The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 08

→চিৎকার দিয়ে হাতের পাশের কাঁচের ভাসটায় প্রচন্ড জোরে আঘাত করে রোয়েন।ভাসটা পড়ে গিয়ে ভেঙ্গে টুকরো হয়ে যায়।রক্ত মাখা কাঁচের ছোট্ট টুকরো গুলো সাদা ফ্লোরের ওপর গড়াগড়ি খাচ্ছে।অপর পাশ থেকে শামীম বলল,
.
.
-স্যার!!!
-জাস্ট শাটআপ।ফাইন্ড আউট হার এ্যাট এনি কস্ট!!!গেট দ্যাট!!!!!গলা ফাঁটিয়ে চিৎকার করে রোয়েন।
-ই ইয়েস স্যার।
.
.
ফোন কেঁটে দেয় রোয়েন।রাগে ওর শরীর জ্বলছে।ভিতর থেকে ফোঁস ফোঁস শব্দ বের হচ্ছে ওর।কি করে পালাতে পারে মেয়েটা?ফ্লোরে টুপ টুপ ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ছে।রক্তচক্ষু জোড়া জ্বলজ্বল করে উঠে।দ্রুত চোখ মুছে ফোন সামনে নেয় রোয়েন।ফ্লাইটে বসে আছে রুহী।পাশে এক বৃদ্ধ লোক তারপাশে সামির।লোকটি বারবার রুহীর গায়ে পড়ছে।রুহী একটু সরে বসে।রুহী সামিরকে বারবার দেখছে।রুহী আছে সেটার কোন খেয়াল নেই সামিরের।গান শোনায় ব্যাস্ত সে।রুহী কয়েকবার ডাক দিলো সামিরকে কিন্তু কথা শুনছেনা ও।দুদিনের আকাশপথ অতিক্রম করে লন্ডন পৌছে গেলো ওরা।সামির রুহীকে নিয়ে জালাল উদ্দীনের ফ্ল্যাটে চলে আসে।রুহী ফ্ল্যাটে ঢুকে কিছুটা অবাক হয়।
.
.
-বাড়ি কার সামির?
-আমার।কেন?
-নয় মানে কখনো বলোনি।
-তোমার জন্য আরো চমক আছে সুইটহার্ট ভিতরে চলো।খানিকটা হেসে বলল সামির।
-হুম।মুচকি হাসে রুহী।
.
.
রুহীকে রুমে দিয়ে পাশের একটি রুমে চলে যায় সামির।রুহী লাগেজ থেকে কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে ফ্রেশ হতে যায়।লন্ডনে এখন ১২.৩০ বাজছে।রুহী ফ্রেশ হয়ে আসে।একটা বেজে গেছে।রুহীর চোখজোড়া বারবার ঘড়ির দিকে যাচ্ছে।কিন্তু কেন সেটা জানেনা রুহী।সামির হঠাৎ ওর রুমে উঁকি দিয়ে বলল,
.
.
-খেতে আসো রুহী।
-জি আসছি।
.
.
চুলে বাঁধা তোয়ালে খুলে সামিরের সাথে খেতে ডাইনিংটেবিলে চলে আসে রুহী।সামির নিজের মতো খাচ্ছে।রুহী খাবারের দিকে চেয়ে আছে।চোখের কোনে কোথাও যেন একফোঁটা অশ্রু চিকচিক করছে।সামির খেয়ে চলছে।রুহী সামিরকে বলল,
.
.
-তুমি খেয়ে আমাকে খাইয়ে দিবে?
-কি বলছো এসব?বাচ্চা তুমি!!যথেষ্ঠ বড় হয়েছো।খেয়ে নাও।আমার টায়ার্ড লাগছে।(লোকটা একদম নষ্ট করে দিয়েছে একে।)বিড় বিড় করে বলল সামির।
-ঠিক আছে।
.
.
