Psycho is Back

Psycho is Back !! Part- 09

—-হ্যালো!
—–তোর সাহসতো কম নয়? তোকে না করার পরেও, তুই আমার কথার বরখেলাপ করলি।।এখন দেশে থাকলে আর আমার সামনে পেলে তোকে আমি চিবিয়ে খেতাম।।দাঁতে দাঁত চেপে ফোনোর ওপাশ থেকে বলতে লাগে ইউসুফ।।
—-আমি এদিকে ভয়ে ফ্রিজড হয়ে যাচ্ছি।। তাও আমতাআমতা করে বললাম,,কি করেছি আমি?
—–কি করেছিস তুই জানিস না? তোকে বলি নাই তোর উপর আমার নজর আছে? তারপরেও তুই কিভাবে ছেলেদের সাথে ঢলাঢলি করিস।।খুব শখ??
এবার আমার রাগ উঠে গেল,, আমি চিল্লিয়ে তাকে বলে উঠলাম,,
—-আমার লাইফ আমি কি করবো? না করবো? আপনি বলার কে? হো আর ইউ?আমি যেভাবে ইচ্ছা আমি চলবো।।আমার মরজি।।ফারদার আমাকে কল করবেন না?বলেই কল কেটে দিলাম।।আর নাম্বার ব্ল্যাক লিষ্টে ফেলে দিলাম।।ঝুলা থাক এবার।।হুহহহহ!!
ওদিকে ইউসুফ যখন কুহুকে ফোনে পাচ্ছে না।।মাথা রাগ চেপে বসে।।হাতে থাকা ফোন খুব জোড়ে আছাড় মারে।।আর বলতে লাগে,,,
—–উড় যতো উড়বার! আমাকে তুই চিনিস নারে কুহু।।আমি যেদিন ওই দেশে পা রাখবো! সে দিন যে তোর কি হবে! বলেই আবার বাঁকা হাসলো ইউসুফ।।
এভাবে কেটে যায় এক মাস।।
এই এক মাসে,রিয়ানের সাথে ভালো বন্ডিং হয়ে গেছে আমার।।ওর কেয়ারিং আমার খুব ভাল লাগে।।কি সুন্দর করে কথা বলে।।দিনের বেশিরভাগ সময় আমার এখন তার সাথে কাঁটে।।রিয়ান ঠিক যেমন আর ইউসুফ ঠিক তার উল্টো।।রিয়ান সব সময় হাসি হাসি ভাবে কথা বলে।।কেন জানি না, ওনার প্রতি আলাদা টান অনুভব করি।।ইদানীং আমাকে উনি রাতেও কল করেন।।মাঝে মাঝে কথা বলতে বলতে সকাল হয়ে যায়।।
কথা গুলো পড়ার টেবিলে বসে ভাবচ্ছি।।তখনি ফোন আসে।।ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি,,
রিয়ান কল করেছে।।কেন জানি কলটি পেয়ে ঠোঁটের কোনো মৃদু হাসির রেখা ফুঁটে উঠে,,
ফোনটি রিসিভ করতেই রিয়ান বলতে লাগে,,,
—-হেই ডিয়ার আর ইউ বিজি?
আমি লজ্জা মাখা মুখে বললাম,,,
—-নাহ কেন?
—-একটি কথা ছিল?
—–হুম বলুন?
—–কাল আমার বার্থ ডে।।
—–ওহো জানতাম না তো? যেহেতু এখনো ১২ টা বাজে নি,তাই অগ্রিম হ্যাপি বার্থ ডে।।
ওপাশ থেকে রিয়ান মুচকি হাসলো আর বলল,,
ধন্যবাদ ডিয়ার।।বাট এভাবে উইশ করলে চলবে না।।কাল ছোট একটা পার্টি রেখেছে বাসায়।।তুমি আমন্ত্রিত।। না আসলে চলবে না।।তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে।।
—-আচ্ছা বার্থ ডে আপনার! আর সারপ্রাইজ আমার জন্য? কেমন শুনালো না??
