The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 18

→সামনে পড়ে থাকা লোকটিকে বেধড়ক পেটাচ্ছে রোয়েন ওর টর্চারিং রুমে।লোকটির সারা শরীর রক্তে ভেজা।সে বারবার বলছিলো আমি বলবোনা কিছু বলবোনা।রোয়েন এবার লোকটার চুল ধরে দাঁড় করিয়ে দেয়ালে তার মাথা চেঁপে ধরলো।লোকটা যন্ত্রনায় কাঁতরিয়ে উঠে।রোয়েন জোরে জোরে তার মাথা দেয়ালে বাড়ি দিচ্ছে।লোকটা তারপর ও হার মানার নয় কিছুই বলবেনা।শেষমেষ রোয়েন তাকে ছুড়ে মেরে তার দিকে বন্দুক তাঁক করলো,
.
.
-এবার বলার জন্য তুই থাকবিনা।তোর বসকে তো আমি ধরেই ছাড়বো।তবে তুই তোর মৃত্যু নিজের চোখের সামনে দেখ।
-আমি বলবো। প্লিজ শুট করবেননা।
.
.
লোকটা চিৎকার করে বলে উঠে।রোয়েনের চেহারায় এবার হিংস্রতা ফুঁটে উঠে।
ফ্ল্যাশব্যাক
সেদিন রাতে রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে থাকে রোয়েন।রুহী ঘুমিয়ে গেছে খানিক আগেই।রোয়েনের চোখজোড়ায় একদম ঘুম নেই।বুকের ভেতর বড় অস্থিরতা কাজ করছে।মায়াবতী কাছে পাওয়ার অস্থিরতা।ওকে ভালোবাসার অস্থিরতা।মায়াবতীকে নিজের করে নেয়ার অস্থিরতা।কিন্তু কাজটা বিপজ্জনক এবং ভুল অনেক বড় ভুল।রুহী কেমন গুঁটিসুঁটি ওর বুকের মাঝে ঘুমিয়ে আছে।ওর বন্ধ চোখজোড়া বাহির থেকে আসা চাঁদের আলোয় আরো সুন্দর হয়ে উঠেছে।চোখের বড় বড় পাপড়ি আর ভ্রুযুগল ওকে অপরুপ সৌন্দর্য দান করেছে।রোয়েন মাথা উঠিয়ে রুহীর দিকে এগিয়ে আসে।বড্ড লোভ হচ্ছে ছুঁয়ে দেয়ার লোভ।রোয়েন আর পারে না নিজেকে আটকাতে।রুহীর কপালে আর দুচোখজোড়ার পাতায় ঠোঁট চেঁপে চুমু খায়।বিস্ময়জনক ভাবে রুহী মাথা নামিয়ে রোয়েনের বুকে চুমুখেয়ে ডান হাত বাড়িয়ে ওর বুক জড়িয়ে ধরে।রোয়েনের ঠোঁটের কোনে প্রেমাসিক্ত হাসি ফুঁটে উঠে।রুহীকে আরো জোরে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে।তারপর একপর্যায়ে নিজে ও ঘুমিয়ে যায়।পরদিন সকাল ঘুম ভেঙ্গে বুকে খু্ঁজে পায় রুহীকে।রুহীকে ধরে বালিশে শুইয়ে দিয়ে ওর কপালে চুমু দিয়ে উঠে ফ্রেশ হতে চলে যায় রোয়েন।মেয়েটা ঘুমাচ্ছে ঘুমাক।কাল বেশ রাত করে ঘুমিয়েছে।কাজে চলে যায় রোয়েন।সেদিন আর রুহীকে গুড বায় চুমু ও খাওয়া হলোনা।শামীম রুহীকে ভার্সিটিতে দিয়ে আসে।কলেজ ছুটির পর রুহী বেরিয়ে এসে রোয়েন কে দেখতে পায়।রোয়েন বেশ খানিকক্ষণ আগেই এসেছিলো।তবে রুহী দেরি করে বেরিয়েছে।গাড়ির সাথে হ্যালান দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।রুহী রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ায়।রুহীকে কেমন যেন দেখাচ্ছে।
.
