I AM YOUR VILLAIN LOVER

I AM YOUR VILLAIN LOVER !! Part- 09

— সেদিন আমার বিয়ের সময় তুইই আমার কিডন্যাপ করেছিলি তাইনা মেঘ ভাইয়া??

হঠাৎ বর্ষার মুখে এই কথা শুনে অবাক হয়ে পিছনে ফিরে তাকায় মেঘ। মেঘকে অবাক হয়ে তাকাতে দেখে বর্ষা আবারও চিৎকার করে বলে ওঠে

— কি হলো উত্তর দে মেঘ ভাইয়া উত্তর দে আমায়? তুইই সেদিন আমায় কিডন্যাপ করেছিলি বিয়ের আসর থেকে তাইনা?

বর্ষার কথা শুনে মেঘ অন্য দিকে ঘুরে দাড়িয়ে শান্ত গলায় উত্তর দিলো

— আমি তোর কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে বাদ্ধ নই। তুই চলে যা এখান থেকে আর নিজের কাজ কর গিয়ে।

মেঘের কথা শুনে যেনো মাথায় রক্ত উঠে গেলো বর্ষার।বর্ষা মেঘের হাত ধরে মেঘকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে বলতে লাগলো

— কেনো করলি তুই আমার সাথে এমন। কেনো সকলের সামনে আমার চরিত্রে দাগ লাগালি। কেনো আমায় এভাবে বিয়ে করার নাম করে কষ্ট দিতে নিয়ে এলি। এই তোর ভালবাসা আমার প্রতি। কেনো এতো কষ্ট দিচ্ছিস তুই আমায় কেনো কেনো কেনো?

বর্ষার কথা শুনে বর্ষাকে ধক্কা দিয়ে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলো মেঘ। তারপর দাতে দাত চেপে বললো

— সিরিয়াসলি তোর মনে হয় বর্ষা যে তোকে আমি কষ্ট দিচ্ছি। আই মিন তুই আমার সাথে যেটা করেছিস তার পরেও যে তোকে আমি এখনো বাচিয়ে রেখেছি এটাই তোর ভাগ্য। চলে যা আমার সামনে থেকে নইলে তোর সাথে আমি কি করে ফেলবো আমি নিজেও জানিনা। চলে যা আমার সামনে থেকে চলে যা তুই।

মেঘের কথা শুনে অবাক হয়ে বর্ষা বললো

— কি করেছি আমি যে তার জন্যে তুই আমায় এভাবে শাস্তি দিচ্ছিস। এক বছর আগে তোর ভুলের জন্যে তোর গালে একটা চর মেরেছিলাম বলে তার প্রতিশোধ তুই এভাবে নিচ্ছিস আমার থেকে?
তোকে চর মারার পর আমিও কষ্ট পাচ্ছিলাম। তোর কাছে ক্ষমা চাইবো বলে কলেজে ছুটে গিয়েছিলাম কিন্তু তুই তার আগেই বিদেশ চলে গিয়েছিলি। মাত্র একটা থাপ্পড়ের জন্যে তুই এভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছিস আমার থেকে।

বর্ষার কথা শুনে মেঘের চেহারা যেনো রক্তবর্ণ ধারন করলো। মেঘের চোখগুলো থেকে যেনো রাগে আগুন বের হচ্ছে, মেঘ বিকট শব্দে হাসতে লাগলো। মেঘকে এভাবে হাসতে দেখে ভয়ে যেনো জমে যেতে লাগলো বর্ষা। হাসতে হাসতে বর্ষার কাছে এগিয়ে এলো মেঘ। তারপর বর্ষার গালদুটো শক্ত করে চেপে ধরে দাতে দাত চেপে বললো

— সিরিয়াসলি বর্ষা, তোর সিরিয়াসলি মনে হয় যে আমি শুধু একটি থাপ্পড়ের জন্যে তোর সাথে এমন করছি? সেদিন ঐ থাপ্পড় ছারাও তুই আমার সাথে যে কাজটা করেছিলি, তাতে তোর জায়গায় যদি অন্য কেউ হতো তাকে আমি সেই মুহুর্তেই খুন করে ফেলতাম। কিন্তু তোকে যে আমি ভালবেসে ছিলাম খুব বেশি ভালবেসে ছিলাম তোকে তাই পারিনি আমি তোকে খুন করতে। তোর ওপরের রাগ ভুলতে সেদিন চলে গিয়েছিলাম আমি দেশের বাইরে। কিন্তু যখন জানতে পারলাম তুই অন্য কাউকে বিয়ে করছিস। তখন আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি আমি। আমার সব সম্মান ধুলোর সাথে মিশিয়ে দিয়ে আমার চরিত্রে ধর্ষকের দাগ লাগিয়ে দিয়ে তুই অন্যের ঘরে সুখে সংসার করবি সেটা তো আমি হতে দিতে পারিনা। তাই আমিই কিডন্যাপ করেছিলাম তোকে। হ্যা আমিই তোকে দু দুবার বিয়ে করেছি। তবে তোকে ভালবাসতে নয়। যে ভাবে আমাকে তুই এই একটি বছর ভিতর থেকে তিলে তিলে শেষ করেছিস, সেই একি ভাবে তোকেও শেষ করবো আমি।

কথা গুলো বলে বর্ষার গালদুটো ধাক্কা দিয়ে ছেরে দিয়ে নিচে চলে গেলো মেঘ। মেঘের ধাক্কা খেয়ে তাল সামলাতে না পেরে নিচে পরে গিয়ে কপালে বেশ কিছুটা কেটে গেলো বর্ষার। কিন্তু বর্ষার এখন কপালের কাটার ব্যাথার চাইতে মেঘের কথাগুলোতে ব্যাথা লাগছে বেশি। বর্ষা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছে না মেঘ কেনো এমন করছে।
,
,
,
রাতে নুডুলস রান্না করে খেয়ে মেঘের জন্যে টেবিলে নুডুলস রেখে মেঘের রুমের বেলকুনিতে গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছে বর্ষা। আর ভাবছে মেঘের বলা কথাগুলো নিয়ে। সেদিন ঐ থাপ্পড়টা ছারা তো আর কিছু করেনি ও মেঘের সাথে। তাহলে মেঘ কোনো বললো যে ও মেঘকে ধর্ষক বানিয়েছে। মেঘের সম্মান নষ্ট করেছে।

বর্ষা যখন এমন আকাশ পাতাল ভাবতে ব্যাস্ত তখনি পিছন থেকে বর্ষাকে জড়িয়ে ধরে বর্ষার ঘারে নাক ডোবালো কেউ। বর্ষা কিছুটা ভয় পেয়ে দ্রুতো পিছনে তাকিয়ে দেখে মেঘ দাড়িয়ে আছে ওর পিছনে। মেঘকে কেমন মাতাল মাতাল দেখতে লাগছে, খুব বাজে ভাবে তাকিয়ে আছে মেঘ বর্ষার দিকে।

মেঘের এমন অবস্থা দেখে বর্ষা মেঘের থেকে একটু সরে গিয়ে ভ্রু কুচকে বলে ওঠে

— মেঘ ভাইয়া তুই ড্রিংক করেছিস?

