Married To The Dark King- Mafia Boss- Season 3 !! Part- 83
রুহীর চোখজোড়া বেয়ে টুপটুপ করে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে।গলা আটকে আসছে ওর।রেহান রুহীর দিকে অবাক চোখে চেয়ে আছে।
অপরপাশ থেকে রোয়েন চিৎকার করেই চলছে।
-কি হলো কিছু বলছো না যে?এতবার কল করার পর কেন ধরছিলেনা?জানো কতোটা টেনশন হচ্ছিলো?
-রুহী ছলছল চোখ জোড়া বুজে নিয়ে মুখে মায়াভরা হাসি টেনে নিলো।
-রুহী আছো তুমি? কিছু বলছো না যে?কি হলো?চুপ কেন তুমি?কথা বলো!!!চিৎকার করে বলল রোয়েন।
-আছি!!!বলেই চুপ হয়ে গেলো রুহী।ও যে প্রিয় মানুষটার কথা গুলো শুনতে চাইছে প্রান ভরে।খুব ভালোবাসে এই কন্ঠস্বর টাকে।
-রুহী অনেক বার কল দিয়েছি।ধরোনি কেন?রাগী গলায় জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
-মাথা ব্যাথা করছিলো।তাই শুয়েছিলাম,চোখ লেগে এসেছিলো,সরি।বলে উঠে রুহী।
-ওহ।ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।বলে উঠে রোয়েন।
-কবে আসবে?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-ইমার্জেন্সি টিকিট করতে দিয়েছি।হলেই চলে আসবো।বলে উঠে রোয়েন।
-রুহীর ঠোঁটের মুগ্ধতার হাসি ফুঁটে উঠে।
রেহান রুহীকে দেখছে।ওর নিজের মুখে ও হাসি ফুঁটে উঠেছে।ভীষন ভালবাসে এরা একে অপরকে তা তাদের কথা বলার সময়ের মুখের এক্সপ্রেশন দেখলে বুঝা যায়।মন টা মুহূর্তের মাঝেই ভালো হয়ে যায় রেহানের।
রুহী ফোনে কথা বলার সময়ে রেহানের দিকে তাকায়।
-রেহান ইশারা দিয়ে বলে সে বাহিরে যাচ্ছে।
-রুহী মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
রুহীর সাথে কথা শেষ করে বেরিয়ে পড়ে রোয়েন।কিছুটা কেয়ারফুলি থাকতে হচ্ছে ওকে নিজের জন্য না।নিজের মায়াবতী আর ছোট্ট জানটার জন্য।
-রুহীর জন্য কিছু গেঞ্জী আর পালাজো কিনতে শপিং মলে চলে আসে রোয়েন।
শপিং এর মাঝেই একটা কাপলের দিকে চোখপড়ে রোয়েনের।রাগে ওর কপালের রগ দুটো দাঁড়িয়ে যায়।
রাতে
রুহী আর রুপন্তী পাশাপাশি দুইবোন শুয়ে আছে।রুহী বারবার এপাশওপাশ করছে।
-আপি তোর কি অসুবিধা হচ্ছে?খারাপ লাগছে?জিজ্ঞাস করে উঠে রুপন্তী।
-ঘুম আসছেনা রে।অসুস্থ গলায় বলে উঠে রুহী।
-রুপন্তী বোনের পাশ ঘেঁষে শুয়ে ওর চুলে হাত বুলাতে থাকে।
-তোর টেস্ট এক্সাম কবে রুপন্তী?চোখবুজে জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-রুপন্তী চুপচাপ বোনের চুল হাতিয়ে দিচ্ছে।
-কিছু বলছি?এক্সাম কবে তোর?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-নেক্সট উইক আপি।মাথা নিচু করে বলে রুপন্তী।
-হোয়াট!!!আর তুই এখানে বসে আছিস?এটা কোন কথা রুপন্তী?বোনের হাত সরিয়ে বলে রুহী।
-আপি সমস্যা নেই।প্রিন্সিপ্যাল কে কনভেন্স করবো।বলে রুহীর চুলে হাত রাখে রুপন্তী।
-রুহী জানে কনভেন্স করলে হবেনা।প্রিন্সিপালকে কে ভালো ভাবে চিনে ও।দেখা যাবে।ফাইনাল এক্সাম দেয়া হবেনা রুপন্তীর।আবার নেক্সট ইয়ারের অপেক্ষা করতে হবে।
-নাহ রুপন্তী তোর কোন কথা শুনছিনা।এবার তুই যাবি।এক্সাম ও দিবি।শক্ত মুখে বলে উঠে রুহী।
-কিন্তু আপি এভাবে তোকে ছেড়ে যেতে পারছিনা,সরি।বলে উঠে রুপন্তী।
-বেশি বুঝিস না।ম্যানেজ করে নিবো আমি।বলে উঠে রুহী।
-না আপি প্লিজ।আমিই থাকবো তোর সাথে।বলে উঠে রুপন্তী।
-আমার একটা বান্ধুবী আছে।ওকে এসে থাকতে বলবো।তোর জিজু ও জলদি চলে আসবে।এবছরটা গ্যাপ দিস না রুপন্তী।
-কিন্তু আপি তুই খুব ইম্পরট্যান্ট। তোকে ছাড়া কি ভাবে যাবো?মন খারাপ করে বলে উঠে রুপন্তী।
-রুহী উঠে বসে বোনকে জড়িয়ে ধরলো।আমি জানি আমার জন্য টেনশন হচ্ছে তোর।বিলিভ মি ভালো থাকবো আমি।
-রুপন্তী বোনকে জড়িয়ে ধরলো।আচ্ছা ঠিক আছে।আগে জিজু আসুক তারপর আমি যাবো।
-হলো না।এক্সাম তোর অনেক পড়তে হবে।এমনিতেই অনেক সময় অপচয় হয়েছে আর না।আমি কালপরশু আমার ফ্রেন্ডকে আসতে বলছি।তুই তোর আর রেহান ভাইয়ের টিকিটের ব্যাবস্থা করা।বলে উঠে রুহী।
-ভ্রু কুঁচকে বোন থেকে সরে আসে রুপন্তী।এখানে আবার ওনার নাম কেন এলো আপি?
