প্রেমের পাঁচফোড়ন !! Part- 34
তুমি আমাকে ববি থেকে সেভ করবা না?
.
নাহ,আমার ঠ্যাকা পড়ে নাই!
.
তাহলে আজ তোমাকে আমি মাঝপথে নামাই দিব
.
দিয়েন
.
ভয় করছে না তোমার?
.
নাহ তো
শান্ত রেগে পানির বোতল নিয়ে পানি খেয়ে চেয়ার টেনে ধুপ করে বসে পড়লো
হাত দিয়ে তার খয়েরী সিল্কি চুল গুলো কপাল থেকে সরিয়ে পিছনের দিকে নিয়ে গেলো,আহানার দিকে তাকিয়ে পকেট থেকে একটা সেন্টার ফ্রেশ নিলো
.
আহানা!!
.
আহানা শান্তর দিকে তাকালো,শান্তর চোখেমুখে শয়তানি হাসি
কিছু একটা করবে,কিন্তু কি করবে সেটা বুঝতেসি না আমি,কি করবে?
.
শান্ত হেসে দিয়ে বললো আরেহহ আহানা তোমার ওড়না পড়ে গেছে
.
আহানা হা করে নিজের দিকে তাকালো,সাথে সাথে শান্তর ওর মুখের ভেতর সেন্টার ফ্রেশ ঢুকিয়ে দিলো
আহানা মুখ বাঁকিয়ে ফেলতে গিয়ে দেখলো ক্লিনার রুম ক্লিন করতেসে,অফিসের এই লোকটা পরিষ্কার করে সবসময় কাউকে কিছু ফেলতে দেখলে চোখ এত বড় করে মনে হয় খুন খারাবি হয়ে যাবে,রক্তা রক্তি হয়ে যাবে
আহানা তাকে দেখে তর মুখ থেকে চুইংগাম ফেললো না কিছু
উঠতে গেলো শান্ত ওর হাত মুঠো করে চেপে ধরে ফেলেছে,উঠতেও পারতেসে না সে
.
হুহাহাহাহাহহুহাহহাহা!
.
স্টুপিড! হাত ছাড়ুন বলতেসি,আমার বমি আসতেসে,আমি এই চুইংগামটা ফেলবো
.
ফেলো না,আমি কি মানা করসি?
.
👿
.
আহানা মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে,মাথা ঘুরাচ্ছে,শরীর খারাপ করছে
.
শান্ত যখন দেখলো আহানা আর হাত ছাড়ানোর জন্য মুছড়াচ্ছে না তখন তার দয়া হলো,হাত ছেড়ে দিলো
সাথে সাথে আহানা দৌড় দিলো বাথরুমের দিকে
.
অফিসে ফিরে রাগে গজগজ করতে করতে সিটে এসে বসলো আহানা
শান্ত কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে গান শুনছে আর কাজ করতেছে
.
শান্ত!!
.
শান্ত চমকে ইয়ারফোন খুলে ফেললো
পাশেই বেবি হেলেদুলে কথা বলতেসে
.
শান্ত বিরক্তি নিয়ে বললো কি??
.
তুমি আমাকে avoid কেন করতেসো??
.
শুনো ববি,একটা সত্য তোমার জানা উচিত
.
ববি না বেবি
.
আচ্ছা বেবি,আমি বিবাহিত,আমার ওয়াইফ আছে
কথাটা আহানার দিকে চেয়ে বললো শান্ত
আহানা চোখ তুলে ওদের দিকে চেয়ে আছে,ডাহা মিথ্যা বললো,তাও এই মেয়েটাকে সরানোর জন্য
.
কিহহ কি বললে তুমি?
.
ইয়াহ এটাই সত্যি,এমনকি আমার ২বছরের একটা ছেলেও আছে
.
হোয়াট!না আমি বিশ্বাস করি না,তুমি তো ভার্সিটিতে পড়ো তুমি কিভাবে বিবাহিত হতে পারো,এটা মিথ্যা
.
আরে না, পালিয়ে বিয়ে করসিলাম তো তাই এত আর্লি হয়ে গেসে
.
ওহ😒তার মানে তুমি সেকেন্ড হ্যান্ড!!!
.
বেবি হনহনিয়ে চলে গেলো,আহানা হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে,হাহাহা,মিঃ অশান্তর নিউ একটা নাম হইসে,সেকেন্ড হ্যান্ড!😂
.
আহানা চুপ করো,তাহলে তুমিও সেকেন্ড হ্যান্ড!
.
কেন কেন,আমি কেন,আমি তো বিবাহিত না
.
