The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 65

→আলম খান বেরিয়ে যেতেই সানজিদা খান রুমে ঢুকে মেয়েকে জড়িয়ে খাটে শুইয়ে দেন।ঠোঁট ফেঁটে রক্ত বেরুচ্ছে।চোখের নিচে ও রক্ত জমে গেছে।মিসেস সানজিদা মেয়ের এ অবস্থা দেখে কাঁদতে শুরু করেন।ঔষধ লাগিয়ে দেন মেয়ের ক্ষত স্থানে।বাসার ফোন গুলো অফ করে রেখেছেন আলম খান যেন ডাক্তারকে না ডাকতে পারে।আশফিনা ভেবেছিলো হয়ত এমন কিছু হতে পারে।বাবা হয়ত ফোন নিয়ে নিতে পারে।তাই ফোনটাকে লুকিয়ে রেখেছিলো ও।সানজিদা মেয়েকে খাইয়ে বেরিয়ে গেলে সানজিদা খুব গোপন ভাবে ফোন বের করে রুহীকে কল দেয়।রুহী খাটের ওপর বসেছিলো।লোকটাকে হয়ত সামনা সামনি ও ইগনোর করে কিন্তু আদৌ কি মন থেকে পারে?মনটা তো তাকেই চায়।তার সাথে থাকতে চায়।তার বুকে শান্তির ঘুম দিতে চায়।কিন্তু তার বাজে ব্যাবহার কষ্ট দেয় রুহীকে।সে যখন বাজে ব্যাবহার গুলো করে তখন নিজেকে বোধহীন বস্তু মনে হয়।কথা গুলো ভাবার মাঝেই রুহীর চোখ ভরে আসে। নিজেকে দূর্বল লাগে ওর।লোকটাকে দেখলে তার কাছে যেতে ইচ্ছে হয়।তার ভালবাসা পেতে ইচ্ছে হয়।কিন্তু তাকে শাস্তি দেয়াটা গুরুত্বপূর্ন কারন সে সবসময় নিজেকে নিজের কথাকে উপরে রাখতে চায়।কথা গুলো ভাবতে থাকে রুহী।এরই মাঝে ওর ফোন বেজে উঠে।রুহী কল রিসিভ করে কানে ধরে।অপরপাশ থেকে আশফিনার কান্নার শব্দ শুনতে পায় রুহী। রুহী অনেকবার জিজ্ঞেস করতে থাকে কি হয়েছে কিন্তু কিছু বলে না আশফিনা।কিছুক্ষন পর আশফিনা বলে উঠে,
.
.
-”রুহী রামীনের ফোন অফ কেন রে?বাসায় কে বলে দিয়েছি রামীনের কথা। বাবা খুব মেরেছে।একটু ওর সাথে যোগাযেগ কর প্লিজ।আমাকে বাঁচা এই দোযখ থেকে।বাবা আমাকে মেরে ফেলবে।”
-”রামীন ভাইয়ার সেল অফ।ওনি জানেনা তোর বিয়ের কথা চলছে?”
-”জানিনা যেদিন মা বলল ছেলে দেখেছে সেদিন থেকে ওর সেল অফ।আমি রামীনকে ছাড়া কিছু ভাবতে পারছিনা রুহী।”
-”চিন্তা করিসনা।কালই ওনার সাথে যোগাযোগ করবো আমি।”
-”রুহী রাখছি আমি।বাবা আসছে।”
.
.
আশফিনা কল কেঁটে দেয়।রুহীর কষ্ট হতে থাকে।পাশাপাশি রামীনের ওপর প্রচন্ড রাগ হতে থাকে।এদিকে রোয়েনের সময় গুলো কাঁটতে থাকে অসহনীয়।মায়াবতীকে কাছে পাচ্ছে না পারছেনা মন ভরে ভালবাসতে।পারছেনা নিজের বুকে জড়িয়ে নিতে।প্রত্যেকটা দিন কেঁটে যাচ্ছে একাকী।রুহীকে কাছে পেতে মন চায়।কিন্তু পারছেনা।কারন রোয়েন নিজের ভুলটা বুঝতে পারে।সকালে কাজের লোককে কফি আনতে দেখে প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয় কিন্তু সামলে নেয় নিজেকে।আজ রুহী বাসায় থাকবে কারন ওর কলেজ অফ।দুপুরে রুহী রামীনকে কল দিয়ে জানায় বাসায় এসে লাঞ্চ করতে।কারন রুহী জানতো রামীনকে বললে রোয়েন ঠিকই আসবে।রামীন রুহীর সাথে কথা বলে রোয়েনের সামনে এসে বসে।রোয়েন বলল,
.
