I AM YOUR VILLAIN LOVER

I AM YOUR VILLAIN LOVER !! Part- 08

বকবক করতে করতে ময়দা মাখা শেষ করে ময়দার দিকে তাকিয়ে চোখ কপালে ওঠার উপক্রম হলো বর্ষার। বর্ষা কপালে হাত দিয়ে বললো

— আল্লাহ গো, এ আমি কি করেছি, এই এত ময়দা মেখে ফেলছি আমি। এত পরোটা খাবে কে? আজকে আমার কপালে শনি আছে। ঐ রাক্ষস টা আজকে আমায় আস্ত চিবিয়ে খাবে।

কপালে হাত দিয়ে এসব কথা বলছে বর্ষা। আর ওদিক থেকে মেঘ বিরক্তি মাখা কন্ঠে চিৎকার করে বলে উঠলো

— আজকে কি ব্রেকফাস্ট করা হবে নাকি আমি তোকে দিয়ে অমলেট বানিয়ে ব্রেকফাস্ট করবো। ৫ মিনিটের মাঝে আমার এখানে ব্রেকফাস্ট রেডি চাই জলদিইইইই,,

মেঘের চিৎকার শুনে কেপে উঠলো বর্ষা। তারপর তারাতারি আর কিছু না ভেবে দুইটা পরোটা আর একটা ডিম দিয়ে অমলেট বানিয়ে নিয়ে হাজির হলো মেঘের সামনে।

— এই ধর তোর পরোটা আর অমলেট। সরি সরি মানে আপনার পরোটা আর অমলেট নিন।

বর্ষার ভয় জরানো কন্ঠের কথা শুনে মুচকি হাসলো মেঘ। তারপর পরোটার প্লেটের ঢাকনা খুলে বড় বড় করে তাকিয়ে ধমকের শুরে বলে উঠলে

— ওয়াট ইজ দিস, কি এসব, এসব তুই কি বানিয়েছিস বর্ষা। এগুলো কি খাওয়া যাবে নাকিই।

মেঘের কথা শুনে বর্ষা নিজের হাত দুটো মোচড়াতে মোচড়াতে বললো

— আমি কি আগে কখনো এসব বানিয়েছি নাকি, আজকেই তো প্রথম বানালাম। একটু কষ্ট করে খেয়ে নিন না প্লিজ।

বর্ষার কথা শুনে মেঘের বেশ মায়া হলো। তাই আর কিছু না বলে পরোটা টা উচু করে তুলে ধরলো। ১০ টা পরোটার ময়দা দিয়ে একটা পরোটা বানিয়েছে বর্ষা। সেটাও আবার দেখতে পুরা বাংলাদেশের মানচিত্রর মতো। আর তেল দিয়ে ডুবিয়ে ভেজেও পুড়ে একাকার অবস্থা। পরোটার এমন বেহাল অবস্থা দেখে মেঘ রাগি চোখে বর্ষার দিকে তাকালো। তাকিয়ে দেখলো বর্ষা ভয়ে কাচুমাচু হয়ে মেঘের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বর্ষার বাম গালে আর কপালে ময়দা লেগে আছে। বর্ষার এমন অবস্থা দেখে মেঘ আর কিছু বললো না। পরোটা টা একটুখানি ছিঁড়ে অমলেটটা নিতে গিয়ে হলো আরেক বিপত্তি। অমলেটের মাঝে ডিমের খোশা গুলো যেনো মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে। মেঘ আর কিছু না বলে অমলেটটা দুরে সরিয়ে রেখে খালি পরোটাটা মুখে দিলো। মুখে দিয়ে একটু চিবুতেই থু থু করে ফেলে দিল মেঘ। তারপর রাগি গলায় বললো

— এসব কি করেছিস কি বর্ষা। এগুলো কি খাওয়া যায়। নাকি এসব খাইয়িয়ে আমায় মেরে ফেলার প্ল্যান করেছিস। পরোটায় তো ময়দার চাইতে লবনটাই মনে হয় বেশি দিয়েছিস।

মেঘের ধমক খেয়ে বর্ষা বললো

— তো জানিসই যখন আমি এসব বানাতে পারিনা তাহলে কাজের লোকদের ছুটি দিলি ক্যান। এখন নিজের রান্না নিজে করে খা আমি পারবোনা।

কথাগুলো বলার সাথে সাথে বর্ষার গালে সজোরে একটা থাপ্পড় মেরে দিলো মেঘ। তারপর বর্ষার চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়ে বাথরুমে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে বললো

— খাবার বানাতে পারিস না তো কি হয়েছে কাপড় তো ধুতে পারবি।

কথাগুলো বলেই ওপরে চলে গেলো মেঘ। তারপর অনেকগুলো কাপড় চোপড় এনে ছুরে মারলো বর্ষার মুখে।তারপর বললো

