Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 12

সায়নঃ তাসনিয়া আমার কথাটা একবার শোন প্লিজ…
তাসনিয়াঃ কিসের কথা?আপনাকে যা বলার তাতো সেদিনই বলে দিয়েছি
সায়নঃ কিন্তু তোমার দেখানো কারণটা মোটেও রিজনেবল না
তাসনিয়াঃ আপনার কাছে নাও হতে পারে বাট আমার কাছে এটাই মোস্ট রিজনেবল এক্সকিউজ
সায়নঃ প্লিজ তাসনিয়া,আমাকে জাস্ট একটা সুযোগ দাও।I am sure যেই প্রবলেমই হোক,খোলামেলা আলোচনা করে সব সলভ করা সম্ভব
তাসনিয়াঃ দেখুন আপনার সাথে খোলামেলা আলোচনা করার কোন রকম ইচ্ছে আমার নেই,Now will you please excuse me?
সায়নঃ তাসনিয়া…দাঁড়াও বলছি…কি আশ্চর্য!এই মেয়ের সমস্যাটা কি?গত এক সপ্তাহ ধরে ওর পেছন পেছন ঘুরছি,জাস্ট একটু কথা বলার জন্য কিন্তু এই মেয়েতো কোন কিছু শুনতেই চাইছে না!নাহ এভাবে হবে না,অন্য কোন ব্যবস্থা করতে হবে…

বৃষ্টিঃ ব্যাপারটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে না?
তাসনিয়াঃ কোন ব্যাপারটা?
বৃষ্টিঃ এই যে সায়ন ভাইয়া,বেচারা কতভাবে তোর সাথে কনট্যক্ট করার চেষ্টা করছে অথচ তুই…
তাসনিয়াঃ দেখ যেটা বুঝিস না সেটা নিয়ে কথা বলতে আসিস না
লোপাঃ ওতো ঠিকই বলেছে,তুই একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছিস।আরে বাবা,যা কিছুই হোক তাতে উনার দোষটা কোথায়?
তাসনিয়াঃ কোন দোষ নেই,সব দোষ আমার এবার খুশিতো তোরা?
লোপাঃ কি আশ্চর্য!তুই এভাবে রেগে যাচ্ছিস কেন?আমরা আবার কি করলাম?তুই আসলেই একটু বেশি বুঝিস
তাসনিয়াঃ কিচ্ছু করিস নি,যা করার আমিই করেছি,সবসময়তো সব দোষ আমারই হয়।সেই ছোটবেলায় একজন নিজের ইচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে চলে গেলো,আর পুরো দায়ভার পড়লো আমার উপর!কেন?সব দায় কেন আমাকেই নিতে হবে?আমি কি কাউকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলাম?
বৃষ্টিঃ কিসের মধ্যে কি?আমরা কি এখন ওই বিষয়ে কোন কথা বলেছি?
