The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 64

→রোয়েন অবাক চোখে চেয়ে থাকে রুহীর যাওয়ার দিকে।রুহী রুমে ঢুকে শব্দ করে দরজা লাগায়। রোয়েন এবার বাস্তবে ফিরে এলো।রুহী কি বলছিলো এতক্ষন? এতোটা রাগ পুষে রেখেছিলো ওর মায়াবতী?ওর মায়াবতী যা বলছিলো সবই সত্যি ছিলো।কিন্তু রুহী কে ছেড়ে রাত গুলো কিভাবে কাঁটবে এখন?রোয়েনের নিজের ওপর প্রচুর রাগ হচ্ছে।আসলেই কি ও নিজের কথাকে প্রাধান্য দিয়ে এসেছে রুহীর কথার ওপর?কিন্তু ও কখনো তো এভাবে চিন্তা করেনি।সবসময় মায়াবতীকে ভালো দেখতে চেয়েছিলো খুশি দেখতে চেয়েছিলো।কিন্তু মেয়েটাকে বড় কষ্ট দিয়ে ফেলেছে।কি করবে এখন ও?রোয়েন ধীর পায়ে রুমে চলে আসে।ধপ খাটে বসে পড়ে।কষ্ট গুলো রুহীকে শক্ত করে দিয়েছে।এদিকে রুহী রুমে এসে কাঁদতে শুরু করে।লোকটা যেন না জানতে পারে না শুনতে পারে তাই দুহাত মুখে চেঁপে কাঁদছিলো।লোকটাকে অনেক ভালবাসে ও।কিভাবে থাকবে ও লোকটাকে ছেড়ে?কিভাবে ঘুমাবে খালি বালিশে।লোকটার বুকটা যে এখন ওর একমাত্র ঘুমের মাধ্যম হয়ে উঠেছে।রুহী খাটে বসে কাঁদতে থাকে খুব।দুজনের রাত নির্ঘুম কেঁটে যায়।এদিকে আশফিনা সকালে কলেজে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছিলো।তখনই আলম খান ওর রুমে প্রবেশ করে।আশফিনা ব্যাগ গুছাচ্ছিলো।আলম খান কে প্রবেশ করতে দেখে আশফিনা সোজা হয়ে দাঁড়ায়।আলম খান বলতে শুরু করেন,
.
.
-”কখন আসবি?”
-”কলেজ যখন ছুটি হবে।”
-”বিকেলের আগে আসবি।তোকে দেখতে আসবে।”
-”দেরি হবে আমার।”
-”উল্টাপাল্টা কিছু করে ওদের সামনে আমার মানহানি ঘটলে তোর খবর আছে।”
-”হুম ভাইয়ার মতো।তোমার কথা কেউ না শুনলে সবার অবস্থা ভাইয়ার মতোই হবে।”
-”বেশি তর্ক করছিস।যাই হোক জলদি চলে আসবি নাহলে,,,,,,,,,”
.
.
বাবাকে কিছু বলতে না দিয়ে আশফিনা মাকে বলে বেরিয়ে গেলো।বের হওয়ার সময় সানজিদা মেয়েকে বারবার বলেছিলেন যেন জলদি ফিরে আসে।আশফিনা বেরিয়ে যায়।এদিকে রোয়েনের ঘুম ভাঙ্গে।চোখ না খুলে পাশে হাতড়াতে থাকে।কিন্তু পায়না রুহীকে।চোখ খুলে পাশে তাকায় ও। কিন্তু পায়না মায়াবতীকে।শোয়া থেকে উঠে বসে রোয়েন।তখনই কাজের লোকটা কফি নিয়ে ঢুকে।বেশ রাগ হয় রোয়েনের।ও বলল,
.
.
-”কফি নিয়ে তুমি কেন এসেছো?ম্যাডাম কই?”
-”ম্যাম আপনারে কফি দিতে বলল।”
-”রাখো।”
.
.
বেশ রেগে আছে রোয়েন।লোকটা চলে যায়।রোয়েন এবার রেগে রুহীর নম্বরে কল দেয়।কল অফ আসছে।রোয়েনের মনে পড়ে রুহীর ফোন ভেঙ্গে ফেলেছিলো ও। রোয়েন খাট থেকে নেমে ফ্রেশ হতে চলে যায়।তারপর রেডি হয়ে অফিসে আসে।রোয়েন কে রাগী মুডে দেখে রামীন ওর কাছে এসে বসে।তারপর বলল,
.