.
-এত দেরি হলো যে?
-রুহী নিশ্চুপ।কিছু বলছেনা।যেন শুনছেনা।
-রুহী কি হলো?কিছু বলছি।এতসময় কি করছিলে?
-প্র্যাকটিক্যাল ক্লাশ ছিলো।
-ওকে।
.
.
রোয়েন এবার পিছনে ফিরে গাড়ির দরজা খুলে রুহীকে বসতে দেয়।রুহী চুপচাপ বসে যায়।রোয়েন লুকিং গ্লাসে রুহীর দিকে তাকায়।মেয়েটা আজ কেমন যেন চুপচাপ।
.
.
-খেয়েছো কিছু?
-জি।
-ক্লাশ কেমন হচ্ছে?
-……….কিছু বলছেনা।
-রুহী কিছু জিজ্ঞেস করেছি।কিছুটা রেগে যায় রোয়েন।
-জি!!!!
-কিছুনা।
.
.
কিছুটা বিরক্ত হয়ে কাজে মন দেয় রোয়েন।রুহী আর কিছু বলেনা।দুজনে চুপ হয়ে যায়।ঘরে পৌছুতেই রুহী রুমে ঢুকে দরজা লাগায়।রোয়েন ওর যাওয়ার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে অফিসে চলে যায়।সেদিন কাজে ঠিক ভাবে মন বসাতে পারেনা রোয়েন।সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে এসে কাজের লোকদের কাছে আসে রোয়েন।
.
.
-কিছু খেয়েছে রুহী?
-না স্যার আসার পর থেকে ম্যাম রুম থেকে বের হয়নি।কিছু খায় নাই।
.
.
বেশ রাগ লাগে রোয়েনের।কোন নতুন নাটক করছে এই মেয়ে?নিজের রাগ কে কোন মতে বশে এনে কাজের লোকদের খাবার বাড়তে বলে রুমে চলে যায় রোয়েন।রুহী বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেক সময় ধরে।কোনদিকে খেয়াল নেই ওর।হঠাৎ কারো ডাকে ঘোর কাঁটে ওর।কন্ঠটা চিরচেনা।ওর প্রিয় মানুষটার।রোয়েন খাবার নিয়ে এসে খেয়াল করে রুহী বারান্দায় দাঁড়িয়ে গ্রিলের বাহিরে তাকিয়ে আছে।
.
.
-কি হয়েছে রুহী?
-কিছুনা।
-কি করছো ওখানে দাঁড়িয়ে?
-কিছুনা।
-সারাদিন খাওনি কেন কিছু?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-ভালো লাগছিলোনা।
-ফাজলামি পেয়েছো?এদিকে এসো?ধমক দিয়ে বলে রোয়েন।
.
.
রুহী চুপচাপ রোয়েনের কাছে চলে আসে।রোয়েন ওকে খাওয়াতে শুরু করে।রুহী কেমন অন্যমনষ্ক হয়ে খাচ্ছে।খাওয়া শেষে রোয়েন বলতে শুরু করলো,
.
.
-পড়তে বসো।পড়া কমপ্লিট করে উঠবে এর আগে নয়।
.
.
রুহী মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানায়।রোয়েন প্লেট নিয়ে বেরিয়ে যায়।সেদিন রাতে দুজনের মাঝে কোন কথা হলোনা।পরদিন সকালে রুহী রোয়েনের নাস্তা দিয়ে চলে যায় নিজের রুমে।খাবার মুখে নিয়ে থুঁ করে ফেলে দেয় রোয়েন।এতো লবন যে মুখে নিতে পারেনা রোয়েন।না খেয়ে উঠে রুমে আসে রোয়েন।শার্ট গায়ে জড়িয়ে রুহীর অপেক্ষা করতে থাকে।ওর আসার নাম নেই।রোয়েন রাগে ফুঁসছে।একটু দেরি করেই কফি নিয়ে হাজির হলো রুহী।টি টেবিলে কফিটা রেখে রোয়েনের শার্টে হাত রাখে।
.
.
-কই ছিলে এতক্ষন?রুহীর হাত চেঁপে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
.
.
রুহী নিশ্চুপ।কিছু বলছেনা।
.
.
-কি হলো?এতো দেরি হলো কেন?ধমকে উঠে রোয়েন।
-ভুলে গেছি।কেঁপে উঠে রুহী।
,
,
,
,
,
,
রোয়েন আর কিছু বলেনা রুহীর দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।রুহী চুপচাপ শার্টের বোতাম লাগিয়ে বেরিয়ে যায়।রোয়েন ডাকতে গিয়ে ও পারেনা।মেয়েটা ভুলে গেছে রোয়েনের সাথে কফি খাওয়ার কথা?ভাবতে ভাবতে কফি মগ টি হাতে নিয়ে সেখানে চুমুক দিতেই মেজাজ চরমে উঠে গেলো।কি বানিয়ে রেখেছে এই মেয়ে।এত তেতো খাওয়া যায়?কি চলছে এর মনে?ভেবে পায় না রোয়েন।কোন মতে কফিটা খেয়ে মেইনডোরের সামনে আসে রোয়েন।রুহীর কোন খবর নেই।কিছুক্ষন অপেক্ষা করে এবার চিৎকার করে রুহীকে ডাকতে শুরু করে রোয়েন।রুহী ছু্টে আসে।
.
.
-জি!!!
-আমি যাচ্ছি।দাঁতে দাঁত চেঁপে বলে রোয়েন।
-,,,,,,,,,,,,,,. চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে রুহী।
-কি ভাবছো অতো?বের হবো আমি।রেগে বলল রোয়েন।
.
.
রুহী এবার কাছে এসে রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে ওর গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে রুমে চলে যায়।রোয়েন এবার যেন একটু স্বস্তি নিয়ে অফিসে চলে যায়।দুপুরে রুহীকে আনতে যায় রোয়েন।রুহী আগের মতোই চুপচাপ গাড়িতে এসে বসে।রোয়েন কথা বললে ও তেমন কথা বলেনা রুহী।প্রত্যেকদিনকার মতো রুহী শামীমের সাথে ভার্সিটিতে যায়।আজ তিনদিন রুহীকে দেখছে রোয়েন।মেয়েটা কেমন যেন হয়ে গেছে। একেবারে অন্যমনস্ক। ঠিকভাবে কথা বলেনা।খায় না।রোয়েন খাওয়ালেই খায়।ব্যাপারটা কাঁটার মতো বিঁধছে রোয়েনের বুকে।সেদিন রুহী কলেজে বের হওয়ার সময় রোয়েন ওকে পিছন থেকে ডাকে,
.
.
-রুহী ঠিক আছো?কোন সমস্যা হচ্ছে? কিছু লাগবে?
-জি ঠিক আছি।কিছু লাগবেনা।
-একা যাচ্ছো কেন?
-আজ একা যেতে মন চাইছে।
-ঠিক আছে যাও।সাবধানে যেও।
-আচ্ছা।
.
.
চুপচাপ বেরিয়ে যায় রুহী।রোয়েন চিন্তা পড়ে যায় আবার।কি হচ্ছে ওর জীবনে?হয়ত পরীক্ষা শুরু হবে তাই চিন্তা করছে কিছু নিয়ে।এস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে পড়ছে।কিন্তু কোন কোচিং ও করছেনা।বলছে ও তো না।হয়ত লজ্জা পাচ্ছে।ওর কলেজে যাওয়া উচিৎ।ভাবতে ভাবতে গায়ে কালো লম্বা কোট জড়িয়ে নেয় রোয়েন।অফিসে চলে আসে রোয়েন।রামীন ওকে দেখে এক বক্স মিষ্টি নিয়ে এলো।তারপর একটা মিষ্টি নিয়ে রোয়েনের মুখে ভরে দিলো।রোয়েন মিষ্টি হাতে নিয়ে রামীনের দিকে তাকায়।
.