.
-”কি বলে ও?”
-”বলল লাঞ্চ করতে তোর বাসায়।”
-”ওহ তাহলে আজ তিনজনে একসাথে লাঞ্চ করবো।”
-”হুম।”
.
.
প্ল্যান মোতাবেক রোয়েন রামীনকে নিয়ে চলে আসে বাসায় চলে আসে।রুহী রান্না শেষ করে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়েছে সবে।তখনই রামীন আর রোয়েন ঘরে ঢুকে।রুহী রামীনকে বসতে ইশারা করে রেডি হয়ে আসে।কাজের লোকেরা টেবিলে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।রোয়েন আর রামীন এসে বসে পড়ে।রুহী ওদের সামনে এসে দাঁড়ায়।রুহী আজ ডার্ক ব্লু কালারের শাড়ী পরেছে।ভীষন সুন্দর লাগছে ওকে।রুহীকে দেখে রামীন হেসে বলল,
.
.
-”রুহী তুমি ও বসে পড়ো।একসাথেই খাই।”
-”না ভাইয়া পরে খাবো আমি।খিদে নেই।”
-”ওহ আচ্ছা। ”
.
.
রামীন খেতে শুরু করে।রোয়েন বলতে চাইছে রুহী খেয়ে নাও।কিন্তু পারছেনা ও।কারন ও জানে রুহী
শুনবেনা।রুহী বলল,
.
.
-”ভাইয়া আপনি আশফিনাকে ভালবাসেন তো?”
.
.
রুহীর কথায় চমকে উঠে রামীন।রোয়েন ও ভ্রু কুঁচকে তাকায়।রুহী বলল,
.
.
-”কি হলো ভাইয়া?এতো সারপ্রাইজ হচ্ছেন কেন?এমন তো কিছু বলিনি।সিম্পল কোয়েশ্চেন করলাম।”
-”হ্যা ভালোবাসি রুহী।বাট হঠাৎ এমন কথা?”
-”নাহ আসলে আশফিনা কাল কল করেছিলো।আপনার নাকি সেল অফ।ওর বিয়ের কথা চলছে জানেন?”
-”হুম শুনেছিলাম।”
-”দেখতে ও এসেছিলো।আশফিনা তো ওর বাবাকে বলেছে আপনাকে ভালবাসে ও।কাউকে বিয়ে করতে পারবেনা ছাড়া।আঙ্কেল রাজি হয়নি।বরং ওকে মেরেছে।এখন কি করবেন আপনি?”
.
.
আশফিনাকে মারার কথা শুনে কেমন যেন লাগতে থাকে রামীনের।তারপর ও একটু মজা করেই বলল,
.
.
-”দেখো রুহী যেখানে ওর বাবা রাজি নন।সেখানে আমি কি করে ওকে বিয়ে করবো বলো?”
.
.
রামীনের কথায় প্রচন্ড রেগে যায়।ওর সকল রাগ তো রোয়েনের ওপর।তাই রামীনকে বলল,
.
.
-”আপনাদের মতো ছেলেদের আসলে ভালবাসতে নেই।ভালবাসাকে কদর দিতে পারেননা মিথ্যা ভালবাসার স্বপ্ন দেখিয়ে কষ্ট দিতে খুব ভালো পারেন আপনারা।”
.
.
রুহীর এমন কথায় রামীন আর রোয়েন দুজনেই চমকে যায়।রুহী কথা গুলো বলে অার অপেক্ষা করে না।হন হন করে রুমে চলে যায়।রুহী চলে যাওয়ার পর রোয়েন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।খাবার মুখে উঠছেনা।এদিকে রোয়েন খেয়াল করে রামীন হাসতে হাসতে খাচ্ছে।রামীনের হাসির কারন খুঁজে পায়না রোয়েন।রোয়েন বলল,
.
.
-”তুই হাসছিস কেন?”
-”রুহীর কথা আর রাগ গুলো সম্পূর্ন অামার জন্য ছিলো না রে।”
-”মানে?? ”
-”মানে হলো ও আমার ওপর দিয়ে তোকে বাঁশ দিয়ে গেলো।”
.
.
