The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2)

The Mysterious Man- Mafia Boss- Season-3 (Part-2) Part- 31

★★★★
তোমাকে আজ একটা নিকনেম দিবো।ইয়ারাবীর ডান হাত নিজের দুহাতের মাঝে নিয়ে বলছিলো।ইয়ারাবী কিছু শুনে ও না শোনার ভান করে আছে।বড্ড রেগে আছে ইয়ারাবী আরাভের ওপর।ইয়ারাবী কি হলো কিছু বলছি শুনবেনা?আবার ডেকে উঠে আরাভ।ইয়ারাবী আগের মতোই ঘাড় শক্ত করে বসে আছে।আরাভ এবার ইয়ারাবীর ঘাড়ে আলতো করে হাত ছোঁয়াতেই পুরো শরীর কেমন যেন শিউরে উঠলো ওর।আরাভের হাত নিজের ঘাড় থেকে সরিয়ে আবার ও থম ধরে রইলো ইয়ারাবী।দেখো ইয়ারাবী আমার রাগ হচ্ছে এখন।তুমি এভাবে বসে আছো কেন?এখানে ডেকেছি কি তোমার রাগ দেখার জন্য?কি দোষ আমার বলবে তো?এবার ঘাড় ঘুরিয়ে রাগ দেখানোর মানেই হয়না অসভ্য মেয়ে।বেশ রেগে বলল আরাভ।ইয়ারাবী আরাভের দিকে তাকালো জ্বলজ্বল চোখে।তারপর ব্যাগ কাঁধে নিয়ে উঠে গাড়ি থেকে বের হতে নিবে তখন আরাভ আচমকা খুব জোরে গাড়ি টান দিলো।আকস্মিকতায় ইয়ারাবীর কপাল গাড়িতে বাড়ি খেতে যাবে তখনই আরাভ ইয়ারাবীর মুখের সামনে ওর হাত রাখলো।ইয়ারাবী শ্বাস নিলো।আরাভ ইয়ারাবীকে জোর করে নিজের দিকে ফিরালো।কি হয়েছে টা কি?এভাবে রাগ দেখাচ্ছো কেন?ইয়ারাবী নিজের ফোন বের করে সেখানে মেসেঞ্জার ওপেন করে আরাভের ইনবক্সে ঢুকে ফোনটা আরাভের সামনে ধরলো।বেশ কয়েকটা মেসেজ করেছিলো এই দশদিনে ইয়ারাবী।বাট আরাভ সিন ও করেনি রিপ্লাই দেই নি।ইয়ারাবী এবার কল লগে গিয়ে আরাভের নম্বর দেখালো।৫০+ কল এসে আছে।আরাভ ফোন থেকে চোখ সরিয়ে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।ইয়ারাবী চোখ সরিয়ে জানালার দিকে তাকায়।কেউ একজন আমার মৌনতায় এতোটা রেগে যায় ভাবতেই মনটা ভরে গেলো।আ’ম সরি ইয়ারাবী!!!বলে উঠে আরাভ।ইয়ারাবী মন খারাপ করে অন্যদিকে ফিরে আছে।আরাভ এবার ইয়ারাবীর গাল ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে ওর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বলল আমার প্রিয় মাফ করো আমাকে। ইয়ারাবী এবার কিছুটা লজ্জা পেয়ে মাথা নোয়ায়।আরাভ ওকে ছেড়ে স্টিয়ারিং ধরলো।ইয়ারাবীর রাগ সরে গিয়ে একরাশ লজ্জা ভর করেছে ওর চোখ জোড়ায়।আরাভ গাড়ি ড্রাইভ করছে আর ইয়ারাবী কে দেখছে আড়চোখে।গালদুটো এতেটাই লাল হয়ে আছে যে গোলাপ ফুল ও ইর্ষান্বিত হবে।গাড়ি থামলো ধানমন্ডির একটা শপিংমলের সামনে।ইয়ারাবীকে নিয়ে শপিং মলে ঢুকে গেলো আরাভ।জোর করে কিছু গাউন স্যালোয়ার কামিজ টপস,ছোট্ট কিছু গয়না আর চকলেট কিনে দিলো।ইয়ারাবী তো নিবেই না।কিন্তু আরাভ ও মানবেনা।নিতে তো ওকে হবেই।শেষমেষ গিফট গুলো নিলো ইয়ারাবী।দুজন হালকা খাওয়া দাওয়া করে বের হতেই ইয়ারাবীর সামনেই সর্ট স্কার্ট আর টপস পরিহিত এক মেয়ে আরাভকে এসে জড়িয়ে ধরলো।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-আরাভ বেবি কেমন আছো তুমি?কই ছিলে এতোদিন।ন্যাকা কান্না করে বলল ফেন্সি।
-আরাভ চমকে গিয়ে ইয়ারাবীর দিকে তাকায়।ইয়ারাবী নাক ফুঁলিয়ে ফেন্সি আর আরাভ কে দেখছে।ওহ ফেন্সি ডার্লিং ভালো আছি আমি। তুমি কেমন আছো?
