The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 75
→ আগোরার সামনে আসে রুহী।কিছু টুকটাক বাজার লাগবে ওর।ঘরের যাবতীয় কিছু পন্য।কয়েকদিন ধরে ছিলোনা।রোয়েনকে ও বলা হয়নি।সে জানলে রাগ করতো তাই রুহী নিজেই বাজার করতে চলে এসেছে।ফোনটা একবার চেক করে ভিতরে ঢুকে পড়ে ও।এখন বাজছে চারটা। ছয়টার আগেই ঘরে ফিরতে হবে ওকে।যে করেই হোক।ভিতরে ঢুকে একটা ট্রলি নিয়ে নেয় রুহী।তারপর ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকে।এর আগে কখনো করেনি।কিন্তু ধারনা তো একটু হলে ও আছে।পন্য গুলো হাতে নিয়ে দেখতে থাকে রুহী।এর দাম, এক্সপায়ারি ডেট,পন্যটি কোন দেশের আরো অনেক কিছু।প্রায় দেড় ঘন্টা যাবৎ ঘুরে ঘুরে ১৫ হাজার টাকার বাজার করলো রুহী।তেমন কিছুই কেনা হয়নি।তবে মনে হচ্ছে মহাভারত উদ্ধার করেছে ও।কেমন যেন ঘুরাচ্ছে মাথাটা তাই বিল পে করে বেরিয়ে আসে।ড্রাইভার পাশেই গেছে।ওকে কল করেছিলো।তার বেশি সময় লাগবেনা।রুহীর খারাপ লাগছিলো কিন্তু বসার জায়গা না পেয়ে একটা পিলারের সাথে ঘেঁষে দাঁড়ায়।হাতের ব্যাগে রাখা পানির বোতল টা নিয়ে কিছু পানি খেয়ে নেয়।তখনই একজন সুদর্শন লম্বা লোক রুহীর সামনে এসে দাঁড়ায়।বেশ লম্বা সে,মাথা ভর্তি কালো চুল,গালে খোঁচা খোঁচা দাড়ি।রুহীর কেন যেন মনে হচ্ছিলো লোকটাকে কোথা ও দেখেছে ও।কিন্তু কোথায় সেটা মনে নেই।হঠাৎ লোকটা রুহীকে অবাক করে দিয়ে বলল,
.
.
-”থ্যাংকস গড ফাইনালি।”
.
.
হঠাৎ লোকটার কথায় বুঝে উঠতে পারেনা রুহী।কি বলল লোকটা?যেন ওকেই খুঁজছে অনেক দিন যাবৎ শেষ পর্যন্ত পেয়ে গেছে।লোকটার মুখে প্রাপ্তির হাসি।সেটা কে ইগনোর করে রুহী বলল,
.
.
-”আমাকে কিছু বললেন?”
-”জি আপনাকেই থ্যাংকস।”
-”বাট হোয়াই?কি করেছি আমি?”
-”আপনি জানেন না আপনি কি করেছেন?”
.
.
লোকটার কথা বার্তা রুহীর কাছে উন্মাদের মতো লাগছে।তারপর ও রুহী বলল,
.
.
-”জি কি করেছি আমি?”
-”আপনার মনে নেই আমাকে?”
-”না তো।কে আপনি?আপনাকে কি আমি কোথাও দেখেছি?”
-”আপনার দেখছি কিছুই মনে নেই।আচ্ছা আমিই বলছি আমি জয়।”
-”ইয়েস বাট আমি আপনাকে চিনিনা।”
-”আরেহ আপনি আর আরেকজন লোক মিলে আমাকে বাঁচিয়েছিলেন।এ্যাক্সিডেন্ট হয়েছিল আমার।”
-”ওহ আচ্ছা আপনি?ভালো আছেন?”
-”জি।আপনাকে অনেক খুঁজেছি আমি।পেয়ে গেলাম ফাইনালি।”
.
.
লোকটার সাথে রুহীর কথা বলতে মন চাইছে না।তারপর ও সে ধন্যবাদ জানাচ্ছে তাই রুহী তার কথার জবাব দিতে গিয়ে দেখলো গাড়ি এসে গেছে।তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে রুহী খালি বলল,
.
.
-”ওকে ফাইন।আমার যেতে হবে।”
.
.
ততক্ষনে ড্রাইভার এসে বাজার গুলো নিয়ে গাড়িতে ঢুকালো রুহী ও গাড়িতে গিয়ে বসে পড়ে।এদিকে জয় শেষপর্যন্ত মিষ্টি পাখির দেখা পেয়ে ভীষন খুশি।মেয়েটাকে এমনিতেই ভালবাসে ও।তারওপর আজ অসাধারন লাগছিলো কালো শাড়ীটিতে।জয় হাসছিলো রুহীর গাড়ির যাওয়ার দিকে।এদিকে ঘরে ফিরেই বাথরুমে দৌড়ে যায় রুহী।ও রোয়েনকে খেয়াল করেনি।শার্ট খুলে বসেছিলো রোয়েন।বেশ গরম লাগছে ওর।কিন্তু এসি কাজ করছেনা।লোক আসবে কিছুক্ষন পরই এসি ঠিক করতে।তারওপর রুহীকে ঘরে না দেখে মেজাজ চড়ে যায় রোয়েনের।কিন্তু রুহীর এভাবে বাথরুমে দৌড়ে যেতে দেখে কিছুটা চিন্তিত হয় ও।কাজ সেড়ে রুহী রুমে এসে দেখলো রোয়েন দাঁড়িয়ে আছে ওর সামনে।লোকটার গায়ে শার্ট নেই।রুহী অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে রোয়েনের দিকে।লোকটার হলোটা কি?এভাবে উদাম হয়ে ঘরে বসে থাকার মানে কি?রোয়েন রুহীর নজর এড়িয়ে বলল,
.