বর্ষার কথার উত্তর না দিয়ে বর্ষার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে জড়িয়ে ধরে মেঘ। মেঘের গায়ে মো মো করছে মদের বিশ্রি গন্ধ। বর্ষা যতটা সম্ভব মেঘের থেকে দুরে যাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু কিছুতেই পেরে ওঠছে না মেঘের শক্তির কাছে। হঠাৎ করেই বর্ষাকে কোলে তুলে নেয় মেঘ। তারপর বর্ষাকে নিয়ে চলে যায় রুমের ভিতর,,
,
,
,
আজ তিন দিন হলো বর্ষা মেঘের সাথে কোনো প্রকার কথা বলে না। সব সময় চুপ চাপ থাকে বর্ষা। মেঘও বিনা প্রয়জনে বর্ষাকে কিছু বলে না। এর মাঝে বর্ষা হালকা পাতলা রান্নাও শিখে নিয়েছে ইউ টিউবে দেখে দেখে। বর্ষা একজন সংসারি মেয়ের মতোই নিজের সংসারটাকে আপন করে নিয়েছে। তবে মেঘের প্রতি জমেছে ওর মনে অনেক ঘৃনা। সেদিন রাতে ড্রিংক করে আসার পর জোর করে স্বামীর অধিকার খাটিয়েছে মেঘ। সকালে উঠে সব ভুলেও গেছে হয়তো। কিন্তু বর্ষা কিছুতেই ভুলতে পারছে না সেদিন রাতের মেঘের ওমন হিংশ্র আচরনের কথা।
,
,
দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর বাইরে বাগানের দৌলনায় গিয়ে বসে আছে বর্ষা। আর মেঘ নিজের রুমে ল্যাপটপে কাজ করছে।বর্ষা দোলনায় দোল খাচ্ছে আর ওর সাথে ঘটে যাওয়া গত কয়েকদিনের কথাগুলো ভাবছে। হঠাৎ কারো ডাকে ধ্যান ভাঙে বর্ষার

— কেমন আছো বর্ষা?

লোকটার কথা শুনে মাথা তুলে সামনের দিকে তাকিয়ে বর্ষা দেখে ওর সামনে দাড়িয়ে আছে নিলয়। এই নিলয়ের সাথেই ওর বিয়ে হচ্ছিলো সেদিন। কিন্তু মেঘ ওকে কিডন্যাপ করায় বিয়েটা ভেঙে যায়। নিলয়কে দেখে দোলনা থেকে উঠে দাড়িয়ে বর্ষা বলে

– আপনি এখানে? আপনি এখানে কেনো এসেছেন?

— আমি এখানে মেঘের সাথে দেখা করতে এসেছি বর্ষা। কিন্তু তুমি এখানে কেনো? চাচ্চুর বাসায় বেরাতে এসেছো বুঝি?

নিলয়ের কথা শুনে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে বর্ষা বললো

— নাহ আমি এ বাড়ির বউ। মেঘের সাথে বিয়ে হয়েছে আমার। আপনি ভিতরে যান মেঘ ভিতরেই আছে।

— ওয়াট, তুমি এসব কি বলছো বর্ষা তোমার বিয়ে হয়েছে, তাও আবার মেঘের সাথে? মেঘ এত কিছুর পরেও তোমায় বিয়ে করলো?

নিলয়ের কথা শুনে ভ্রু কুচকে তাকালো বর্ষা। তারপর জিগ্যেসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো

— এত কিছুর পরে বিয়ে করলো মানে, কি বলতে চান আপনি?

বর্ষার কথা শুনে কিছুটা থতমত খেয়ে নিলয় বলল

— না মানে ইয়ে মানে আমি আসলে বলতে চাইছিলাম যে সেদিন বিয়ের আসর থেকে কোথায় চলে গিয়েছিলে তুমি বর্ষা। আমি কত খুঁজেছিলাম তোমায়?

নিলয়ের কথায় বর্ষা কিছু বলবে তার আগেই মেঘ বাসা থেকে বের হতে হতে বলে উঠলো

— নিলয় তুই এখানে? কখন এলি দোস্ত?

— এই তো এখনি এলাম দোস্ত, তুই নাকি বর্ষাকে বিয়ে করেছিস? এটা কি সত্যিই মেঘ?

নিলয়ের কথা শুনে মেঘ বর্ষার দিকে একবার ফিরে তাকিয়ে তারপর নিলয়ের হাত ধরে নিয়ে বাইরের দিকে যেতে যেতে বললো

— চল নিলয় তোর সাথে আমার অনেক কথা আছে বাইরে থেকে একবার ঘুরে আসি চল।

কথাগুলো বলেই নিলয়কে নিয়ে চলে গেলো মেঘ। বর্ষার কেনো জানিনা নিলয়ের কথাগুলো শুনে কিছুটা খটকা লাগলো মনে। আর মনে হলো নিলয় নিশ্চই কিছু লুকোলো ওর থেকে,,,,,,

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *