The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 17
→দুদিন পার হয়ে গেলো তবে সে রাতটা যেন মনে আঁচড় কাটছে রুহীর।লোকটার প্রত্যেকটা স্পর্শ ওর হাতে কোমড়ে পেটে সতেজ হয়ে উঠছে।লোকটাকে বড্ড ভালবাসে ও তবে সে যদি ছেড়ে চলে যায় তখন কি করবে ও?কই যাবে?সে যদি সামিরের মতো হয় তাহলে জীবতের মাঝে মৃত থাকবে রুহী।লোকটাকে বড্ড কাছে পেতে মন চায়।তার বুকে প্রত্যেকটা রাত কাঁটাতে ইচ্ছে হয়।কেন রাত গুলো এত দ্রুত শেষ হয়ে যায়।পারেনা রোয়েন আর ওর মাঝে আটকে যেতে।লোকটার শরীরের মোহনীয় গন্ধ যে রুহীকে নতুন এক ভূবনে নিয়ে যায়।সেখানে শুধু ওরা দুজন আর ওদের ভালবাসাময় মুহূর্ত গুলো বিরাজ মান থাকে।
কথা গুলো ভাবতে ভাবতে শামীমের দিকে চোখ পড়ে রুহীর।মুখে এক চিলতে হাসি ফুঁটে উঠে ওর।তারপর কলেজ ব্যাগটাকে কাঁধে চেঁপে উঠে দাঁড়ায়।শামীম ও ওর সামনে এসে দাঁড়িয়েছে,
.
.
-রুহী বাসায় চলো।
-জি।তবে আজ ওনি আসেননি যে?
-কে?
-আপনাদের বস।
-ওহ স্যার।এক্চুয়ালি স্যার বনানী গেছেন।
.
.
রুহী কিছু বললনা।হয়ত কোন কাজে গেছেন।চুপচাপ শামীমের সাথে গাড়িতে বসে পড়ে রুহী।ওকে অবাক করে দিয়ে শামীম জিজ্ঞেস করে,
.
.
-জানতে চাইবেনা কেন গিয়েছে?
-কেন?
-স্যারের মায়ের বাড়িটা ওখানে।
-কে থাকেন ওখানে?
-কেউনা।পরিত্যাক্ত বাড়ির মতো পড়ে আছে ওটা।
-ওহ।আজ হঠাৎ ওখানে গেলো যে?
-জন্মদিন ওনার মায়ের।
.
.
রুহী চুপ হয়ে যায়।চোখের কোনা ভরে আসে ওর অজান্তেই।তারপর জানালার বাহিরে তাকায় রুহী।রোয়েনের ঘরের সামনে থামে গাড়িটা।রুহী বেরিয়ে এসে শামীমকে বলল,
.
.
-ব্যাপারটা ওনি যেন না জানেন প্লিজ।
-অবশ্যই রুহী।
.
.
হাসি মুখে ঘরে চলে যায় রুহী।বিকেলে ঘরে আসে রোয়েন।রুহী ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল মুচছিলো। রোয়েন বের হওয়ার জন্য পা বাড়াতে গিয়ে ও থেমে যায়।চুলের আকারটা আরো বেড়েছে।কোমড়ের অনেকটা নিচে।বেশি দিন যাবে না ওর পা ছাঁড়াতে। রোয়েন কিছুটা হিপনোটাইজের মতোই রুহীর পিছে এসে দাঁড়ায়।রোয়েনের ডান হাত থেকে কালো ফাইলটা পড়ে যায়।রোয়েন হাতবাড়িয়ে রুহীর কোমড়ের দুপাশ শক্ত করে চেঁপে ধরে নিজের সাথে।রুহী কিছুটা চমকে উঠে পিছনে ফিরতে নিতেই একটয় হাত ওর গলায় কিছুটা চাঁপ দিয়ে ধরে।রুহীর মাথাটা কিছুটা পিছন দিয়ে ঝুঁকে যায়।রোয়েন এমন অনেক সময় আছে ওকে এভাবে ধরে যেন মেরে ফেলবে কিন্তু ব্যাপারটা বেশ লাগে রুহীর।রোয়েন এবার রুহীর চুলে নাক ডুবিয়ে ঘ্রান নেয় লম্বা করে।রুহীর ভিতর কেমন এক আলোড়ন জেগে উঠে।পুরো শরীর যেন জমে গেছে।রোয়েন এবার মাথা এগিয়ে এনে রুহীর কাঁধে চুমু খায়।রুহীর গলায় রোয়েনের হাত শিথিল হয়ে আসে।রুহী পিছনে আরেকটু সরে গিয়ে রোয়েনের কাছে যায় আরো।রোয়েন মাথা আরেকটু এগিয়ে রুহী ঠোঁটের কোনায় চুমু দিয়ে রুহীকে নিজের দিকে ফেরায়।তারপর ওর হাত থেকে তোয়ালে ফেলে দিয়ে নিয়ে আসে মেইন ডোরের সামনে।রোয়েন এবার সোজা হয়ে দাঁড়ায়।রুহী বুঝতে পারছেনা লোকটা কেন এভাবে আনলো।আচমকা রোয়েন বলল,
.
