The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 74

পরীক্ষা গুলো চলছে।রোয়েনের বেশ সাহায্য ও পাচ্ছে রুহী।ও ভেবেই পায়না কিভাবে একজন মাফিয়া একাধারে হাসবেন্ড,প্রেমিক,শুভাকাঙ্ক্ষী আর শিক্ষক হতে পারে?ও নিজে ও এতোটা ভাল নয় যে এমন ভালো স্বামী পাবে।আসলে ও ভালো নয় ওর ভাগ্য।ওর সৌভাগ্য বলেই রোয়েনকে পেয়েছে।লোকটা ওর খুব খেয়াল রাখছে।ওর প্রত্যেকটা ব্যাপার দেখে শুনে রাখছে।পরীক্ষায় রুহীকে পড়ানোর পাশাপাশি ওকে প্রচন্ড কেয়ার আর ভালবাসাও দিচ্ছে।তিনটা পরীক্ষা সবে শেষ হলো আর বাকি মাত্র তিনটা সাবজেক্ট।পরীক্ষাগুলোর মাঝে ১০-১২ দিন করে ছুটি তার মানে পড়ার জন্য অনেক সময় পাচ্ছে ও।পরীক্ষা দিয়ে সবে বের হলো।বেশ ভালো ও হচ্ছে পরীক্ষা গুলো।আর এই ভালোর ক্রেডিট ওর স্বামী নামক লোকটার।
কলেজ থেকে বেরিয়ে বান্ধুবীদের সাথে কিছুক্ষন গল্প করলো আর ফুচকা খেলো রুহী।
কিছুদিন যাবৎ অদ্ভুত এক পরিবর্ন লক্ষ করছে রুহী নিজের শরীরে। ব্যাপারটা ওকে বেশ ভাবাচ্ছে।দুশ্চিন্তা নামক পাখিটা ও মনের মাঝে উঁকি দিচ্ছে।বান্ধুবীদের সাথে শেয়ার করবে কিনা ভাবছে।কিছুটা সংকোচ বোধ ও হচ্ছে। আরো কটা দিন অপেক্ষা করবে রুহী।তারপর নাহলে হাসপাতালে যাবে।কথা গুলো ভাবার মাঝেই কাঁধে কারোর স্পর্শ পায় রুহী।শেষ ফুচকাটা মুখে দিয়েই পিছনে ফিরে দেখলো রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে।ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে সে।রুহী দুহাতে মুখ চেঁপে ধরে ও।কারন লোকটা জাংক ফুড খাওয়া পছন্দ করেনা।তার ওপর যদি সেটা খায় রুহী তাহলে কথাই নেই।ফুচকা টা খেতে পারছেনা রুহী।রোয়েন বলল,
.
.
-”হচ্ছেটা কি?
.
.
পাশ থেকে রুহীর বান্ধবী ফিদা বলল,
.
.
-”ভাইয়া আসলে ও সচরাচর খায়না।আমরা জোর করেছিলাম।”
.
.
ওদের কথায় পাত্তা না দিয়ে রোয়েন একটা টিস্যু নিয়ে রুহীর মুখের সামনে ধরে এবং ইশারা করে মুখের ফুচকা টা ফেলে দেয়ার জন্য।রুহী প্রতিবাদ না করে ফুচকাটা টিস্যুতে রাখে।রোয়েন সেটা ফেলে দিয়ে রুহীর হাত টেনে গাড়িতে বসায়।তারপর রুহীর পাশে এসে ড্রাইভিং সিটে বসে রোয়েন।রুহী মন খারাপ করে নিচে তাকিয়ে আছে।রোয়েন গাড়ি স্টার্ট দেয়।গাড়ি চলতে শুরু করে।রোয়েন জিজ্ঞেস করলো,
.
.
-”কেমন হয়েছে এক্সাম?”
-”ভালো।”
-”সব উত্তর দিতে পেরেছো?”
-”হুম।”
-”ভেরি গুড।”
.
.
রোয়েন আর কিছু না বলে গাড়ি চালানোয় মন দেয়।ঘরে ফিরেই রোয়েন আর রুহী ফ্রেশ হয়ে নেয়।দুপুরে খেয়ে নেয় ওরা।রুহী প্লেট বাটি ধুয়ে বিছানায় এসে শুয়ে পড়ে। রোয়েন ও রুহীর পাশে শুয়ে ওর কাঁধে মুখ ডুবায়।রুহী সোজা হয়ে শুয়ে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে।রোয়েন রুহীর গলায় ভারি ভারি চুমুতে ভরিয়ে দিতে শুরু করে।রুহীর চোখজোড়ায় আসা ঘুম আস্তে আস্তে কেঁটে যেতে শুরু করে।জেগে উঠতে থাকে তীব্র নেশা।রোয়েনের মুখ খানাকে নিজের ওপর নিয়ে আসে রুহী।তারপর রোয়েন অনূভব করে একজোড়া নরম ঠোঁট ওর ঠোঁটজোড়া শুষে নিচ্ছে।আর অপেক্ষা করতে পারেনা রোয়েন।নিজেও রুহীকে ভালবাসায় মাতিয়ে তোলে।ডুব দেয় গভীর প্রেমের সমুদ্রে।বিকেলে দুজন কফি নিয়ে খাটে বসে।রোয়েন বলল,
.
.
-”কোয়েশ্চেন পেপারটা দেখি তো?”
-”জি আনছি।”
.
.
রুহী উঠে ব্যাগ থেকে প্রশ্ন টা নিয়ে আসে।রোয়েন প্রশ্ন দেখতে শুরু করে।বেশ কঠিন প্রশ্ন এসেছে তবে সবগুলোই রুহীর কমন।প্রশ্ন দেখে রোয়েন বলল,
.
.
-”আর কটা বাকি?”
-”৩টা বাকি।”
-”আচ্ছা।লাস্ট এক্সাম কবে?”
-”সামনের মাসের পনের তারিখ।”
-”ওহ।”
.
.
রুহী এসে রোয়েনের বুকে মাথা রেখে ও গায়ে কিছুটা ঘেঁষে বসলো।রুহীর চুল হাতিয়ে দিতে থাকে রোয়েন।অপরদিকে জয়ের অস্থিরতা কোন ভাবেই কাঁটছেনা।আজ বিকেলে মিষ্টি পাখিকে দেখেছিলো ওর বান্ধুবীদের সাথে।ফুচকা খাচ্ছিলো।জয় কিছু বলতে যাবে তখনই একজন লোক এসে মিষ্টি পাখিকে নিয়ে গেলো।নাহ আর অপেক্ষা করতে পারছেনা জয়।মেয়েটাকে চাই ওর।ভাবতে ভাবতে সামনের বারে ঢুকে পড়ে জয়।সেখানে ঢুকতেই অশ্লীল পোষাকে জয়কে ধরতে থাকে।
.
.
-”হেই হ্যান্ডসাম!!!ওয়ান্না হ্যাভ ইঞ্জয়?”
-”হাউ ক্যান ইউ এন্টারটেইন মি?(নেশাযুক্ত কন্ঠে)”
-”কাম উইদ আস।উই উইল শো ইউ আওয়ার’স বেস্ট।”
-”সিওর”
.
.
জয়কে ওরা টেনে একটা আলাদা জায়গায় নিয়ে গেলো।মেয়েগুলো ওকে একটা ওয়াইনের বোতল আর গ্লাস এগিয়ে দেয় আর সেই গ্লাসে একটু ওয়াইন ঢেলে দেয়।জয় ওয়াইনের গ্লাসে সিপ দিয়ে মেয়ে গুলোর নাচ দেখতে থাকে।মেয়ে গুলো একটা ইংরেজি গানে নাচছে।জয় নেশাযুক্ত চোখে ওদের নাচ দেখছে।তাদের মাঝে দুটো মেয়ে নাচতে নাচতে জয়কে ধরে ওর গালে চুমু খেতে চেষ্টা করে। কিন্তু জয় মুখ সরিয়ে নেয়।গান যতোই হচ্ছে মেয়েগুলোর অশ্লীলতা বেড়ে চলছে।জয়ের কাছে ওরা আরো বেশি আসতে চাইছে।জয় এতোসময় ওদের সাথে ঘেঁষলেও হঠাৎ মিষ্টি পাখির চেহারাটা ওর সামনে আসতেই জয় মেয়ে গুলো জোর করে সরিয়ে বেরিয়ে যায় বার থেকে।বার থেকে বেরিয়ে এসে সোজা চলে যাচ্ছিলো জয়।তখনই ওর ড্রাইভার টেনে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।ঘরে পৌছে ড্রাইভার জয় কে বাসায় পৌছে দেয়।তখন বেশ রাত।সবাই ঘুম।ড্রাইভার ওকে রুমে নিয়ে যেতে চাইলে জয় বারন করে।ড্রাইভার চলে গেলে ও রুমে যাওয়ার চেষ্টা করে।কিন্তু সোফায় বাড়ি খেয়ে সোফার উপরেই পড়ে যায়।এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।এদিকে সেরাতে রোয়েন রুহীকে বুকে নিয়ে জানালার পাশে বসে আছে।রোয়েন আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে গান ধরলো,
Hum Tere Bin Ab Reh Nahi Sakte
Tere Bina Kya Wajood Mera
Hum Tere Bin Ab Reh Nahi Sakte
Tere Bina Kya Wajood Mera
Tujhse Juda Gar Ho Jaayenge
Toh Khud Se Hi Ho Jaayenge Judaa
Kyunki Tum Hi Ho
Ab Tum Hi Ho
Zindagi Ab Tum Hi Ho
Chain Bhi, Mera Dard Bhi
Meri Aashiqui Ab Tum Hi Ho
রুহীর মুখে মুগ্ধতার হাসি ফুঁটে উঠে।ওর বরটার আর কতো কতো গুন দেখতে হবে?ও বলল,
.