তাসনিয়াঃ বলিসনি বাট আমিতো জানি তোরাও আমার ব্যাপারে আর সবার মতোই ভাবিস
লোপাঃ তুই শুধু শুধু আমাদের ভুল বুঝছিস…
তাসনিয়াঃ স্কুলে যখন সবাই আমার দিকে বাঁকা চোখে তাকাতো,আমার আড়ালে আমাকে নিয়ে নানান রকম আজে বাজে কথা বলতো আমি বুঝেও না বোঝার ভান করতাম।বাবা মা কখনও আমাকে কিছু বুঝতে দেননি কিন্তু আমার আড়ালে ঠিকই চোখের জল ফেলতেন,মুখে না বললেও হয়তো মনে মনে ঠিকই সবকিছুর জন্য আমাকেই…
লোপাঃ আমাদের ভুল বুঝিস না তাসু,আমরা আসলে বুঝতে পারিনি।আমাদের ভুল হয়ে গেছে আর কক্ষণও তোকে এ ব্যাপারে কিছু বলবো না।তোর যা ভালো মনে হয়ে কর…
তাসনিয়াঃ ওই মানুষটার জন্য আমাকে বড়ো হতে হয়েছে একটা খাঁচায় বন্দী পাখির মতো,বাড়ির বাইরে এক পা ফেলতে গেলেও হাজারবার ভাবতে হয়েছে ওই নামটা আমার জীবনে একটা অভিশাপ তাই আর দ্বিতীয়বার আমি ওই নামের সাথে নিজেকে জড়াতে চাই না…
লোপাঃ তাসু…
বৃষ্টিঃ আহ লোপা,এখন কিছু বলিস না ওকে একটু একা থাকতে দে…

ইউনিভার্সিটির অদূরে ছোটো খাটো একটা আবাসিক এলাকা এটা,বেশিরভাগ বাড়ির বাসিন্দায় ভার্সিটির টিচার বা স্টাফ গোছের কেউ।এর বাইরে যা দু চারজন আছে তারা সবাই ই স্টুডেন্ট তবে সেই সংখ্যাটা নিতান্তই নগন্য,কারণটাও প্রেডিক্টেবল এখানকার সিটরেন্ট।অন্য যেকোন এরিয়ার চেয়ে এদিকের লিভিং কস্টটা একটু বেশি কিন্তু তবুও তাসনিয়াদের এই এলাকাতেই থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে কারণ এলাকাটা নিরিবিলি আর ওরা যেই এপার্টমেন্টে থাকে তার মালিক মহসিন সাহেবেরই এক আত্মীয়া।
সন্ধ্যার ঠিক আগ মুহূর্ত,এই এলাকার রাস্তাঘাট এমনিতেও একটু ফাঁকাই থাকে আর এই সময়টা হলেতো কথাই নেই।তাসনিয়া আনমনে রাস্তার এক পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে,হঠাৎ কেউ পেছন থেকে ওর মুখ চেপে ধরলো কিছু বুঝে উঠার আগেই চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসলো ওর।
(কিছুক্ষণ পর)
চোখ মেলতেই তাসনিয়া দেখলো ও অচেনা একটা রুমে,লম্বা হলরুমের মতো রুমটার দুই পাশের দেয়ালে দুটো রড লাইট জ্বলছে তাছাড়া আর উল্লেখ করার মতো কিছুই নেই।একটু ভালো করে চোখ বুলাতেই বুঝলো এটা একটা ইনডোর প্র‍্যাক্টিস রুম,সম্ভবত বাস্কেটবল কোর্ট।তাসনিয়া যখন আকাশ পাতাল ভাবতে ব্যস্ত তখনই পরিচিত একটা কণ্ঠস্বর ভেসে আসলো
সায়নঃ থ্যাঙ্ক গড তোমার ঘুম ভেঙ্গেছে,আমিতো জাস্ট একটু খানিই স্প্রে করেছিলাম তাতেই এই অবস্থা!আগে জানলেতো ওটা ছাড়াই…
তাসনিয়াঃ একি আপনি!আর আমি এখানে কি করে আসলাম?কি করেছেন আপনি আমার সাথে আর এই জায়গাটা…কোথায় নিয়ে এসেছেন আমাকে?
সায়নঃ ওরেব্বাবা,এক সাথে এতো প্রশ্ন!এতোকিছু জানার দরকার নেই শুধু এটা জেনে রাখো তোমার ভয় পাওয়ার কিছু নেই,আমি তোমার কোন ক্ষতি করিনি আর যে জন্য তোমাকে এখানে আনা সেটা শেষ হলেই তোমাকে সেফলি বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসবো
তাসনিয়াঃ আচ্ছা আমি কি ক্যম্পাসের ভেতরেই আছি?
সায়নঃ হুম স্টেডিয়াম,ইনডোর প্র‍্যাক্টিস রুমে,আগে কখনও এসেছো?
তাসনিয়াঃ আমাকে এখানে নিয়ে এসেছেন কেন?
সায়নঃ তোমার সাথে কথা বলবো তাই
তাসনিয়াঃ আপনি জানেন,আমি আপনার নামে পুলিশ কমপ্লেন করতে পারি?