বিয়ে হলেই সেকেন্ড হ্যান্ড হয় তার আগে না এই ভুল তথ্য কে দিলো তোমায়?
.
মানে!
.
শান্ত মুচকি হেসে জিভ দিয়ে ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিলো
ইয়ারফোন কানে গুজতে গুজতে বললো কিস করলেই সেকেন্ড হ্যান্ড হয়ে যায় বুঝছো আমার পাতানো বউ
.
আহানা চোখ বড় করে রেগে গিয়ে শান্তর গায়ে দুম করে কিল বসিয়ে দিলো
বেয়াদ্দপ কোথাকার!
.
শান্ত আহানার চুল টেনে দিলো
.
আহানা এবার শান্তর জ্যাকেট টেনে এলোমেলো করে দিলো
.
শান্ত হাত নিয়ে আহানার ওড়না ধরতে যেতেই হাত সরিয়ে ফেললো
আহানা গায়ে হাত দিয়ে চুপ করে তাকিয়ে থেকে রেগে রেগে বললো তো এখন আপনি আমার গায়ে হাত দিবেন?
.
তুমি প্রথমে আমার গায়ে হাত দিসো
.
তো তাই বলে আপনি এভাবে আমার ওড়না ধরতে আসবেন?
.
আমি ভুলে গেসিলাম তুমি মেয়ে, ওকে ফাইন সরি
.
হুহ
শান্ত কম্পিউটারে একটা ফাইল ওকে করে আহানার দিকে চেয়ে বললো যদি আর একদিন জ্যাকেটে হাত দিসো তো তোমার গায়ে তোমার ওড়না থাকবে না
.
আহানা চোখ তুলে বললো কিহহহহ,আপনার এত বড় সাহস আপনি….
.
চুপ!যখন ওড়না ছিনিয়ে নিব তখন এসব বলিও, ওকে?
.
বেয়াদব একটা!
.
তুমিও বেয়াদব
.
আপনি বেয়াদব
.
শান্ত রেগে আহানার চুল ধরে টেনে দিলো,আহানা শান্তর হাতে তার নখ ঢুকিয়ে দিলো
.
আউচচচ
.
শান্ত এবার আহানার মাথার চুল থেকে হাত নামিয়ে আহানার হাত ধরে করচচচচ করে এক কামড় বসিয়ে দিলো
.
আউউউউউউউউ
.
রাফি স্যার দৌড়ে আসলো তার কেবিন থেকে
কি হলো?আহানা?এমন চিৎকার দিলে কেন?কি হয়েছে?
.
আহানা ওড়না দিয়ে হাত লুকিয়ে বললো তেলাপোকা দেখসি তাই
.
ওহ,আমি তো ভাবলাম তোমারে তেলাপোকা কামড় দিসে
কথাটা বলে রাফি হেসে দিয়ে চলে গেলো
.
হিহি,মিঃ অশান্ত একটা তেলাপোকা
.
তুমি তেলাপোকি😂😁
.
জলহস্তিনী ঠিক ছিল,তেলাপোকি মানে কি আবার!
.
ও তুমি বুঝবে না,আমাকে যাই বলো না কেন তোমাকে বলার সময় (ই-কার বসিয়ে দিব)
.
ব্রেক টাইম শুরু হয়ে গেছে,আহানা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকে চেয়ে আছে
.
হঠাৎ কেউ একজন পিছন থেকে হাত মুঠো করে ধরে টান দিলো
আহানা চমকে তাকালো সেদিকে
শান্ত হালকা করে হেসে বললো কি গো পাতানো বউ চলো ক্যানটিন যাই খাইতে
.
আমি যাব না,আর আপনাকে বলসি না আমাকে পাতানো বউ বলবেন না!
.
ওকে পাতানো বউ,চলো এখন
শান্ত আহানার হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো ক্যানটিনের দিকে
তোমাকে ছাড়া কিছু খাওয়ার সময় মন বসে না আমার,কি খাবা বলো?
.
কিছু না
ওকে,ভাইয়া ২৯৯এর যে প্যাকেজ আছে সেগুলোর ২টা প্যাকেজ এই টেবিলে দিয়ে যান
.
আমি বলসি না খাব না
.
খেও না,বাসায় নিয়ে যাইও
.
শান্ত জ্যাকেটের চেইন খুলে গায়ে ফু দিতে দিতে বললো আজ এত গরম!
.
