বজ্জাত বস রোমান্টিক হাজবেন্ড !! Season -3 !! Part- 50
সবাই হেসে দেয় তিথির পাগলামি কান্ড দেখে,,,আবির তার কপালে হাত রেখে ভাবছে এই কোন মেয়ে তার কপালে জুটছে,,,রিতুর ছেলে রিতুর বিয়েতে থাকবে তাই তারও ছেলে লাগবে এই ভেবে তো সবাই হাসি আটকে রাখতে পারছে না,,
রিতু এসে তিথির মাথায় টুকা দিয়ে বলে
রিতুঃ তুই কোন দিন মানুষ হবি হ্যাঁ
তিথিঃ কেন হ্যাঁ তোর বিয়ে তোর ছেলে খেতে পারবে আমার ছেলে নাই বলে আজ হু
আমানঃ হ্যাঁ আবির তিথি তো ঠিক বলেছে ওর বেস্টুর ছেলে ওর বেস্টুর বিয়ে খাবে আর তার ছেলে নাই এই কি হতে পারে হ্যাঁ (খিলখিল করে হেসে)
আবিরঃ কানের নিচে কয়েকটা কষে লাগালে বুজবে ফাজলামি করার মজা
বড় মাঃ এই মাইয়া নিজে এখনও বাচ্চা সে আবার বাচ্চা চায় আল্লাহ রে এই কেমন বউ জুটলো আবিরের কপালে
আবিরঃ বড় মা যেমনই জুটুক কিন্তু আমার তিথি সব দিকে আমার জন্য বেস্ট,,
মাঃ ভাবি আমার মেয়েটার মন বাচ্চাদের মত তাই যা আসে মাথায় তাই বলে এই নিয়ে আর কথা না বলা উচিত
তিথি মুখটা মলিন করে ফেলে সবাই ওকে নিয়ে হাসাহাসি করলো আবার বড় মায়ের কথা গুলো ও কেমন যেন লাগলো,
বাবাঃ আচ্ছা বিয়ের কাজ তাহলে শুরু করা হবে কখন থেকে
বড় বাবাঃ আমরা কাল আমাদের পুরান ঢাকাতে যে বাড়ি আছে অই খানে যাবো তারপর বিয়ের আওয়াজ সব ওখানে
বাবাঃ কিন্তু ভাইয়া অই খানে কেন
বড় বাবাঃ দুটো বিয়ে এক সাথে সবাই কে দাওয়াত তো দিতেই হবে আর অই বাড়ি তো অনেক বড় সব আত্নীয় রা ও তো আসবে,,, আর হ্যাঁ সবাই আজ রাতে ব্যাগ গুছিয়ে নিবে আর ওদের জন্য শপিং সব কিছু ওই খান থেকে নেওয়া হবে,,
তিথিঃ ওয়াও শপিং
আবিরঃ আবার উফফ(কপালে গাত দিয়ে)
তিথিঃ বড় বাবা আমার না শপিং করতে খুব ভালো লাগে,,জানো শপিং করতে গিয়ে তো আমি আর রিতু ৭-৮ প্লেট ফুচকা খেতাম,,,
আমানঃ কিইই?এতো প্লেট?
তিথিঃ হ্যাঁ এইটা তো কিছু না,,আমরা তো আমাদের প্রিয় বিরানি পিজ্জা লাছি এই আব ও খেতাম,,,
আমানঃ তোমরা কি মানুষ ছিলে নাকি রাক্ষস এর বড় আম্মা
রিতুঃ এই যে আমরা রাক্ষস মোটে ও ছিলাম না ওকে,,,এই সব তিথি একা খেতো আমি এক প্লেট ফুচকা শুধু খেতাম এর পর ওর খানা গুলো দেখতাম,,
আবিরঃ (এই মেয়েকে আমি ভালোবাসছি মনে হয় না,,,এমন রাক্ষস এলিয়েন জুটছে আল্লাহ )
মামানিঃ তিথি বেশি কথা বলিস যা রুমে গিয়ে রেস্ট নে,,
তিথিঃ কিন্তু আমার নুডুলস?
বড় মাঃ এই মেয়ে এখন এতো নাস্তা করছে এখন আবার নুডুলস.
