Mafia Boss- Season- 3

Married To The Dark King-  Mafia Boss- Season 3 !! Part- 15

রোয়েনকে স্যুপ খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দিলো রুহী।রুহী একটু সরে যেতেই মুখে বিরক্তির ছাপ নিয়ে উঠে বসার চেষ্টা করলো রোয়েন।কিন্তু ডান কাঁধে গুলি লাগায় ডান হাতটাকে নাড়াতে পারছেনা রোয়েন।যার কারনে উঠে ও বসতে পারছেনা।তারপর ও ব্যার্থ চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলো রোয়েন।হঠাৎ খুব সহজেই উঠে বসে পড়লো ও।রুহী প্রায় জড়িয়ে ধরে ওকে বসিয়ে দিয়েছে।রোয়েন পাশ ফিরে রুহীর দিকে তাকালো।মেয়েটা এখনো রোয়েনের বুক জড়িয়ে ধরে আছে।রুহী ও রোয়েনের দিকে চেয়ে আছে পলকহীন ভাবে।রোয়েন বাম হাত উঠিয়ে রুহীর চুলের দিকে এনে থেমে গেলো।কি যেন ওকে থামিয়ে দিয়েছে।অনিচ্ছাস্বত্তেও রুহীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলো নিজের কাছ থেকে।রুহী ছিটকে কিছুটা দূরে সরে গেলো।চোখের কোনে পানি চলে এসেছে ওর।রোয়েন উঠে দাঁড়িয়ে বেরিয়ে গেলো ঘর থেকে।রুহী দৌড়ে সিড়ি পর্যন্ত গেলো।ততক্ষনে রোয়েন বেরিয়ে গেছে।
লোকটা এভাবে ওকে এড়িয়ে যাচ্ছে।অবশ্য অবহেলারই যোগ্য রুহী।কিন্তু তা জানা স্বত্তেও মেনে নিতে পারছেনা লোকটার এমন আচরন।তার প্রতি যে খুব বেশি দূর্বল হয়ে পড়েছে ও।এখানে আসার একমাত্র কারন হলো তার খেয়াল রাখা তার সাথে থাকা।কথা গুলো ভেবে চোখের অশ্রু মুছে নিলো রুহী।
সাইফ রহমান অফিস থেকে বেরিয়ে কপালের ঘামটুকু মুছে নিলো।এসির থেকে বের হতেই মনে হলো গায়ে কে যেন আগুন ঢেলে দিয়েছে। কি গরমরে বাবা!!!!!গায়ের সাদা কোটটাকে খুলে হাতে নিয়ে একটা আইস্ক্রিম কিনে খেতে লাগলো।পরক্ষনে কি মনে করে আরো দুটি কিনে নিলো।প্রিয় মানুষ গুলোকে একা ফেলে কিভাবে খাবে সে?কিছুক্ষন পর কালো চকচকে গাড়িটি ওনার সামনে দাঁড়ালো।সাইফ রহমান দেরি না করে ঢুকে পড়লেন গাড়িতে।
গাড়ি চলছে আপন গতিতে।আজ একটু সুস্থ লাগলে রায়না রহমানের।এতোদিন যেন শরীরটা বিছানার সাথে লেগে গিয়েছিলো।কখনোই এতোটা অসুস্থ হননা ওনি।বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে কুঁচকে যাওয়া চুল গুলোকে একটু আঁচড়ে নিলেন।ঠোঁটের কোনে মিষ্টি হাসি ফুঁটে উঠলো কলিংবেল বাজতেই।যেন বহুল প্রতীক্ষিত কেউ অপেক্ষা করছে ওনার জন্য।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিকের ছোঁয়া বুলিয়ে রুম ছেড়ে বের হতেই কেউ যেন বাহুডোরে বন্দী করে নিলো রায়না রহমানকে।জান মিসড ইউ সো মাচ।ভরাট গলায় কথাটি বলে রায়না রহমানের চুলে ঠোঁট ছুঁয়ালো সাইফ রহমান।
রুহী নিজের রুমে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিলো।এতো সকালে উঠার অভ্যাস নেই ওর।কিন্তু কি করবে?লোকটার টান তাকে নিয়ে এলো তার কাছে।এতোদিন তার একটু ছেঁয়ার জন্য মনটা আনচান করছিলো।আর এখন সে কথাই বলেনা।ভীষন কষ্ট দিয়ে ফেলেছে লোকটাকে।তার ভালোবাসাটাকে ও বুঝতেই পারেনি।হঠাৎ ফোন বেজে উঠায় চমকে উঠলো রুহী।কানে ফোন চেপে উঠে বসলো।
হ্যালো রুহী মা কই তুই?সকালে তোর রুমে পেলামনা তোকে।অপর পাশ থেকে মুখে চিন্তার ভাব ফুঁটিয়ে বললেন আজিজ রায়হান।
কি বলবে বাবাকে ভেবে পাচ্ছেনা রুহী।কেমন করে বলবে ওনার কাছে ফিরে এসেছে ও।আসল লে ব বাব বা আ ম মি ত তো……….