বেশ মন খারাপ হয় রুহীর।ও খেতে না চাইলে কোলে বসিয়ে জোর করে খাওয়াতো রোয়েন।
এদিকে দুইদিন পর রোয়েন বাংলাদেশে ফিরে আসে।ফিরেই ঘরে চলে যায়।সেখান থেকে রুহীর কলেজে গিয়ে এর আশেপাশের সব সিসিটিভি ক্যামেরা চেক করতে থাকে।সেখানে ও খেয়াল করে কালো গোফওয়ালা এক যুবক কালো বোরখা পরিহিতা কে গাড়িতে বসাচ্ছে।রোয়েন ভিডিও টাকে একটু বড় করে নিয়ে খেয়াল করে লোকটা আর কেউনা স্বয়ং সামির।রোয়েন কই যেন কল দিয়ে সামিরের গাড়ির নম্বর দিয়ে জানতে চায় গাড়িটা কই গেছে।অপরপাশ থেকে তারা জানায় খবর নিয়ে রোয়েনকে জানাবে।পরদিন তারা খবর দিলো গাড়ির লাস্ট লোকেশন এয়ারপোর্ট ছিলো।রোয়েন তৎখনাৎ লোকদের নিয়ে এয়ারপোর্টে আসে।এয়ারপোর্টে এসে যাত্রীদের নামের লিস্ট খুঁজতে থাকে।
শেষ পর্যন্ত পেয়ে ও যায়।এই ফ্লাইট লন্ডনে গিয়েছে।রোয়েন ইমার্জেন্সি ভিসার জন্য এপ্লাই করে।আরো কয়েকটাদিন পার হয়ে গেলো রুহী কিছু সময়ে রোয়েনকে না চাইতে ও মিস করতে থাকে।রোয়েনের ছোঁয়া গুলো ওর হৃদয়কে নাড়া দিয়ে উঠে খুব।
সেদিন খেতে বসে রুহী আর সামির।রুহী খাবার মুখে নিতেই ওর চোখের সামনে ভেসে রোয়েনের চেহারা।যেভাবে ওকে লাঞ্চ করাতো রোয়েন।একদম কোলে বসিয়ে বাবুদের মতো।রুহী হাতের পিঠ দিয়ে চোখ মুছে খেয়ে রুমে চলে আসে।সামির ও নিজের রুমে চলে যায়।রুহী রুমে একা একা বসে আছে।কিছু সময় পর সামির রুমে আসে ওর।রুহী হেসে ঠিক হয়ে বসে।সামির ওর পাশে এসে বসে।
.
.
-সামির বলছিলাম কি তুমি না বলেছিলে বাংলাদেশে বিয়ে করে আমরা এখানে আসবো।
-করবো আর কি।সময় হলে করবো।
-তুমি না বলেছিলে বাংলাদেশে বিয়ে করবে।
-রোয়েন চৌধুরীর লোকেরা জেনে গিয়েছিলো।তাই চলে এসেছি দ্রুত।
-ওহ।আচ্ছা কাল বিয়ে করবো আমরা?
-হুম।
.
.
সামিরের জবাব পেয়ে হেসে সামনে তাকায় রুহী।পরদিন ও সামিরের বিয়ে করার নাম নেই।রুহী বারবার বলছিলো কিন্তু সামির করবে করবে করে ও করছেনা।ভালো লাগছেনা রুহীর।একদিন রুমে যাওয়ার সময় সামিরের রুম থেকে কিছু কথা শুনতে পায় রুহী।দরজায় কান পেঁতে রাখে ও।সামির কাকে যেন বলছে,
.
.
-জি বস মাল নিয়ে এসেছি।
-,,,,,,,,,,,,,,,
-একদম টাটকা মাল বস।
-,,,,,,,,,,,,,,,
-জি বস আপনার ফ্ল্যাটেই আছি আমরা!!!!
-,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
.
.
কথাটা শুনে কেমন যেন লেগে উঠে রুহীর।রুমের দরজা খুলে ভিতরে আসে রুহী।তবে সামিরের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই।
.
.
-বস আগে আসুন তারপর মাল বুঝে নিন।আমাকে ও তো যেতে হবে।
-,,,,,,,,,,,,
-মালের নাম রুহী।
.
.
রুহী এবার থমকে গেলো।কি করবে কি বলবে বুঝতে পারছেনা ও।
.
.
-ওকে বস রাখছি।
.
.
ফোন কেঁটে পিছনে ফিরতেই রুহীকে দেখতে পায় সামির।সামির রুহীর দিকে চেয়ে আছে।রুহী আর সহ্য করতে পারেনি।স্বজোরে চড় বসায় সামিরের গালে,
.
.
-মিথ্যুক ধোঁকাবাজ।তোর মতো ধোঁকাবাজকে কি করে ভালবাসলাম আমি?নিজের বাবাকে পর্যন্ত বিশ্বাস করিনি আমি।এতো বড় ধোঁকা কেন সামির?চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলল রুহী।
-তুই একটা ইডিয়েট।আগে বোঝা উচিৎ ছিলো তোর।
.
.
