Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 54

রোয়েন ফ্লোর থেকে উঠে দাঁড়ায়।পা জোড়া অসাড় মনে হচ্ছে।কোনরকমে ওয়াশরুমে চলে যায় রোয়েন।
আজ বেশ কয়েকদিন ধরে ভার্সিটি যাচ্ছেনা রোয়েন।বন্ধুদের সাথে তেমন যোগাযোগ ও রাখছেনা।শুধুমাত্র কাজের জায়গায় যায়।আর গুলসানে সাজিদ রায়হানের বাসার সামনে গাড়ি নিয়ে বসে কিছুক্ষন।সেদিন সাজিদ রায়হানকে দেখে ইচ্ছে হচ্ছিলো মাটিতে গেড়ে দিতে।তবে ও গরু না গরুর পালের ওপর আক্রমন করবে।অনেক রাত পর্যন্ত বসে থেকে সকালে ঘরে ফিরে রোয়েন।রুহীর খোঁজ জারি রেখেছে ও।কিন্তু রুহীর হদিস মিলেনি।কোথায় কোথায় খুঁজেনি রোয়েন।তবে মায়াবতীকে পেলোনা খুঁজে।
সেদিন ঘরে ফিরে আসতেই সাজ্জাদকে দেখতে পেলো রোয়েন।
রোয়েনকে দেখেই উঠে দাঁড়ালো সাজ্জাদ। ওর চোখে মুখে ভীষন রাগ প্রকাশ পাচ্ছে।রোয়েন অন্যদিকে তাকালো।কিরে এতো রাতে আমার বাসায় কেন?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।কেন তোর বাসায় আসতে পারিনা?মুখ স্বাভাবিক করে বলল সাজ্জাদ।পারিস তবে ইদানীং ব্যাস্ত আছি আমি।বলে উঠলো রোয়েন।
কি নিয়ে ব্যাস্ত তুই?ভার্সিটি ও যাচ্ছিস না নাকি?জিজ্ঞেস করে উঠলো সাজ্জাদ।ভালো লাগছেনা এসব।যখন ভালো লাগবে তখন যাবো।অন্যদিকে তাকিয়ে বলল রোয়েন।
সাজ্জাদ রোয়েনের কাছে এসে দাঁড়ালো।রোয়েনের কাঁধ ধরে সামনে ফিরালো।কি হলো তোর?আজ কাল নাকি ভালো নেই তুই?জিজ্ঞেস করলো সাজ্জাদ।
ভালো থাকি কেমনে বল?সব শেষ করে দিয়েছি আমি।নিজের হাতে ওর হৃদয় দুমড়ে মুচড়ে দিয়েছি।ও চলে গেছে আমাকে ছেড়ে।নিজের ওপর রাগ ভাব এনে বলল রোয়েন।
,
,
,
,
,
কি বলছিস এসব? কার কথা বলছিস?জিজ্ঞেস করলো সাজ্জাদ।রুহী।কই চলে গেছে ও জানিনা।কই কই খুঁজিনাই বল?সবখানে খুঁজছি ওকে পাচ্ছিনা।মন খারাপ করে বলল রোয়েন।কি হয়েছে বল? জিজ্ঞেস করলো সাজ্জাদ।রোয়েন সব বলল রুহীকে কিভাবে ও অবহেলা করছিলো।কথা গুলো শুনে সাজ্জাদ বেশ রেগে গেলো।কুত্তা হারামি শালা পাঠা শুধু এনাকোন্ডার মতো লম্বা হইছোস।কিছুই করতে পারোস নাই?কি দেখে মাফিয়া হইছোস কে জানে?
রোয়েন যা করেছিস একদম ভালো করিসনি।পড়াশুনা বন্ধু-বান্ধব একজায়গায় আর ভালোবাসার মানুষ একজায়গায়।জানিস এমন অবহেলার কারনে ভালোবাসার সম্পর্ক গুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে।চিৎকার করে বলতে লাগলো সাজ্জাদ।রোয়েনের চোখের কোনা জ্বলজ্বল করছে।
দেখ দোস্ত সব ঠিক করে নেয়।জানিনা যা করেছিস সেটার কারন।কিন্তু ভাবি কে জলদি ফিরিয়ে আন।নাহলে দেরি হয়ে যাবে।আর ক্লাশ গুলা কর।সামনেই তো পরীক্ষা।প্লিজ সবকিছু একসাথে ম্যানেজ করার এবিলিটি আছে তোর।পারবি তুই।আসি।কথা গুলো বলে বেরিয়ে গেলো সাজ্জাদ।
রোয়েন হাতের আংটিটাকে দেখলো।সেদিন কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে রুহীর বলা কথাটা মনে পড়ে যায়।
“রুহী চট করে রোয়েনের হাতের ওপর হাত রেখে বলল এ দুটো হাত একে অপরের জন্যই তৈরি তাইনা?”
