The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 50

রাতে খাট নড়তে দেখে ঘাবড়ে যায় রুহী।কি হচ্ছে?পাশের মানুষটা ঠিক আছে তো?রুহীর চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু গড়িয়ে যাচ্ছিলো এতক্ষন পর্যন্ত হঠাৎ খাট নড়ে উঠে সম্বিত ফিরে পায় ও।দ্রুত চোখ মুছে টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে রোয়েনের দিকে ফিরে রুহী।রোয়েনের চোখের কোনা বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।থেকে থেকে কেঁপে উঠছে রোয়েনের শরীর।রুহী উঠে বসে রোয়েনের কপালে আলতো করে হাত রাখলো।রোয়েনের দুই চোখ গাল অশ্রুতে ভরে গেছে।অনবরত কাঁদছে রোয়েন।রুহী এ লোককে চিনতে পারছেনা।কখনোই এভাবে কাঁদতে দেখেনি।রুহীর চোখজোড়া অাবার ও ভরে এসেছে।আজ ছেলে কে পেয়ে ও পেলো না ওরা।
-এই কি হলো এভাবে কাঁদছো কেন?কান্নার স্বরে জিজ্ঞাস করে রুহী।
-রুহীর হাত চেঁপে ধরে রোয়েন।সরি রুহী মাফ করে দাও আমাকে।
-মাফ কিসের জন্য রোয়েন?রোয়েনের চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল রুহী।
-আমার কারনে আমাদের ছেলে চলে গেছে আমাদের ছেড়ে।খুব খারাপ আমি রুহী খুব খারাপ।
স্বামীকে বুকে জড়িয়ে নিলো রুহী।এভাবে বলো না প্লিজ। তোমার দোষ নেই।তোমার সম্পূর্ন অধিকার আছে ওকে শাসন করার করেছো তুমি।আমাদের ছেলে বুঝতে পারছেনা রোয়েন।প্লিজ কেঁদোনা।দেখো ও নিজের ভুল বুঝতে পেরে একদিন ঠিকই আমাদের কাছে আসবে রোয়েন।রোয়েন কেঁদেই যাচ্ছে আর বলছে আমি ভালো বাবা হতে পারিনি রুহী পারিনি ভালো বাবা হতে।এভাবে কেঁদে কেঁদে সারাটারাত কেঁটে যায় ওদের অপরদিকে ইয়ারাবী বিছানা ছেড়ে উঠে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে নিবে তখনই আরাভ ওকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায়।ঝড়নার নিচে ইয়ারাবীর দাঁড় করাতেই ইয়ারাবী বলল,
-আমি নিজেই গোসল করতে পারি।যান আপনি।
-জাস্ট শাট আপ।আমার বাচ্চাটাকে গোসল করাচ্ছি আমি আমি।
মনের অজান্তে হাসলো ইয়ারাবী।বৌকে নিজ হাতে গোসল করিয়ে দিল আরাভ।ইয়ারাবী রয়েল ব্লু কালারের শাড়ী আর তার সাথে কিছু গয়না পরে নিলো।নতুন বৌ তাই একটু আধটু পরতে হয়।ইয়ারাবী নিচে নেমে এলো।ডাইনিং টেবিলের কাছে আসতেই ইয়ারাবীকে সেলিনা ফুপি বলল,
-এই রুটি গুলো খাবোনা।ইয়ারাবী আমার জন্য পাকঘর থেকে রুটি আনতো।
-সেলিনা এগুলো তো তাজা রুটি।এগুলো খা না।আকরাম আজহার বললেন।
-না ভাই আমি এগুলো খাবো।যা ইয়ারাবী নিয়ে আয় রুটি।
জি বলে ইয়ারাবী পাকঘরে এসে দেখলো রুটি নেই।ওকে নতুন করে রুটি বানাতে হবে।তাই করলো ও।অবশেষে রুটি সেঁকে সেলিনা ফুপির কাছে নিতেই ওনি বললেন
-একটা রুটি চেয়েছিলাম আনলে এতক্ষন পর!!মা কিছু শিখায়নি?
-নাহ ফুপি আসলে,,,,, ইয়ারাবী কথা শেষ করতে পারলোনা তার আগেই ফুপি বললেন
-তা পারবে কেন নষ্টামি করেই কূল পাওনা এগুলো করবে কখন?
-সেলিনা!!!! আকরাম আজহার ডাকলেন।
-ফুপি ইয়ারাবী কে শুনিয়ে যাচ্ছেন তোমাদের মতো মেয়েদের ভালো মতো চিনি বড় লোকের ছেলেদের ফাঁসাও নিজেদের জালে তারপর অঘটন ঘটিয়ে বিয়ে করে ফেলো টাকার লোভে।শুনেছিলাম তোমার মা বাবার লাভ মেরেজ। তারাও নিশ্চিত এমনই করেছে।তাদের মতো তাদের মেয়ে ও নষ্টা।রাস্তাঘাটে নষ্টামি করে বেড়ায়।
-ফুপি যা বলার আমাকে বলুন।আমার বাবা মাকে নিয়ে কিছু বলার অধিকার আপনার নেই।
ঠিক তখনই আরাভ নিচে আসে।ইয়ারাবীর শেষের কথাটুকুই শুনতে পারে আরাভ।টেবিলের কাছে এসে আরাভ রাগী গলায় বলল,
-ফুপির সাথে এভাবে কথা বলছো কেন ইয়ারাবী?
-ওনাকে জিজ্ঞাস করুন ওনি আমাকে কি বলেছে?
-ওনি যাই বলুক।ওনি মুরব্বি মানুষ।তুমি এভাবে কথা বলার সাহস কই পেলে?রাগী গলায় বলল আরাভ।
-আরাভ বাবা থাম। শুন কি হয়েছে। বলে উঠেন আকরাম আজহার।
-আঙ্কেল আমি কিছু শুনতে চাইনা।জানতে চাইছি ওর এতো বড় কলিজা কি করে হলো ফুপির সাথে এভাবে কথা বলার?ইয়ারাবী মাফ চাও ফুপির কাছে।বলে উঠে আরাভ।
-মাফ চাইবোনা আমি।আমার কথা শুনুন আগে।ইয়ারাবী কথাটা বলতেই আরাভ সজোরে ইয়ারাবীর গালে চড় বসালো।
-চিৎকার করে উঠেন আকরাম আজহার এসব কি আরাভ? ও অসুস্থ তুমি কি করে ওর গায়ে হাত তুললে?
ইয়ারাবী নিজের রুমে চলে এলো চোখ মুছতে মুছতে।আরাভ কে আকরাম আজহার কথা শুনাতেই থাকলেন।
-তোমার ওয়াইফ ও আরাভ কি করে ওর গায়ে হাত তুললে তুমি।নতুন এসেছে ও এ বাসায়।
-সো হোয়াট!!!তাই বলে কি ও বেয়াদবি করবে?
আকরাম আজহার কিছু না বলে রুমে চলে গেলেন।আরাভ রেগে নিজের রুমে আসতে নিবে তখনই ওদের মেইড সার্ভেন্ট ফুলবানু আরাভের কাছে এসে বলল ছোট ম্যামরে মারলেন।ওনার দোষ আছিলোনা।তারপর ফুলবানু সেলিনাফুপির সব কথা আরাভকে জানায়।মন খারাপ হয়ে যায় আরাভের।সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীর গায়ে হাত তুলল ও?তাও এঅবস্থায়?তাও আবার এমন একটা দোষে যেটা আসলে ইয়ারাবীর ছিলোইনা।আরাভ রুমে এসে ইয়ারাবীকে পেলোনা।হঠাৎ বারান্দায় চোখ পড়ে আরাভের।ইয়ারাবী বারান্দার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে চোখ মুছে নিচ্ছে।ইয়ারাবীর পিছে দাঁড়ায় আরাভ।
-আ’ম সরি ইয়ারাবী।তোমাকে মারা ঠিক হয়নি।দেখো তোমায় না মারলে সবাই বলতো বৌকে সাপোর্ট করছি।তখন সবাই তোমাকে খারাপ ভাবতো।
-সামনে ফিরে ইয়ারাবী।আমার খারাপ লাগেনি।থাপড় টা আমি ইচ্ছে করে খেয়েছি আপনাকে বুঝানোর জন্য যে সেদিন জেঠু আপনাকে না মারলে কলেজ থেকে আপনাকে টিসি দিয়ে দিতো।আপনার লাইফ তো শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে যেতো।মারটা ছিলো আপনাকে বাঁচানোর জন্য।নিজের বাবাকে চিনতে পারেননি আপনি।কথা গুলো বলে আরাভকে পার করে ওয়াশরুমে চলে যায় ইয়ারাবী।
আরাভ ভাবনায় পড়ে যায়।ইয়ারাবীর কথা গুলো ভাবতে থাকে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
