The Cobra King Mafia Boss- Season 4

The Cobra King Mafia Boss- Season 4 !! Part- 07

রুহী খবর পায় রোয়েন পাঁচদিনের জন্য প্যারিস যাচ্ছে।মনে মনে বেশ স্বস্তি পায় রুহী।ব্যাপারটি তৎখনাৎ সামিরকে জানায় ও।সামির খবর টি পেয়ে বেশ খুশি।সে রুহীকে বলেছে শীঘ্রই পালাবে ওরা।রাতে রুহী সামিরের সাথে ফিসফিসিয়ে কথা বলছিলো।কারন রোয়েন ঘরে ফিরেনি।হঠাৎ দরজায় খুট শব্দ হয়।রুহী কিছুটা নড়ে উঠে সোজা হয়ে বসে। পিছনে ফিরার সামর্থ্য নেই ওর।হঠাৎ রোয়েন বলতে শুরু করে,
.
.
-কি করছো এভাবে বসে?
.
.
নিজেকে কিছুটা সামলে নেয় রুহী।তারপর ফোন কেঁটে দিয়ে বলল,
.
.
-কিছু করছিনা।
.
.
এরপর রোয়েন আর কিছু বলে না।রুহীকে পিছন থেকে দাঁড়িয়ে দেখছে ও।মেয়েটা এখনও ওর দিকে পিঠ দিয়ে বসে আছে।রুহীর সাদা কাঁধ দৃশ্যমান।রোয়েন রুহীর কাঁধ থেকে নজর সরাতে পারছেনা।নজর কাড়ছে রুহীর কাঁধে থাকা গাঢ়ো কালো তিলটা।সাধারন তিলটা রোয়েনের চোখে অসাধারন হয়ে উঠেছে।মনে জাগছে কাছে পাওয়ার নেশা।রোয়েন তো প্রথম থেকেই মায়াবতীর নেশায় ডুবে গেছে।মেয়েটা বড় অবুঝ,বুঝতে পারেনা রোয়েনের ভালোবাসাটাকে।তবে রোয়েন ওকে নিজের রুহী বানিয়ে ছাড়বে যাকে বাহুডোরে বন্দী করতে পারবে।যাকে বুকে নিয়ে ঘুমালে প্রত্যেকটা রজনী হবে স্বপ্নের মতো সুন্দর।রুহীর অস্তিত্ব রোয়েনকে প্রত্যেকটা মুহূর্ত নিজের অস্তিত্বের জানান দেয়।যেদিন থেকে মেয়েটা বাসায় আছে রোয়েনের যেন নিজেকে সম্পূর্ন মনে হচ্ছে।একনজর দেখলে শুধু দেখতেই মন চায়।এমন টা কেন হচ্ছে।কম মেয়েকে বিছানায় নেয়নি রোয়েন।তবে সে রাত গুলো কাঁটতো অনুভূতিহীন।আর এই একটাই মেয়ে যার নৈকট্য রোয়েনকে অনুভূতির চরম স্তরে পৌছে দেয়, ভালোবাসার অনুভূতি যা রোয়েনকে মুহূর্তে নিঃশেষ করে দিতে পারে।রুহী হচ্ছে অনুভূতির নাম যে অনুভূতি রোয়েনের শরীরের প্রত্যেকটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে রক্ত প্রবাহের মতো প্রবাহিত হয়।রুহী কে রোয়েন ভালোবাসতে চায় সারাক্ষন।তবু ক্লান্ত হবে না রোয়েন।কারন যতোই ভালবাসবে ততোবেশি ভালোবাসতে মন চাইবে।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে কখন যে রুহীর এতোটা কাছে এসে পড়েছে বুঝতেই পারেনি রোয়েন।মেয়েটা এখনো একই ভাবে বসে আছে।বাহিরের থেকে আগত বাতাস রুহীর লম্বা খোলা চুল গুলোকে ওর কাঁধ থেকে উড়িয়ে দিচ্ছে।রোয়েনের হৃদস্পন্দন বেশ দ্রতগতিতে চলছে প্রায় একটা ট্রেনের গতির সমান।রোয়েনের রুহীর কাঁধ থেকে হালকা চুলের আবরন সরিয়ে ঝুঁকে সেখানে নাক লাগায়।আজ নেশা হচ্ছে ওর।রুহীর কাঁধে আলতো ভাবে নাক ঘঁষে দিচ্ছে রোয়েন।রুহী সটান হয়ে আছে।নড়বার শক্তি নেই ওর।রোয়েন।