আহানা পিছনে চেয়ে দেখলো বেবি পায়ের উপর পা তুলে লিপস্টিক লাগাচ্ছে
আপনি অসভ্য একটা লোক,কিছুক্ষন আগে ওর থেকে ছাড়া পেতে বলেছেন আপনি বিবাহিত আর এখন ওরে দেখে বলেন আজ গরম!
.
শুনো অলওয়েজ এত নেগেটিভলি সব নিবা না,আমার সত্যি গরম লাগতেসে,ক্যানটিনের এসি নষ্ট দেখো না??আর আমি তো ববিকে দেখিও নাই
কথাটা বলে শান্ত ঠাস করে টেবিলে এক বাড়ি দিয়ে আরেকদিকে মুখ করে বসলো
.
ইহহ মিঃ অশান্ত রাগ করেছে!
.
তোমার সাথে কথা বলবো না যাও,খাবার এসে গেছে, খেয়ে যাও এখান থেকে
.
আমি না খেয়েই যাবো
আহানা উঠে চলে গেলো কথা শেষ করে
১০-১৫মিনিট হয়ে গেছে আহানা তমালের নোট কমপ্লিট করতেসে কেবিনে বসে বসে
শান্ত খাবার নিয়ে এসে আহানার সামনে চেয়ার টেনে বসলো
.
আমি বলসি না খাব না”
.
তুমি খাবে না তোমার ১৪গুষ্টি খাবে
শান্ত আহানার গাল টিপে ধরে এক লোকমা মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দিলো
আহানা কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওর নাক টিপে ধরলো শান্ত,দম বন্ধ হয়ে আসতেসে তার,না চিবিয়েই গিলে ফেললো
.
শান্ত মুচকি হেসে ওর নাক থেকে হাত সরিয়ে ফেললো,আরেকটা লোকমা বানাতে বানাতে বললো আমি যখন মোহনগঞ্জে থাকতাম আমার এখনকার মা আমার বোন মিতুকে এমন করে খাওয়াতো,ও একদম খাবার খেতে চাইতো না,তাই নাক টিপে ধরতো ওর সাথে সাথে ও খাবার গিলে ফেলতো
.
তাই বলে আমাকেও এমন করে খাওয়াবেন?
.
তুমি নিজে খেলে তো আর আমার এত কষ্ট করতে হতো না
.
আচ্ছা দিন
.
আহানা খাবার হাতে নিতেই শান্ত উঠে দূরে জানালার পাশে হেলান দিয়ে দাঁড়ালো,পকেট থেকে একটা সিগারেট নিয়ে ধরালো,এই ফ্লোরে এখন আহানা ছাড়া কেউ নেই তাই নিশ্চিন্তে সিগারেট খাওয়া যায়
.
আহানা খাওয়া শেষ করে হাত ধুয়ে এসেছে
শান্ত সিগারেট হাতে রেখে সূর্যের সাথে ফোনে কথা বলতেসে,হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে
.
আহানা এই নিয়ে ৩বার তাকালো,ঐদিন সিগারেট খেয়ে অবস্থা খিঁচুড়ি হয়ে গেলেও টেস্টটা ভালই লেগেছে,আরও একবার খেতে পারলে মন্দ হতো না
আহানা এগিয়ে কাছে এসে দাঁড়ালো,এদিক ওদিক তাকালো,কেউ নেই,আর ৫/৬মিনিট পর সবাই ফিরে আসবো কেবিনে,এর ভিতরই যা করার করে ফেলতে হবে
.
আহানা ছোঁ মেরে সিগারেটটা নিয়ে নিলো,,শান্ত সূর্যর সাথে কথা বলায় ব্যস্ত থাকায় টেরই পেলো না যে তার হাতের সিগারেট গায়েব হয়ে গেছে
আহানা সিগারেটটা মুখে দিয়ে পরপর ২টান দিলো তারপর হা করে ধুঁয়া বের করে হাসতে হাসতে আরেকবার মুখে দিলো এবার মনে হচ্ছে মুখের সাথে সাথে চোখ ও জ্বলে যাচ্ছে
আহানা সিগারেটটা ফেলে কাশতে কাশতে চেয়ারে বসে পানির বোতল খুঁজতেসে
.
শান্ত ফোন রেখে হাতে চেয়ে দেখলো সিগারেট গায়েব,ফ্লোরে পড়ে আছে বাকি অংশ আর আহানা হাত দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে কি যেন খুঁজতেসে
.
আহানা?তুমি আমার সিগারেট নিসো কেন?মুখে দিসো আবার?
আহানা পানি খুঁজেই পাচ্ছে না,এক বোতল পানি ছিল,খাবার খেয়ে সব শেষ করে ফেলসে
.