-ভালো না।তুমি আমাকে রেখেই চলে এলে।খুব কষ্ট হয়েছে আমার।ন্যাকা কান্না করে বলল ফেন্সি।
-সরি বেবি আর হবেনা।বলে কাকে যেন কল দিলো আরাভ।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
কিছুসময় পর আরাভের ড্রাইভার এলো।আরাভ এবার ফেন্সিকে ছেড়ে ইয়ারাবীকে বলল তুমি আমার ড্রাইভারের সাথে চলে যাও।আমি ওকে(ফেন্সিকে দেখে)নিয়ে বাসায় যাবো।ইয়ারাবী এবার কেঁদেই দিবে।আরাভ ফেন্সিকে নিয়ে নিজের গাড়িতে উঠে পড়লো।ইয়ারাবী জ্বলজ্বলে চোখে আরাভের যাওয়ার দিকে চেয়ে রইলো।বুকটা থেকে থেকে কেঁপে উঠছে ইয়ারাবীর।ড্রাইভার ইয়ারাবী কে বলল ম্যাডাম যাবেননা?ড্রাইভারের কথায় ইয়ারাবীর ঘোর কাঁটলো।আরাভের দিকে আরেকবার তাকিয়ে ইয়ারাবী গাড়িতে ঢুকে বসলো।ইয়ারাবী ঘরে পৌছে প্যাকেট গুলো নিয়ে দৌড়ে রুমে চলে গেলো।আরাভ ঘরে ফিরতেই অর্পন এসে আরাভকে জড়িয়ে ধরলো।আরাভ অর্পন কে কোলে তুলে নিলো।
আরে আরে ভাই কি করো এসব?বলে উঠে অর্পন।আরাভ চুপচাপ অর্পনকে নিয়ে সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।মিসেস আজহার বললেন কিরে বাবা আরাভ ওকে এভাবে কোলে নিলি যে?
আন্টি এতোদিন পর ওকে বাসায় দেখে ওর ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেলো।তাই একটু স্মৃতিচারন করছি বলে সিড়ি বেয়ে রুমে এলো আরাভ।অর্পনকে খাটে জোরে বসিয়ে ওর কোলে বসে পড়ে আরাভ।তারপর রাগী কন্ঠে বলল,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-তুই আসছিস ভালো কথা এই ভেজালরে আনলি কেন?
-ভাই কি করবো জোর করে চলে এলো।বলে উঠে অর্পন।
-হুহ জোর করে চলে এলো!!!ঐদিকে ইয়ারাবী কতোটা কষ্ট পেলো জানিস তুই?বেচারী কেঁদেই দিবে মনে হচ্ছিলো।বলে উঠে আরাভ।
-তাহলে তো ভালোই হলো এনে।হেসে বলল অর্পন।
-মানে?রেগে গেলো আরাভ।
-কুল ভাই।তোমার সাথে ফেন্সিডিল কে দেখে ভাবি জেলাস হচ্ছিলো তাইনা?বলে উঠে অর্পন।
-হুম তো!!!গম্ভীর কন্ঠে বলল আরাভ।
-ভাই এটাই তো প্লাস পয়েন্ট।ওনি তোমাকে ভালোবাসে দেখেই জেলাস হলো।বলে উঠে অর্পন।
-আসলেই তো।তাহলে ওকে তো আরো জেলাস করাতে হয়।কি বলিস?বলে উঠে আরাভ।
-এ্যাবসোলিউটলি ভাই।আরাভের হাতের সাথে হাত বাড়ি দেয় অর্পন।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