ইতোমধ্যে রুহীর কাঁধে ঘনঘন চুমু খেতে শুরু করেছে।রুহীর ফোনটা ভাইব্রেট হচ্ছে।রুহী কিছু করতে পারছেনা।লোকটা কে সরাতে পারছেনা ও।এতোটা জোরে ও ধরেনি সে।তারপর ও সরাতে পারছেনা।কেমন যেন একটা নেশা ছাড়ানো ঘ্রান আছে লোকটার শরীরে।রুহী নিজের ওপর নিয়ন্ত্রন আনতে পারছেনা।কেমন যেন শরীর টা ছেড়ে দিচ্ছে।রোয়েনের ঠোঁটের স্পর্শ পেতে পেতে রুহী চোখজোড়া বুজে নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে।রোয়েন রুহীর ওপর শুয়ে ওর গলায় আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে ওর থুতনি তে চুমু খেয়ে ওর ঠোঁটের কোনে চুমু দিয়ে রুহীর দিকে তাকায়।রুহী চোখ খুলে রোয়েনকে দেখতে পায়।রুহী বুঝতে পারছেনা কি হচ্ছিলো ওর সাথে।লোকটার কতোটা কাছে চলে এসেছিলো।রোয়েন রুহীর দিকে আরো কিছুক্ষন তাকিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে বেরিয়ে যায়।রুহী চোখ বুজে নিয়ে মুহূর্ত টাকে ভাবতে থাকে।হঠাৎ হাতের মুঠে ফোন টা আবার ও কেঁপে উঠতেই রুহী ফোনটা চোখের সামনে ধরে।তারপর উঠে দরজা লক করে ফোন রিসিভ করে।অপরপাশ থেকে সামির বলছে,
.
.
-না বলে কল কেঁটে দিলে যে?কতো বার কল করছিলাম ধরোনি কেন?
-এক্চুয়ালি ওনি এসেছিলো রুমে।
-রোয়েন চৌধুরী বারবার তোমার রুমে কেন আসে?যত্তসব।
-আচ্ছা সামির বাদ দাওনা।আমরা পালাবো কিভাবে জলদি ভেবে নাও।
-ওকে ম্যাম।
.
.
আরো কিছুসময় কথা বলে রুহী ঘুমিয়ে যায়।রোয়েনের ফ্রান্সে যাওয়ার সময় ঘনিয়ে আসে।রোয়েন কড়া সিকিউরিটির ব্যাবস্থা করেছে।রুহীর সাথে এখন চারজন বডিগার্ড লাগিয়েছে রোয়েন।আরো কয়েকটা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে রোয়েনের কলোনি তে।রোয়েন দ্রুত ঘরে এসে লাগেজ গুছিয়ে নেয়।রুহী রুমে হাঁটছিলো।রোয়েন আসতেই সরে যায় ও।লোকটা কেমন দৌড়ে দৌড়ে কাপড় গুছাচ্ছে।লোকটা ওকে আজ শেষ দেখবে।ও নিজে ও লোকটাকে শেষ দেখবে।সামিরের কাছে থাকবে রুহী।সামির আর ওর সংসার হবে।লোকটার কেমন লাগবে সেটা ও জানেনা।কিন্তু ওর বেশ লাগছে।বড্ড ধমক খেতে হয় লোকটার কাছে।রুহী নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ে।রোয়েন লাগেজ গুছানো শেষ করে সার্ভেন্টদের খাবার সার্ভ করতে বলে টেবিলে এসে বসে।লোকগুলো খাবার নিয়ে আসলে রোয়েন জানতে চায় রুহী খেয়েছে কিনা?লোকগুলো জানায় রুহী খেয়েছে।রোয়েন খাবার শেষ করে রুহীর রুমে আসে।মেয়েটা ঘুমাচ্ছে। রোয়েন ওর পাশে এসে বসে। তারপর রুহীর হাত ধরে সেখানে চুমু খেয়ে রুহীর কপালে চুমু দিয়ে কিছুসময় তাকিয়ে থাকে রোয়েন।ভোরে নিজের রুমে চলে যায় ও।রুহীর ঘুম ভাঙ্গতেই পাশে রোয়েনকে দাঁড়ানো দেখতে পায়।লোকটা ওর দিকে ভ্রু কুঁচকে চেয়ে আছে।রুহী উঠে বসতে নিবে তখন রোয়েন বলল,
.