মেয়ের কথায় হেসে দিলেন আজিজ রায়হান।মামনি ওনার কাছে গিয়েছিস খেয়াল রাখবি ঠিক আছে?কিছু লাগলে জানাবি।
জি বাবা।লজ্জায় এতো টুকু হয়ে গিয়ে বলল রুহী।
হুম ।খেয়েছিস?(আজিজ)
না বাবা।খাবো চিন্তা করোনা।
ওকে মা রাখি।ঠিক আছে?
জি বাবা।আল্লাহ হাফেজ।
আল্লাহ হাফেজ।ফোন রেখে দিলেন আজিজ রায়হান।
হঠাৎ কাজের লোকদের কথা শুনে রুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো রুহী।রোয়েন সিড়ি বেয়ে রুমে চলে গেলো।রুহী ও ওর পিছু নিলো।খাটে বসে জুতা খুলার চেষ্টা করছে রোয়েন।রুহী নিচে রোয়েনের পায়ের কাছে বসে পড়লো।
লাগবেনা। পারবো আমি।গম্ভীর কন্ঠে বলল রোয়েন।রুহী চুপচাপ নিজের কাজ করছে।রোয়েনের জুতো মোজা খুলে উঠে দাঁড়িয়ে ওর শার্টের বোতাম খুলতে লাগলো।রুহীর হাতের ওপর হাত রেখে শার্টের বোতাম ধরে ফেললো রোয়েন।আমি করছি বলে উঠলো রোয়েন।রুহী ঠোঁটে হাসি এনে বোতাম গুলো খুলে দিয়ে শার্ট খুলে নিলো রোয়েনের শরীর থেকে।বেশ লজ্জা লাগছে রুহীর রোয়েন শরীরের দিকে তাকাতে।সেখান থেকে সরে এসে রোয়েনের গেন্জী ট্রাউজার টাওয়েল বের করে দিলো আলমারি থেকে।
রাতে রোয়েন শুয়ে গেলে ওর পাশে এসে আধশোয়া হলো রুহী।রুহীর দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকালো রোয়েন।নিজের রুমে যাও, এখানে থেকোনা।ধমকে উঠলো রোয়েন।রুহী চুপচাপ রোয়েনের চুল টেনে দিচ্ছে।আর কিছু বলতে পারলোনা রোয়েন।খুব আরাম হচ্ছে ওর।আজ খুব জলদি চোখে ঘুম চলে এলো রোয়েনের।রুহী সারারাত রোয়েনের চুলে বিলি কেঁটে দিয়েছে।
এভাবে সময় গুলো চলে যেতে লাগলো।সাইফ রহমান
তার প্রিয়তমা স্ত্রী আর পুত্র রেহানকে নিয়ে অস্ট্রিয়ায় আছে ২৮বছর ধরে।এখানে তার নিজের একটি কোম্পানী আছে।রেহান পড়াশুনা কমপ্লিট করে বাবার ব্যাবসায়ে হাত লাগিয়েছে।সাইফ রহমান ও ওনার ছেলের কাজে সন্তুষ্ট।
খুব বেশি ভালবাসেন তার পরিবারকে।রোয়েনের চুলে বিলি কাঁটতে কাঁটতে ওর বুকে গুঁটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে পড়েছে রুহী।রোয়েন রুহীর দিকে তাকালো।এখন ও রুহীর হাত রোয়েনের মাথায়।রোয়েন রুহীকে সরিয়ে দিতে চাইলে রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ গুঁজে দিলো।একটা মাস ধরে রুহী রোয়েনকে এতো টা যত্ন করে সুস্থ করে তুলেছে।ওর যা দরকার পড়েছে তাই করেছে, নিজের কেন কিছু করতে হয়নি এমনকি খাটে শোয়ার সময় পা উঠিয়ে দিয়েছে খাটে,ওর রান্না বান্না থেকে সকল কাজ করে যাচ্ছে রুহী।রুহী কেন এমন করছে ভেবে পাচ্ছেনা রোয়েন।চাঁদের হালকা আলোয় রুহীর চেহারাটা ঝলমল করছে।রোয়েন রুহীর নেশায় মাতাল সে কবেই হয়েছে।রুহীর নিশ্বাস রোয়েনপর বুকে এসে লাগছে।কেমন একটা শিহরন বয়ে যাচ্ছে রোয়েনের সারা বুক জুড়ে।রুহীর শরীর থেকে আসা মাতাল করা ঘ্রানটা ওর নিশ্বাসের সাথে মিশে যাচ্ছে।রোয়েন নিজেকে আর সামলাতে না পেরে রুহীর মাথায় ঠোঁট ছুঁয়ে দিলো।
(শরীরটা অনেক খারাপ লাগছে।তাই ছোট করে দিলাম)
চলবে