The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 88

→রুহীকে দেখছে রোয়েন।মন ভরে দেখছে।ওর আগে রুহী কি?যে ওকে কতোটা ভয় পেতো।কাছে আসলে লজ্জা পেতো।ওকে যখন কাছে টানা হতো তখন চোখের পলক নিচে নেমে যেতো।গাল দুটো লাল হয়ে আসতো।ওর রুহীটার অনেক পরিবর্তন এসেছে।দেখতে আগের চেয়ে ও অনেকটা বেশি সুন্দর হয়েছে।গাল দুটো ফুলো ফুলো হয়ে গেছে।শুনেছিলো এসময়ে মেয়েরা নাকি খুব সুন্দর হয়।আসলেই সত্যি।রুহীর চেহারায় চাঁদের স্নিগ্ধতার আলো ছেঁয়ে গেছে।চোখ জোড়া ও বড় উজ্জ্বল লাগে রোয়েনের কাছে আগের থেকে অনেকটা বেশি।আজকাল রুহী যখন কথা বলে রোয়েন রুহী কে খুব বেশি লক্ষ করে।আগে করতো না এমনটা না।আগে ও অনেক করতো।কিন্তু এখন এতোটাই করে যে আশেপাশে কি হচ্ছে বুঝার ক্ষমতা থাকেনা ওর।ওর পুরোটা দুনিয়া জুড়ে রুহী।যখন বন্ধুদের সাথে থাকে কিংবা কাজে তখন ও এটাই মাথায় ঘুরে রুহী কি করছে,কি খাচ্ছে,কোন বর্নের শাড়ী পরেছে,সে সাথে চুল গুলো পিঠের ওপর এলিয়ে পড়েছে নাকি সুন্দর খোপার কাঁটায় জড়ানো নাকি,বুকের একপাশে রাখা।সবাই শুনলে বলবে ও বৌ পাগল।বৌ নিয়ে কেউ এতোটা কি ভাবে?কিন্তু ও ভাবে আর এতে রোয়েনের লজ্জা নেই বরং অনেকটা ভালো লাগা কাজ করে।ও রুহীকে ভালবাসে।রুহীকে নিয়ে সারাক্ষন ভাবতে ভালোবাসে।রুহীর থেকে দূরে থাকতে চায়না।কাজে থাকলে রুহীর কাছে চলে আসতে ইচ্ছে হয়।ওকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে।ভালবাসায় ডুবে যেতে।রুহীকে বুকে নিয়ে সারারাত দিন কাঁটাতে।আর বাবুরা এলে ওদের সাথে নিয়ে ঘুরতে যেতে। পুরো দুনিয়া ঢু মেরে বেড়াবে ওরা।বাবুদের থেকে লুকিয়ে ছোট্ট ছোট্ট সুন্দর সময় গুলো ও পার করবে একসাথে।রুহীর দিকে তাকিয়ে কথাগুলো ভাবছে রোয়েন।রুহী রোয়েনের বুকে সেই অনেক্ষন যাবৎ মাথা রেখে আছে।
ওদের খেয়ালই নেই যে ওরা একা এক রুমে বন্দী আছে।
রোয়েনের সেল বেজে উঠায় দুজনের ঘোর ভাঙ্গে।রুহী সরে আসেনা।সেভাবেই কল রিসিভ করে রোয়েন।ওর বন্ধু সাজিদ কল করেছে।রোয়েন ফোন ধরে বলল,
.
.
-”আমি আসছি।তোরা বস।”
-” শালা কই লুকিয়ে আছিস?খুঁজে পাইনা তোরে।”
-”আসতেছি।বাহিরে কাজে ছিলাম।”
-”ওহ আচ্ছা আয়।শালা রামীনকে ও ভুতে পাইছে।গোমরা মুখ কইরা বইয়া আছে।”
-”আমি আসছি। তোরা কই এখন?”
-”ড্যান্স ফ্লোরে জুয়েল আর ওর ওয়াইফ নাচতেছে।আমরা বাকিরা ঐখানেই আছি।”
-”ও আচ্ছা।”
.
.
রুহী ততক্ষনে সরে এসে নিজের চুল ঠিক করে নেয়।রোয়েন কান থেকে ফোন সরিয়ে রুহীকে খেয়াল করে।রুহীকে অন্যরকম সুন্দর দেখাচ্ছে।ওর কপাল গাল ঠোঁট হালকা আলো ছড়াচ্ছে।সবই হয়ত ওকে পাগল করার জন্য।রোয়েন আরেক দফা রুহীর মিষ্টি ঘ্রানে নিজেকে ডুবিয়ে নেয়।রুহী সরে এসে বলে,
.
.
-”সবাই অপেক্ষা করছে।যেতে হবে আমাদের।”
.
.
রুহী কে কাছে টেনে নেয় রোয়েন ওর কোমড় চেঁপে গলায় নাক ঘষতে ঘষতে বলল,
.
.