.
-আমি বের হচ্ছি।
-হুম।অন্যমনস্ক রুহী।
-আমাকে বিদায় দাও কঠিন গলায় বলল রোয়েন।কিছুটা ধমক মনে হলো।
.
.
রুহীর মনে পড়ে যায় ওনি বের হওয়ার সময় কি করতে হবে।সকালে ও করেছিলো।তবে ভুলে এই সময়ের মাঝেই।রুহী কিছুটা লাফিয়ে উঠে তাড়াহুড়ো করে রোয়েন কে জড়িয়ে ওর গালে চুমু খায়।ঠিক এমন যেন ঘুমিয়েছিলো রুহী।হঠাৎ কেউ কানের সামনে চিৎকার করে উঠায় ধড়ফড় করে উঠেছে রুহী অথবা রুহী সামনে থাকা মানুষটাকে দেখে নিজেকে সামলাতে না পেরে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়েছে।রোয়েন কিছুটা অবাক হয়েছে মায়াবতীর এমন কাজে।রুহী নিজেও লজ্জা পেয়ে সরে আসে।তারপর হেসে দেয় ফিক করে।রুহীর হাসিটা যেন রোয়েনের হার্টবিট ফাস্ট করে দিয়েছে।তারপর ও মুখে গম্ভীর ভাব এনে বলল,
.
.
-হুম।
.
.
বেরিয়ে যায় রোয়েন।রুহী কোমড় বেঁধে কাজে লাগে।আজ প্রিয় মানুষটার জন্য কিছু অপেক্ষা করছে।যেটা হয়ত তার ভাবনাতীত।রাত আটটার আগেই সব কমপ্লিট।রুহী এবার আরো একবার ফ্রেশ হয়ে টিয়া রং এর সিল্কের শাড়ী পরে নেয়।সেই সাথে হালকা গয়না।তবে ঠোঁটে বেশ গাঢ়ো লাল লিপস্টিক।আর বাকি সাজটা একদম নরমাল।আয়নায় নিজেকে দেখে লজ্জা মাখা হাসি দেয়।এরমাঝে শামীম রফিক শ্রাবন এসে পড়েছে।রোয়েন জানেনা তবে।কিছুক্ষন পর রুহী ডাইনিং রুমে এসে কেকটা নিয়ে ড্রয়িং রুমে রাখে। তারপর শামীম ইশারা করে রোয়েন আসছে।রুহী ঠিক করে সব।রামীন রোয়েন আর রেজোয়ান মাহবুব প্রবেশ করে বাসায়।রোয়েন পুরো ঘরে চোখ বুলায়।কি হচ্ছে এসব?এবার রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।মেয়েটার মুখে চমকপ্রদ হাসি।রুহী বলে উঠে,
.
.
-হ্যাপি বার্থ ডে মা।
.
.
রোয়েন বেশ অবাক।এসব কি বলছে রুহী?আজ ওর মায়ের জন্মদিন সেটা শামীম আর রেজোয়ান মাহবুব ছাড়া কেউ জানেননা।তাহলে?রোয়েন একটু রেগে বলল,
.
.
-এসব কি হচ্ছে?
.
.
রুহীর মুখের হাসি নিমিষে চলে গেলো।রামীন বলল,
.
.
-দোস্ত রুহী যা করছে তোর জন্য।প্লিজ রাগ করবিনা।
.
.
রামীন থেকে চোখ সরিয়ে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।তারপর ওরদিকে এগিয়ে যায়।
,
,
,
,
,
রুহীর মুখে হাসি ফু্ঁটে উঠে যখন রোয়েন ওর পাশে দাঁড়িয়ে মোমবাতি গুলো ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দেয়।তারপর রুহীর হাত ধরে রোয়েন।হাতে ছুড়ি নিয়ে দুজনে কেক কাঁটে।রোয়েনের চোখের পানি বাঁধা মানছেনা।তারপর আটকে রেখেছে।সবাইকে কেক খাওয়ায় রোয়েন।তারপর রুহীকে কেক খাওয়ায়।রুহী রোয়েনের চোখের দিকে তাকাতে পারছেনা।ওর কান্না পাচ্ছে।রোয়েন এবার সরে আসে রুহীকে কেক খাইয়ে।রুহী আজ নিজ হাতে রান্না করেছে সবার জন্য।সবাই খেয়ে ১১টার পর চলে যায়।রোয়েন রুহী যে যার রুমে চলে যায়।রাত দেড়টা। রুহীর চোখে ঘুমের ঘ ও নেই।বারবার চোখ পড়ছে ঘড়ির দিকে।ওর অস্থির লাগছে।ঘুম এসে ও আসছেনা।উঠে বসে রুহী।তারপর গায়ের সাদা নাইট গাউন টাকে ঠিক করে রুম থেকে বেরিয়ে আসে।রোয়েন বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।ওর চোখ সামনের টাওয়ারটায়।এই টাওয়ারের মাথায় একটা স্টার আছে যেটা রাত হলে জ্বলে।রুহী রোয়েনের রুমের সামনে দাঁড়ায়।তারপর লম্বা দুয়েক নিশ্বাস নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে।রোয়েনের সেদিকে মন নেই।মাকে মনে পড়ছে।রুহী বারান্দায় দাঁড়ায় রোয়েনের পাশে।ও খেয়াল করে রোয়েনের গালে ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়ছে।রুহী কিছুটা সামলায় নিজেকে।তারপর বলল,
.
.
-ঠিক আছেন আপনি?
.
.
রুহীর কথায় ঘোর ভাঙ্গে রোয়েনের।গালের পানি মুছে রুহীর দিকে তাকায় রোয়েন।
.
.
-তুমি এখানে?
-এমনি।
.
.
তারপর আবার নিস্তব্ধতা।দুজনে তাকিয়ে আছে টাওয়ারের দিকে। তবে রুহী একটু পিছে দাঁড়িয়ে আছে রোয়েনের।আচমকা রুহী জিজ্ঞাস করে,
.
.
-আপনার মা কই?
.
.
রোয়েন চুপ করে আছে।।রোয়েনকে চুপ থাকতে দেখে রুহী বলল,
.
.
-যদি বলতে না চান না বলতে পারেন।খুব ইচ্ছে হলো জানার।তাই জানতে চাইলাম।
-সি ইজ নো মোর।খুন হয়েছে আমার মায়ের।তবে কে করেছে জানিনা।
.
.
কথা গুলো বলার সময় রোয়েনের গলা কেঁপে কেঁপে উঠছিলো।রুহীর ইচ্ছে হচ্ছে লোকটা কে জড়িয়ে ধরতে কিন্তু কিভাবে?তবে তার মন ভাল করা যায়।রোয়েন আবার চুপ করে গেলো।রুহী ভাবছে কিভাবে ওনার মন ভালো করবে।কারন রুহীর ভালো লাগছেনা।রুহী বলে উঠে,
.
.
-আমি না ছোটবেলায় অনেক দুষ্টু ছিলাম।স্কুলে ম্যামদের ভীষন জ্বালাতাম।কখনো ওনাদের গায়ে প্লাস্টিকের তেলাপোকা লাগাতাম।আবার কখনো চুলে চুইংগাম।খুব মজা লাগতো।রুহী হেসে দিলো নিজেই।
.
.সবার আগে আমার গল্প পড়তে চাইলে “নীল ক্যাফের ভালোবাসা” পেজে পাবেন।
রোয়েনের কোন এক্সপ্রেশন না পেয়ে রুহী চুপ হয়ে গেলো।রোয়েন আড়চোখে মায়াবতীকে দেখে।মেয়েটা ওর মন ভালো করতে চাইছে।তবে মেয়েটাকে দেখে যে ওর মন ভালো হয় সেটা বোঝেনা ওর বোকা মায়াবতী।রোয়েন হঠাৎ রুহীকে দেয়ালে আটকে দিয়ে ওর পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নেয়।রুহী রোয়েনকে দেখছে বড় বড় চোখে।রোয়েনের ঠোঁটে বাঁকা হাসি।মেয়েটা একদম একটা সাদা পরী।রোয়েন এগিয়ে এসে রুহীর অনেকটা কাছে।একে অপরকে দেখছে।রুহীর কোমড়ে রোয়েনের হাত শক্ত ভাবে বেঁধে আছে।রোয়েন মুখ এগিয়ে রুহীর ঠোঁটে চুমু দিতেই রুহী সেই ঠোঁটজোড়া আঁকড়ে ধরে যেন এসময়ের অপেক্ষায় ছিলো ও।ওদের নিশ্বাস ভারি হচ্ছে।রোয়েনের গরম নিশ্বাস রুহীর মুখের ওপর পড়ছে।বেশ কিছুটা সময় পার হয়ে যায়।একসময় রোয়েন সরে এসে রুহী কে পিছনে দিয়ে দেয়ালে চেঁপে ধরে।রুহীর গাল দেয়ালে আটকে আছে।কিছুটা ব্যাথা পায় রুহী।রোয়েন আলতো হাতে রুহীর পিঠের ওপরের একটি ফিতা খুলে দিয়ে সেখানে চুমু খায়।তারপর রুহীর কাঁধে গরম নিশ্বাস ফেলতে শুরু করে।রুহীর বুকের ভিতর ধুপধাপ করছে।রোয়েন একান্ত ভাবে পেতে চাইছে মায়াবতীকে।রুহীকে কোলে তুলে রুমে আসে ও।তারপর ওকে শুইয়ে ওর গলায় মুখ ডুবায়।রুহীর পিঠে হাত দিয়ে বাকি ফিতা গুলো খুলে দিতে নিবে তখনই রোয়েনের খেয়াল হয় কি করছে ও?রুহীর গলার থেকে মাথা সরিয়ে ওপরে মায়াবতীর দিকে তাকায় রোয়েন।তারপর উঠে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে চলে আসতে নিলে রুহী ওর হাত টেনে ধরে,
.
.
-কই যাচ্ছেন?
-আমি অন্য রুমে যাচ্ছি।
-এখানে ঘুমোন।
-না।এটা তোমার জন্য ভালো হবেনা।
.
.
কথা গুলো বলে আরো সামনে যেতে রুহী শোয়া থেকে উঠে প্রায় দৌড়ে এসে রোয়েনের হাত ধরে।রোয়েন থেমে যায়।রুহী রোয়েনের কাঁধে কপাল ঠেঁকিয়ে বলল,
.
.
-আমাকে বুকে নিয়ে ঘুমান।কিছু হবেনা। প্লিজ।
-রুহী!!!
-ঘুম হবেনা আমার।
.
.
রোয়েন পিছনে ফিরে কিছু বলেনা।চুপচাপ মায়াবতীকে বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে।রুহী চুপটি মেরে রোয়েনের বুকে ঘুমিয়ে যায়।
চলবে