Childhood marriage 3 !! Part- 16
তাসনিয়াঃ এই রে,এটা কি করে বসলাম!নাহ সামলে নিতে হবে,ঝটপট উনার থেকে দূরে সরে আসলাম।চলো কুটুস,মাম্মার সাথে খেলবে চলো আর এই যে আপনি,তাড়াতাড়ি রান্না শেষ করুন আমাদের দুজনেরই প্রচণ্ড ক্ষুধা লেগেছে…
সায়নঃ পুরো হতভম্ব হয়ে গেছি,মনে হচ্ছে যেন কোন ঘোরের মধ্যে আছি
তাসনিয়াঃ থ্যাঙ্ক গড,উনি কিছু বুঝতে পারেননি,এখন মানে মানে কেটে পড়ি নাহলে হয়তো…
সায়নঃ (মুচকি হেসে)পাগলী একটা,তুমি স্বীকার করো আর না করো বাঁধাতো তুমি পড়ে গেছো আমার প্রেমজালে।এখন শুধু কবে মেনে নেবে তারই অপেক্ষা…
(কিছুক্ষণ পর)
সায়নঃ কি হলো,বসে আছো কেন?খাওয়া শুরু করো…
তাসনিয়াঃ করব বাট তার আগে…
সায়নঃ তার আগে কি?
তাসনিয়াঃ তার আগে একটা কাজ বাঁকি আছে
সায়নঃ কি কাজ?
তাসনিয়াঃ ছোট্ট একটা কাজ যেটা সেদিন হয়নি
সায়নঃ কিন্তু সেটা কি?একটু পরিষ্কার করে বলবে?
তাসনিয়াঃ আচ্ছা সেদিন যেই গানটা বাজছিল সেটা এখন প্লে করতে পারবেন?
সায়নঃ হ্যাঁ কিন্তু…
তাসনিয়াঃ কিন্তু কিন্তু না করে যা বলছি করুন না…
সায়নঃ হ্যাঁ হ্যাঁ করছি,আর দেরি না করে প্লে করে দিলাম শেন ওয়ার্ডসের সেই নো প্রমিসেস,এবার?
তাসনিয়াঃ মুচকি হেসে উনার দিকে এগিয়ে গেলাম।হুম…(হাত বাড়িয়ে)
সায়নঃ অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,কি করব বুঝতে পারছি না
তাসনিয়াঃ কি হলো হাতটা ধরুন…উফ আপনি না…নিজে থেকেই উনার হাতদুটো নিজের দিকে টেনে নিলাম,এক হাত আমার হাতে আর অন্য হাতটা কোমড়ে।হাঁদার মতো তাকিয়ে আছেন কেন?সেদিন আপনিইতো চাইছিলেন…
সায়নঃ হ্যাঁ কিন্তু তুমিতো বলেছিলে…
তাসনিয়াঃ সে তখন যা বলার বলেছি,এখনও সেই একই কথা বলতে হবে এমনটা কোন ডিকশনারীতে লেখা আছে?
সায়নঃ আচ্ছা এটা কি সত্যিই হচ্ছে নাকি…কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব!এই তাসনিয়া,আমাকে একটা চিমটি কাটবে?
তাসনিয়াঃ উফ আপনি না…দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা…
সায়নঃ আহ..লাগছেতো…তারমানে এসব সত্যি!
তাসনিয়াঃ জ্বি জনাব সত্যি,বিশ্বাস না হলে আরেকটা চিমটি কাটবো?
সায়নঃ এই না না,আর লাগবে না..Then..let’s dance?
তাসনিয়াঃ হুম
মৃদুস্বরে শেন ওয়ার্ডসের নো প্রমিসেস বাজছে আর তারসাথে কমে আসছে ওদের দুজনের মাঝের দূরত্ব,গানের কথাগুলোর মতোই যেন ওদের জন্য সত্যি হয়ে ধরা দিচ্ছে…
Hey baby when we’re together
Doing things that we love
Every time you near I feel like I’m in heaven
Feeling high
I don’t want to let go girl
I just need you to know girl
I don’t wanna run away
Baby you’re the one I need tonight
No promises
Baby now I need to hold you tight
I just wanna die in your arms
Here tonight…
বৃষ্টিঃ ব্যাপার কি বলতো,এসে পর্যন্ত ম্যাডামের মুখ থেকে হাসি যেন সরছেই না!আর আপন মনে কি যেন ভাবছে
লোপাঃ আমিওতো সেটাই ভাবছি,এই কি হয়েছে রে তোর?
তাসনিয়াঃ আ..তোরা আমাকে কিছু বলছিস?
বৃষ্টিঃ মানে!আমরা এতোক্ষণ যা বললাম,তুই কিছুই শুনিসনি!
লোপাঃ আহ বৃষ্টি,জ্বি ম্যাডাম আপনাকেই বলছিলাম।তা এতো কি চিন্তায় মগ্ন আপনি যে আমাদের দিকে কোন খেয়ালই নেই!কি এতো ভাবছিস আই মিন কার কথা?