.
-কিসের মিষ্টি?
-ফরহাদ ভাইয়ের ছেলে হয়েছে।খুশি মুখে বলে রামীন।
-তোর বড় ভাই না?ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-হুম।ভুলে গেছিস?
-আরে নাহ।
-কিছু নিয়ে চিন্তা করছিস?
-নাহ।ওসব নিয়ে তোকে ভাবতে হবেনা।আজ বের হবো।
.
.
নিজের জায়াগায় এসে বসে রোয়েন।রামীন ওর সামনে বসে,
.
.
-কই যাবি?
-রুহীর ভার্সিটিতে।টিচারদের সাথে কথা বলা উচিৎ।ভ্রু কুঁচকে বলতে থাকে রোয়েন।
-ওহ।পাক্কা প্রেমিক আর গার্জিয়ান।হেসে বলল রামীন।
.
.
রোয়েন রাগী চোখে তাকাতেই সরে গেলো রামীন।কিছুসময় পর রোয়েন বেরিয়ে যায় রুহীর ভার্সিটির উদ্দেশ্যে।প্রিন্সিপাল আবেদীন রহমানের রুমের সামনে আসতেই ওনি এগিয়ে এসে রোয়েন রুমে ঢুকালেন।
.
.
-স্যার ভালো আছেন?
-জি।আজ একটু কাজে এসেছি আপনার কাছে।
-স্যার বলেন কি হেল্প করবো আপনাকে।তার আগে বলুন কফি খাবেন?
-নাহ।রুহী আপনার এস্ট্রোফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট।
-জি বুঝতে পারছি।
-ওর ব্যাপারে কিছু কথা আছে।
-স্যার আপনি কিছু বলার আগে আমি বলতে চাই।
.
.
রোয়েন এবার খানিক টা নড়েচড়ে বসলো।
.
.
-জি বলুন।
-রুহী আপনার এমপ্লয়ি রেজোয়ান মাহবুবের মেয়ে তাইনা?
-জি।
-ওর বাসায় কি কোন প্রবলেম হচ্ছে?আই মিন কোন মেন্টালি প্রেশার!!
-কেন?
-রুহী সাধারনত খুব ভালো স্টুডেন্ট। সব কিছুতেই বেশ মনযোগী।মাশাল্লাহ ব্রেইন খুব শার্প।কিন্তু কিছুদিন যাবৎ তেমন মনযোগ নেই পড়ায়।মনে হয় কিছু নিয়ে চিন্তা করছে অথবা ভয়ে আছে।
-আমি আপনার কাছে এজন্য এসেছিলাম।মনে হচ্ছিলো ওর পরীক্ষা হয়ত চলে এসেছে।কিন্তু টিচার নেই।আমাদের কাছে বলতে পারছেনা।আসলে ুকটু ব্যাস্ত ও থাকি আমরা।
-স্যার আরো কিছুদিন পর আমি আপনাকে জানাতাম।চাচ্ছিলাম আরো দুটোদিন ওকে অবজার্ভ করবো।আমাদের এখানে একজন সাইকোলজিস্ট আছে।তার সাথে না হয় রুহীকে দেখা করাতাম।পরে জানাতাম আপনাকে।আর আজ যেহেতু চলে এসেছেন তাই জানিয়ে দিলাম।
-ধন্যবাদ মিঃ রহমান।এবার আমি দেখবো কি হচ্ছে?
-জি স্যার।
.
.
রোয়েন বেরিয়ে গেলো।রুহীকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
চলবে