ইয়ারাবী ক্লাশে বসে আছে।কাল রাতে আরাভ ওকে কল দেইনি।ভীষন খারাপ লাগছে ওর।লোকটা এমন কেন?ওনার নাকি আমাকে ভালো লাগে।আর ঐ মেয়েকে ডার্লিং বেবি বলল। কাঁদতে মন চাইছে ইয়ারাবীর।কাল একটু ও ঘুম হয়নি ওর।চোখজোড়া কাঁদো কাঁদো হয়ে আসে ইয়ারাবীর।ক্লাশ শেষে বেরিয়ে আসে ইয়ারাবী।কলেজের গেইট থেকে বের হতেই দেখলো।গাড়ির সামনে আরাভ দাঁড়িয়ে আছে।তবে আজ নজর ওর দিকে নয়।ডানদিকের মলের দিকে তাকিয়ে আছে।ইয়ারাবী আরাভের দিকে এগোতে যাবে তখনই ফেন্সি এসে আরাভকে জড়িয়ে ওর গালে চুমু দিলো।ইয়ারাবীর চোখ ভিজে গেলো।পিছন থেকে বস্তির তিনটা ছেলে গান ধরলো,
বন্ধু যখন বৌ লইয়া
আমার বাড়ির সামনে দিয়া
রঙ্গ কইরা হাঁইটা যায় ফাঁইটা যায়
বুকটা ফাঁইটা যায়।
ইয়ারাবী কেঁদে দিয়ে অন্যদিকে হাঁটতে শুরু করলো।স্নিগ্ধা আর বাকি বান্ধুবীরা দৌড়ে গেলো ইয়ারাবীকে শান্ত করতে।সেদিন কাথার নিচে গুমড়ে গুমড়ে কাঁদছিলো ইয়ারাবী।রুপন্তী এসে কাঁথার ওপর দিয়ে মেয়ের মাথায় হাত বুলায়।
কিরে মা কি হইছে তোর?জিজ্ঞেস করে রুপন্তী।
কিছুনা মাম্মা শরীর ভালো লাগছেনা।পেট ব্যাথা করছে।
কাঁদো কন্ঠে বলল ইয়ারাবী।মেয়ের পাশে শুয়ে ওর চুল হাতাতে লাগলো রুপন্তী।চোখ বুজে ঘুমা ভালো লাগবে।ঔষধ দিবোনা তোকে।ইয়ারাবী মাকে জড়িয়ে নিঃশব্দে কাঁদতে থাকে।এভাবে বেশ কয়েকটাদিন চলে গেলো।আরাভ ইয়ারাবীর সামনে ফেন্সিকে নিয়ে ঘুরতো,খেতে যেতো।মাঝে মধ্যে ইয়ারাবী কে সাথে নিলে ও ফেন্সির সাথে কথা বলতো।ওর(ফেন্সি) দিকেই কনসার্ন ছিলো বেশি আরাভের।ইয়ারাবী চুপচাপ মন খারাপ করে বসে থাকতো।ওকে আরাভের ভালো লাগবে নাকি?ওনি আমেরিকা থেকে এসেছেন।যেখানে ফেন্সি পরে মিনি স্কার্ট আর ইয়ারাবী স্যালোয়ার কামিজ।বেশ কষ্টে দিন কাঁটতে থাকে ইয়ারাবীর।সেদিন আরাভের নম্বরে কল করতেই অর্পন ইয়ারাবীর কল রিসিভ করে।
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
,
-হ্যালো আসসালামু আলাইকুম অপরপাশ থেকে বলল অর্পন।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।আপনি কে বলছেন?জিজ্ঞেস করে ইয়ারাবী।
-যাকে কল দিলেন তার ছোট ভাই।বলে উঠে অর্পন।
-ওহ আচ্ছা। ওনি কই?জিজ্ঞেস করে ইয়ারাবী।
-ভাইয়া ফেন্সির সাথে রুমে কি জানি করে।দরজা বন্ধ।বলে উঠে অর্পন।
-দরজা বন্ধ!!!!কিছুটা অবাক হয় ইয়ারাবী। ওনাকে দিন না বলেন ইয়ারাবী কল করেছে।
-কি বলো এসব আমার লজ্জা লাগছে।ভিতরে কি না কি দেখতে হবে।আর ভাইয়া ডিস্টার্বড হলে বকা দিবে।পরে কল দিবে ওকে।বলে কল কেঁটে দিলো অর্পন।ইয়ারাবী ফোন সামনে এনে মুখে হাত চেঁপে কেঁদে দিলো।
চলবে