Childhood marriage 3 !! Part- 10
মারুফঃ সর্বনাশ!ওটাতো সায়ন!কিন্তু ও এখানে কিভাবে?
দীপুঃ কিভাবে সেটা বাদ দিয়ে এখন কি করবি সেটা ভাব
তানিঃ তোর কি মনে হয়,মেয়েটা কি সায়নকে সত্যি সত্যিই আই লাভ বলেছে?
আসিফঃ মনেতো হচ্ছে বলেছে নাহলে সায়ন ওভাবে রেগে যেতো না
রাকিবঃ সার ওই পানিভর্তি বেলুনটা..হ্যাঁ রে মারুফ,তুই ওটা ইচ্ছে করেই দিয়েছিলি তাইনা?
মারুফঃ হ্যাঁ কিন্তু ওটাতো ওই হাঁদারামটার জন্য..সায়ন আবার এখানে আসলো কিভাবে?
তানিঃ ওসব পারে ভাবিস,আগে চল দেখি ওদিকের কি অবস্থা।সায়নের যে রাগ..আমারতো ভয় করছে…
সায়নঃ চলো আমার সাথে…
তাসনিয়াঃ হায় হায় এই লোকতো দেখছি হাত ধরে টানাটানি শুরু করেছে!কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?ছাড়ুন..ছাড়ুন বলছি…
সায়নঃ বুঝতে পারছি ওর মনে এখন হাজারো প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে,বেশ ভয়ও পেয়েছে,আর একটু সবুর করো সব বুঝতে পারবে (মনে মনে)
তাসনিয়াঃ একি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে?দে..দেখুন আমাকে ভুল বুঝবেন না প্লিজ,আ..আসলে তখন সিনিয়ররা..উনাদের কথাতেই আপনাকে…তারপর কিভাবে কি হয়ে গেল কিছুইতো বুঝতে পারলাম না
সায়নঃ লাইব্রেরীর পেছন দিকে চলে এসেছি,ওর হাতটা ছেড়ে দিলাম।Are you married yet?
তাসনিয়াঃ হোয়াট!মা..ম..মানে?
সায়নঃ মানেতো খুব পরিষ্কার,আমি জানতে চাইছি তুমি কি বিবাহিতা?
তাসনিয়াঃ না..ন..নাতো
সায়নঃ গুড কোন বয়ফ্রেন্ড আছে?
তাসনিয়াঃ এসবের মানে কি?দেখুন আমার বয়ফ্রেন্ড আছে কি নেই তা জেনে আপনি কি করবেন?
সায়নঃ যা জানতে চাইছি চুপচাপ বলে ফেলো
তাসনিয়াঃ আপনি কে বলুনতো?আমার সম্পর্কে এতো আগ্রহ কেন আপনার?
সায়নঃ তার মানে নেই ঠিকতো?
তাসনিয়াঃ হ্যাঁ কিন্তু…
সায়নঃ Then we are set
তাসনিয়াঃ মা..ম..মানে!
সায়নঃ Let’s date…
তাসনিয়াঃ Excuse me?
সায়নঃ তাহলে ওই কথায় রইলো আজ থেকে তুমি আমার জিএফ আর আজকে আমাদের রিলেশনশিপের ফার্স্ট ডে ঠিক আছে?
(তাসনিয়া আর কিছু বলার আগেই সায়নের পুরো গ্যাং ওখানে পৌঁছে গেল,সায়ন একবার ওদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো)
সায়নঃ ধীরে ধীরে ওর কানের কাছে এগিয়ে গেলাম তারপর বললাম,বাই বাই স্যুইটহার্ট,ক্লাস শেষে আবার দেখা হবে কেমন?
তাসনিয়াঃ আরেহ কি আশ্চর্য!কোথায় যাচ্ছেন আপনি?এক্সকিউজ মি..এই যে শুনছেন?
লোপাঃ এটা কি হলো?
তাসনিয়াঃ আমিওতো সেটাই ভাবছি
বৃষ্টিঃ যাক গে তুই ঠিক আছিস তো?
তাসনিয়াঃ হুম
বৃষ্টিঃ আচ্ছা ওই ভাইয়াটা…উনাকে তুই চিনিস?
তাসনিয়াঃ ক..ক..কই নাতো…
বৃষ্টিঃ তাহলে যে উনি তোকে কিস…আগে থেকে চেনা জানা না থাকলে উনি হুট করে তোকে কিস করতে যাবেন কেন?