শেষে শান্ত ক্যানটিন থেকে পানি নিয়ে ফিরে আসলো
ওর হাতে দিয়ে ওর মুখের দিকে চেয়ে দেখলো চোখ মুখ লাল অজগর হয়ে আছে
নাকের নিচে লাল লাল কি যেন দেখা যাচ্ছে,শান্ত আহানার মুখ টিপে উল্টিয়ে ফোনের ফ্ল্যাশ অন করে দেখলো রক্ত,আর কিছুক্ষন হলেই গড়িয়ে পড়বে
শান্ত মহা চিন্তায় পড়ে গেলো,আহানাকে বকবে কি নাকি মারবে তা সব একপাশে রেখে ড্রয়ার থেকে টিসুর
বক্স নিয়ে আহানার মুখ টিপে রক্ত গুলো মুছে নিলো তারপর ব্রু কুঁচকে আহানার গালে চড় মারার জন্য হাত উঠালো,আহানা চোখ বন্ধ করে ফেলেছে ভয়ে
তোমার কি মাথা গেছে?ঐবার সিগারেট খেয়ে কি হয়েছিল তোমার মনে নেই?আজ আবার সেই ভুল করলে,হলো তো এবার? রক্ত বের হচ্ছে নাক দিয়ে,শান্তি হইসে তোমার?কেমন করে খেয়েছো সিগারেট যে নাক দিয়ে রক্ত বেরিয়ে এসে গেছে
.
আমি আসলে ধোঁয়া নাক দিয়ে বের করতে চাইসিলাম,অনেকেই নাক দিয়ে বের করে তো তাই,experience নেওয়ার জন্য এমন করসি
.
তাই?তাই বলে তুমি ছেলেদের মতো করতে চাইবা?বারবার ভুলে যাও কেন যে তুমি মেয়ে,তোমাকে এসব স্যুট করবে না,বুঝো না কেন,নাকি বুঝার চেষ্টা করো না তুমি!বেয়াদব মেয়ে কোথাকার!
আহানা চোখ মুছে কম্পিউটার অন করলো,সবাই এক এক করে আসতেসে অফিসে,যে যার কেবিনে বসতেসে
শান্ত শক্ত হয়ে তার কাজ করে যাচ্ছে
আহানা হাত দিয়ে চোখ মুছতে মুছতে কাজ করতেসে
.
বোকা মেয়ে একটা,একটু জ্ঞান বুদ্ধি যদি থাকত তো দ্বিতীয় বার সিগারেট খাওয়ার সাহস করত না
.
অফিস ছুটি হওয়ার পর আহানা গুটিগুটি পায়ে নিচে নেমে রোডের সামনে দাঁড়িয়ে শান্তর জন্য অপেক্ষা করছে
.
শান্ত বাইক নিয়ে এসে বললো তোমার কি খিধা পেয়েছে?
.
নাহ কেন?
.
তাহলে চলো এক জায়গায় যাব
.
কোথায়?
.
গেলেই দেখবে
.
আহানা চুপ করে বাইকে উঠে বসলো
.
কিছুক্ষন নিরবতা পালন করে বললো আমরা কই যাচ্ছি?
.
তোমার বেস্টুর বাসায়
.
রুপা?কিন্তু কেন?
.
আজ ওকে দেখতে আসবে ছেলে পক্ষ
.
কিহহহহ!ও আমাকে বলেনি কেন,আর নওশাদ ভাইয়া?
.
আরে তোমাকে কি বলবে?নওশাদ খবরটা মাত্রই জানছে,সে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে রুপার ফ্যামিলিকে বুঝানোর জন্য
.
তো আমরা কি এখন তাদের মানাতে যাচ্ছি?
.
হুমম,আমি তোমাকে নিতেছি কারন তুমি রুপাকে চিনো,সব কিছু জানো
.
আরে উনারা আমাদের কথা কেন শুনতে যাবে.?
.
চুপ করো তো এত প্রশ্ন করে মাথা খাইও না আমার
.
আহানা তো ভেবে যাচ্ছে রুপা ওরে এতবড় কথা জানালো না কেন!
রুপাদের বাসায় এসে আহানা ঢুকতে যেতেই শান্ত ওর হাত ধরে থামিয়ে দিলো
.
আহানার ওড়না টেনে ওর মাথায় ঘোমটা দিয়ে দিলো
.
শুনো তুমি বলবা আমি তোমার স্বামী,ওকে?
.
কিহ,কিন্তু কেন?
.