.
-”কই ছিলে?”
-”বাজার লাগতো কিছু।সেগুলোর জন্য গিয়েছিলাম আগোরায়।”
-”বাজার শেষ আগে কেন বলোনি?”
-”পরীক্ষার মধ্যে এতোটা খেয়াল করতে পারিনি।আর সুমন ভাই ও কিছু বলেনি।ওনি রান্না করেই চলে যেতো।”
-”তোমার কাজ কি বাজার করা?”
-”দেখো বাসা আমাদের।বাজার যে শুধু সুমন ভাই কিংবা জাফর কাকা করবে তেমন তো কোন কথা নেই।আর সুমন ভাই গ্রামে চলে গেছেন।জাফর কাকা ও অসুস্থ।তাই করে আনলাম।এমনিতেই ঘরে ভাল লাগছিলোনা।”
-”জানাতে পারতে আমাকে।”
.
.
রুহী চুপ হয়ে যায়।সে এমনিতেই রেগে যাচ্ছে।তাই চুপ হয়ে গেলো ও।রোয়েন রুহীর জবাব না পেয়ে কিঞ্চিৎ বিরক্ত হয়ে বলল,
.
.
-”যাই হোক বমি করছিলে কেন?”
-”বাহিরে গরম ছিলো আর খারাপ লাগছিলো শরীরটা।তাই বমি হয়েছে।”
-”আবার ও ফুচকা খেয়েছো না?”
.
.
গলায় ঝাঁঝ রোয়েনের।রুহী বলল,
.
.
-”আরে নাহ।খাইনি সত্যি।তুমি মানা করেছো।কিভাবে খাই বলো?”
-”হুম।একটু পর এসি ঠিক করতে আসবে।চলো অন্যরুমে বসি।”
-”জি চলো।”
.
.
রোয়েন গায়ে একটা গেঞ্জী জড়িয়ে রুহী কে নিয়ে অন্য রুমে চলে যায়।রুহীকে কোলে নিয়ে বসে আছে রোয়েন।রুহীর গলায় ঠোঁট বুলাচ্ছে ও।রুহীর ভীষন আরাম হচ্ছে।লোকটার ছোঁয়া গুলো প্রত্যেকবার ওকে স্বর্গীয় আনন্দ দেয়।রুহী রোয়েনের চুল খাঁমচে ধরে নিজের দিকে আনে।খানিক্ষন পর রোয়েন সরে এসে রুহীর ঠোঁটজোড়ায় জোরে শব্দ করে চুমু খেয়ে বলল,
.
.
-”এক কাপ কফি খাওয়াবে প্লিজ।”
-”অবশ্যই। আমি নিয়ে আসছি।”
.
.
রোয়েনের কোল থেকে নেমে পাকঘরে চলে যায় রুহী।পানি বসিয়ে বাজার ঠিক করছিলো রুহী।একা একা বসতে ভালো লাগছেনা রোয়েনের।বৌটাও আসছেনা তাই নিজেই কিচেনে এলো।রুহী সব গুছিয়ে রাখছে।রোয়েন চুপচাপ রুহীর হেল্প করতে থাকে।লবনের প্যাকেট ছিড়ে বয়ামে ভরতে শুরু করে।তখনই রুহী বলল,
.
.
-”কি করছো এগুলো?রাখো।”
-”একটু আগে বলছিলে আমাদের বাসা।সংসারটা আমাদের রুহী।তোমাকে যদি ঘরের কাজে একটু হেল্প করি তাহলে তো ছোট হয়ে যাবোনা আমি তাইনা?”
.
.
রুহীর চোখে পানি চলে আসে।লোকটা ওকে পাগলের মতো ভালবাসে।হ্যা এটাই ওর স্বামী।একজন মাফিয়া সে।প্রতিনিয়ত তার হাত জোড়া রক্তিম খেলায় মেতে উঠে।কিন্তু আজ এই লোকটাই তাকে হেল্প করছে।রুহী হেসে বলল,
.
.
-”একদম না।কিন্তু বসো গিয়ে আমি আসছি।”
.
.
রোয়েন এবার প্যাকেটটা রেখে রুহীর কাছে এগিয়ে এলো।তারপর ওর কোমড় জড়িয়ে ধরে বলল,
.
.