তাসনিয়াঃ কিস!কি আশ্চর্য!উনি আমাকে কিস করলেন আমি জানতেও পারলাম না?
বৃষ্টিঃ তাহলে একটু আগে যে উনি তোকে জড়িয়ে ধরে…
তাসনিয়াঃ ওহ বুঝেছি,আসলে উনি আমাকে জড়িয়েও ধরেননি আর কিস ও করেননি,উনিতো জাস্ট আমার কানে কানে…
বৃষ্টিঃ তুই সত্যিই উনাকে চিনিস না?
তাসনিয়াঃ আরে বাবা,বলছিতো চিনি না।আমিতো উনার নামটা পর্যন্ত জানিনা…
লোপাঃ নামতো আমরাও জানিনা তবে উনাকে দেখে সবার যে অবস্থা হয়েছিল তাতে মনে হয় উনি খুব পাওয়ারফুল কেউ
বৃষ্টিঃ ঠিক বলেছিস,আমার মনে হয় উনি ওই গ্যাংটার লিডার টাইপের কেউ হবেন
তাসনিয়াঃ সে উনি যা ইচ্ছে হোন,আমাদের বাবা ওসব ভেবে কাজ নেই তোদের ইচ্ছে হয় ভাবতে পারিস
লোপাঃ তবে যাই বলিস,ভাইয়াটা কিন্তু হেব্বি দেখতে আমিতো প্রথম দেখেই ক্রাস খেয়েছি
বৃষ্টিঃ তোর আগে আমি খেয়েছি বুঝলি?সো আমার হিরোর দিকে একদম নজর দিবি না
লোপাঃ নজর দিলেই কি আর না দিলেই কি,উনার নজরতো অন্য জায়গায় আটকে গেছে
(লোপা আর বৃষ্টি দুজনেই তাসনিয়ার দিকে তাকিয়ে রহস্যময় হাসি দিল)
তাসনিয়াঃ কি আশ্চর্য!তোরা আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছিস কেন?
লোপাঃ কি আর করব বল,আমাদের ক্রাস যখন আরেকজনের উপর ক্রাস খেয়ে বসে আছে তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আমাদের আর কিই বা করার আছে?
তাসনিয়াঃ তোরা থামবি?কি এক ছাতার ছেলেকে নিয়ে পড়ে আছে যত্তসব…
লোপাঃ আরে ইয়ার,রাগ করছিস কেন আমরাতো এমনিই ফাযলামি করছিলাম।আচ্ছা চল ওসব বাদ এখন ক্লাসে যাই,আরে আমরা ত্রিরত্ন যেখানে একসাথে আছি সেখানে ওসব ছেলে টেলের কি দরকার?
সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম…
ইনডোর প্র্যাক্টিস রুমে সায়ন একা একাই বাস্কেটবল প্র্যাক্টিসে ব্যস্ত,অবশ্য প্র্যাক্টিসটা মুখ্য উদ্দেশ্য না আসল উদ্দেশ্য বাকিদের এভয়েড করা।সকালের ঘটনার পর থেকেই সব কয়টা যাকে বলে একেবারে মৌমাছির মতো পেছন পেছন ঘুরছে আর তাই ই এই ব্যবস্থা।
ব্যাক টু ব্যাক চারটা বল বাস্কেটের ভেতর ছুড়ে দিল সায়ন,পাঁচ নম্বরটা বাস্কেট গলে বেরিয়ে যেতেই সেটা পড়লো মারুফের হাতে।
সায়নঃ একি তুই এখানে?
মারুফঃ কি ভেবেছিলি,এভাবে পালিয়ে বাঁচতে পারবি?
সায়নঃ আমি খামোখা পালাতে যাবো কেন?
মারুফঃ বাজে কথা রাখ আর বল আসল কাহিনী কি
সায়নঃ কিসের কাহিনী?
মারুফঃ সকালে তাসনিয়ার সাথে ওই বিহেভের মানেটা কি?
সায়নঃ তাসনিয়া?সেটা আবার কে?
মারুফঃ সকালে সবার সামনে যাকে কিস করলি,আরে ওই যে মিস গোলাপি আই মিন গোলাপি জামা পরা ওই বার্বি ডলের মতো দেখতে মেয়েটা…
সায়নঃ ওহ ওর নাম তাহলে তাসনিয়া?নাইস নেম…
মারুফঃ তার মানে!তার মানে তুই নাম না জেনেই মেয়েটাকে কিস করে বসলি!
সায়নঃ কিস আবার কখন করলাম?
