Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 05

এই মেয়ে নিশ্চিত পাগল হয়ে গেছে,একটু এদিকে আসবে প্লিজ…ভাই এক মিনিট…
– কি?কি প্রবলেম?এদিকে নিয়ে আসলেন কেন?
– আচ্ছা আপনি কি সত্যিই পাগল?
– কেন বলুনতো?
– আমরা দুজন এক রুমে একসাথে!এ..এটা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে গেল না?
– কেন বাড়াবাড়ি কেন হবে?ঠিকইতো আছে
– কি ঠিক আছে শুনি?আরে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে এক রুমে…আপনি কি সত্যিই বুঝতে পারছেন না নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করছেন?
– দুটোই
– মানে?
– একটু ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন আপনিও বুঝতে পারবেন
– কি বুঝবো?
– একবার ভেবে দেখুন অচেনা অজানা একটা জায়গা,একা একটা মেয়ে একটা রুমে,রাত বিরাতে যদি কোন বদলোক…তাই বলছি…
– আর আমি যদি কিছু…
– সে আপনি কখনোই পারবেন না
– কেন?আমি কি পুরূষ মানুষ না?
– তা ঠিক আছে কিন্তু কিছু করার হলে আপনি অনেক আগেই….
– ঠিক আছে ঠিক আছে…
– আর তাছাড়া আমার কাছেতো টাকা পয়সা কিছুই নেই,তাই বলছি শুধু শুধু খরচ বাড়িয়ে কি লাভ?
– আচ্ছা আমি কি আপনাকে টাকার কথা কিছু বলেছি?
– না তা বলেননি কিন্তু তবুও…
– ঠিক আছে ঠিক আছে,আর কথা বাড়িয়ে লাভ নেই।আমরা বরং এক রুমেই থাকবো…
(কিছুক্ষণ পর)

ছোট্ট একটা রুম,বেডটাও দুজন মানুষের থাকার জন্য বেশ ছোট।এ্যাটাস্টড বাথরুম,ঘরের এককোণে চারকোণা একটা টেবিল আর দেয়াল জুড়ে এখানে সেখানে বিভিন্ন নর-নারীর ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশার কুরুচিপূর্ণ ছবি সাটানো রয়েছে।ঘরটার দিকে একবার চোখ বুলিয়েই মুচকি হেসে মেয়েটার পাশে বসে পড়লো সায়ন,ও বসতেই মেয়েটা লাভ দিয়ে উঠে বসলো
– দেখুন উল্টো পাল্টা কোন কিছু মাথায় আসার আগেই বলে দিচ্ছি আমি কিন্তু ফাইট করতে জানি
– ফাইট!ব্ল্যাকবেল্ট নাকি?(মুচকি হেসে)
– না নামে…
– জাস্ট রিল্যাক্স,আমি উল্টো পাল্টা কিছু করব না
– করতে চাইলেও পারবেন না
– আপনি কি আমাকে চ্যালেঞ্জ করছেন?নাকি আমি যাতে কিছু করি তারজন্য উস্কানি দিচ্ছেন?
– কোনটাই না,আমি জাস্ট বলতে চাইছি আমার কাছে আসার চেষ্টা করলে আমিও কিন্তু ছেড়ে দিব না
– কিভাবে আটকাবেন শুনি?আপনার ওই ব্ল্যাকবেল্ট মার্কা ফাইট দিয়ে?
– উহু এটা দিয়ে
– এটা…আরে এটাতো…
– পেপার স্প্রে সবসময় আমার সঙ্গেই থাকে as a safety measure…
– বাহ কি বুদ্ধি আপনার!আরে এতোই যখন বুদ্ধিমতি তাহলে নিজের পার্স আর ফোনটা নিয়ে নামলেই পারতেন,সবচেয়ে ভাইটাল জিনিসগুলো বাদ দিয়ে এসব ফালতু জিনিস সাথে নিয়ে ঘুরছে!যত্তসব…
– এই দেখুন,আপনি কিন্তু এবার আমাকে ইনসাল্ট করছেন
– আচ্ছা ঠিক আছে সরি,এখন আর তর্ক করতে ভালো লাগছে না।আমি প্রচণ্ড টায়ার্ড প্লিজ এবার একটু ঘুমাতে দিন
– একি আপনি শুয়ে পড়লেন যে?
– তা কি করব,বললামতো ঘুম পাচ্ছে।আপনার ঘুমাতে ইচ্ছে করলে আপনিও শুয়ে পড়ুন
– উঠুন…উঠুন বলছি…
– কেন?(বিরক্তি নিয়ে)
– কেন আবার,আপনি এখানে ঘুমালে আমি কোথায় ঘুমাবো?
– আপনি ঠিক কি বলতে চাইছেন বলুনতো
– আচ্ছা আপনি কি কখনো সিনেমা দেখেননি?
– কেন বলুনতো?
– সিনেমার হিরোরা কি করে দেখেননি?নায়িকাকে বিছানা ছেড়ে দিয়ে…
– দেখুন এটা কোন সিনেমা না আর আমিও কোন সিনেমার হিরো না।আপনার যেখানে ইচ্ছে হয় আপনি ঘুমান বাট আমিতো এখানেই ঘুমাবো,ওসব হিরোগিরি আমাকে দিয়ে হবে না