আরে নাহলে অবিবাহিত ছেলে মেয়েদের বাংলাদেশি পরিবারের লোকেরা বাচ্চা ভাবে,বুঝছো??বিবাহিত শুনলে আমাদের কথায় গুরুত্ব দিবে
.
😒তাই বলে এত বড় মিথ্যা?
.
ওকে আমি রুপাকে বলতেসি তুমি ওকে হেল্প করতে চাও না
.
আহানা শেষে রাজি হলো,কলিংবেলে চাপ দিলো শান্ত,একজন ভদ্রলোক এসে দরজা খুলেন
সম্ভবত রুপার বাবা হবেন
.
আসসালামু আলাইকুম আঙ্কেল
.
ওয়ালাইকুম আসসালাম,তোমরা কারা ঠিক চিনলাম না
.
আমি নওশাদের বড় ভাই শাহরিয়ার শান্ত আর এ আমার ওয়াইফ আহানা ইয়াসমিন
নওশাদ কথা শুনেই উনার মুখটা ফ্যাকাসে হয়ে গেলো,ব্রু কুঁচকে ভিতরো চলে গেলেন
.
এই হলো তো?মিথ্যা বলায় এখন হলো তো?বাসায় ও ঢুকতে দেয়নি
.
শান্ত দাঁতে দাঁত চেপে আহানার চুল টেনে বললো চুপ থাকতে পারো না তুমি?
.
লোকটা আবার ফেরত আসলেন সাথে একজন বয়স্ক মহিলা আনলেন,রুপার দাদি মনে হয় উনি,লোকটা শান্ত আর আহানাকে ভিতরে আসতে বলে নিজে সোফায় বসলেন
শান্ত আর আহানা বয়স্ক মহিলাকে সালাম দিয়ে সোফায় বসলো
.
আমরা নওশাদের ব্যাপারে জানি,তো তোমরা এখন কি বলতে এসেছো?
.
আমি বলতে এসেছি নওশাদ আমার ছোট ভাই,ওরে আমি চিনি,ও রুপাকে অনেক ভালোবাসে,রুপাও ভালোবাসে তাহলে আপনি কেন এখন রুপাকে আরেকটা ছেলের সাথে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন?
.
নওশাদ কোনো চাকরি করে??বলো
.
করে না তো করবে,নওশাদের পড়ালেখা অনেক ভালো,ও অনেক ভালো একটা চাকরি পাবে
.
পরেরটা পরে,এখন তো করে না,আর আমি আমার মেয়েকে এখনই বিয়ে দিব,ছেলে পক্ষ কিছুক্ষন পর আসবে,আপনারা আসতে পারেন এখন!
.
শান্ত আহানাকে এক খোঁচা দিলো,কিছু বলার জন্য
.
আহানা দাঁত কেলিয়ে বললো কিন্তু আঙ্কেল রুপা তো প্রেগন্যান্ট,নওশাদের বাচ্চার মা হতে চলেছে
.
শান্ত চোখ কপালে তুলে আহনাার দিকে তাকালো
রুপার বাবা সোফা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লেন
.
কি বললে?এটা মিথ্যা কথা
.
এটাই সত্যি আঙ্কেল
.
শান্ত ফিস ফিস করে বললো এসব কি আজগুবি কথা বলে যাচ্ছো মাথা গেছে তোমার?
.
আরে ওরা ঐদিন রুমডেট করসে বলছেন না,তো এতদিনে তো প্রেগন্যান্ট হয়ে যাওয়ারই কথা তাই না,আর এটা বলায় উনি বিয়ে দিতে বাধ্য হবেন!
.
রুপা!!রুপা!!এদিকে আয়
.
রুপা একটা মেরুন রঙের শাড়ী পরে রেডি হয়ে রুমে বসে ছিলো বাবার চিৎকারে দৌড়ে এসে আহানা আর শান্তকে দেখে চমকে উঠলো
.
রুপার বাবা হাত উঠালেন রুপাকে মারার জন্য
.
আরে আরে আঙ্কেল!!গর্ভবতী নারীর গায়ে হাত তুলে গুনাহর ভাগীদার হবেন না
.
আহানার কথায় বাবা হাত থামিয়ে হনহনিয়ে বাসার ভেতর চলে গেলেন,বয়স্ক মহিলাটি মনে হয় কানে শুনে না,একবার আহানার দিকে তাকাচ্ছে আরেকবার শান্তর দিকে,আবার রুপার দিকে তাকাচ্ছে,মাঝে মাঝে তাকানো বাদ দিয়ে তফসি পড়তেসেন,কোনো রিয়েক্ট করতেসেন না,তার মানে উনি কিছুই শুনেন নাই
চলবে♥