.
-পাঁচদিন থাকবোনা আমি।আমার অনুপস্থিতে যদি কোন অঘটন করার চেষ্টা করেছো তাহলে আমার থেকে খারাপ কেউ হবেনা।
.
.
রুহী মাথা নিচু করে আছে।চুপ থাকতে দেখে রোয়েন ভারি গলায় বলল,
.
.
-কি হলো শুনেছো কি বললাম?
-হুম।
.
.
রোয়েন এবার চুপচাপ রুহীর গাল চেঁপে ধরে ওর গালে কপালে চুমু দিয়ে লাগেজ নিয়ে বেরিয়ে পড়লো।রুহী রোয়েনের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।রোয়েন যাওয়ার পর রুহী সামিরকে আবার ও পালানোর কথা বলে।সামির জানায় ও দেখবে রুহীর কলেজের সামনের লোকগুলো কই দাঁড়ানো থাকে।আর ওরা লন্ডন যাবে এখান থেকে সেগুলোর কাগজ প্রায় রেডি হয়ে গেছে।রুহী বেশ খুশি হয়।
,
,
,
,
,
রোয়েন চলে গেছে তিনদিন হয়ে গেছে।আজ রুহী সামিরের সাথে চলে যাবে।দুবাইয়ে বোরকা পরে বের হতো রুহী।সেটা এখানে ও আছে।রুহী বোরকা ব্যাগে ভরে বেরিয়ে পড়ে।আজ বডিগার্ডদের জানিয়েছে এক্সট্রা ক্লাশ আছে বের হতে দেরি হবে।রুহী কলেজে ঢুকে দুটো ক্লাশ করে। বিরতির মুহূর্তে ব্যাগ নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় রুহী।এরপর বোরকা পরে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে সামিরের সাথে বেরিয়ে যায় রুহী।
এদিকে রুহীর বলা অনুযায়ী সাড়ে চারটায় রুহীর বেরুবার কথা যেখানে পাঁচটা দশ বেজে গেছে।কিছুটা চিন্তিত হয় বডিগার্ডরা।ওরা কলেজে ঢুকে রুহীকে খুঁজতে শুরু করে।রুহীর ক্লাশে গিয়ে ও পায়নি ওকে।ম্যামদের কে ও জিজ্ঞেস করা হয়েছে কিন্তু তারা বলতে পারছেনা।তখন একজন আয়া এসে রুহীর ব্যাগ ধরিয়ে দেয় বডিগার্দের হাতে।সে জানায় বাথরুম থেকে এগুলো পাওয়া গেছে।বডিগার্ডরা অস্থির হয়ে গেছে।রোয়েনকে কি জানাবে তারা?বডিগার্ডরা রোয়েনের এলাকায় এসে শামীমকে পুরোটা জানায়।সেখানে রেজোয়ান মাহবুব ও উপস্থিত ছিলো।সবাই অস্থির হয়ে গেছে।কারন আজ রোয়েন অনেকবার কল করেছে রুহীর জন্য।শামীম ফোন হাতে নিয়ে রোয়েনের নম্বরে ডায়েল করে।
এদিকে রুহীকে নিয়ে সরাসরি এয়ারপোর্ট আসে সামির।রুহী ভাবছে সামির ওকে বলেছিলো বিয়ে করে লন্ডন যাবে।কিন্তু সামির এখন এয়ারপোর্ট আসছে বুঝতে পারছেনা রুহী।এদিকে রোয়েন কলে শুনছে সব।শামীম যা বলছে সব শুনছে।রোয়েনের মাথা কাজ করছেনা।চোখজোড়া অসম্ভব লাল হয়ে গেছে।
শামীম বলছে,
.
.
-স্যার শুনছেন?
-আম কলিং ইউ লেটার।
-ইয়েস স্যার।
.
.
ফোন কাঁটার আগেই সবাই শুনতে খুব জোরে কিছু ভাঙ্গার শব্দ।রুহীকে নিয়ে সামির ৬.৩০ টার ফ্লাইটে বসে যায়।রুহীর মনে একটাই প্রশ্ন ওকে কেন বিয়ে করছেনা সামির?
চলবে