– কিন্তু…
– দেখুন এমনিতেও এই ঠাণ্ডার মধ্যে মেঝেতে ঘুমানো কারো পক্ষেই সম্ভব না আর আপনি নিজেইতো একরুমে থাকার জন্য ইনসিস্ট করলেন তাই বলছি আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ুন
– কি করব বুঝতে পারছি না,এখনতো মনে হচ্ছে নিজের জালে নিজেই ফেসে গেছি।কেন যে একরুমে থাকার কথাটা বলতে গেলাম…
– বুঝতে পারছি মেয়েটা প্রচণ্ড ভয় পাচ্ছে যদিও সেটা আমাকে বুঝতে দিচ্ছে না।কি আর করার ঝটপট উঠে বসলাম,কিছু একটা ব্যবস্থাতো করতেই হবে
– উনি হঠাৎ উঠে বসলেন কেন?কি করতে চাইছেন কে জানে…
– ব্যাগ থেকে বেডসিটটা বের করে দড়ি বেঁধে বেডের ঠিক মাঝ বরাবর টানিয়ে দিলাম,এখন বেডটাকে দেখে মনে হচ্ছে আলাদা দুটো রুমের আলাদা দুটো বেড
– এ…এসব…
– আসলে আমরা ফ্রেণ্ডরা মিলে হাইকিংয়ে যাচ্ছি আর মাউন্টেইন ট্র‍্যাকিংয়ে এসব একদম নেসেসারি।নিন এবার শুয়ে পড়ুন…
– অবাক হয়ে লোকটার দিকে তাকিয়ে আছি,কি বলব ঠিক বুঝতে পারছি না
– কি হলো ওভাবে কি দেখছেন?বেরিকেডটা পছন্দ হয়নি বুঝি?ঠিক আছে আমার মুখটা যদি আপনার এতোই পছন্দ,তখন না হয় চাদরটা নামিয়েই ফেলি তারপর সারারাত এভাবেই তাকিয়ে থাকবেন…
– এই না না,ওটা থাক গুড নাইট…
– (মুচকি হেসে)গুড নাইট…

ওরা ঘুমিয়েতো পড়লো কিন্তু নাইটটা কিন্তু মোটেও গুড হলো না।মাঝরাতে হাঠাৎই দরজায় টোকা পড়লো,লাফ দিয়ে উঠে বসলো সায়ান,দরজা খুলতেই দেখলো কেয়ারটেকার।করিডোর ধরে লোকজন রীতিমতো হন্তদন্ত হয়ে ছুটাছুটি করছে।
– কি হয়েছে ভাই?সবাই এভাবে…
– কথা কওনের সময় নাই তাড়াতাড়ি ভাগেন পুলিশের রেড পড়ছে
– আর সময় নষ্ট না করে রুমে ফিরে গেলাম কিন্তু একি এই মেয়েতো এখনও ঘুমাচ্ছে!এই যে…উঠে পড়ুন কুইক…শুনতে পাচ্ছেন?এই যে মিস…হ্যালো…
– লাফ দিয়ে উঠে বসলাম।কি হয়েছে এভাবে চেঁচাচ্ছেন কেন?
– কি হয়েছে সেটা পরেও জানতে পারবেন আপাতত দৌঁড় দেন
– কিন্তু কেন?
– ফর গডস সেক এখন কোন প্রশ্ন করবেন না,যা বলছি চুপচাপ তাই করেন প্লিজ…
– কি আর করার,উনার হাত ধরেই ছুটতে লাগলাম কিন্তু একটু পরেই থমকে দাঁড়ালাম
– কি হলো থেমে গেলেন কেন?
– আমাকে একটু ফিরে যেতে হবে
– কিন্তু কেন?
– কারণ আমি কুটুসকে ওখানেই ফেলে এসেছি,না জানি বেচারা একা একা কি করছে!How could I do this?
– হোয়াট!কুটুস,ওই খরগোশের বাচ্চাটা?ওটার জন্য এখন আমাদের ফেরত যেতে হবে!Are you kidding me?
– খবরদার খবরদার ওকে খরগোশ বলবেন না
– খরগোশকে খরগোশ বলব নাতো কি বলব?
– ওর নাম কুটুস আর ও আমার বেবি
– হোয়াট!এতো আচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়লাম,এই দেখুন আমি না আর ফিরে যেতে পারব না তাও আবার আপনার ওই কুটুসকে ফিরিয়ে আনতে আপনার ইচ্ছে হয় আপনি যান