-”ইচ্ছে হচ্ছেনা।এখানে রাতটা কাঁটিয়ে দেই।সবাইকে বলবো ঘরে ফিরে গেছি আমরা।”
-”পাগল হয়ে গেলে?পার্টিটা কিন্তু তুমিই এ্যারেঞ্জ করেছো।এখন যেতে পারবেনা।”
-”সেটাই সমস্যা।চলো যাওয়া যাক।”
.
.
সরে আসে রোয়েন।দুজনে বেরিয়ে এসে সবার সাথে জয়েন করে।রামীন জুস বারে বসে ওয়াইন গিলছে।আশফিনা জ্বলজ্বলে চোখে ওকে দেখছে।লোকটার ভিতরে কি চলছে বুঝতে পারছে ও।কি করে পারলো ও এতোটাদিন দূরে থাকতে?ওর ভালবাসাটাকি এতোটাই দূর্বল তাহলে?নিজের ওপর রাগ হয় ওর খুব রাগ।এরই মাঝে রোয়েন রুহী ও সবার সাথে এসে কথা বলতে থাকে।ফাহমিন কে দেখে সামায়রা লুকাচ্ছে।যতোই লুকাচ্ছে ততোই ফাহমিন লোভ বাড়ছে সামায়রাকে দেখার।মেয়েটাকে দেখছে ও।সামায়রা চোখ লুকিয়ে অন্য পাশে চলে যাচ্ছে কিন্তু ফাহমিনের নজর এড়াতে পারছেনা।ওদের এক বন্ধু রাজীব।সামায়রা কে চিনে না ও।ফাহমিন কে তখন এভাবে সামায়রার পিছনে ঘুরঘুর করতে দেখে রাজীব অবাক হয়।অবশ্যই এই মেয়ের সাথো কোন কানেকশান আছে ফাহমিনের নয়তো এমন ঘুর ঘুর করবে কেন?রাজীব হঠাৎ বলল,
.
.
-”ঐ মেয়েটা কি ফারিয়া আপার মেয়ে?”
.
.
রাজীবের কথাটা বুঝতে না পেরে ফাহমিন বলল,
.
.
-”কি বললি?”
-”বললাম তোর বোনের মেয়ে নাকি?”
-”শালা বিয়ে করে তো বাচ্চা পয়দা করে ফেলেছিস।এখন যখন আমি ফিউচার প্ল্যান করছি আর তুই বলিস আমার বোনের মেয়ে নাকি?”
-”আস্তাগফিরুল্লাহ নাউজুবিল্লা শালা নিজের বয়সের দিকে তাকা।বুড়ো ধামড়া বেটা চ্যাংড়া মেয়ের সাথে ফিউচার প্ল্যান করছিস?সিরিয়াসলি!!!!একটু তো শরম কর বেটা।”
-”বুড়ো ধামড়া তুই তোর **গুষ্ঠি। কাকে বুড়ো বলিস?”
.
.
বন্ধুদের এমন করতে দেখে রোয়েন চোখ রাঙ্গায়।দুজনেই চুপ হয়ে যায়।রুহী নীরা হামিদ আর মামার সাথে গল্প করছে।আনিলা রুহীর জন্য ঘর থেকে রান্না করে এনেছেন।ওনি রুহীকে বাহিরের খাবার খাওয়াতে রাজি নন।কারন এতে ওর সমস্যা হতে পারে।খাবার গুলো রোয়েনকে দিয়েছেন ওনি।ওনার নাম বলতে নিষেধ করে দিয়েছেন।নয়ত রুহী রাগ করতো খেতে চাইতো না।রোয়েন রুহীকে নিয়ে খেতে বসে।রুহী নিজের প্লেটে আলাদা খাবার দেখে অবাক হয়।
.
.
-”এগুলো কেন?”
-”তোমার জন্য এগুলো ঠিক।প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ভিটামিন সঠিক পরিমানে আছে।আর ওরা তোমার খাবারে উল্টাপাল্টা কিছু এড করেনি।আর এগুলো তে তেল দিয়েছে অনেক।তাই তোমার জন্য আলাদা খাবারের ব্যাবস্থা করেছি।”
.
.
