ডেড বডি ! Part- 02
গনিত টিচার এর জবান বন্দি শুনি। সে বলেছে,
-আমি তাদের গনিত শিক্ষক। এবং আমি তাদের প্রাইভেট ব্যাচ পড়াতাম তাদের নিয়ে একটি পিকনিক এর আয়োজন করেছি কক্সবাজারে । দিপ্তীদের দুইজনের এই যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু তারা বলেছে তাদের পরিবার থেকে নাকি যেতে দেয় না। তাই আমাদের সাথে যেতে পারবে নাহ বলেছে। তাই আমিও আর জোর করি নি। এরপর কি হয়েছে আমি জানি নাহ। স্কুলের স্যারের মুখে এই কথা শুনে চলে যাই মেয়ে দুইটির মায়ের কাছে৷
তাদের দুইজনকে জিজ্ঞাস করি আপনারা কেন যেতে দিলেন আপনার মেয়েকে?
তাদের মায়ের কথা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। তাদের মা বলে, আমার মেয়ে বলেছে,আজকে আমাদের পিকনিক। পরশু বাসায় ফিরবো কোন টেনশন করিও না।
তাই আমিও যেতে দিয়েছিলাম।
তখন আমি বলি,
-শুধু এই কথার ভিত্তিতে মেয়েকে যেতে দিলেন। আপনারা এত কেয়ার লেস কেন। মেয়ের প্রতি কোন ভালোবাসা ছিলো না আপনাদের। নাকি মেয়েকে রাস্তার পেয়েছেন। আপনাদের অসচেতনায় আজকে আপনাদের মেয়ে দুইটি লাশে পরিণত।
আমার কথা শুনে তারা কান্না শুরু করে দেয়। আমি সেখান থেকে থানার উদ্দ্যেশে রউনা দেই। ভাবতে থাকি। মেয়ে দুইটি তাহলে বাড়িতে মিথ্যা বলে কোথায় গিয়েছিলো। তার মানে কি মেয়ে দুইটি তাদের বয় ফ্রেন্ডের সাথে ঘুড়তে বা এই রকম কোন প্লান করেছিলো তাই মনে হয় বাড়িতে পিকনিকের কথা বলে বাহির হইছে। মেয়ে দুইটির বয়ফ্রেন্ডকে খুজে বের করতে হবে। যেই ভাবা সেই কাজ তাদের বান্ধুবীর থেকে খোজ নিয়ে যাই তাদের দুই জনের বয়ফ্রেন্ড আছে এবং খুজে বের করে তাদের বয়ফ্রেন্ড দুইজনকেই থানায় আনি।দুই জনের একজন বর্তমান গাইবান্ধার সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এর ছেলে।তাদের সাথে বাজে বিহাভ না করে ভালো ভাবেই জিজ্ঞাসা করি,
-তোমরা কি এই খুনের সাথে জড়িত আছো?
-না স্যার। আসলে সত্যি বলতে সেদিন দিপ্তীরা পিকনিকে যেতো কিন্তু প্রাইভেট ব্যাচের সাথে না, আমাদের সাথে যেতো । আমরা সব প্লান করেছিলাম আমরা ৪ জন কক্সবাজারেই যেতাম এমনকি আমরা টিকিট ও কেটেছি। সেদিন আমরা বাস স্টান্ডে দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু সেদিন দিপ্তী আর আরিফা দুইজনের একজনেও আছে নি। আমরা অনেকক্ষন দাঁড়িয়ে ছিলাম কিন্তু তারা আসে নি। কল দিলাম কিন্তু তাদের নাম্বার বন্ধ ছিলো। পরে ভাবলাম তাদের হয়তো বাসা থেকে আসতে দেয় নি তাই আসতে পারে নি। এই ভেবে আমরা দুইজন টিকিট ক্যান্সেল করে বাসায় চলে আসি এরপর থেকে তাদের সাথে আর কোন কোন্ট্রাক হয় নি আমাদের।
-আচ্ছা ঠিক আছে তোমরা বাসায় যাও।
তাদের বাসায় পাঠিয়ে অফিসে বসে থাকি। পাশে রহিম সাহেব বসে আছে। তিনি হঠাৎ বলে উঠে,
-স্যার ছেলে দুইটা মিথ্যা কথা বললো না তো?
-না মনে হয়, তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বোঝা গেল তারা সত্যি বলছে । তবুও তাদের উপর নজর রাখো।
-জ্বী স্যার।আর একটি কথা স্যার?