রামীনের কথায় রোয়েন কি বলবে ভেবে পায়না।ওরা নিজেদের মতো খেয়ে উঠে পড়ে।রুহী রুমের দরজা লাগিয়ে বসে আছে।তাই ওরা কেউ রুহীকে বলে যেতে পারেনা।এদিকে আশফিনার সেই রাতে গা কেঁপে জ্বর আসে।১০৩ ডিগ্রি জ্বর আশফিনার।আলম খান সামান্য নাপা টাও খেতে দেয়নি।যেখানে ওনার মান সম্মানে আঘাত লেগেছে সেখানে আশফিনা মরে গেলে ও ওনার কষ্ট হবেনা।মেয়েকে এত অসুস্থ দেখে সানজিদা খান কাঁদতে থাকেন।সারারাত মেয়ের সেবায় নিয়োজিত থাকেন।সকালে আশফিনার জ্বর একটু কমে আসে।সানজিদা খান নিজের ঘরে চলে আসেন।স্বামীকে কিছু বলার ইচ্ছা ও নেই ওনার।এদিকে ঐ দিন রাতে রোয়েন ফিরে এসে খেয়াল করে রুহী পাকঘরে চা বানাচ্ছে।ওর চুল গুলো ডান কাঁধের ওপর রাখা।যার কারনে ফর্সা পিঠ আর পিঠের লাল তিলটা দেখা যাচ্ছে।তিলটা বড় আকর্ষনীয়।রুহীর সাদা পিঠে তিলাটর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।রোয়েন নিঃশব্দে পাকঘরে চলে আসে।রুহী এক মনে চা বানাচ্ছে।রোয়েন রুহীর অনেকটা কাছে চলে আসে।রুহীর পিঠের সাথে রোয়েনের শক্ত বুকের ধাক্কায় রুহীর ভিতরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।পাকঘরের সামনের জানালা ভেদ করে শনশন করে আসা ঠান্ডা বাতাস রোয়েন আর রুহীর ভারি নিশ্বাসের সাথে মিশে যাচ্ছে।রোয়েন রুহীর পিঠের তিলটায় আঙ্গুল ছোঁয়ায়।
রুহী নিজেকে সামলাতে পারছেনা।কিন্তু ওকে সামলাতে হবে কারন লোকটাকে শাস্তি পেতে হবে।রোয়েন রুহীর পিঠে ঠোঁট ছোঁয়াতে যাবে ঠিক তখনই রুহী পিছনে ফিরেই রোয়েন কে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়।এবার ঘোর ভাঙ্গে রোয়েনের।রুহী রেগে বলল,
.
.
-”না করে ছিলাম আমার কাছে আসতে।তাহলে কেন এতো কাছে আসলেন আমার?কেন এভাবে আমাকে কষ্ট দেন যদি এতোটাই ভালবাসেন।ভাল কি বাসিনি আমি রোয়েন।আপনি যখন ইচ্ছে আমাকে কাছে টেনে নিজের আয়েশ মিটাবেন আর যখন ইচ্ছা আমার সাথে যা তা ব্যাবহার করবেন।কিন্তু এমনটা আর হবেনা।আমি ও মানুষ সেটা আপনাকে বুঝতে হবে।”
.
.
কথা গুলো বলে রুহী চলে যেতে নিলে রোয়েন ওকে টেনে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে রুহীর মাথার এক কোনে মুখ ডুবিয়ে বলল,
.
.
-”রুহী প্লিজ কথা বলো।যে শাস্তি দিবে মাথা পেতে নিবো।প্লিজ দূরে থেকোনা।আমার ভালো লাগছেনা।প্লিজ ট্রাই টু আন্ডর্স্ট্যান্ড রুহী।আই লাভ ইউ।”
.
.
রুহী খুব কষ্টে সরে আসে এবং বলল,
.
.
-”আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেননা।আমার দম বন্ধ হয়ে আপনাকে কাছে আসতে দেখলে।আমার থেকে দূরে থাকলে সেটা আমাদের দুজনের জন্যই মঙ্গলজনক।”
.
.
কথাটা বলে রুহী নিজের রুমে চলে আসে।দরজা আটকে কাঁদতে থাকে।লোকটাকে তো ভালবাসে ও।লোকটা কাছে আসলে তো ও নতুন করে বাঁচতে শেখে।লোকটা কাছে আসলে তো ও নিজেকে তার ভালবাসায় জড়িয়ে নিতে চায়।রুহী কাঁদতে থাকে খুব।রোয়েন ও রুহীর রুমের সামনে দরজার কাছে এসে দাঁড়ায়।যদি রুহী বের হয়।যদি ওর ডাকে সাড়া দেয়।কিন্তু সেটা হয়না।অনেকটা সময় কেঁটে যায় রুহী বের হয়না।অনেকটা সময় পর রোয়েন রুমে চলে যায়।
চলবে