রুহী হেসে এক লোকমা খাবার মুখে দেয়।রোয়েন হেসে খেতে থাকে।হঠাৎ ও অনুভব করে রুহীর খালি পা ওর পশমি পায়ে পরশ বুলাচ্ছে।কেঁপে উঠে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।রুহী চোখ টিপে খাওয়ায় মন দেয়।রোয়েন কিছু না বলে খেতে থাকে।রোয়েন পানির প্রয়োজন বোধ করে।গ্লাস হাতে নিতে যাবে তখনই রুহী গ্লাসের পানি গুলো শেষ করে নেয়।রোয়েন মুচকি হেসে গ্লাসে পানি নিতে গেলে রুহী ওকে থামায় তারপর ইশারা করে ওর মুখের জমানো পানি খেতে।রোয়েন চারপাশে তাকিয়ে দেখে সবাই যে যার মতো খাচ্ছে।ওদের টেবিলটা আলাদা।সবার মাঝে।রোয়েন মাথা নাড়ায়।রুহী নাছোড়বান্দা। কিছুতেই ছাড়বেনা।এমন পিড়াপীড়িতে রুহী রেগে উঠে যাচ্ছিলো তখন রোয়েন ওকে বসিয়ে ওর মুখ থেকে পানিটা খেয়ে নেয়।রুহী একদফা চুমু খেয়ে নেয় স্বামীকে সেই সুযোগে।রোয়েন সরে এসে চোখ রাঙ্গিয়ে ইশারা করে খেয়ে নিতে দ্রুত।রুহী দুষ্টু হেসে খেতে থাকে।খাবার শেষে ওরা উঠে যায়।টাইম আসে কাপল ড্যান্সের।রোয়েন রুহীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। রামীন নাচবেনা কিন্তু বন্ধুদের জোরাজুরি ও নিতে পারছেনা।একসময় রামীন রাজি হয় নাচতে।বন্ধুরা ও খুশি।নীরা হামিদ আর আরমান হামিদ নাচের জন্য প্রস্তুত।শামীম জোর করে রেজোয়ান মাহবুব আর আনিলা কে রাজি করিয়েছে নাচের জন্য।এদিকে ফাহমিন সামায়রাকে দেখছে।মেয়েটা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে।ফাহমিন ওর কাছে যেতে পারবেনা কারন মেয়েটা ওর সঙ্গ হয়ত পছন্দ করেনা।ওকে এক রেপিস্টের সাথে তুলনা করলো।কিন্তু ফাহমিন দ্রুত ভুল ভাঙ্গাবে ভয় দূর করবে।গান শুরু হয়ে গেছে।
Chura liya hai tumne jo dil ko
Nazar nahi churana sanam
Badal ke meri tum zindagani
Kahin badal na jaana sanam
Ho le liya dil o
Haaye mera dil
Haye dil lekar mujhko na behlana
Chura liya hai tumne jo dil ko
Nazar nahi churana sanam
Badal ke meri tum zindagani
Kahin badal na jaana sanam
Bahar banke aaun
Kabhi tumhaari duniya me
Guzar na jaye ye din
Kahin issi tamanna mein
রোয়েন রুহী একে অপরকে দেখছে একে অপরের নিশ্বাস অনূভব করছে।রোয়েন রুহীর কপালে চুমু দিয়ে ওকে ঘুরিয়ে নিজের বুকের সাথে ওর পিঠ লাগিয়ে নেয়।নাচের শেষে আশফিনা ভেঙ্গে পড়ে।একদম চুপ চাপ হয়ে যায়।ও ঠিক সবার আগেই বেরিয়ে পড়ে।সবাই অনেক অবাক।ফাহমিন পুরো নাচের মাঝে সামায়রাকে দেখলে ও এখন ওদের সম্পূর্ন মনযোগ রামীন আর আশফিনার ওপর।রামীন ও কিছু না বলে ঘরে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়ে।কিন্তু ঘরে যায়না ও।রোয়েন রামীন কে কল করতে থাকে কিন্তু রিসিভ হয় না।এক পর্যায়ে ফোন বন্ধ হয়ে যায়।আশফিনা ঘরে ঢুকে দেকে সবাই ঘুম।রুমে এসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে ও।আছড়ে পড়ে ফ্লোরে।শাড়ীর আঁচল সাদা ফ্লোরে মিশে যায়।আজ হয়ত সব ঠিক হয়ে যেতে পারতো কিন্তু হয়ত হবেনা।হয়ত রামীন সত্যিই ওকে ছেড়ে দেবে।নাহলে নাচের মাঝে রামীন কেন বলল আমার সাথে থাকতে চাইছোনা।আমি তোমাকে মুক্তি দেবো।আজ তুমি তোমার মায়ের কাছে চলে যেও।ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেবো।সাইন করে দিও।আশফিনা অনূভব করছিলো তখন রামীন কম্পিত কণ্ঠস্বর কে।রুহী নিজে ও অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেছে তাই রোয়েন কোথাও না গিয়ে সরাসরি ঘরে এলো।কিন্তু রামীনকে লাগাতার কল করেই যাচ্ছে কিন্তু পাচ্ছেনা।আশফিনাটাও কল ধরছেনা।চিন্তায় পাগল হবার উপক্রম রোয়েনের।রুহী ও অসুস্থ।ওকে একা ফেলে বের হতে পারছেনা।ভোরে রামীন ঘরে ঢুকে বিধ্বস্ত অবস্থায়।ওকে দেখে বুঝাই যাচ্ছে কি মানসিক অশান্তিতে আছে ও।ঘরে ঢুকে রুমে দ্রুত পদে এলো রামীন।আশফিনা ভয়ে কেঁপে জোর শব্দে।রামীন এসে লাগেজ নিয়ে আশফিনার কাপড় ঢুকাতে থাকে।কিছু বলেনা ও।আশফিনা চুপচাপ হয়ে গেছে।হয়ত প্রান চলে যাবে ওর।
চলবে