রুহী সামিরের কলার টেনে ধরে মারতে থাকে।সামির আচমকা রুহীর হাত জোড়া চেঁপে ধরে ওর গালে জোরে চড় মেরে ফেলে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে দরজা লক করে চলে যায়।
দরজায় বাড়ি দিতে থাকে রুহী আর জোরে কাঁদতে থাকে।
,
,
,
,
,
সন্ধ্যায় জালাল উদ্দিন নিজের ফ্ল্যাটে আসে যেখানে রুহী আর সামির আছে।সামির জালাল উদ্দীনকে নিয়ে রুমের দরজার লক খুলে ঢুকে।রুহী খাটের এককোনায় বসে আছে।সামিরকে অপরিচিত একলোকের সাথে রুমে ঢুকতে দেখে দাঁড়িয়ে যায় রুহী। লোকটা রুহীকে দেখে বলল,
.
.
-বাহ সামির ছবির থেকে ও বেশি সুন্দরী মাল এনেছো।তোমাকে শুধু প্রমোশন না আমার তিনটি ফ্ল্যাটের একটি তোমাকে দিলাম আর আমার কোম্পানীর সাথে তোমার কোম্পানীর ডিল ফাইনাল করে দিলাম।
-থ্যাংক ইউ বস।আপনি ছুঁয়ে দেখতে পারেন মালকে।
-অবশ্যই সেটা কি আবার বলতে হয়।
.
.
কথাটা বলে জালাল উদ্দীন রুহীর দিকে এগুতে থাকে।রুহী পিছাতে থাকে।
জালাল উদ্দীন এসে রুহীর হাত চেঁপে নিজের কাছে এনেওর গালে হাত ছুঁয়ে দিচ্ছে।রুহী সরে যেতে চাইছে কিন্তু পারছেনা।কিছুটা শক্তি নিয়ে রুহী জোরে ধাক্কা দিয়ে সরায় জালাল উদ্দীনকে।কিছু দূরে গিয়ে রুহীর দিকে রাগী চোখে তাকায় জালা উদ্দীন।সামির বলতে লাগলো,
.
.
-বস দেখলেন কতো বড় সাহস আপনাকে ধাক্কা দিলো।বস যাই করবেন খুব কষ্ট দিয়ে।রেপ করবেন ওকে। তবে এতো সহজে না।পার্ট পার্ট করে করেন।খএব কষ্ট দেন ওকে।
-মানে?
-প্রথমে ওকে শুইয়ে ওর হাত পা বাঁধেন।তারপর ওর শরীরে হাত লাগিয়ে তেজ কমান।
-ঠিক বলেছো সামির।ওর সাহস অনেক আমাকে ধাক্কা দিলো।
.
.
সামির আর জালাল উদ্দীন একসাথে মিলে রুহীকে জোর করে খাটে শুইয়ে ওর গলার উড়না কেড়ে নেয়।তারপর সেটা দিয়ে ওর হাত বেঁধে দেয়।আরেকটা উড়না দিয়ে রুহীর পাজোড়া বেঁধে দেয় সামির। এবার জালাল উদ্দীন রুহীর শরীরে হাত লাগাতে শুরু করে।সামির নিজের ফোন আর জালাল উদ্দীনের ফোনে সব ভিডিও করছে।
রুহী চিৎকার করে কাঁদছে আর বলছে,
.
.
-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন।আমি মাফ চাইছি।আল্লাহর দোহায় লাগে ছেড়ে দিন প্লিজ।
-চুপ কর।তোর শরীর আমার খুব পছন্দ হয়েছে।বলেই শয়তানি হাসি দেন জালাল উদ্দীন।
-রোয়েন বাঁচান রোয়েন বাঁচান আমাকে।রোয়েন বাঁচান প্লিজ আমাকে উদ্ধার করুন এ নরক থেকে।
.
.
এদিকে রোয়েন শামীম আর রেজোয়ান কে নিয়ে লন্ডনের মাটিতে পা রাখতেই রেজোয়ান মাহবুবের ফোনে ভিডিও মেসেজ আসে।রেজোয়ান মাহবুব ফোন হাতে নিয়ে চোখের সামনে ধরে।রোয়েন ও তাকায় ফোনের দিকে।রুহী জোরে কাঁদছে আর রোয়েনকে ডাকছে।রেজোয়ান মাহবুবের হাত কাঁপছে।নিজের মেয়েকে এমন পরিস্থিতিতে দেখবেন ভাবতেই পারেননি ওনি।এদিকে শামীমের চোখে পানি চলে আসে।রোয়েন তো ফুঁসছে রাগে।এদের একটাকে ছাড়বেনা ও।যতোটা কষ্ট মায়াবতী পাচ্ছে তার তিনগুন কষ্ট ওরা পাবে।রেজোয়ান মাহবুব বললেন,
.
.
-স্যার প্লিজ কিছু করেন বড় কোন ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আগে।
.
.
রোয়েন দ্রুত পদে গাড়ির দিকে যেতে থাকে।চোখজোড়া রক্ত লাল হয়ে আছে ওর।
চলবে