সায়নঃ হুম জানি,অপহরণ প্লাস ইভটিজিং কেস
তাসনিয়াঃ তার পরেও আপনি…
সায়নঃ কি করব বলো তুমি যে আমার কোন কথায় শুনছিলে না,তাই ভাবলাম এভাবে যদি আমরা খোলামেলা আলোচনা করতে পারি তাহলে হয়তো একটা সল্যুশনে আসা সম্ভব

তাসনিয়াঃ দেখুন আমার ডিসিশন আমি জানিয়ে দিয়েছি তারপরেও আপনি কেন শুধু শুধু…
সায়নঃ কারণ আমি তোমাকে ভালোবাসি,অনেক বেশি ভালোবেসে ফেলেছি তোমায় আর সেটা আজ বা কাল থেকে নয় সেই প্রথম যখন তোমার সাথে দেখা হয়েছিল তখন থেকেই।এতোদিন পাগলের মতো খুঁজে বেড়িয়েছি তোমায় আর আজ যখব তোমাকে খুঁজে পেয়েছি এতো সহজে তোমাকে আবার হারিয়ে যেতে দিব!ইম্পসিবল…
তাসনিয়াঃ আপনি ঠিক কি করতে চাইছেন আমি না ঠিক…
সায়নঃ তোমাকে কিচ্ছু বুঝতে হবে না,জাস্ট একটা সুযোগ দাও আমাকে প্লিজ…
তাসনিয়াঃ দেখুন আপনি কিন্তু…
সায়নঃ আমি জানিনা অতীতে তোমার সাথে ঠিক কি হয়েছে,কোন জানতে চাইবোও না।জাস্ট সাতটা দিন সময় দাও আমাকে,আই প্রমিজ এর মাঝে যদি তোমার মনে জায়গা করে নিতে না পারি আর কোনদিন ভালোবাসার দাবি নিয়ে তোমার সামনে আসবো না…
তাসনিয়াঃ অসম্ভব…আমার পক্ষে এটা কখনোই সম্ভব না
সায়নঃ কেন?নিজের উপর তোমার ভরসা নেই?ভয় পাচ্ছো যে এই সাতদিনে আমার প্রেমে পড়ে যাবে তাইতো?
তাসনিয়াঃ মোটেও না,যেটা কখনও হবার নয় সেটা নিয়ে খামোখা ভয় পাবো কেন?
সায়নঃ তাই যদি হয় তাহলে আমার প্রপোজালটা একসেপ্ট করো নাহলে আমি ধরে নিব আমার ধারণায় ঠিক
তাসনিয়াঃ আপনার ধারণা ভুল
সায়নঃ Then prove it,try to prove me wrong
তাসনিয়াঃ Okay fine.সাত দিনেরইতো ব্যাপার Let’s see who wins.

সায়নঃ ডিল?
তাসনিয়াঃ হ্যাঁ ডিল
সায়নঃ তুমি কিন্তু কথা দিলে,এখন সাত দিন হওয়ার আগে কিন্তু কথার খেলাপ করতে পারবে না
তাসনিয়াঃ আমি কখনও কথার খেলাপ করি না
সায়নঃ ঠিক আছে,কাল সকাল সাতটায় রেডি থেকো,উইকেণ্ড বলে কথা দিনটাকে কাজে লাগাতে হবেতো
তাসনিয়াঃ এ্যা সকাল সাতটা?এ..একটু বেশিই সকাল হয়ে গেলো না?
সায়নঃ জ্বি না ম্যাডাম একদম পারফেক্ট টাইমিং।আর হ্যাঁ আরেকটা কথা অযথা সাজুগুজু করে টাইম ওয়েস্ট করো না,তোমাকে আমার এভাবেই ভালো লাগে
তাসনিয়াঃ আ..আমি কেন সাজুগুজু করতে যাবো?
সায়নঃ বলাতো যায় না রিলেশনশিপের ফার্স্ট ডে তে ফার্স্ট ডেট বলে কথা…
তাসনিয়াঃ রি..লেশন..শিপ!