বৃষ্টিঃ লেট মি গেস,ইট’স সায়ন ভাইয়া রাইট?
লোপাঃ তাছাড়া আবার কি?এই তাসু,সত্যি করে বলতো ডিনার ছাড়া আর কি কি করেছিস?মারুফ বলছিল তোরা নাকি বাসায় একাই…
বৃষ্টিঃ রিয়েলি!আর কেউ ছিল না?তাহলেতো…
তাসনিয়াঃ তোরা শুধু শুধু বেশি বেশি ভাবছিস,তেমন কিছুই হয়নি
লোপাঃ তেমনটা কেমন শুনি?এই তোরা ১৮+ কিছু করিসনিতো?
তাসনিয়াঃ লোপা…
বৃষ্টিঃ হ্যাঁ হ্যাঁ বলে ফেল কুইক,কোন ব্যাপার না আমরা আমরাইতো…
তাসনিয়াঃ ধ্যাত তোরা না…যা তোদের সাথে আর কথায় বলব না
লোপাঃ আরে আরে রাগ করছিস কেন?আমরাতো এমনিই ইয়ার্কি করছিলাম…
বৃষ্টিঃ আচ্ছা ঠিক আছে আর কোন ফাযলামি না,এবার একটু সিরিয়াস প্রসঙ্গে আসি ঠিক আছে?
তাসনিয়াঃ সিরিয়াস!কিন্তু কি?
বৃষ্টিঃ কালতো তোদের সাতদিন শেষ হচ্ছে,তা কি করবি ভাবছিস?
লোপাঃ হ্যাঁ তাইতো,আমিতো ভুলেই গিয়েছিলাম।কিছু ভেবেছিস কি করবি?কোন সিদ্ধান্তে আসতে পেরেছিস?
তাসনিয়াঃ হুম তা একটা ভেবেছি বটে তবে…
লোপাঃ তবে কি?
তাসনিয়াঃ বুঝতে পারছি না সিদ্ধান্তটা ঠিক না ভুল
বৃষ্টিঃ ঠিক বা ভুল সিদ্ধান্ত বলে আসলে কিছুই নেই,একই সিদ্ধান্ত একেক পরিস্থিতিতে একেক রকম রেজাল্ট দেয়।তাই তুই মন থেকে যেটা ঠিক বলে মেনে নিবি সেটাই ঠিক সিদ্ধান্ত।
লোপাঃ এতো চিন্তা না করে তুই বরং নিজেকেই প্রশ্ন কর কোনটা ঠিক তাহলেই দেখবি সঠিক ডিসিশনটা পেয়ে যাবি
ঘুম ভাঙতেই লোপা আর বৃষ্টি আঁতকে উঠলো,পুরো ঝর তছনছ হয়ে আছে।চারপাশে শুধু জামা কাপড়ের ছড়াছড়ি,দেখে মনে হচ্ছে যেন এখান দিয়ে বড় রকমের কোন সাইক্লোন চলে গেছে।ওদের দুজনকে আসতে দেখে এক গাল হেসে ওদের দিকে ছুটে আসলো তাসনিয়া
তাসনিয়াঃ থ্যাঙ্ক গড তোদের ঘুম ভেঙ্গেছে,আমিতো একা একা পাগলই হয়ে যাচ্ছিলাম!এখন তোরা এসে গেছিস সো নো টেনশন
বৃষ্টিঃ এ..এসব কি?কি করছিস এসব নিয়ে?
তাসনিয়াঃ শাড়ি,ভালো দেখে একটা শাড়ি চুজ করে দে প্লিজ,আমি না ঠিক বুঝতে পারছি না কোনটা পরা ঠিক হবে
লোপাঃ শাড়ি!আর তুই!কেমনে কি?
বৃষ্টিঃ ইম্পসিবল!এটা সত্যি হতেই পারে না,নিশ্চয়ই আমি কোন স্বপ্ন দেখছি
তাসনিয়াঃ এনাফ…অবাক হওয়ার পালা শেষ হলে আমাকে একটু হেল্প কর প্লিজ আর বেশি সময় নেই
বৃষ্টিঃ কিন্তু তুই শাড়ি কি করবি?
তাসনিয়াঃ কি করব মানে!শাড়ি মানুষ কি করে?পরবো অফকোর্স…আর হ্যাঁ আমিতো এসব পরতে পারিনা সো তোদেরকেই কিন্তু হেল্প করতে হবে
লোপাঃ কিহ তুই পরবি শাড়ি!তাহলেই হয়েছে
তাসনিয়াঃ এতে এতো অবাক হওয়ার কি আছে?আমি কি শাড়ি পরতে পারিনা?
বৃষ্টিঃ হ্যাঁ তা পারবি না কেন?কিন্তু তুইতো কখনও…
লোপাঃ তুই শাড়ি পরলে তোর ওই জিন্স টপস আর বিখ্যাত বেরেট হ্যাটের কি হবে?তোকেতো কখনও এর বাইরে কিছু পরতে দেখিনি তাই…
তাসনিয়াঃ পরিনি বাট আজ পরবো
লোপাঃ কেন আজকে কি বিশেষ কোন কিছু আছে?
