে লাগলো।একজায়গায় চোখ গেলো সবার।আদিবাসীরা নাচছে আগুনের সামনে।আর ওদের ভাষায় গান চলছে।রেহান আর রোয়েনকে দুটো মেয়ে ধরে নিয়ে গেলো।রোয়েন ওদের থেকে সরে এসে রুহীর পাশে দাঁড়ালো।রেহান রুপন্তীকে দেখিয়ে নাচছে মেয়ে গুলোর সাথে।রেহান রুপন্তীর দিকে রাগী চোখে চেয়ে আছে।
চলবে