তিথিঃ এই সব নাস্তা তো আমার পেট ভরে নাই বড় মা,,,
মাঃ তিথি নিজের রুমে যাও আমি নুডুলস পাঠিয়ে দিচ্ছি বানিয়ে
তিথি এসে মাকে জড়িয়ে ধরে বলে
তিথিঃ লাভ ইউ
আবিরঃ পাম দিতে ভালো জানে এই মেয়ে
তিথিঃ কিছু কি বললেন মিস্টার বজ্জাত
আবিরঃ জ্বি না ম্যাম,,
রিতুর বাবাঃ তাহলে তো আমাদের সব কিছু আজকেই সব ঠিকঠাক করতে হবে,,,
সবাই যার যার মত চলে চায় কালকের জন্য ব্যাগ গুছাতে,,,প্রত্যেকে অনেক হেপ্পি শুধু একটা মানুষ ছাড়া আর সে তিথি,,,তার মন খারাপ প্রচুর কারণ তার বিয়েতে তার ছেলে নাই,,,আবির তিথির চেহারা দেখে বুজতে পারে তার পাগলীর চেহারা এতো মলিন কেন,,,তিথি নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গিয়ে বসে৷
তিথি আনমনে বসে বসে ভাবছে,,
তিথিঃ যখন আমার ছেলে মেয়ে হবে ওদের আমি কি ভাবে বলবো যে আমি ওদের কে আমার বিয়েতে দাওয়াত দিতে পারি নাই(কান্না করে করে)
আবির রুমের দরজায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তিথির কথা শুনে হাসতে থাকে,,
আবিরঃ এই পাগল আমার কপালে জুটার কথা ছিলো আল্লাহ,,,কি মেয়েরে বাবা ছেলে-মেয়েকে নিজের বিয়েতে দাওয়াত দিতে পারছে না তাই কান্না করছে উফফ,,,
তিথিঃ আজ একটা ছেলে হতো আমার তাহলে,,,
আবিরঃ তাহলে কি হুম?
তিথি পিছনে ঘুরে দেখে আবির,,আবিরকে দেখে দাঁড়ায় আবির এসে তিথির পিছনে জড়িয়ে ধরে বলে
আবিরঃ এই পাগলী তুমি এমন কেন হ্যাঁ
তিথিঃ এমন কেমন?
আবিরঃ আমাদের বিয়ের কয়েক মাস হইছে শুধু এর মধ্যে বাচ্চা কত থেকে আসবে,,,
তিথিঃ রিতুর বিয়ে যে ওর ছেলে খাচ্ছে
আবিরঃ বিয়ে আবার খাওয়া যায় নাকি?
তিথিঃ তো নয়তো কি,,অই যে বিয়েতে থাকা মানে বিয়ে খাওয়া হু এই টুকু জানেন না,,,
আবিরঃ আচ্ছা ম্যাম বুজছি,,রি বার শুনেন পাগলামি এই সব কম করিও ওকে,,
তিথিঃ পাগলামি নয় আমার ও ছেলে লাগবে যে আমার বিয়েতে অনেক মজা করবে,,
আবিরঃ আচ্ছা ঠিক আছে,,আমাদের যখন বেবী হবে তারপর আমরা আবার বিয়ে করবো ওর জন্য হেপ্পি
তিথিঃ সত্তিইই
আবিরঃ হুম সত্যি তিন সত্যি শুধু আমার পাগলীটার জন্য সব করতে রাজি
তিথি আবিরলে জড়িয়ে ধরে,,,আবির ও তার পাগলী টাকে একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,,,আবির তিথির মাথায় চুমু দেয়,,মেয়েটা যে পুরো বাচ্চাদের মত,,,না ভেবে সব সময় সব কিছু করে,,সবার যে অনেক আদরের সে,,
সবাই রাতের খাবার খেয়ে নিজের রুমে চলে যায়,,,তিথির একদম ভালো লাগছে না,,,সে আবিরের দিকে তাকিয়ে আছে আবির সোফায় বসে বসে কিছু ফাইল দেখছে,,,তিথি অসহায় বাচ্চাদের মত তাকিয়ে আছে আর ঠোঁট টেনে টেনে কান্না করছে,,,আবির তিথির দিকে তাকিয়ে দেখে তিথি কান্না করছে,
আবির তাড়াতাড়ি উঠে তিথির কাছে যায়,,
আবিরঃ কি ব্যাপার তোতাপাখি কান্না করছো কেন?
তিথিঃ আপনি আমাকে আর আগের মত লাভ করেন না,,
আবিরঃ কিইই?