সায়নঃ তা নয়তো কি?আগামী সাতদিন আমরা গার্লফ্রেন্ড-বয়ফ্রেণ্ড বুঝেছো?এই সাতদিন আমি যা করতে বলব,যেখানে যেতে বলব সব কিন্তু শুনতে হবে…
তাসনিয়াঃ এখন কি হবে?উনি যদি উল্টো পাল্টা কিছু…মনে হচ্ছে উনার ফাঁদে পা দিয়ে বিশাল বড় ভুল করে ফেললাম(মনে মনে)
সায়নঃ ও হ্যালো…এই যে মিস,কোথায় হারিয়ে গেলে?কি এতো ভাবছো বলতো?
তাসনিয়াঃ ইয়ে মানে…আমি…আসলে…
সায়নঃ চিন্তা করো না,আমি এমন কিছু করব না যাতে তোমার আত্মসম্মানে বাঁধে।মেয়েদের সম্মান নিয়ে খেলা করার অভ্যাস আমার একদমই নেই আর তোমার ক্ষেত্রেতো প্রশ্নই আসেনা।So just chill see you tomorrow…
(সায়ন চলে গেল,তাসনিয়া যেন ওখানেই আটকে গেছে।মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে এক দৃষ্টিতে সায়নের দিকে তাকিয়ে আছে)
সায়নঃ এই যে মিস,রাতটা কি এখানেই কাটানোর ইচ্ছে আছে?যদি থাকে তো এখনই বলে ফেলো,কালকের বদলে আজকে থেকেই আমাদের রিলেশনশিপটা শুরু করি কি বলো?

তাসনিয়াঃ (চমকে উঠে)এ্যা!আরে না না,এখানে..কেন…
সায়নঃ তাহলে ওভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?তাড়াতাড়ি এসো তোমাকে পৌঁছে দিয়ে তবে তো আমি বাসায় ফিরব…
তাসনিয়াঃ আপনি যান না,আপনাকে কে মানা করেছে?আমি একাই চলে যেতে পারবো
সায়নঃ রিয়েলি!Are you sure?
তাসনিয়াঃ এতে শিওর না হওয়ার কি আছে?
সায়নঃ এসো আমার সাথে,ওর হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসলাম।এখন কি বলবে?
তাসনিয়াঃ হায় হায় এতো ঘুটঘুটে অন্ধকার!এতোক্ষণ বদ্ধ ঘরের ভেতরে ছিলাম তাই বুঝতে পারিনি,এখন কি করব?
সায়নঃ রাত ক’টা বাজে জানো?প্রায় দশটা
তাসনিয়াঃ কিহ এতো দেরি হয়ে গেছে!কিন্তু এটা কিভাবে সম্ভব?
সায়নঃ ওই সামান্য ডোজে যদি এমন মরার মতো ঘুমাও তাহলেই সম্ভব
তাসনিয়াঃ সব আপনার জন্য হয়েছে,শুধু শুধু আমাকে ওইসব ডেঞ্জারাস জিনিষ কেন দিতে গেলেন?
সায়নঃ ওকে বাবা,সরি।আমার ভুল হয়ে গেছে।এখন দয়া করে বাইকে উঠবে?নাহলে কিন্তু আরও দেরি হয়ে যাবে
তাসনিয়াঃ হুহ নিজে দোষ করে এখন আবার কেমন ভাব নিচ্ছে দেখো।উঠবো না আমি,আপনি একাই চলে যান
সায়নঃ ঠিক আছে তাহলে সেই কথাই রইলো,আজ এই মুহূর্ত থেকে আমাদের রিলেশনশিপ শুরু সো বাড়ি ফেরার কোন দরকার নেই
তাসনিয়াঃ সর্বনাশ!এই লোকতো দেখছি সিরিয়াস মুডে চলে গেছে,ঝটপট বাইকে উঠে বসলাম।নিন চলুন…
সায়নঃ মুচকি হেসে বাইক স্টার্ট দিলাম,রাতটা পেরোলেই নতুন শুরু কিন্তু যে আশায় বুক বাঁধছি সেটা পূরণ হবে তো?
চলবে…