.
-”কিরে মুড অফ কেন?”
-”এমনিই।”
-”রুহীর সাথে কথা হয়নি?”
-”ও আমার সাথে কথা বলবেনা আর।খুব অভিমান করেছে ও।আমাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে ও।”
-”একদম ভালো হয়েছে।তোর সাথে এমনটাই হওয়া উচিৎ।শালা কখনো ওর কথা শুনতেই চাস নাই।কখনো ওর মত জানতে চাস নাই।শোন ভাই মেয়েদের ও আছে।তাদের ও হাসি খুশির গুরুত্ব আছে।তাদের মতের গুরুত্ব আছে।”
.
.
রামীনের কথায় রোয়েন রামীনের দিকে তাকায়।রামীন দেখতে পায় রোয়েনের চোখজোড়া জ্বলজ্বল করছে।রামীনের কেন যেন ভীষন খারাপ লাগতে শুরু করে।
এদিকে রুহীর ছুটির সময় শামীমকে রুহী না করে ওকে নিতে যেতে।রুহী জানায় ও নিজেই আসবে।রোয়েন বিকেলেই অফিস থেকে বেরিয়ে আসার সময় শামীমকে দেখে একটু অবাক হয়। রোয়েন বলল,
.
.
-”যাওনি রুহীকে অানতে?”
-”স্যার ও না করছে।”
.
.
রোয়েন কিছু না বলে বেরিয়ে আসে।রুহীর জন্য নতুন ফোন কিনেছে রোয়েন।আজ বৌটাকে সারপ্রাইজ দিবে।মার্কেট থেকে কাজে ফিরে আসে রোয়েন।এদিকে আশফিনা বিকেলে ফিরে আসে।আজ ঘরে মনটাই টানছিলোনা ওর।তারপর ও ফিরে আসে আশফিনা।ঘরে ফিরতেই মিসেস সানজিদা খান আশফিনাকে শাড়ী দেন ওদের সামনে পরে আসার জন্য।আশফিনা একদমই যেতে চাইছেনা।ওর মন একদমই টানছেনা।এদিকে বাবা ও কতো বার বলে গেলো রেডি হয়ে বের হতে।আশফিনা শুধু শাড়ী টা পরে নেয়।কিন্তু একদমই সাজ নেয়নি।অবশেষে সেই পরিবারের সামনে আনা হয় ওকে।লোকটার মা বাবা আর সে এসেছে।লোকটাকে দেখে মনে হলো তার বয়স চল্লিশের মতো।আশফিনা লোকটার দিকে একবার তাকায়।সে অাশফিনা কে দেখছে।তার বাবা মা আশফিনাকে এটা ওটা জিজ্ঞেস করছে।তারপর সাঈমন ফিরোজ।ওনার বাবা আলম খানের বিজনেস পার্টনার।হঠাৎ সবাইকে অবাক করে দিয়ে লোকটা বলল,
.
.
-”আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই আলাদা।”
.
.
আশফিনা চমকে উঠে।কি বলে এই লোক?আলম খান বললেন,
.
.
-”আশফিনা ওকে নিয়ে যা তোর রুমে।”
.
.
বাবার কথার পিঠে আর কিছু বলতে পারেনা।লোকটাকে নিয়ে রুমে আসে।দুজনে বারান্দায় চলে আসে।লোকটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে সে আশফিনাকে বিয়ে করবেই।আশফিনাকে সে বলে বসলো,
.
.
-”দেখো বিয়ের পর আমার বাবা মাকে দেখে রাখতে হবে তোমার।বেশির ভাগ সময় বাহিরে থাকতে হয় আমাকে।আমার অনুপস্থিতিতে তুমি তাদের খেয়াল রাখবে।”
-”দেখুন বিয়েটা দুটো মনের মিলন। কিন্তু এ বিয়েতে আমার যেখানে মত নেই সেখানে মনের মিল কি করে হবে বলুন।”
-”মানে?”
-”আমি একজন কে ভালোবাসি।সে বাংলাদেশে থাকে।”
.
.
সাঈমন প্রচন্ড রেগে বেরিয়ে আসে। আশফিনা তাকে থামাতে খুব চেষ্টা করে।কিন্তু সে থামেইনা।বেরিয়ে এসেই সে চিৎকার করে বলল,
.
.
-”মিঃ আলম খান আমাদের ডেকে এভাবে অপমান করার কি দরকার ছিলো?”
.
.