এদিকে আরাবী আর্ভিন নিজেদের রুম দেখে অবাক।আরাবী চটজলদি আলো জ্বালিয়ে সব গুলো মোম নিভিয়ে দিলো।খাটের ফুল গুলো কে ঝাড়ু দিয়ে ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দিয়ে কাপড়চোপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।এতো দ্রুত সব হলো যে আর্ভিন কিছু বুঝে উঠতে পারেনি।
মন খারাপ হয়ে গেলো আর্ভিনের।এ রাতটা নিয়ে ওর অনেক স্বপ্ন ছিলো।কিন্তু আরাবী যা করলো সেটার পর থেকে সব স্বপ্ন ভেঙ্গে গেলো।বড় নিশ্বাস নিয়ে বারান্দায় এলো আর্ভিন।তারপর সিগারেট জ্বালিয়ে আকাশ পানে চেয়ে রইলো।
আরাবী ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আসে আর্ভিন কে রুমে না পেয়ে কিছু না বলে কাথা গায়ে জড়িয়ে শুয়ে পড়লো।বেশ রাত করে রুমে এলো আর্ভিন।পুরো এক প্যাকেট সিগারেট শেষ করে ক্ষান্ত হয়েছে ও।রুমে এসে দেখে ম্যাডাম ঘুমিয়ে গেছে।
আরাবীর পাশে এসে খাটে বসলো আর্ভিন।আরাবীর দিকে চেয়ে আছে ও।ঘুমে কাউকে এতো টা সুন্দর লাগতে পারে জানা ছিলো না আর্ভিনের।
আর্ভিন আরাবীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে একটু পাশ ঘেঁষে শুয়ে পড়লো।
পরদিন সকাল আরাবী ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসে।আর্ভিন ঘুমোচ্ছে।আরাবী ইসরাত মাহবুবের কাছে এসে দাঁড়ায়।মহিলা স্যান্ডুইচ বানিয়ে প্লেটে প্লেটে সাজাচ্ছে।বেশ লজ্জা বোধ হয় আরাবীর।
-মা আসলে এতো দেরি হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।প্লিজ মাফ করে দিয়েন।
-ইসরাত মাহবুব হেসে বৌয়ের দিকে তাকান।কিছু হবে না আম্মু।পরে আমাদের নাস্তা বানিয়ে খাওয়াবে ওকে?
-জি মা।বলে উঠে আরাবী।
নাস্তার মাঝেই আরাবীর সাথে দেখা হয় ইশরাক মাহবুবের।শয়তানি হেসে ওনি বললেন,
-কি বৌ মা আর্ভিন এখনো উঠেনি?
-না ওনি এখনো উঠেননি বাবা শয়তানি হাসি আরাবীর মুখে।
-বৌমা নাস্তা সেড়ে আমার সাথে এসো স্টাডি রুমে কথা আছে।
-জি আসবো আমি।আরাবী আড়ালে আর্ভিন কে কল দিলো।
নাস্তা সেড়ে আরাবী ইশরাক মাহবুবের সাথে ওনাদের স্টাডি রুমে গেলো।ইশরাক মাহবুব একটা দলিল হাতে নিয়ে বললেন বলেছিলে আমাদের মতো ছোটলোকদের বাড়ির বৌ হবেনা।এখন তো হয়েই গেলে। নাও সাইন করে দাও।ছয়মাস পর তোমাদের তালাক।আর প্রপার্টির বড় একটা অংশ তোমার।নাও সাইন করো।
তখনই পিছন থেকে আর্ভিন বলল,
-ও সাইন করবে না মিঃ মাহবুব।
-তখনই ইশরাক মাহবুব বললেন আর্ভিন দেখো বাবা ও বার বার বলছে তোমাদের বিয়েটা নাকি ছয়মাসের।কতো করে বুঝালাম মেয়েটাকে।
-অভিনয় করবেননা মিঃ মাহবুব।আমি প্রথম থেকে সব জানি।আর্ভিন ইশরাক মাহবুবের হাত থেকে দলিল নিয়ে ছিড়ে কুঁটিকুঁটি করলো।
আর্ভিনের মা এসে ইশরাক মাহবুব কে থাপড় দিয়ে চিৎকার করে বললেন,
-নিজের ছেলের সাথে কিভাবে পারলে এমন করতে?ওর জীবন নিয়ে কেন খেলছো বলো?
চলবে