The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 19
→সেদিনের মতো রুহীকে ঘরে নিয়ে আসে রোয়েন।রুহীর অবস্থার কোন পরিবর্তন হচ্ছিলো না।কেউ ডাকলে চমকে উঠতো অন্যমনষ্ক হয়ে থাকতো।রোয়েন সহ্য করতে পারছিলো না।রোয়েনের সাথে আর আগের মতো কথা ও বলতোনা।রোয়েন এবার ঘরে কলেজে আরো চারজন গার্ড রাখে।সেদিন কাজ করছিলো রোয়েন।রামীন ওর পাশে বসে মোবাইলে বাবুর ছবি দেখছিলো আবার রোয়েনকে ও দেখাচ্ছিলো।রোয়েনের সেদিকে কোন মন নেই। রুহীকে নিয়ে ভাবছে ও।কি চলছে মেয়েটার মনে কি জানি?হঠাৎ রেজোয়ান মাহবুবের আগমনে ঘোর কাঁটে রোয়েন।
.
.
-স্যার কথা ছিলো।
-জি বলুন।
-স্যার চিটাগাং এর ওয়্যারহাউজে আমাদের মাল পত্র কমে এসেছে।
-কিনে নিন তাহলে আর পারলে শামীম আর রাসেল কে পাঠান।
-জি স্যার।
.
.
রেজোয়ান মাহবুব চলে যেতেই কল আসে রোয়েনের ফোনে।কলেজের একজন গার্ড কল করছে।রোয়েন ফোন রিসিভ করে কানের সামনে ধরে,
↓
↓
↓
↓
-কোন খবর পেয়েছো?
-জি স্যার।ম্যাম একঘন্টার জন্য কই যেন গেছে।
-কই গেলো?ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-পাশের একটা পার্কে গেলো দেখলাম।
-কি করছে সেখানে?
-স্যার তেমন কিছু বুঝতে পারছিনা কিন্তু ম্যাম ঐখানে বসার পরই ওনার কল আসে।ফোনে কথা বলার পর পরই ম্যাম কান্না করে দেয়।ম্যাম যখন ফিরে আসছিলো চেহারার অবস্থা খারাপ ছিলো।চোখ মুখ ফুলা ছিলো।
.
.
ফোন কেঁটে দেয় রোয়েন।তারপর গায়ে কালো কোট জড়িয়ে রুহীকে নিতে আসে।মেয়েটার চেহারা অনেকটাই মলিন হয়ে আছে।বাসায় চলে আসে ওরা।সেদিন সন্ধ্যায় শামীম রোয়েনের বাসায় আসে রুহীর সাথে কথা বলতে।কিন্তু কিছু জানতে পারেনি শামীম কি হয়েছে রুহীর
রুহীর দিকে এখন সবাই খেয়াল রাখছে।কার সাথে কথা বলে কই যায় সব।এমনকি ওর নম্বর ও ট্রেস করেছে রোয়েন। ।পরদিন রুহীর কলেজে যাওয়ার পর গার্ড রোয়েনকে আবার ও কল দিলো।
.
.
-হ্যালো!!! স্যার
-ইয়েস”!!গম্ভীর কন্ঠে রোয়েন বলে উঠে।
-রুহী ম্যাম আজকেও পার্কে গেছে।
-ওর পিছু নাও।দেখো কি করে।
-জি স্যার।
↓
↓
↓
↓
গার্ড পার্কে এসে দেখে রুহীর সাথে একজন কালো বোরকাওয়ালী মহিলা।রুহী ফোনে কার সাথে যেন কথা বলছে আর কাঁদছে।রোয়েনকে তৎখনাৎ গার্ড আবার ও কল দিয়ে জানায় রুহী কালো বোরকাওয়ালী এক মহিলার সাথে কথা বলছে।কথা বলার কিছুক্ষন পরই রুহী কান্না করে দেয়।
.
.
-বোরকা ওয়ালী দেখতে কেমন?
-স্যার চেহারা পুরোটাই ঢাকা।
-ঠিক আছে।
.
.
