Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 84

এলিজা মেয়েটা ভীষন ভালো।রুপন্তীর চলে যাওয়ার কথা শুনে রুহীর কাছে চলে আসে সেই ভোর সকালে।
রুপন্তী রেহানের সাথে এলিজা পরিচিত হয়ে নেয়।রুপন্তীর সাথে ভালোই খাতির হয়েছে রুপন্তীর।এলিজার আসার পর থেকেই ভালো আড্ডা জমিয়েছে ওরা।
কিন্তু রেহানের মাথায় শয়তানি চাঁপলো।রুপন্তীকে দেখিয়ে এলিজার সাথে একটু ক্লোজ হচ্ছে।এলিজার সৌন্দর্যের প্রশংসা করছে।
রুপন্তী নিজেকে নরমাল রাখতে অনেক চেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত নরমাল থাকতে পারলোনা।
-এক্সকিউজমি আপু কে একটু দেখে আসছি।বলেই আর দাঁড়ালো না রুপন্তী।সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে পিছনে ফিরে সিড়ির দিকে পা বাঁড়ালো।
ঠোঁটের কোনে সেই রহস্যময় বাঁকা হাসি লেগেই আছে রোয়েনের।ভিতর টা বলছে একে খুন করে ফেলতে এই মুহূর্তে।
মিতালীর ঠোঁটের কোনা রক্তাক্ত হয়ে গেছে।কাঁদছে মিতালী।
-আ আ আম আমি চিনি রুহীকে।ভয় পেয়ে চিৎকার করে বলতে শুরু করে মিতালী।
রোয়েনের মুখ কঠিন হয়ে এসেছে।
-এতক্ষনে মনে পড়লো তাহলে?দাঁতে দাঁত চেঁপে জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
-জ জ জি প পড়লো।বাট আমি কি করেছি?জিজ্ঞেস করে উঠে মিতালী।
-রোয়েন সাইডে মুখ ঘুরিয়ে থুতনির খোঁচা দাড়ি গুলোকে হাতের দু আঙ্গুল দিয়ে একটু ছুঁয়ে বাঁকা হাসে।।
মিতালী ভয়ার্ত চোখে রোয়েনকে দেখছে।এ লোক কখন কি করে বসে বলা যায়না।
রোয়েন আচমকাই দুহাতে তালি দিতেই পিছনের পর্দায় আলো জ্বলে উঠে।
মিতালি অবাক চোখে দেখছে।সেদিনকার হোটেলে ওর ভিডিও দেখাচ্ছে।কিভাবে রুহী কে মিথ্যা রেপের ভয় দেখিয়ে ছিলো ও আর ওর প্রেমিক নাহিন।
সেদিন রুহীকে ঘুমের ঔষধ দেয়া হয়েছিলো জুসের সাথে।রুহী জ্ঞান হারিয়ে ফেলার পর নাহিন ওকে রুমে নিয়ে আসে।
তারপর রুহীকে ফ্লোরে শুইয়ে দিয়ে ওরা দুজনে শারীরিক মিলনে আবদ্ধ হয়।
গভীর রাতে রুহীকে খাটে শুইয়ে ওর পরনের শাড়ী খুলে পাশে ফ্লোরে ফেলে দেয়।রুহীর চুল খুলে আউলিয়ে দেয়।যেন রেপটাকে সত্যি মনে হয়।
কথা গুলো মনে পড়তেই ভয়ে কুঁকড়ে যায় মিতালী।
রোয়েনের আঙ্গুল গুলো খুব দ্রুত চলছে টেবিলের ওপর।সব যেন ওর রাগের বহিঃপ্রকাশ।
ভিডিও শেষ হতেই রোয়েন মাথা তুলে তাকায় মিতালীর দিকে।রক্তচক্ষু জোড়া অশ্রু সিক্ত হয়ে আছে।
কিন্তু কঠিন হৃদয়ের মানুষটা অশ্রু গুলো ঝড়াতে নারাজ।
রোয়েনকে দেখে মিতালীর ভয়ের মাঝেও চোখজোড়া ভরে এলো।
-Stop this crocodile tears you bloody cheap girl.চিৎকার করে বলে উঠে রোয়েন।
মিতালী কেঁপে উঠে।
ফ্লোরে পড়ে থাকা মায়াবতীকে দেখছেন আপনি?রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
– ম ম মায়াবতী!!! ফিসফিসিয়ে বলল মিতালী।
-এই সেই মায়াবতী আমার রুহী আমার মায়াবতী যে আপনাদের মতো মুখোশ পড়া অমানুষদের বেস্টফ্রেন্ড ভেবেছিলো।
-আর আপনি কি করলেন?বন্ধুত্বের চমৎকার পরিচয় দিলেন।আপনি ও তো মেয়ে।কি করে একটা মেয়ে হয়ে আরেকটা মেয়ের সাথে এমন করতে পারলেন?চিৎকার করে বলল রোয়েন।
-মিতালী কিছুটা কেঁপে উঠে মাথা নিচু করলো।
-আপনি একটা মানুষরুপী জানোয়ার।রাগী গলায় বলে উঠে রোয়েন।
-কেন করলেন এসব?কি দোষ করেছিলো রুহী?বলেন চিৎকার করে বলে উঠে রোয়েন।
-আমি ওকে প্রথম থেকেই ঘৃনা করতাম।ও সবকিছুতেই আমার থেকে এগিয়ে ছিলো।পড়াশুনা,নৃত্য প্রদর্শন,গান গাওয়া সবকিছুতেই।কলেজের যেকোন অনুষ্ঠানেই ও প্রথম পুরুষ্কার পেতো।ওর কারনে কখনোই ফাস্ট হতে পারিনি।
-টিচাররা সবসময় বলতো রুহীর থেকে কিছু শিখো মিতালী।রুহীর মতো হও।আমার খুব খারাপ লাগতো।ভীষন রাগ হতো রুহীর ওপর।সেই রাগটাই ওর প্রতি ঘৃনায় রুপ নেয়।
-সেদিন যখন আনিলা আন্টির সাথে দেখা হয় ওনি রুহীকে রোয়েন চৌধুরী নামের কারোর কাছ থেকে দূরে সরাতে চাইছিলো।তাই আমার হেল্প নেয় ওনি।তাই আমি সুযোগ টা হাত ছাড়া করিনি।
-নেমে পড়ি ওকে অপমানিত করার কাজে।
-রোয়েনের কপালের রগ শক্ত হয়ে এলো।কখনো কি ভেবেছিলেন এর পরিনতি কি হতে পারে?দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠে রোয়েন।
-নাহ তখন ঘৃনাটাই মূল ছিলো।ওর ওপর প্রতিশোধ নেয়াটাই গুরুত্বপূর্ন ছিলো।বলে উঠে মিতালী।
-পরিনতি যখন ভেবেই দেখেননি তাহলে এখন দেখে নিন।
-অফিসার্স!!!চিৎকার করে উঠে রোয়েন।
-সাথে সাথে কিছু পুলিশ অফিসার রুমটিতে ঢুকে পড়ে।
-এ্যারেস্ট হার।বলে উঠে রোয়েন।
-মহিলা অফিসার গুলো মিতালীর হাতে হাতকড়া পরাতে শুরু করে।
-আজ আপনার জায়গায় কোন ছেলে হলে বাঁচতে পারতেননা।কিন্তু এই রোয়েন চৌধুরী মেয়েদের রেসপেক্ট করে।
-কিন্তু আপনিতো মেয়েই না।তাই আপনার গায়ে হাত তুলে নিজেকে অপবিত্র করতে চাইনি আমি।
-রোয়েন চৌধুরী নামটা শুনে রোয়েনের দিকে তাকায় মিতালী।
অফিসারগন মিতালী কে নিয়ে চলে গেলো।
রুপন্তীকে এভাবে রুমে আসতে দেখে কিছুটা হকচকিয়ে যায় রুহী।মন খারাপ করে রুপন্তী রুহীর পাশে বসে পড়লো।
বোনের কাঁধে হাত রাখে রুহী
-কি হলো তোর?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-ওনি মেয়েদের সাথে শুধু ফ্লার্ট করে। আমার ভালো লাগেনা আপি।মন খারাপ করে বলল রুপন্তী।
-রুহীর ঠোঁটের কোনে হাসি ফু্ঁটে উঠে।এসব করে তোকে রাগানোর জন্য।রেহান ভাই তোকে তো খুব ভালোবাসে রে।ভালোবাসায় বিশ্বাস টা গুরুত্বপর্ন রুপন্তী।
-রুপন্তী মাথা নিচু করে।আসলেই তো।ও তো রেহান কে বিশ্বাস করে তাহলে কিভাবে এতো সহজে রেগে গেলো।আপি কেন জানি ওনার সাথে অন্য মেয়েকে সহ্য করতে পারিনা।মনে হয় যে ওনাকে যদি হারিয়ে ফেলি।
রুহী বোনের মাথা হাতিয়ে দিয়ে বলতে শুরু করলো,
-যাকে আমরা ভালোবাসি তাকে হারানোর ভয় প্রত্যেকটা সেকেন্ড আমাদের ভিতরে কাজ করে।
-এটা স্বাভাবিক রুপন্তী।বলে উঠে রুহী।
-দুইবোন কথা বলায় ব্যাস্ত হয়ে পড়ে।
-রোয়েন সেই ঘরটি থেকে বেরিয়ে আসতেই ফোন বেজে উঠে ওর।
গাড়িতে ঢুকে বসে কানে ফোন রাখে রোয়েন।
-হ্যালো!!!বলে উঠে রোয়েন।
-স্যার আপনার টিকেট সামনের ২৪ তারিখে ধার্য করা হয়েছে।অপরপাশ থেকে লোকটা বলে উঠলো।
-থ্যাংকস বলেই কল ডিসকানেক্ট করে রোয়েন।ড্রাইভিং করে বাসায় পৌছে যায় রোয়েন।
এদিকে রুপন্তীর বাংলাদেশে ফিরছে বাইশ তারিখে।তারমানে কাল রাতেই ওর ফ্লাইট।
রুপন্তী ঘুমিয়ে গেছে।রুহীর অপরপাশে এলিজা শুয়ে আছে।দুজনেই ঘুম।
রুহী ভারি হয়ে যাওয়া পেটে হাত বুলাচ্ছে।হঠাৎ ফোন বেজে উঠে রুহীর।ফোনের শব্দে রুপন্তীকে নড়ে উঠতে দেখেই ফোন হাতে নিয়ে ট্যারেসে চলে আসে রুহী।
নম্বরটি দেখে মুখে হাসি ফু্ঁটে উঠেছে রুহীর।
কানে ফোন রাখে রুহী।
-রুহী!!!অপরপাশ থেকে বলে উঠে রোয়েন।
-চোখজোড়া বুজে অশ্রু গুলো কে গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ার অনুমতি দিলো রুহী।
-হুম।অস্ফুট স্বরে বলল রুহী।
-ঘুমাও নি কেন?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
-আসছিলোনা।তাই বাবুর সাথে কথা বলছিলাম।বলে উঠে রুহী।
-কি বলছিলো বাবু?জিজ্ঞেস করে রোয়েন।
-বাবাই এর ওপর রাগ করেছে বাবুটা।অভিমান করে বলল রুহী।
-বাবু না বাবুর মাম্মাম রাগ করেছে।বলে উঠে রোয়েন।
-রুহী নিঃশব্দে কেঁদে উঠলো।
-রুহী কষিয়ে এক চড় দেব।এভাবে কান্নার কি হলো?রেগে যায় রোয়েন।
-হুহ ওনি দূরে থাকতে পারবেন আর আমি রাগ ও করতে পারবোনা।অভিমানী গলায় বলে রুহ
-গুড নিউজ আছে দুটো।মলিন হেসে বলল রোয়েন।
-চোখের পানি মুছে নিলো রুহী।কি?
-মিতালীকে এ্যারেস্ট করিয়েছি।ও নিজের অপরাধ স্বীকার করেছে।বলে উঠে রোয়েন।
-রুহী কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।খুশির মাঝে ও বান্দুবীর প্রতি ভীষন রাগ লাগছে।
-রুহী চোখ বুজে রোয়েনের উপস্থিতি অনূভব করছে।
-রুহী!রুহী!!কিছু তো বলো।বলে উঠে রোয়েন।
রোয়েন রুহীর ঘন নিশ্বাস শুনতে পাচ্ছে।রোয়েন চোখ বুজে।রুহী যেন ওর বুকের সাথে লেপ্টে আছে।
-রুহী!!আবার ডাকে রোয়েন।
-তোমাকে ভীষন জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে হচ্ছে।বলে উঠে রোয়েন।
-২৪ তারিখ তোমার কাছে ফিরে আসবো।তারপর নিজের মাঝে মিশিয়ে নিবো তোমায়।
-রুহী হেসে পেটে হাত রাখে।
চলবে