—–যেমনি শুনাক? আর শুনো তোমার ফ্রেন্ডদের ও ইন্ভাইট করেছি।।আর তোমার জন্য একটা গিফট ও আছে! যা সকালে পেয়ে যাবা।।
—-আমি এবার সত্যই তাজ্জব হচ্ছি! এখন মনে হচ্ছে বার্থ ডে আপনার নয় আমার।।
—–উম হুম।।একই তো।।বলে হাসতে লাগলো রিয়ান।।
এভাবে কথা বলতে বলতে রাত হয়ে যায় অনেক।। তখনি কথা বলার মাঝে দু এক বার আননোন নাম্বারে কল আসে।।আননোন দেখে ধরলাম না।।কারণ এ কয়েক মাসেই এটা নতুন কিছু না।।
কথা শেষে রিয়ানকে বায় বলে ঘুমিয়ে পড়ি।।
সকালবেলা 🌄
ঘরে বসে আছি।। আর এফবিতে ঘুরছি।।আজকে আমার ৫ হাজার ফলোয়ার হয়েছে।।খুশি লাগছে অনেক।।তখনি হঠাৎ চোখ পড়ে সাইকোর এফবি আইডি।।কেন জানি ঘাটতে ইচ্ছা হলো তার আইডি।।তাই ঢুকলাম।।
তার আইডিতে ডুকে আমি থ।।
উনার আইডিতে ৬০ হাজার ফলোয়ার।।তার একেকটা পিকে কি লাইক?
তার উপর একেক টা পিকের লুক একেক রকম।।তার থেকে বড় কথা তার একটি পিক দ্বিতীয়বার রিপিট করা না।।আর একটি ড্রেস পরের বার রিপিট ও করা না।।তাহলে কি তিনি কোনো ফেমাস মানুষ?? ভাবছি তখনি রূপালী আসে।।আর একটি গিফট বক্স দিয়ে যায়।।বক্সটি দেখে বুঝলাম রিয়ান দিয়েছে।।কিন্তু কেন জানি ওই গিফট দেখার চেয়ে বেশী, সাইকোর আইডি ঘাটার আগ্রহ বেশী হচ্ছে আমার।।আর তার পিক গুলো দেখ যাচ্ছি।।সাইকো সত্যই অনেক সুন্দর গুড লুকিং,তার পার্সোনালিটি অনেক আলাদা।।তার প্রতিটা পিকে মেয়েদের কমেন্ট অনেক।।কেন যানি হিংসে হচ্ছে আজ।।অথচ এ কদিন আমার তো একবারের জন্য সাইকোর কথা মনে পরে নি।।তখনি একটি পিকের দিক আমার নজর আটকে যায়।।সেখানে সে একটি বেলকনিতে কফির কাপ নিয়ে দাড়িয়ে আছে।।আর উনি দূর আকাশে তাকিয়ে আছে।।পরোনে তার জিন্স সাথে লং হাতার একটি জলপাই কালারের টি শার্ট।।পিক টা ভাল লাগলো তাই সেভ করে রাখলাম ফোনে।।আরো কিছু ঘাটতে লাগলাম সাথে।।তখনি ফোনটা বাজতে লাগলো।।রিয়ান কল করেছে।।কিন্তু কেন জানি তার কলে বিরক্তি লাগলো।।রিসিভ করলাম কিন্তু কিছু বললাম না।।
তখনি ওপাশ থেকে রিয়ান বলল,,
—-গুড মর্নিং ডিয়ার।।
—-হুম।।
—-ঘুম ভেঙেছে?
—-হুম।।
—-গিফট পাইসো??
—-হুম।।
—–খুলে দেখছো?
—–
—–কি হলো? চুপ কেন??ডিয়ার মুড ওফ?