নাহ রুহী একে অপরের জন্য তৈরি না।এ হাতটা তোমাকে আটকাতে পারেনি।ফিসফিস করে বলল রোয়েন।
ক্লাশে বসে আছে রুহী।এখানকার লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে ও।খালি হয়ে যাওয়া আঙ্গুলটাকে ছুঁয়ে দেখলো ও।আংটিটাতো এখানেই ছিলো।সব শেষ হয়ে গেলো।কোন ভালোবাসা নেই কিছু নেই।নিমিষেই শেষ হয়ে গেলো সম্পর্কটা।রোয়েন কি ভালো আছে বন্ধুদের সাথে?রুহীর অনুপস্থিতি কি ওর অনুভূত হয়না?কথাগুলো ভাবতে ভাবতে চোখজোড়া ভরে উঠলো রুহীর।বেল বাজতে লাগলো। সবাই চলে যাচ্ছে।এলিজা রুহীর সামনে এসে বসলো।
Hey Ruhi.Any problem?
No. Iam okay.চোখ মুছে বলল রুহী।
Why are you crying?missing your family huh?
Yeah.বলে উঠলো রুহী।
Let’s cheer you up.Come with me.রুহীকে টেনে বাহিরে নিয়ে এলো এলিজা।একটা ক্লাবে নিয়ে এসেছে রুহীকে।নাচ গান হচ্ছে।এলিজা নাচতে শুরু করেছে।রুহী দাঁড়িয়ে দেখছে সবাইকে।
,
,
,
,
,
রুহীকে অনেক বার নাচতে বলার পর ও নাচলো না রুহী।এলিজা নাচছে হাত নাড়িয়ে কোমড় দুলিয়ে।
সাজিদ রায়হান গুলসানের একটা নামীদামী বারে বসে আছেন।সেদিন কার ছেলেটার সাথে দেখা করতে এসেছেন।ছেলেটাকে দেখে খুব কাছের মনে হলো।তবে কেমন যেন গ্রাস করেছে ওনাকে।ছেলেটাকে দেখার পর থেকে কেন জানি নিজের ধ্বংসকে খুব কাছাকাছি দেখতে পারছেন ওনি।ছেলেটাকে চেনেন না ওনি।তবে কেন এমন হচ্ছে। বুঝতে পারছেননা ওনি।কথা গুলো ভাবতে ভাবতে পাশে চোখ যায় সাজিদ রায়হানের।রোয়েন মুখে বাঁকা হাসি এনে সাজিদ রায়হানের পাশে বসলো।
হ্যালো মিঃ সাজিদ রায়হান।কেমন আছেন?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
ভালো আছি।তোমার কি খবর?বলে উঠলেন সাজিদ রায়হান।
জি ভালো।ওনার পাশে এসে বসলো রোয়েন।সাজিদ রায়হান দুটো ড্রিংকের অর্ডার করলো।রোয়েন শুধু সাজিদ রায়হান কে দেখে চলছে।এতো সুন্দর মানুষটার এতো কুৎসিত একটা রুপ আছে সেটা কে বুঝবে?ভাবতেই মুখ শক্ত হয়ে এলো রোয়েনের।ড্রিংকের অর্ডার করে রোয়েনের দিকে তাকালেন সাজিদ রায়হান।রোয়েন মুখে হাসি টেনে আনলো।কার সাথে থাকেন ফেমিলি?জিজ্ঞেস করলো রোয়েন।
নাহ আমার গার্লফ্রেন্ড আর কয়েকজন লোক।হালকা হেসে বললেন সাজিদ রায়হান।
এ বয়সে গার্লফ্রেন্ড!!! স্ট্রেঞ্জ বলে উঠলো রোয়েন।
এমনই অনেক কথা চলতে থাকলো তাদের মাঝে।ড্রিংক আনার পর সাজিদ রায়হানের মুখে কিছু কথা শুনে মাথায় রক্ত উঠে যাচ্ছে রোয়েনের।তবে হাসি মুখেই সব সহ্য করে নিলো।সাজিদ রায়হান রোয়েনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলো।রোয়েন ও শয়তানি হাসি হেসে হাত মিলিয়ে বেরিয়ে পড়লো।সাজিদ রায়হান সেখানেই নেশায় বুদ হয়ে পড়ে রইলো।রোয়েন নিজের কিছু লোককে সাজিদ রায়হানের পিছে লাগিয়ে দিলো।