এরপর রোয়েন নতুন গার্ড রাখে রুহীর কলেজে।সেই গার্ডদের একজন রোয়েনকে কল দিয়ে জানায় রুহী বের হলে ওকে জানাবে।কিছুসময় পর রুহীকে বের হতে দেখা যায়।রুহীকে পার্কে যেতে দেখে গার্ড রোয়েনকে কল দিয়ে রুহীর পিছু নিলো,
.
.
-স্যার রুহী যে বোরকাওয়ালীর সাথে কথা বলে মনে হচ্ছে সে একজন পুরুষ কোন মহিলা নয়।
-পুরুষ!!!
-জি স্যার।সে ম্যাডামকে ফোনে কিছু দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছে।এমনকি রুহী ম্যাডামকে ওনার ফোন দিয়ে কারোর সাথে কথা বলাচ্ছে।ম্যাম ফোনে কি যেন বুঝাচ্ছে।
-একজন কে রুহীর কাছে রেখে তোমরা বাসায় চলে এসো।
-আচ্ছা স্যার।
.
.
একজন গার্ডকে রুহীর সাথে রেখে বাকিরা চলে যায়।রুহী পার্ক থেকে এসে কলেজের গেট দিয়ে ঢুকে যায়।ওয়াশরুমে গিয়ে মুখে পানির ঝাপটা দিতে শুরু করে।চোখের পানি যে বাঁধা মানছেনা।রোয়েন রুহীকে নিতে কলেজে আসে।অনেকটাসময় পার হয়ে যায় রুহী বের হচ্ছে না।রোয়েনের চিন্তা লাগছে কই গেলো মেয়েটা।রোয়েন আর অপেক্ষা না করে কলেজের ভিতরে ঢুকে দাঁড়ায়।হঠাৎ কোথা থেকে রুহী দৌড়ে এসে রোয়েনকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করে।।বেশ অবাক হয়ে যায় রোয়েন।এভাবে কাঁদছে কেন ওর মায়াবতী?রুহীর মাথায় হাত রাখে রোয়েন।অপর হাত রুহীর পিঠে রাখতেই রুহী পিছনে কি যেন দেখে সরে আসে।
↓
↓
↓
↓
-কি হলো?ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-কিছুনা।চলুন।
-হুম।
.
.
দুজনে বাসায় চলে আসে।রুহীকে নিজ হাতে খাইয়ে দিয়ে অফিসে আসে রোয়েন।সবাইকে নিয়ে একসাথে জড়ো হয় ওরা।ওদের মধ্যে একজন বলল,
.
.
-স্যার আমরা আরো কিছুদিন দেখি ওরা রুহীর সাথে কি করতে চায় ওরা?
-নাহ ব্যাপারটা যখন রুহীর।ডিরেক্ট এ্যাকশনে যাবো আমি।কাল যখন রুহী বেরিয়ে আসবে ঐ বোরকাওয়ালীর সাথে দেখা করে তখন তোমরা তাকে ধরে আমাদের টর্চারিং রুমে আনবে।আর শামীম রুহীকে নিয়ে আসবে।
-ওকে স্যার। সবাই সম্মতি জানায়।
.
.
পরদিন পরিকল্পনা মোতাবেক রুহী যখন পার্ক থেকে বেরিয়ে আসে সব গার্ডরা ঐ বোরকাওয়ালী কে রোয়েনের টর্চারিং রুমে নিয়ে আসে।সামনে একটা চেয়ারে বসা রোয়েন।একজন এসে লোকটার মুখের ওপর থেকে ঘোমটা সরাতেই সবাই দেখে সে আসলেই একজন পুরুষ।রোয়েন এবার উঠে দাঁড়িয়ে লোকটার দিকে এগিয়ে আসে।তার চিবুক চেঁপে ধরে বলতে থাকে,
.
.
-কে পাঠিয়েছে তোকে?
-বলবোনা।
.
.
রোয়েন এবার লোকটাকে প্রচুর মারতে থাকে।তবুও সে এক কথায় অটল কিছুই বলবেনা।রোয়েন শামীমকে বলেছিলো রুহীকে যেন এখানে নিয়ে আসে।রুহী এখানে এসে দুইগালে হাত চেঁপে কাঁদতে শুরু করে।অবশেষে তার সামনে বন্দুক ধরতেই সে রাজি হয় বলতে।
.
.