আমি বির্ক্তিকর ভাব নিয়ে বললাম,,
—-পরে কথা বলছি।।রিয়ানকে কিছু না বলতে দিয়ে কল কেটে দিলাম।।
আজ জানি কেন এমন করলাম ওর সাথে জানা নেই আমার।। তখনি মেসেজ টোন বেজে উঠলো।।
ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি রিয়ানের মেসেজ।।
“”ডিয়ার আমি বুঝতে পারছি তুমি কোনো কিছু নিয়ে আপ সেট। বাট বিলিভ মি তুমি গিফট দেখ, তোমার মন ভাল হয়ে যাবে।।আর হে টাইমলি চলে এসো ওয়েট করবো।।””
মেসেজটি পড়ে গিফট বক্সটা ওপেন করতেই,সত্যিই আমার মনো ভাল হয়ে গেছে।।গিফট বক্সে একট গাউন।।প্রিন্সেস দের মত, ড্রেস।।অনেকটা ফোলা নিচের দিকটা।।সত্যই আমার মন ভাল হয়ে গেল মুহুর্তে।। আমি এটি পরে দেখতে লাগলাম হুম অনেক মানিয়েছে আমাকে।।ছোট থাকতে যখন বার্বি কার্টুন, সিনড্রেলা কার্টুন দেখতাম তখন থেকেি এমন ড্রেস পরার ইচ্ছা আমার।।সাথে সাথে ফোন নিয়ে ধন্যবাদ জানালাম।।
সন্ধ্যাবেলা🌌
রেডি হয়ে নিচে আসলাম।।আন্টি মা আমাকে দেখে তার চোখে থেকে কাজলের ফোঁটা নিয়ে লাগিয়ে দিলেন আমার কানের পিছনে আর বললেন,,
—-মাশাআল্লাহ।।সুন্দর লাগছে আমার আম্মুটিকে।।
—-ধন্যবাদ আন্টি মা।।
জড়িয়ে ধরলাম তাকে।।তার সাথে কথা বলার মাঝেই এসে উপস্থিত হয় তাথৈ আর লিজ।।তারাও গাউন পরেছে।।তাদের ও সুন্দর লাগছে অনেক।।আমরা বের হয়ে যাই তাথৈ আর লিজ রীতিমত আমার সাথে দুষ্টামি করছে।।আর আমার খুব লজ্জা লাগছে।।তখন লিজ বলতে লাগে,,
—-আজ রিয়ান তো গায়ো? বলে কিটকিটিয়ে হেসে দিল।।তার সাথে তাথৈ ও তাল দিচ্ছে।।
হাসি ঠাট্টা করতে করতে পৌঁছে গেলাম রিয়ান দের বাসায়।।খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে বাসাটা।।তাদের বাড়িটাও অনেক বড়।।ইউসুফ ভাইয়াদের বাড়ির মতো।।পার্টি পুল সাইডে অ্যারেঞ্জ করেছে।।আমরা যেতেই একটি পুচকে মেয়ে এসে জড়িয়ে ধরে আমাকে এ আর কেউ না রিয়ানে ভাস্তি।। এসেই বলতে লাগে,,
—–আজ তোমাকে আমার বার্বি ডোলের মতো লাগছে।।
আমি হেসে তার গাল টেনে বলতে লাগি,,
—-হুম তোমাকেও প্রিন্সেস লাগছে।।
সে হেসে আমার গালে চুমু খেল।।আমিও দিলাম।মেয়েটির জন্য মায়া লাগে সেই ছোট থাকতেই নাকি তার বাবা, মা কার এক্সিডেন্টে মারা যান।।এ কদিনে বাচ্চাটির সাথে আমার বন্ডিং অনেক ভাল হয়ে যায়।।তখনি রিয়ান এসে হাজির।।ওকে সুন্দর লাছে সে আমার ড্রেসের কালারের মতো সুট পরেছে।।
সব গেষ্ট আসার পর রিয়ান কেক কাঁটছে,, রিয়ান তার বাবা, মা আরর ভাস্তিকে খাইয়ে আমার মুখের সামনে ধরলো।।আমি খেলাম।।