— এই সবগুলো কাপড় ভালো করে পরিস্কার করে ছাদে শুকোতে দিবি। তারপর পুরো বাড়ি সুন্দর করে ঝাড়ু দিয়ে মুছে পরিস্কার করবি। আমি যেনো কোথাও একটু ময়লা না পাই।

কথাগুলো বলেই চলে গেলো মেঘ। আর বর্ষা বসে বসে কান্না করতে লাগলো। বেশ কিছুক্ষণ কান্না করার পর বর্ষা কাপড় চোপড়গুলো পরিস্কার করা শুরু করলো। আর মনে মনে বলতে লাগলো

— এত রাগ আমার ওপর তোর মেঘ, শুধু একটা চর মেরেছিলাম বলে এভাবে শাস্তি দিচ্ছিস তুই আমায়। একটা থাপ্পাড়ের মুল্য এভাবে আমায় কষ্ট দিয়ে তুলছিস তুই। এই তোর ভালবাসা আমার প্রতি?

এসব কথা ভেবেই ঠুকরে কেদে দিলো বর্ষা। আর মনে পরে গেলো সেই দিনটা।
,
,
এক বছর আগে,
সেদিন ছিলো ওদের কলেজে নবিন বরণ উৎসব। বর্ষা অনেক সুন্দর করে নীল রঙের একটি শাড়ি পরে সেজেগুজে কলেজে যায় সেদিন। গত দুই বছরে মেঘের সাথে ঝগড়া করতে করতে মেঘকে ভালবেসে ফেলেছিলো বর্ষা। তাছারা মেঘও ওকে অনেকবার ভালবাসি কথাটা বলেছিলো। বর্ষা সেদিন ভেবেছিলো নিজের মনের কথা মেঘকে জানাবে। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষের দিকে ঐ সময় মেঘ ওর সাথে যেটা করেছিলো সেটা মেনে নিতে পারেনি বর্ষা। আর তাই মেঘের গালে সজোরে থাপ্পাড় মেরে চলে আসে কলেজ থেকে বর্ষা।

মেঘ সেদিন যেটা করেছিলো সেটার জন্যে ওকে থাপ্পড় মারা ছারা আর কোনো উপায় ছিলো না বর্ষার। মেঘ বর্ষার হাত ধরে একটি খালি ক্লাসে নিয়ে যায়। তারপর বর্ষাকে প্রপোজ করে মেঘ। বর্ষাও সেদিন মেঘকে হ্যা বলে দেয়। বর্ষার মুখে হ্যা শোনার পর বর্ষাকে জোর করে কিস করতে চাইলে বর্ষা বার বার বাধা দেওয়ার পরও যখন মেঘ না শোনে তখন মেঘের গালে সজোরে থাপ্পড় মেরে কাঁদতে কাঁদতে সেখান থেকে চলে আসে বর্ষা। তারপর তিনদিন আর কলেজে যায়নি ও। কিন্তু মেঘকে থাপ্পড় মারার কারনে ভিতরে ভিতরে নিজেও অনেক কষ্ট পেয়েছে বর্ষা।

তিন দিন পর যখন বর্ষা মেঘের খোজ করার চেষ্টা করে তখন ও জানতে পারে মেঘ বিদেশে চলে গেছে। কেনো গেছে সেটাও কাউকে বলে যায়নি সে। বর্ষার সেদিন খুব মন খারাপ হয় মেঘের জন্যে। তবে বর্ষা কখনো ভাবেনি সেই মেঘ আজ এভাবে একটা থাপ্পড়ের জন্যে এতটা কষ্ট দিবে ওকে।

কথাগুলো ভাবতেই চোখ দুটো বার বার ভিজে যাচ্ছে বর্ষার। হঠাৎ কাজ করতে করতে বর্ষার কি যেনো একটা মনে হয়। বর্ষা কাপড় ধোয়া ফেলে দৌড়ে চলে যায় মেঘের কাছে। কিন্তু মেঘ তার রুমে নেই। বর্ষা মেঘকে খুজতে খুঁজতে ছাদে গিয়ে দেখে মেঘ ছাদের রেলিং ধরে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাড়িয়ে আছে। বর্ষা মেঘের পিছনে গিয়ে দাড়িয়ে হঠাৎ করেই বলে ওঠে

— সেদিন আমার বিয়ের সময় তুইই আমার কিডন্যাপ করেছিলি তাইনা মেঘ ভাইয়া??

হঠাৎ বর্ষার মুখে এই কথা শুনে অবাক হয়ে পিছনে ফিরে তাকায় মেঘ,,,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *