Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 76

শোয়া থেকে উঠে বসে রোয়েন।ঘন্টাখানিকের জন্য চোখ লেগে আসছিলো ওর।পাশে তাকাতেই চোখে পড়ে বৌটা ওর সাথে লেগে ঘুমিয়ে আছে।রোয়েন রুহীর থেকে চোখ সরিয়ে ওর পেটের দিকে তাকায়।।এখানেইতো ওদের ছোট্ট জানটা ঘুমিয়ে আছে।রুহীর পেটের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে সেখানে চুমু খায় রোয়েন।রোয়েনের স্পর্শে খানিকটা কেঁপে উঠে ওর আরো কাছে এসে ঘুমিয়ে যায় রুহী।পেট থেকে মুখ সরিয়ে রুহীর মুখখানির দিকে তাকায় রোয়েন।পাগলীটাকে জান্তে অজান্তে ভীষন কষ্ট দিয়ে ফেলেছে।
কি করবে ও?ওর লাইফটাই এমন।কোন নিশ্চয়তা নেই ওর জীবনের।কখন কি হয়ে যায় বলা যায়না।তাও রুহীকে এখন কষ্ট দেয়া মানে ওদের অনাগত সন্তান কে কষ্ট দেয়া।
রোয়েন অদ্ভুত এক ঘোরের মধ্যে চলে যায়।ওর চোখে ভেসে উঠে ছোট্ট একটা পরীর প্রতিচ্ছবি।রোয়েন সেই বাচ্চাটিকে কোলে নিয়ে খেলছে, ঘুরছে।বাচ্চাটি মাড়ি বের করে হাসছে।রুহী রোয়েন আর সেই ছোট বাচ্চাটা তিনজনেই ভীষন খুশি।তিনজনের মুখে হাসি।
রোয়েনের ঠোঁটের কোনে হাসি ফু্ঁটে উঠে।হঠাৎ ফোন বেজে উঠায় রোয়েনের ঘোর কাঁটে।পাশের টিটেবিল থেকে ফোন নিয়ে কানে রেখে বারান্দায় চলে যায়।আধঘন্টা ফোনে কথা বলার পর রুমে এসে রুহীর পাশে দাঁড়ায়।পলকহীন দৃষ্টিতে রুহীর দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে একটু ঝুঁকে রোয়েন।রুহীর মাথায় হাত রেখে ডাকতে শুরু করে রোয়েন।
-রুহী!!রুহী!!
-হুম!!!ঘুম ঘুম চোখে বলে উঠে রুহী।
-উঠো ঘরে ফিরতে হবে(রোয়েন)।
-রুহী উঠে বসতে গেলে রোয়েন ওকে কোলে তুলে নেয়।রুহীকে ফ্রেশ করিয়ে এনে চুল গুলো পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকে দেয়।
রুহীর মুখে হালকা পাউডার বুলিয়ে দিয়ে ওর ঠোঁটে লিপগ্লসের হালকা ছোঁয়া দেয় রোয়েন।
তারপর রুহীকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা দেয় রোয়েন।
পাঁচ মিনিটের মাঝেই ঘরে পৌছে যায় ওরা।রোয়েন দরজার তালা খোলা ছাড়াই কলিংবেল দিতে শুরু করলো।
রুহী অবাক হয়ে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে আছে।
-ঘরে কে আছে?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
রোয়েনের উত্তর না পেয়ে রুহী আবার ও বলে উঠলো।
-কি হলো বলো না কে আছে ভিতরে?
রোয়েন কিছু বলতে যাবে তখনই দরজাটা হঠাৎ খুলে যায়।রুহী অবাক হয়ে সেদিকে তাকায়।
রুপন্তী হাসছে।তারপর হঠাৎ সবাই এসে চিৎকার করে বলে উঠে
-সারপ্রাইজ!!!!!
রুহী চোখ বড় করে সবাইকে দেখছে।রুপন্তী এসে বোনকে জড়িয়ে ধরে।
-ওয়েলকাম আপু।বলে উঠে রুপন্তী।
রুহী কিছুই বলতে পারছেনা।সবাই কে দেখছে ও।রায়না রাহমান রুহীকে জড়িয়ে ওর গালে চুমু খেয়ে বললেন
– সরি মামনি এমনটা করতে চাইনি আমরা।চাইছিলাম সবাই তোকে আর ছোট্ট বেবিটাকে সারপ্রাইজ দেই।
আর জানিস পুরো প্ল্যানটা কার ছিলো?
এবার রুহী তাকায়।
-কার ছিলো মামী?(রুহী)
♦♦♦
-তোর বরের ছিলোরে মা।যেদিন থেকে জানলো তুই প্রেগন্যন্ট সেদিন থেকে সব প্ল্যান শুরু করেছে।রুহী কে ঘরে ঢুকাতে ঢুকাতে বলতে থাকেন রায়না রাহমান।
ঘরে ঢুকেই অবাক হয়ে যায় রুহী।পুরো ঘরকে ভীষন সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।আলোয় ঝলমল করছে পুরো বাড়ি।
পুরো ঘরে চোখ বুলিয়ে রোয়েনের দিকে তাকায় রুহী।রোয়েন রুহীর কপালে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিয়ে বলল
-ওয়েলকাম মাই ডিয়ার!!!!
কিছুটা লজ্জা পেয়ে রোয়েন থেকে চোখ সরিয়ে নেয় রুহী।
তারপর সবার দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে সামনে এগুলো।
সবাই রুহীর হাতে ফুল, পুতুল চকোলেট ধরিয়ে দিচ্ছে।
পুরো ঘরে রং করা হয়েছে।
কালার দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইন করা পুরো বাসায়।
রুহীর মুখ খানা মিষ্টি হাসিতে ভরে উঠেছে।
রুহীর হাত ধরে উপরে নিয়ে আসে রোয়েন।একটা রুমের সামনে এসে দাঁড়ায় ওরা।রুহীর দুচোখ রোয়েন দুহাত দিয়ে ঢেকে সেই রুমটিতে প্রবেশ করলো।
-রুহী তুমি কি প্রস্তুত রুমটা তোমার সারপ্রাইজ টা দেখতে?জিজ্ঞেস করে উঠে রোয়েন।
-হুম, আমি প্রস্তুত।বলে উঠে রুহী।
রোয়েন রুহীর চোখের সামনে থেকে দুহাত সরালো।
রুহী পুরো ঘরের চারদিকে চোখ বুলাতে থাকে বিস্মিত হয়ে।
রুমের দেয়াল গুলো বেবি পিংক কালার দিয়ে রং করা হয়েছে।
ঘরের টাইলসে বিভিন্ন কার্টুন চিত্র শোভা পেয়েছে।
বেবি কার,দোলনা রাখা আছে।পুরো ঘরে বিভিন্ন ধরনের খেলনা ছড়ানো ছিটানো আছে।
রুহীর কোমড় জড়িয়ে ওর কাঁধে আলতো করে ঠোঁট ছোঁয়ায় রোয়েন।রুহীর কাঁধে থুতনি রেখে বলে উঠলো,
-আমাদের ছোট্ট জানটার রুম কেমন হলো রুহী?
-রুহী ঘরটাকে দেখতে দেখতে বলল অসাধারন।
রোয়েন এবার রুহীর দুকাঁধ ধরে নিজের দিকে ফিরালো।
-এসবের জন্যই একটু ব্যাস্ত ছিলাম রুহী।প্লিজ মন খারাপ করোনা।বলে উঠে রোয়েন।
রুহী হেসে রোয়েনের বুকে মাথা রাখলো।
-থ্যাংকস, সব কিছুই খুব ভালো হয়েছে।আমাদের বাবুটা কতো লাকি। সে কতো ভালো বাবা পাচ্ছে রোয়েন।বলে উঠে রুহী।
রোয়েন রুহীর মাথায় চুমু খেয়ে ওকে কোলে তুলে নিয়ে নিচে নেমে এলো।
রেহান রুহীর সামনের টিটেবিলে বড় একটা কেক রাখলো।
-ভাইয়া আপনারা কেক টা কাঁটেন।বলে উঠে রেহান।
রোয়েন রুহী একসাথে কেকটা কেঁটে নিলো।
সবাই কে কেক খাইয়ে দিলো রুহী।খাবার দাবার সেড়ে সবাই রেস্ট নিতে চলে গেলো।রুহীকে কোলে তুলে রুমপ নিয়ে এলো রোয়েন।
ওদের খাটটা ও সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
♦♦♦
রুহীকে খাটে বসিয়ে ওর পাশে এসে বসলো রোয়েন।
রুহী রোয়েনের হাতের ওপর হাত রাখলো।
রোয়েন আলতো হাতে রুহীর চিবুক ধরে ওর গালে কপালে চুমু দিলো।
রুহী জানেনা কেন জানি রোয়েনের প্রত্যেক ছোঁয়া ওর ভিতর আলাদা শিহরন বয়ে যায়।প্রত্যেক বার নতুন করে স্বামীর প্রেমে পড়ে যায় রুহী।রুহীর ঠোঁট জোড়া নিজের ঠোঁটের ভাজে নিয়ে নিলো রোয়েন।
রুহীকে নিয়ে শুয়ে পড়লো ও।রুহীর ঠোঁট থেকে সরে এসে ওর গলায় মুখ ডুবিয়ে রুহীর শাড়ীর আঁচল খুলে ফেলে রোয়েন।
লন্ডনে একমাস বেশ ভালোই ঘুরাঘুরি করেছে সবাই।বিকেল হলেই রুহীকে নিয়ে হাঁটতে বের হতো ওরা।
কখনো টেমস নদীর তীরে কিংবা ব্রিটিশ মিউজিয়াম আর কখনো বা লন্ডন টাওয়ার অথবা পাশ্ববর্তী হাইড পার্কে।
এভাবেই বেশ ভালোই কাঁটতে থাকে দিন গুলি।
একমাস পনের দিন ছুটি কাঁটানোর পর সাইফ রাহমান,রায়না রাহমান, আজিজ রায়হান আর আনিলা বেগম বাংলাদেশে ফিরে গেলেন।
থেকে গেলো রেহান আর রুপন্তী।
রুহীর তিন মাস শেষ হলে ওরা ও চলে যাবে।
রোয়েনের ভালোবাসা আর কেয়ার গুলো যেন দিন দিন বেড়ে চলছে।
এভাবেই আরো একটা মাস কেঁটে গেলো।
একদিন সকালে রুহী শোয়া থেকে উঠে রোয়েন কে না পেয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে নেমে আসে।
রুপন্তী রুহীকে টেবিলে নিয়ে আসে নাস্তা করাতে।
-রুপন্তী তোর জিজু কই?জিজ্ঞেস করে উঠে রুহী।
-জানিন নারে আপি।সকাল থেকেই পাচ্ছিনা।
বলে উঠে রুপন্তী।
রুহী নাস্তা সেড়ে রুমে চলে আসে।মন খারাপ করে খাটে বসতেই খাটের পাশের ড্রয়ারের ওপর একটা কাগজ দেখতে পায়।
কিছুটা অবাক হয়ে কাগজ টি হাতে নিয়ে এর ভাজ খুলে পড়তে শুরু করে,,,,,
চলবে