ডান্সিং এর সময় রিয়ান আমার সামনে হাত বারিয়ে দেয়।।আর আমিও তার সাথে ডেন্স করি।।খুব ভাল লাগছিল সব কিছু।।কাপল ডান্স শেষেই রিয়ান আমাকে সবার সামনে হাটু গেরে বসে প্রপোজ করে।। আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।।অবাক লাগছে।।কি বলবো তাও ভাবছি।।রিয়ানের মাঝে সেই সব কিছু আছে যা একজন ভালবাসার মানুষের মাঝে থাকে।।কি করবো বুঝতে পারছি না।।রিয়ান তার হাত রিংটি আমার সামনে ধরে রেখেছে।।আর এদিকে তাথৈ,আর লিজ বলতে লাগে,,
—-say yes.. কুহু।।
রিয়ান ও হাসি মুখে তাকিয়ে আছে।।আর সবাই এক কথাই বলে যাচ্ছে।।
আর এইদিকে পার্টির মাঝে উপস্থিত একজন তাদের দিক অগ্নিদৃষ্টি মেলে তাকিয়ে আছে।।হাত দুটো মুষ্টিবদ্ধ করে।।সেখানে আর দাড়িয়ে থাকতে না পেরে উল্টো পথে হাটা ধরে।।
আর এদিকে কুহ তার হাত বারিয়ে দেয়।। যা দেখে সবাই হাত তালি কেউ সিটি বাজাতে শুরু করে।।রিয়ান রিং পড়িয়ে দেয়।।
হলে বসে আছে ইউসুফ।। ঘড়িতে ১২ টা ছুঁই ছুই।।সোফার উপর বসে পা দুটো টেবিলের উপর রাখা।।চুল গুলো সব এলে মেলো হয়ে পরে আছে কপালে আর এক চোখে।।সোফায় হেলে মাথা উপরের দিক দিয়ে চোখ বন্ধ করে আছে সে।।পাশে থাকা টেবিল ল্যাম্পটি এক হাত দিয়ে জালাচ্ছে আর বন্ধ করছে।।টেবিলের পায়ের কাছেই তার রিভলবার।।বার বার হলটিতে ল্যাম্পটি জালানো নিভানোর কারণে মৃদু আলো জ্বলছে কিছুক্ষণ পর পর।।দরজায় শব্দ হতেই লাইটনএকে বারেই বন্ধ করে দেয় ইউসুফ।।
রিয়ানের সাথে কাটানো কিছু মুহুর্তে মনে করতে করতে বাসায় ঢুকলাম।। নক করার আগেই দেখি দরজা খোলা।।কিছু না ভেবেই ঢুকে গেলাম বাসায়।।পুরো বাড়ি অন্ধকার।।আর পিনপতন নিরবতা বিরাজ করছে।।মনে হচ্ছে এ বাড়িতে কেউই থাকে না।।কিছু কদম যেতেই টেবিল ল্যাম্প জ্বলে উঠলো।। যা ইউসুফ জালিয়েছে।।কিন্তু সে আগের মতোই বসা।।কিন্তু এবার আর সে লাইট ওফ করে নি।।
ইউসুফকে চোখের সামনে দেখে ভয় লাগছে।। আমি কিছু না বলে তার পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম দুটো সিরি পার করতেই হঠাৎ গলি করার ওয়াজ হলো।।আর সাথে হল থাকা বিশাল কাচের ঝাড়বাতি মাটিতে পড়ে গেল এবং আর বিকট শব্দে গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে গেল।। আমি সাথে সাথে কান চেঁপে সিরিতে বসে পরি।।আর কাঁপতে লাগি ভয়ে।।ধীরে ধীরে পিছনে তাকিয়ে যা দেখলাম,,,
চলবে,,,