-”এগুলো তোমার জন্য করছিনা।আমার মায়াবতীর জন্য করছি আমার বৌয়ের জন্য করছি।”
-”হুম।”
.
.
রোয়েন রুহীর ঠোঁটের কোনায় চুমু খেয়ে ঠোঁটজোড়া মুখে নিয়ে শুষে নিতে থাকে তখনই পানিতে বলগ এসে নিচে গড়িয়ে পড়তে থাকে।রোয়েনকে সরিয়ে রুহী চুলা কমিয়ে দেয়।রুহীর পিছনে এসে দাঁড়ায় রোয়েন।কানের ওপর পড়ে থাকা চুল গুলোকে সরিয়ে দেয়।রুহী বলল,
.
.
-”এসি ঠিক করতে এখনো আসেনি।”
-”রুহী এটা কি ধরনের কথা?ওরা যখন আসার আসবে।তোমার এতো মাথা ব্যাথা কেন?আসলে আমার মুড নষ্ট করতে পারদর্শি তুমি।”
.
.
রোয়েনকে রেগে যেতে দেখে হাসি আসে রুহীর।ও বলল,
.
.
-”কখন তোমার মুড নষ্ট করি বলো তো?ঘরে আসার পর তোমার মুড থাকে কাজের আর বাকি মুড তো আর নাইই বললাম।কতো বার নষ্ট করেছি বলো তো।হাতে গোনা দুবার।আর বাকি সময় তো তোমার মর্জি মতোই চলে।”
-”বাহ ভালোই কথা বলতে শিখেছো।একদম চোখে আঙ্গুল দিয়ে কথা বলতে শিখেছো।ভালো!!”
.
.
রুহীর প্রচন্ড হাসি পাচ্ছে।সেটা খেয়াল করে রোয়েন।ও বলল,
.
.
-”আর হেসোনা। নাহলে তোমার কোন কথাই মানবো না।আমার মর্জিই চলতে থাকবে।প্লাম্বার এসে হাজার বার কলিংবেল বাজিয়ে চলে যাবে।কিছু করতে পারবেনা তখন।”
.
.
রুহী আর কিছু বলার পেলো না।রোয়েন প্লাম্বারদের কল করে বেরিয়ে গেলো কিচেন থেকে।রুহী কফি বানিয়ে বেরিয়ে আসে।লোকরা এসে এসি ঠিক করছে।ওরা ড্রয়িংরুমে বসলো দুজনে কফি নিয়ে।পরশুদিন রুহীর আরেকটা পরীক্ষা আছে।রোয়েন বলল,
.
.
-”ওরা চলে গেলে বই নিয়ে বসবে।”
-”আচ্ছা।”
.
.
প্লাম্বারদের টাকা দিয়ে রুহীকে নিয়ে পড়াতে বসে রোয়েন।পড়ার মধ্যে রুহী কয়েকবার বমি করে। রোয়েন ভেবে নেয় হয়ত গ্যাস্টিকের প্রবলেম হচ্ছে তাই বমি করছে।এদিকে জয় আরো পাগল হয়ে গেছে মিষ্টি পাখিটাকে পাওয়ার আশায়।ওর অস্থিরতা কয়েকশত গুন বেড়ে গেছে।কোনভাবেই কাঁটাতে পারছেনা।অপরদিকে নাতির এমন অস্থিরতা দেখে বিজলি বেগম ভেবে নিয়েছেন এবার নাতিকে অবশ্যই বিয়ে করাবেন প্রিয় মানুষটির সাথে।দেখতে দেখতে রুহীর পরীক্ষার দিনটা চলে আসে।রোয়েন রুহীকে নাস্তা করিয়ে দিয়ে কলেজে পাঠায় শামীমের সাথে।অবশ্য নিতে ও নিজেই যাবে।পরীক্ষাটা ভালো হয়েছে।কিন্তু পরীক্ষা শেষে ঘটলো বিপত্তী।রুহী বেরিয়ে এলো ফিদার সাথে।রুহীর মাথা ঘুরাচ্ছে অনেক।ওরা বেরিয়ে এসেছে।কিন্তু দাঁড়াতে পারছেনা রুহী।ফিদা বলল,
.
.
-”চল রেস্টুরেন্টটায় গিয়ে বসি।”
-”ও এসে অপেক্ষা করবে।”
-”মেসেজ করে দে।ওনি আসতে আসতে আমরা বসি।”
-”আচ্ছা।”
.
.
রুহী ফোন বের করে রোয়েনকে মেসেজ করতে যাবে তখনই ওর সামনে এসে কেউ দাঁড়ায়।রুহী চোখ তুলে দেখে জয় নামের লোকটা।আজ তার মুখে অন্যরকম হাসি।ফিদাও অবাক হয়।কারন এই লোকটাকে আগে কখনোই দেখেনি ও।তাও আবার রুহীর সাথে কখনো না।
জয় হঠাৎ বলে উঠে,
.
.
-”হায়!!”
.
.
জয়ের কথা কিছুই কানে আসেনি রুহীর।মাথা ঘুরে যায় ওর।
চলবে