সাঈমনের কথায় বেশ অবাক হন আশফিনার বাবা।তারপর বলেন,
.
.
-”কি বলেন এসব?”
-”সেটা আপনার মেয়েকেই জিজ্ঞাস করুননা।ওর প্রেম করছে আরেকজনের সাথে।তারপর ও আমাদের ডাকলেন।?”
.
.
আশফিনার বাবা রেগে আশফিনার দিকে তাকায়।এদিকে রোয়েন ঘরে ফিরে এসে রুহীকে দেখতে পায়।রুহীর কাছে এসে বলল,
.
.
-”একা ঘরে ফিরেছো।শামীম কে না করলে কেন?”
.
.
রুহী কিছু বলতে যাবে তখনই ওর হাতে থাকা ফোন বেজে উঠে।রুহীর হাতে ফোন দেখে রোয়েন বলল,
.
.
-”ফোন কিনলে।টাকা পেলে কোথায়?”
-”জমানো টাকা দিয়ে কিনেছি।”
-”তাহলে তোমাকে কল দিয়ে পাচ্ছিনা কেন?”
-”সিম চেঞ্জ করেছি।আর নম্বর চাইবেননা।আপনাকে দেয়ার হলে আগেই দিতাম।কিন্তু আমি চাইনা আমার কোন কারনে আপনার কষ্ট হোক।আর সে কারনে আমাকে কথা শুনতে হোক।”
.
.
রোয়েনকে কোন কথা বলতে না দিয়ে রুহী রুমে চলে যায়।যাওয়ার আগে কাজের লোককে বলল,
.
.
-”স্যার থেকে জেনে নাও ডিনার করেছে কিনা?না করলে টেবিলে খাবার দিয়ে দিও।আমি খেয়ে এসেছি।কেউ যেন ডাকাডাকি না করে।”
.
.
রোয়েন অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রুহীর দিকে।রুহী রুমে চলে যায়।এদিকে আশফিনাকে রুমে নিয়ে আসেন আলম খান।আশফিনার বুক কাঁপছে।অন্তত কিছুটা হলে ও বুঝতে পারছে আজ কি হতে যাচ্ছে ওর সাথে।রামীনকে পরে কল করেছিলো কিন্তু ওর ফোন বন্ধ।মা বিয়ের কথা বলার পরপরই রামীন সেল অফ করে দেয়।আশফিনাকে রুমে এনে আলম খান বলেন,
.
.
-”ওরা কি বলছিলো এসব?নষ্টামি করে এসেছিস কার সাথে?”
-”বাবা কি বলছো এসব?আমি এমন কিছুই করিনি।”
-”তাহলে সাঈমন কি বলছিলো এসব?অামাকে ওদের সামনে অপমান করে এখন বলছিস কিছু করিস নি।”
-”বাবা সাঈমন যা বলেছিলো ঠিকই বলেছে।আমি রামীন কে ভালবাসি কিন্তু খারাপ কিছু করিনি।তোমার কাছে সবসময় তোমার সম্মানটাই অনেক।এখন তুমি আমার গায়ে হাত তুলবে হয়ত আমাকে মেরে ফেলবে।হয়ত আজ আমার পরিনতি ও ভাইয়ার মতো হবে।কিন্তু বাবা তুমি কখনো ভালো থাকবানা।তুমি ভাইয়ার সাথে অন্যায় করেছো নিজের ইচ্ছা ভাইয়ার ওপর চেঁপে এখন ও আমার সাথে ও তাই করছো।”
-”তোর এতো সাহস।আমাকে এসব বলিস।আমি তোদের বাবা।আমি যা ইচ্ছা করবো।”
-যা ইচ্ছা করতে করতে করতে ভাইয়ার প্রান কেড়ে নিয়েছো।তোমার কারনেই ভাইয়া মারা গেছে।সেদিন ঘরে জায়গা দিলে ভাইয়া বেঁচে থাকতো।তুমিই ভাইয়াকে মেরেছো।”
.
.
আলম খান প্রচন্ড রেগে আশফিনার চুল চেঁপে ধরে ওকে থাপড়াতে লাগলেন।প্রচন্ড মারতে লাগলেন আশফিনাকে।আশফিনার ঠোঁট ফেঁটে রক্ত বেরুতে থাকে।এদিকে সানজিদা খান দরজায় জোরে বাড়ি দিচ্ছেন।কান্না করছেন ওনি।এদিকে আশফিনা এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফ্লোরে পড়ে যায়।
চলবে