মারুফঃ তার মানে?
সায়নঃ আরে বাবা আমিতো জাস্ট ওর কানে কানে একটা কথা বলার জন্য…তোরা শুধু শুধুই ভুল বুঝছিস
মারুফঃ রিয়েলি?
সায়নঃ বাই দ্য ওয়ে ও কিন্তু তোদের ভাবি সো ওর দিকে একদম নজর দিবি না আর ওর খেয়াল রাখবি কেমন?
মারুফঃ মানে!এই তুই কি সিরিয়াস নাকি?
সায়নঃ শুধু শুধু ইয়ার্কি মারতে যাবো কেন?
মারুফঃ তাহলে তোর সেই মিস্ট্রি উওম্যান আই মিন মিস ড্রামা কুইনের কি হবে?
সায়নঃ ওহ তোকেতো বলাই হয়নি,তাসনিয়াই আমার সেই মিস ড্রামা কুইন…
মারুফঃ হোয়াট!এই সায়ন,ও যদি মিস ড্রামা কুইন হয় তাহলে ওর সাথেই তুই বান্দরবান গিয়েছিলি?
সায়নঃ হুম
মারুফঃ তারমানে এতোদিন ওকেই খুঁজছিলি?
সায়নঃ হুম,আচ্ছা এখন বাই আমি বরং আমার কিউট জিএফটার সাথে দেখা করে আসি
মারুফঃ এই সায়ন,কোথায় যাচ্ছিস?আরে আমার আরও অনেককিছু জানার আছেতো…সায়ন…এই সায়ন…
ক্লাস শেষে বের হতেই সায়নের মুখোমুখি হলো তাসনিয়া,একটা বড় সাইজের লাল গোলাপ হাতে নিয়ে ওর জন্যই অপেক্ষা করছিল সায়ন।তাসনিয়া দেখেও না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে গেল,সায়নও নাছোড়বান্দা,ছুটে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।
সায়নঃ এই যে মিস ড্রামা কুইন,জলজ্যান্ত একটা মানুষ দাঁড়িয়ে আছে আর তুমি না দেখেই চলে যাচ্ছো?
তাসনিয়াঃ জ্বি আমাকে বলছেন?
সায়নঃ জ্বি ম্যাডাম আপনাকেই বলছি
সায়নঃ কেন আমার সাথে কি আপনার কোন দরকার আছে?আচ্ছা কে আপনি বলুনতো…
সায়নঃ আমি কে!পুরনো অভ্যেসটা এখনও যায়নি দেখছি
তাসনিয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে সেই নাটক করা আর কি,মাই গড কি সলিড অভিনয়!তোমারতো সিনেমায় যাওয়া উচিত ছিল
তাসনিয়াঃ বাজে কথা ছাড়ুন,সেই কখন থেকে দেখছি আজে বাজে বকে যাচ্ছেন!এই আপনি কে বলুনতো?শুধু শুধু আমার পেছনে পড়ে আছেন কেন?
সায়নঃ আচ্ছা তুমি কি সত্যিই আমাকে চিনতে পারছো না?
তাসনিয়াঃ আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আমি ফাযলামি করছি?
সায়নঃ না মানে…
তাসনিয়াঃ শুনুন আপনার যদি আর কিছু বলার নাই থাকে তাহলে আমি এখন আসছি,পরে দেখা হবে বাই…
(তাসনিয়া চলে গেল,সায়ন অবাক হয়ে ওদিকে তাকিয়ে থাকলো)
তাসনিয়াঃ আচ্ছা ও কি সত্যিই আমাকে চিনতে পারছে না,নাকি চিনেও না চেনার ভান করছে?কিন্তু তাই বলে ওই তিনদিনের এমন মেমোরেবল জার্নির কথা ভুলে যাবে!এও কি সম্ভব?
(পরদিন)
রাকিবঃ কি আশ্চর্য!তুই কি সিরিয়াসলি আমার সাথে কোন কথা বলবি না?কাল থেকে দেখছি,তুই অযথাই আমার সাথে যাচ্ছেতাই বিহেভ করে যাচ্ছিস।কেন এমন করছিস,আমার অপরাধটা কি একবার বলবি তো?
তানিঃ আমার যা ইচ্ছে আমি করব,যার সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হবে বলব যার সাথে হবে না বলব না তাতে তোর কি?
রাকিবঃ আমার কি মানে!আফটার অল তুই আমার বেস্টফ্রেণ্ড..