তাসনিয়াঃ হুম আজ লাস্ট দিন তাই…
বৃষ্টিঃ ওহ এবার বুঝেছি
লোপাঃ কি বুঝলি?
বৃষ্টিঃ শাড়িটা নিশ্চয়ই সায়ন ভাইয়ার জন্য
তাসনিয়াঃ হ্যাঁ উনি বলছিলেন বাঙালী পোশাকেই নাকি আমাকে বেশি সুন্দর লাগে তাই…
লোপাঃ রিয়েলি!বাঙালী পোশাকে আবার তোকে কখন…তুই কি আমাদের থেকে আরও কিছু লুকিয়েছিস?
তাসনিয়াঃ না না আমি আবার কি লুকাবো?
লোপাঃ বৃষ্টি রে,আমি কিন্তু সন্দেহের গন্ধ পাচ্ছি…
বৃষ্টিঃ হুম আমিও…
তাসনিয়াঃ ধ্যাত তোরা না…এখন কি আমাকে একটু হেল্প করবি?বেশি সময় নেই,একটু পরেই বেরোতে হবে
বৃষ্টিঃ তারমানে ভাইয়ার প্রপোজাল তুই একসেপ্ট করছিস?
তাসনিয়াঃ I think so…
লোপাঃ Are you sure?
তাসনিয়াঃ হ্যাঁ রে,উনার সাথে যখন থাকি মনে হয় আমি প্রাণ ফিরে পেয়েছি,নিজেকে যেন নতুন করে খুঁজে পাই,সব না পাওয়া ভুলে নতুন স্বপ্ন দেখতে শুরু করি।শুধু এই ছয়দিনই না,প্রথম যখন দেখা হয়েছিল তখনও সেম ফিল করেছিলাম।আমি আর নিজেকে ঠকাতে চাই না,উনার সাথেই নতুন স্বপ্ন বুনতে চাই।এক সায়নের জন্য আমার জীবনটা তছনছ হয়ে গিয়েছিল তাই বোধহয় সৃষ্টিকর্তা আরেক সায়নকে পাঠিয়েছেন সেই ভাঙাচোরা জীবনটাকে নতুন করে গড়ে নিতে।সেই সায়ন নামের অভিশাপটাকে আবার এই সায়নকে দিয়েই হয়তো মুছে দিতে চাইছেন…
(ঘণ্টা খানেক পর)
গাঢ় খয়েরী আর কালো কম্পিনেশনের কাতান শাড়ী,কানে সোনালি ঝুমকো,হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি,টানাটানা চোখদুটোতে হালকা করে কাজল টানা,ঠোঁটে লাল লিপস্টিক আর কপালে মাঝারি সাইজের একটা টিপ,পুরো বাঙালিয়ানা সাজ।সব সময় বার্বি ডল সেজে থাকা মেয়েটাকে আজ মনে হচ্ছে পরিপূর্ণ একজন বঙ্গ ললনা।রাস্তায় নেমেই সায়নের নাম্বার ডায়াল করলো তাসনিয়া,একবার রিং হতেই ওপাশ থেকে সায়নের কণ্ঠস্বর ভেসে আসলো
তাসনিয়াঃ হ্যালো আপনি কোথায়?একটু প্রেসক্লাবের সামনে আসবেন?আমি এখন ওদিকেই যাচ্ছি,আপনি বরং আমাকে ওখান থেকেই পিক করে নেবেন…
সায়নঃ ঠিক আছে আমি আসছি,মনে আছেতো আজ কিন্তু শেষ দিন,তোমার ডিসিশনটা কিন্তু আজকেই জানাতে হবে
তাসনিয়াঃ হুম মনে আছে আর সময় হলেই সব পরিষ্কার জানিয়ে দিব,ততক্ষণ পর্যন্ত নাহয় ওয়েট করেন
সায়নঃ ওয়েটতো আমাকে করতেই হবে।তুমি যদি আজ আমাকে রিজেক্টও করো তবুও আমি তোমার জন্যই ওয়েট করব,আড়াল থেকে তোমাকে ভালোবেসে যাবো।যদি কখনও তোমার পিছু ফিরে তাকাও,আমাকে ঠিক তোমার পেছনেই পাবে,দেখবে দুহাত বাড়িয়ে তোমার জন্যই অপেক্ষা করছি
তাসনিয়াঃ হয়েছে হয়েছে আর দার্শনিকের মতো বড় বড় কথা বলতে হবে না,একটু পরেই দেখা হচ্ছে সো যা বলার তখনই বলেন কেমন?এখন বাই…
(তাসনিয়া ফোনটা নামিয়ে রাখতেই সামনে একটা গাড়ি এসে থামলো,ভেতর থেকে নেমে আসলো কালো কোট আর স্যুটবুট পরা দুজন লোক আর নেমেই সোজা তাসনিয়ার দিকে এগিয়ে গেলো)
– আসসালামু আলাইকুম ম্যাডাম
তাসনিয়াঃ ওয়া আলাইকুম আসসালাম,জ্বি আপনারা?
চলবে…