তিথিঃ হ্যাঁ করেন না তো,, যদি করতেন তাহলে আমাকে কোলে করে নিয়ে ছাদে যাইতেন আর অনেক গল্প করতেন হু,,
আবির হেসে দেয়,,
তিথিঃ এই তো প্রমাণ আর ভালোবাসেন না যে হু
আবিরঃ ওয়েট একটু
তিথিঃ আরে কই যান,,
আবির রুম থেকে বের হয়ে যায়,,,এই দিকে তিথি গালে হাত দিয়ে নিজে নিজে বকবক করে
তিথিঃ আজ অসহায় বাচ্চা বলে কেউ পাত্তা দেয় না,,একদিন আমিও বড় হবো হুম অই দিন আমি ও সবাই কে জিভ দেখিয়ে ঘুরতে যাবো অনেক হুহু
আবির অনেক ক্ষন পর এসে দেখে তিথি ঘুমিয়ে গেছে,,,আবির তিথিকে ডাকে,,
আবিরঃ তিথি উঠো আমরা ছাদে যাবো
তিথিঃ উফফ ঘুমাতে দেন তো ডিস্টার্ব করিয়েন না যান ভাগেন
আবিরঃ তিথি উঠবে নাকি না
তিথি বালিশ একটা মাথার উপর রেখে ঘুমাতে থাকে,,,আবির আর না পেরে তিথিকে টেনে তুলে কোলে নেয়,,,
তিথিঃ আমাকে ঘুমাতে দেন প্লিজ
আবিরঃ চুপ একদম
তিথিঃ ওহ আম্মুরেএএএ আমারে ঘুমাতে দেয় না এই বজ্জাত রাক্ষস
আবির তিথিকে নিয়ে ছাদে যায়,,তিথি ঘুমে চোখ খুলতে পারছে না,,,,তিথি ঘুমের মধ্যে বকবক করে
তিথিঃ এই কোন হারামি রে আমার এতো সুন্দর ঘুম নষ্ট করছে সামনে আয় আজ তোরে বিড়ালের কিমা করে ইঁদুর কে খাওয়াবো তারপর আবার তা গিলে খাবো হুম
আবির তিথিলে ঝাকুনি দিয়ে বলে
আবিরঃ কানের নিচে কপষে চড় লাগাবো ফাজলামি অফ করো ফাজিল মেয়ে একটা
তিথি চোখ ঢলতে ঢলতে বলে
তিথিঃ কোন হারামির এতো সাহস আমাকে চড় মারার সামনে আয় একবার আমার বজ্জাত তোকে তুলে আচার মারবে,,,
আবিরঃ চোখ খুলে দেখো ওকে,,,আর বাইকা প্যাচাল করবা তো এখন কষে চড় দিবো
তিথি ভালো করে দেখে আবির,,,,আবিরকে দেখে তিথি চোখ বড় বড় করে আর আমতা আমতা করে বলে
তিথিঃ নি,,,জের বউকে কিডন্যাপ করতে লজ্জা করে না
আবিরঃ চুপ(ধমক দিয়ে)
তিথিঃ আম্মুউউউউ এই বজ্জাত এক তো আমাকে কিডন্যাপ করছে আবার আমাকে ধমক ও দে😭প্লিজ আমায় বাঁচাও
আবির তিথির এই সব দেখে বিরক্তি হয়ে যায়,,,আবির এর এতো মেজাজ খারাপ হচ্ছে যে আর না পেরে তিথিকে দেয় এক চড়
আবিরঃ ঠাসসসস
চড় খেয়ে তিথি নিচে বসে পড়ে,,,,সব কিছু চারটা চারটা দেখছে সে,,আবিরকে তার কাছে ডাবল ডাবল লাগছে,,
আবির তিথির কাছে বসে বলে
আবিরঃ অই তিথি কি হইছে কি ভাবছো
আবিরের সব কথা তিথির কাছে কেমন যেন শা শু শব্দ পাচ্ছে
তিথিঃ আমি কে?আমি কোথায়? আপনি কে আংকেল?
আবিরঃ কিইইইই?থাপ্পড় খেয়ে কি সব ভুলে গেছে নাকি ড্রামা করছে যে মেয়ে বাবা
তিথিঃ আমি আপনার বাবা,,তাহলে সালাম করুন তাড়াতাড়ি,,বাই দ্যা রাস্তা বাবা কি?