তানিঃ ওই কে তোর বেস্টফ্রেণ্ড!আমি কারো বেস্টফ্রেণ্ড ট্রেণ্ড না বুঝেছিস?
রাকিবঃ তানি ইয়ার,এমন করে না প্লিজ..তুই না লক্ষী মেয়ে..
তানিঃ কেন শুধু শুধু আমার পেছনে পড়ে আছিস বলতো?যা না তোর ওই বার্বি ডলকে খুঁজে বের কর না,তারপর ওর ডাইনে বাঁয়ে যত ইচ্ছে ঘুরবি আর নাচ গান করবি কেউ কিচ্ছু বলবে না…
রাকিবঃ ওহ তার মানে তুই এই জন্য রাগ করে আছিস!জেলাস?
তানিঃ হুহ্ আমার বয়েই গেছে তোর জন্য জেলাস হতে,আয়নায় নিজের চেহারাটা একবার দেখেছিস?
রাকিবঃ সেতো রোজই দেখি আর দেখি বলেই বলছি
তানিঃ যা যা তোর ওই বার্বি ডলের কাছেই যা,ফের যদি আমার পেছন পেছন ঘুরঘুর করেছিস তাহলে কিন্তু…
রাকিবঃ কি রে যাবো,সায়ন জানতে পারলে যে আমাকে খুন করে ফেলবে…
তানিঃ তার মানে শুধুমাত্র সায়নের ভয়ে তুই…নাহলে এতোক্ষণে…
রাকিবঃ তা নয়তো কি?এমন সুন্দরী মেয়েকে রেখে কি তোর মতো বান্দরনীর পেছনে ঘুরঘুর করব!
তানিঃ তবে রে…দাঁড়া কোথায় পালাচ্ছিস?একবার যদি ধরতে পারি না…তোর চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করে দিব..
মারুফঃ ওই তোরা থামবি?সকাল সকাল কি শুরু করলি…
দীপুঃ কি আর করবি বল এ দুটোকেতো চিনিসই রীতিমতো টম এণ্ড জেরি,ঝগড়াঝাটি মারামারি না করলে কি ওদের পেটের ভাত হজম হবে?
মারুফঃ যা বলেছিস,তবে রাকিবটা না আস্ত একটা গাধা।আমরা সবাই জানি তানি ওকে কতটা ভালোবাসে,ফ্রেণ্ড হিসেবে না তার থেকেও বেশি কিছু ভাবে শুধু ওই গাধাটায় কিছু বোঝে না
আসিফঃ আসলেই কি বোঝে না নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করে কে জানে?
দীপুঃ আচ্ছা সায়ন কই রে?কালকের পর থেকে ওর টিকিটার পর্যন্ত দেখা নেই!
মারুফঃ কি করে পাবি?ও যে এখন ওর মিস ড্রামা কুইনে মজে আছে…
আসিফঃ তবে যাই বলিস মেয়েটা কিন্তু ভয়ংকর রকমের সুন্দরী,আমি এতোদিন ভাবতাম সায়ন খামোখা কোথাকার কোন মিস্টিরিয়াস মেয়েকে খুঁজে বেড়াচ্ছে কিন্তু কাল মেয়েটাকে দেখার পর বুঝেছি ও কেন এমন পাগলের মতো একটা মেয়ের পেছনেই এতোদিন পড়ে ছিল…
(ওরা যখন সায়নকে নিয়ে এসব আলোচনায় ব্যস্ত তখনই সায়ন ক্লাসরুমে ঢুকলো আর এসেই কাউকে হাই হ্যালো না দিয়েই সোজা নিজের সিটে ধপ করে বসে পড়লো)
মারুফঃ কি রে তোর আবার কি হলো?চেহারাটা এমন বাংলার পাঁচ বানিয়ে রেখেছিস কেন?
সায়নঃ ও নাকি আমাকে চিনে না,আগে নাকি কখনোই আমার সাথে দেখা হয়নি…
মারুফঃ মানে?তুই কি শিওর ওই সেই মেয়ে?
সায়নঃ তা নয়তো কি?এতোদিন পাগলের মতো যাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি তাকে চিনতে ভুল করব!জাস্ট ইম্পসিবল
দীপুঃ তাহলে এখন কি করবি?
সায়নঃ সত্যিটা খুঁজে বের করতে হবে,ও কি আসলেই আমাকে চিনতে পারছে না নাকি চিনেও না চেনার ভান করছে?আমাকে জানতেই হবে…
চলবে…