.
-”খুব ভালো হয়েছে।”
-”হুম।তোমার সৌন্দর্যের কাছে গানের সৌন্দর্যটাও ফিকে পড়ে গেছে।”
-”আপনার চোখজোড়াই সুন্দর রোয়েন।নাহলে কতো ভুল করেছি কিন্তু ভালবেসে ঠিকই বুকে টেনে নিয়েছেন।”
-”প্রচন্ড ভালবাসা বুঝো?প্রচন্ড ভালবাসলে কখনো ভালবাসার মানুষটা থেকে দূরে থাকা যায়না।”
.
.
রুহী সরে এসে রোয়েনের দিকে ফিরে বসে।তারপর ওর একদম কাছে মুখ এনে বলল,
.
.
-”প্রচন্ড ভালবাসি আমি ও রোয়েন।”
-”অতোসতো বুঝিনা।তোমাকে এখন লাগবে আমার।”
.
.
রুহী সরে যাচ্ছিলো।তখনই রোয়েন ওকে জাপটে ধরে।ওর কাঁধে নাক ঘষতে থাকে।রুহী আর কিছু বলতে পারেনা।রোয়েন ওকে নিয়ে শুয়ে পড়ে।ওর গলায় চুমু খেতে খেতে শাড়ীর আঁচল সরিয়ে ফেলে।রুহী জড়িয়ে ধরে শক্ত করে তার ভালবাসার মানুষটাকে।এদিকে সকালে বিজলি বেগম নিচে এসে দেখলেন জয় সোফায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে নাক ডেকে ঘুমুচ্ছে।বিজলি বেগমের প্রচন্ড হাসি পায়।সোফায় এসে নাতির চুলে হাত বুলাতে থাকেন।
.
.
-”জয় উঠ দাদু।”
-”উমম দাদি ডেকোনা তো।ঘুম পাচ্ছে।”
-”দেখ নয়টা বাজতে চলেছে।অফিস আছেনা?”
.
.
জয় আর ঘুমিয়ে থাকতে পারেনা।কষ্ট করে উঠে বসে ও।নাতির চুল হাতিয়ে দেন বিজলি বেগম।ওনি বললেন,
.
.
-”যা ফ্রেশ হয়ে নেয়।নাস্তা দিচ্ছি।”
-”জি দাদি।”
.
.
জয় উঠে রুমে গিয়ে ফ্রেশ হতে থাকে।এদিকে রুহীর শরীর ভালো লাগেনা।সেদিন সকালে রোয়েন কফি খাওয়ার জন্য কাছে টেনে নেয়।কফির ঘ্রানে রুহীর শরীর ঘুলিয়ে আসতে চায়।কোনমতে রোয়েনের সাথে কফিটা খেয়ে নেয়।রোয়েন বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই বাথরুমে দৌড়ে যায় রুহী।মাথায় পানি দেয়।কারন খুব বেশিই খারাপ লাগছে।বেরিয়ে এসে একটু নাস্তা খেয়ে নেয় ও শুয়ে পড়ে।আজকাল বেশি কাজ ও করতে পারেনা।খুব জলদি ক্লান্ত হয়ে পড়ে ও।অপরদিকে রোয়েন আজ অনেকদিন পর বন্ধু রামীনকে দেখতে পায়।এতোদিন অফিসে আসেনি ও।রোয়েনের সাথে ও তেমন একটা যোগাযোগ রাখেনি।কেমন একটা একঘরে হয়ে পড়ে।অফিসে নিজের কক্ষে ঢুকে রামীনকে দেখতে পায় রোয়েন।রামীন মুখ টিপে হেসে বলল,
.
.
-”ভাল আছিস?”
-”ওহ তুই চিনিস আমাকে?এতদিন কোন খবরই ছিলো না তোর।কল দিয়ে ও পাইনি।মনে হচ্ছিলো ভুলেই গেছিস।”
-”কি যে বলিস?তোকে ভুলবো?একটু সমস্যায় ছিলাম।মানসিক ভাবে অনেকটাই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।তাই নিজেকে গুঁটিয়ে নিয়েছিলাম।”
-”এখন স্বাভাবিক হলি কি করে?”
.
.
জবাবে রামীন মুচকি হাসে।
চলবে