আবিরের প্রচুর রাগ লাগছে,,,আবির বুজতে পারে এই ভাবে তিথিকে চুপ করানো যাবে না,,তাই সে জোরে ধমক দেয়,,
আবিরঃ তিথিইইইই চুপ একদম
তিথি এইবার জোরে কেঁদে দেয়
তিথিঃ আম্মুউরেএএ এই বজ্জাত আমাকে থাপ্পড় তো মারছে আবার বকা ও দ্ব্য,ওহ আম্মু আমাকে বাঁচাও
তিথি যে জোরে চিৎকার করতে থাকে আশেপাশের মানুষ সে এক মিনিটে এক করবে বুজা যাচ্ছে আবির আর না পেরে তিথির ঠোঁটে কামড় বসিয়ে দেয়,,,তিথি তো চুপ কিন্তু চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছে
অনেক ক্ষন পর আবির তিথির ঠোঁট ছেড়ে দেয়,,লাল হয়ে যায় ফুলেও,,তিথির খুব রাগ লাগছে আবিরের বুকে কয়েকটা ঘুষি দেয়
তিথিঃ হারামি আমি কি পিজ্জা যে এই ভাবে কামড় দিলি,,
আবির তিথির হাতটা ধরে নিজের দিকে টেনে নেয়,,,বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে তিথির ঠোঁটে আলতো করে চুমু দেয়,,,চুমুতে ভরিয়ে দেয় তিথির মুখ,,,,লজ্জায় তিথি আবিরের দিকে তাকাতে ও পারছে না যত রাগ ছিলো সব উদাও,,,আবির তিথিকে ঘুরিয়ে নেয়,,তিথির ঘাড়ে নিজের থুতনি রাখে,,তিথির পেটে হাত রেখে নিজের দিকে আরো টেনে নেয়,,বাতাসে তিথির চুল গুলো উড়ছে,,,আবিরের কাছে বেশ ভালো লাগছে তিথির খোলা চুল গুলো তার মুখে আসছে এই ভেবে,,,,
তিথিঃ এই সব কিছু আমার জন্য (অনেক অবাক হয়ে)
আবিরঃ হুম আমার মিষ্টি বউটার জন্য আজ এই সব কি পছন্দ হয় নাই
তিথিঃ অনেক সুন্দর
ছাদের এক পাশে সুন্দর করে একটা বিছানা করা সাদা,,বিছানার পাশে ছোট ছোট মোমবাতি জ্বালানো,,বিছানায় লাল গোলাপ এর পাপড়ি ও,,,
আবির তিথি আকাশের দিকে ইশারা করে বলে
আবিরঃ ওই চাঁদ দেখছো সে ও আজ আমার চাঁদের কাছে কিছু না,,,আমার চাঁদ টা ও যে অই আকাশের চাঁদের থেকে সুন্দর,,যার হাসি আমায় পাগল করে যার আজগুবি কথা আমার হাসির কারণ,,,যার মায়াবী চেহারা আমার দিন শুরু করে,, তিথি
তিথি মুগ্ধ হয়ে শুধু শুনছে আবিরের কথা
আবিরঃ এই তিথি
তিথিঃ হুম
আবিরঃ ভালোবাসি
তিথিঃ আমিও (কিছুটা লজ্জা পেয়ে)
আবিরঃ তুমি কি?
তিথিঃ আমিও অনেক ভালোবাসি আপনাকে,,
আবিরঃ তোমার তো ছেলে লাগবে তাই না তোমার বিয়েতে নাচার জন্য
তিথি লজ্জায় মুখ লুকায় আবিরের বুকে,,
আবিরঃ আরে এখন কেন লজ্জা পেলে ম্যাডাম আপনার তো ছেলে চাই তাই না
তিথিঃ হুর
আবির হেসে দেয় তিথির লজ্জা মাখা চেহারা দেখে,,, তিথির গালে চুমু দেয় কোলে করে বিছানায় নিয়ে যায়,,,চাঁদের আলোতে তিথিকে যে অনেক মায়াবী লাগছে,,,,তিথির কপালে চুমু দিয়ে বলে
আবিরঃ আমার বুকে ঘুমাবা আজ,,,অনেক দিন এই বুকে তোমায় জড়িয়ে ধরতে পারি না,,
তিথি আবিরের বুকে মাথা রাখে অজানা এক শান্তি পায় সে আবিরের বুকে,,, আবির যে বড্ড বেশি ভালোবাসে তার তোতা পাখিকে,,, আবির তিথিকে জড়িয়ে ধরে চোখ বন্ধ করে,, তিথিও তার আবিরের বুকে অনেক শান্তিতে ঘুমিয়ে যায়,,
সকালে,,,,,,
চলবে,,,,,,