-তুই কি একা যাবি?জিজ্ঞাস করে উঠে রুহী।
-যাওয়া কঠিন না আপি।আমি পারবো যেতে।অন্তত এই কথাটা তো শোন আমার।রেহানকে থাকতে দে এখানে।বলে উঠে রুপন্তী।
-আচ্ছা ঠিক আছে।তবে জলদি টিকিট কর বাংলাদেশে ফিরার জন্য।
রুপন্তী হেসে সায় দিলো।
অপরদিকে রোয়েন পায়ের ওপর পা তুলে বসে আছে মেয়েটির সামনে।মেয়েটি মাথা নিচু করে বসে আছে।ওর সারামুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট ফুঁটে উঠেছে।
রোয়েনের মুখে তীব্র রাগ ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে।
-আমাকে এখানে এনেছেন কেন?জিজ্ঞেস করে উঠে মেয়েটি।
-রাগ দমন করে রোয়েন।কিছু প্রশ্নের উত্তর পেতে মিস মিতালি মাহবুব। দাঁতে দাঁত চেপে বলল রোয়েন।
-অপরিচিত পুরুষের কন্ঠে নিজের নাম শুনে ভীষন অবাক হয়ে মাথা তুলে তাকায় মিতালী।আ আপনি কে?
-আমি কে সেটা ইম্পরট্যান্ট না।তুমি মিতালী মাহবুব সেটা জানার পর থেকে আমার শরীরের রক্ত টগবগ করছে।চাইলে এক্ষুনি জীবন্ত কবর দিতে পারি তোমায়।
তবে কিছু প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া সবচেয়ে বেশি ইম্পরট্যান্ট আমার জন্য।
-জীবন্ত কবরের কথায় কেঁপে উঠলো মিতালী।আমি কিছু জানি না আপনাকে চিনি না আমি।প্লিজ আমাকে যেতে দিন।আমার বাচ্চাটা বাসায় কাঁদছে।ভয় ভয়ে বলে উঠে মিতালি।
-আমার আর আছে বাচ্চার ব্যাপারটা আসলো কেন?নাকি বাচ্চার ব্যাপারটা ও মিথ্যা ঠিক আপনার মুখোশের মতো?দাঁতে দাঁত চেঁপে বলল রোয়েন।
-মানে কি? কি বলতে চান আপনি?বাচ্চা মিথ্যা হবে কেন?আমার বাচ্চা আছে সেটার কথা কেন মিথ্যা হবে?আশ্চর্য লোক আপনি?রেগে যায় মিতালী।
-Low down your voice.আমি যথেষ্ট ভদ্র ভাবে কথা বলছি মিস মিতালী মাহবুব।মানলাম বাচ্চা আছে, বাচ্চাকে দেখার জন্য আপনার স্বামী ও নিশ্চিত আছে,নাকি তাও নেই।বলে উঠে রোয়েন।
-কি বলতে চান আপনি?রাগী গলায় গলায় বলে উঠে মিতালী।
-আমি বলতে চাইছি আপনি প্রচন্ড স্বার্থপর বেহায়া বেইমান টাইপের মহিলা।যে কিনা টাকার জন্য যে কাউকে ঠকাতে পারে।চিৎকার করে বলল রোয়েন।
-অনেক বলে ফেলেছেন।অনেক সময় পর্যন্ত আপনার আবোলতাবোল কথা সহ্য করে যাচ্ছি।আপনি আমাকে বেহায়া বেইমান বলার কে শুনি?চিৎকার করে উঠতেই একটা কালো শার্ট পরা মেয়ে এসে মিতালীর গালে কষিয়ে চড় বসালো।
-স্যারের সাথে কথা বলার সময় ভদ্রতা বজিয়ে রাখুন।বলে উঠে মেয়েটা।
-থ্যাংকস নীলিমা।তুমি যেতে পারো এখন।বলে উঠে রোয়েন।
-ইয়েস স্যার।বলেই নীলিমা বেরিয়ে পড়লো।
-মিতালী গালে হাত রেখে কাঁদছে।
-এসব ড্রামা বন্ধ করুন নয়তো আরেকটা পড়তে দেরি হবেনা।রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
-মিতালী এবার কান্না বন্ধ করে চুপ হয়ে গেলো।
-রুহী কে চিনো?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
-র র রুহী?আমি চিনি না কোন রুহীকে বলে উঠে মিতালী।
-আর ইউ সিরিয়াস?চিনো না তুমি রুহী কে নাকি বলতে চাইছো না?কোনটা?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
-চিনিনা।বলতেই মিতালীকে অনেক গুলো চড় মারলো নীলিমা।
-আ আ আমি চিনি চিনি ভয় পেয়ে বলে উঠে মিতালী।
-স্যার এখানে থাকি।ওনাকে ডোজ দেয়া ছাড়া কোন কথা বের হবেনা।বলে উঠে নীলিমা।
-ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি ফুঁটে উঠে রোয়েনের।
চলবে