,
,
,
,
,
মেয়েকে লন্ডনে পাঠিয়ে কোন ভাবেই শান্তি পাচ্ছেননা আজিজ রায়হান।এতো দিন ভালোই কথায় হয়েছে মেয়েটার সাথে।রুহী বলছিলো ভালোই আছে।তারপর ও।মন খারাপ করে গিয়েছে মেয়েটা।কে জানে কিছু খায় কিনা?কিভাবে থাকছে?কার সাথে মনের কষ্ট গুলো শেয়ার করছে।ভেবেই মাথা গরম হচ্ছে আজিজ রায়হানের।অফিস থেকে বেরিয়ে গাড়িতে এসে বসলেন ওনি।ঘরে ফিরে শান্তিতে রুহীর সাথে কথা বলা যাবে।
যে ভাবা সেই কাজ।ঘরে ফিরে ফ্রেশ হয়ে রুহীকে কল দিলেন আজিজ রায়হান।
হ্যালো আসসালামু আলইকুম বাবা। কেমন আছো?অপর পাশ থেকে বলে উঠলো রুহী।
ওয়ালাইকুম আসসালাম মা।ভালো আছি।তোর কি খবর?
এইতো ভালো বাবা।খেয়েছো?জিজ্ঞেস করলো রুহী।
তোর সাথে কথা বলেই খাবো।
আচ্ছা।সবাই কেমন আছে বাবা।(রুহী)
ভালো মা।লন্ডনে কেমন লাগছে তোর?কোন সমস্যা হচ্ছে না তো?জিজ্ঞেস করলেন আজিজ রায়হান।
না বাবা।কোন সমস্যা হচ্ছেনা।কিন্তু প্রচুর ঠান্ডা।বলে উঠলো রুহী।
নিজের খেয়াল রাখিস রুহী।একদম ঠান্ডা পানি মুখে দিবিনা।আইসক্রীম ও খাবিনা।
আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।বলে উঠলো রুহী।
হুম।ক্লাশ হচ্ছে রুহী।
জি বাবা।একটু পর ক্লাশের জন্য বের হবো।
ওকে মা সাবধানে যাবি।কিনার দিয়ে হাঁটবি।পানি নিয়ে যাবি।কেউ দিলে কিছু খাবিনা।যেখানে সেখানে চলে যাস না।মানুষ বুঝে বন্ধু বানাবি।বুঝলি?একনাগাড়ে কথা গুলো বললেন আজিজ রায়হান।
বুঝেছি বাবা।আমি এখনো বাচ্চাটি নই।তোমার মেয়ে সব পারে বাবা।বলে উঠলো রুহী।
হুম রে মা।একথা দিয়ে নিজেকে স্বান্তনা দিচ্ছি।আমার মেয়ে বড় হয়েছে সব পারে।বলে কেঁদে দিলেন আজিজ রায়হান।রুহী ও কাঁদছে।
বাবা যতো বারই কল দাও।কাঁদতে হয়?আমার ও কষ্ট হয় বাবা।তোমাদের জন্য খুব কষ্ট হয় বাবা।(তার চেয়ে বেশি ওনার জন্য।এতো অবহেলার পর ও কেন ভুলতে পারছিনা।এটাই কি ভালোবাসা?) ভাবছে রুহী।
থাক মা কাঁদিসনা।খেয়াল রাখিস।নাস্তা করেছিস?জিজ্ঞেস করলেন আজিজ রায়হান।
জি বাবা।বলল রুহী।
আচ্ছা কলেজের জন্য বের হয়ে যা।দেরি করিস না।বলে উঠলেন আজিজ রায়হান।
ওকে বাবা।বায়,ভালো থেকো।বলল রুহী।
আচ্ছা মা ভালো থেকো।ফোন কেঁটে দিলেন আজিজ রায়হান।
সাথে সাথে কান থেকে ফোন সরালো রোয়েন।মুখে সেই পরিচিত বাঁকা হাসি,,,,,,,
|
|
|
|
|
চলবে