-হ্যা বলো।
-আমার কেমন জানি মনে হচ্ছে ডাক্তার অজয় এর ধারনাই ঠিক। এই খুনি সাইকো টাইপের। কারন এত সুন্দরী দুইটা মেয়েকে একা পেয়ে শুধু অত্যাচার করেছে কিন্তু ধর্ষন করে নি। আর স্যার সাইকো টাইপের মানুষগুলার কোন সেক্স ফিলিংস থাকে না।আর এমন টাইপের মানুষগুলো অল্পতেই রেগে যায় স্যার কিন্তু প্রকাশ করে না। ইনসাইডে বেধে রাখে তারা।
-হুম। তুমি ঠিক বলেছো। তবে আমাদের গাইবান্ধায় তো এমন সাইকো টাইপের ঘটনা এর আগে কখনো ঘটেছিলো কিহ?
-না মনে হয় স্যার। তবে আমাদের পুরাতন ফাইল দেখা দরকার।
-হুম আচ্ছা ঠিক আছে।
রহিম সাহেবকে একটা কাজে পাঠিয়ে দিয়ে
আমি একায় পুরাতন পেপার খুজতে থাকি।কিন্তু এই রকম কোন কেস পেলাম না । কাগজ গুলা দেখতে দেখতে ফোনটা বেজে উঠে। দেখি রং নাম্বার থেকে কল আসছে, ধরে সালাম দিতেই ওপাশ থেকে বলে,
-স্যার আমি রহিম। একটি লাশের সন্ধান পাওয়া গেছে বালাশীঘাটে তারাতারি আসেন।
– কিহ।তুমি কই। তোমাকে না কাজে পাঠালাম এখুনি ?আচ্ছা তুমি থাকো ওখানে আমি যাচ্ছি।
তারাহুরা করে কাগজ গুলো রেখে গাড়ি নিয়ে যাই বালাসিতে । গিয়ে দেখি এটিও একটি মেয়ের লাশ। তারাতারি করে আবার ডাক্তার অজয় এর কাছে পাঠাই। ২-৩ দিনের ব্যবধানে ৩ টি লাশ। পুরা শহর এখন ভয়ে আতংকিত।কারন এরকম ঘটনা এর আগে কখনই ঘটে নি। এবার ডাক্তার অজয় লাশটির ফরেন্সিক রিপোর্ট নিয়ে বলে,
-খুনি খুবই রাগ নিয়ে এমন অত্যাচার করছে। আর খুন করেছে। এইবার লাশটির ডান স্তন কাটা তবে তার শরীরে কোন স্থানে সুঁচ পাওয়া যায় নি আগের দুইটি লাশের মত।তবে এবারও NND লেখা আছে লাশটির উরুতে।
-তারমানে ডাক্তার NND এর কোন তথ্য সুত্র আছে।
-হুম।আমিও ভাবছি এই কোডের তাহলে সত্যি কোন রহস্য রয়েছে মনে হয়।
-তাহলে আমাদের এই কোডটি নিয়েই ভাবতে হবে ডাক্তার ।আর এর রহস্য ভেদ করতে হবে।
এই কথা বলে ডাক্তার অজয় এর থেকে বিদায় নিয়ে থানায় আসি।
এসে সেই কাগজ গুলা দেখতে থাকি আবার।কিন্তু কিছুই পেলাম না।কাগজ গুলা টেবিলে রেখে চেয়ারে মাথা দিয়ে চোখটা বন্ধ করে কি যেন ভাবছি তাতেই আবার কলটা বেজে উঠলো।তাকিয়ে দেখি রং নাম্বার থেকে। ধরার সাথে অপাশ থেকে একটি মেয়ে,
– আক্নেল আপনি কি পুলিশ।
-পুলিশ না CID কর্মকর্তা। কে তুমি?
-আক্নেল আমি রিয়ার বন্ধু। গাইবান্ধার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী। আপনার সাথে আমার একটু কথা আছে।
(রিয়া হচ্ছে আজকে যে লাশটি পাওয়া গেছে তার নাম) যাই হোক আমি তখন বলি,
-হ্যা বলো।
-একটু কষ্ট করে দেখা করবেন আক্নেল। প্লিজ?
-আচ্ছা ঠিক আছে কোথায় আছো তুমি?
মেয়েটির থেকে ঠিকানা নিয়ে দেখা করতে যাই ।
মেয়েটির সাথে দেখা করি। মেয়েটি বলে,
.
চলবে