-সামির পাঠিয়েছে আমাকে।
↓
↓
↓
↓
রোয়েনের একজন লোক বোরকা কয়ালা পুরুষটির ফোন এনে রোয়েনের সামনে ধরে।ভিডিও টা রুহীকে লন্ডনে টর্চারের ভিডিও।রোয়েন ফোনটা হাতে নিয়ে রুহীর কাছে গিয়ে বলল,
.
.
-দেখো সে তোমাকে এগুলো দেখাতো?
.
.
রুহী কেঁদে মাথা নামিয়ে সম্মতি জানায়।রোয়োন এবার বলল,
.
.
-ঘরে যাও।
.
.
রুহী রোয়েনের দিকে অশ্রুসজল চোখে তাকিয়ে আর কিছু না ভেবে দৌড়ে বেরিয়ে যায়।রোয়েন এবার লোকটার সামনে এসে দাঁড়ায়।তারপর বন্দুক দিয়ে তার বক্ষ ছিন্নভিন্ন করতে থাকে।লোকটা নিথর দেহে নিচে পড়ে থাকে।মরে গেলে রোয়েন লোকটার কাছে এসে দাঁড়ায়।তারপর একদলা থুথু তার মুখে ছুঁড়ে বলল,
.
.
-কোব্রা আর কিংকে দিয়ে এসো।
-জি স্যার!!শামীম বলল।
↓
↓
↓
↓
সেদিনের পর থেকে রোয়েন রুহীর সাথে কথা বলতোনা।রুহীকে আগের মতো ভালো ও বাসতোনা।রুহীর হাতে রান্না করা কোন খাবার ও খাচ্ছিলো না।রুহীর ভীষন খারাপ লাগতে থাকে।সেদিন কফি নিয়ে রোয়েনের রুমে যায় রুহী।সে শার্টের বোতাম লাগাচ্ছিলো।রুহী শার্টের বোতাম লাগাতে গেলে ওর হাত সরিয়ে দেয় রোয়েন চুপ চাপ।তারপর নিজে লাগিয়ে নেয়।রুহীর কফির দিকে তাকিয়ে ও না দেখার ভান করে নাস্তা না খেয়ে চলে যায় রোয়েন।রুহী ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করে রোয়েন চলে যাওয়ার পরপরই।তিনদিন যাবৎ রোয়েন এমন করছে।রুহীর ভালো লাগছেনা।তাহলে ও কি নষ্ট রোয়েনের চোখে?
সে কি এখন আর ভালোবাসে না?রুহী আর থাকতে পারেনা।এভাবে অবহেলায় কতো ভালো লাগে?
আজ চারদিন রোয়েন কথা বলেনা রুহীর সাথে।রোয়েন কাজে চলে গেছে।রুহী বাসা থেকে বেরিয়ে যায়।
সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আসে রোয়েন।ঘরে রুহীকে না দেখে কাজের লোকদের জিজ্ঞাস করতেই তারা জানায় সকালেই বেরিয়ে গেছে রুহী রোয়েনের যাওয়ার পরপরই।
অনেকটা চিন্তায় পড়ে যায় রোয়েন।কই যেতে পারে এই মেয়ে?এসব চিন্তার মাঝেই রেজোয়ান মাহবুবের নম্বর থেকে কল এলো রোয়েনের ফোনে।
.
.
-হ্যালো!!!!
-স্যার রুহীর কিছু হয়েছে কি?
-কেন? ও বাসায় নেই।কই গেলো বুঝতে পারছিনা।রাগী কন্ঠে বলল রোয়েন।
-স্যার ও আমার বাসায়।
-হোয়াট!!!!
-জি স্যার!!!থাকুক ও।
-থাকা লাগবেনা এক্ষুনি আসছি আমি।
-ওকে স্যার।
↓
↓
↓
↓
রেজোয়ান মাহবুবের বাসায় আসার পর থেকেই রুহী রুমে বসে আছে।সারাদিন কিছুই খায়নি।বাবা ভাত দিয়ে গেছে অনেকসময় আগে।ভাতটা আগের মতো পড়ে আছে।রুহীর চোখজোড়া বেয়ে ঝড়নার পানির মতো অশ্রু গড়াচ্ছে।চারদিনের জমানো কষ্ট ওর বুকে জমে গিয়ে ক্ষতবিক্ষত করছে।
চলবে
Comments