– ওকে ফাইন তাই হবে,উল্টো দিকে ফিরে দ্রুত হাঁটতে লাগলাম
– কি আশ্চর্য!এই মেয়েতো দেখছি সত্যি সত্যিই…ছুটে গিয়ে ওকে আটকালাম
– ছাড়ুন… ছাড়ুন বলছি
– না ছাড়বো না,তোমার কোন ধারণা আছে ওখানে ফিরে গেলে কি হতে পারে?আরে বাবা ওখানে আজ পুলিশের রেড পড়েছে,আমাদেরকে হোটেলের আশেপাশেও যদি দেখতে পায় সোজা লকাপে নিয়ে গিয়ে তুলবে বুঝেছো?
– পুলিশ খামোখা আমাদের ধরতে যাবে কেন?আমরা আবার কি করলাম?
– আমরা কিছু করিনি বাট ওই হোটেলটা,ওখানে রীতিমতো প্রস্টিটিউশন বিজনেস চলে
– হোয়াট!
– জ্বি ম্যাডাম,আর আমরা দুজন যে একরুমে একসাথে থেকেও কিছুই করিনি এ কথাটা একটা পাগল ছাড়া আর কেউই বিশ্বাস করবে না
– সে যাই হোক,আমাকে এখন যেতে হবে,আমার বাচ্চাটা না জানি একা একা কত্ত ভয় পাচ্ছে
– তুমি বুঝতে পারছো না কেন,পুলিশ ওখানে ওঁত পেতে বসে আছে
– সে আমি জানিনা,আমার কুটুসকে চাই মানে চাই।প্লিজ আমার কুটুসকে আমার কাছে এনে দিন,আপনি না এনে দিলে আমি একাই চলে যাবো…
– আচ্চা ঠিক আছে আমি দেখছি কি করা যায়,এই মেয়েতো দেখছি আমার লাইফটাকে হেল করে তবেই ছাড়বে।কোন কুক্ষণে যে ওর সাথে দেখা হয়েছিলো…
(কিছুক্ষণ পর)
রীতিমতো হাঁপাতে হাঁপাতে সায়ন বুড়ো গাছটার নিচে এসে দাঁড়ালো।
– কই বেরিয়ে আসুন,এখন আর কোন ভয় নেই
(গাছের আড়াল থেকে গুটি গুটি পায়ে মেয়েটা বেরিয়ে এসে সায়নের সামনে দাঁড়ালো)
– (মুচকি হেসে)এই ধরুন আপনার বাচ্চা
– কুটুস…মাই বেবি…

– মেয়েটা বাচ্চাদের মতো খরগোশটাকে আদর করছে,ওকে এভাবে দেখে একটু আগে মনের মধ্যে জমে থাকা চাপা ক্ষোভ নিমিষেই গায়েব হয়ে গেল
– মাম্মা অনেক সরি,মাম্মা তোমাকে একা একা ওখানে ফেলে এসেছিল!মাম্মা খুব পঁচা,ভাগ্যিস পাপা ছিল তাইতো তোমাকে মাম্মার কাছে ফিরিয়ে আনলো।দেখি পাপাকে থ্যাঙ্ক ইউ বলে দাওতো…
– অবাক হয়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি,এই মেয়ে বলে কি!ও যদি কুটুসের মাম্মা হয় আর আমি পাপা তাহলেতো…
– থ্যাঙ্ক ইউ থ্যাঙ্ক ইউ থ্যাঙ্ক ইউ সো…মাচ…আপনি না থাকলে কি যে হতো…
– কিছু বুঝে উঠার আগেই মেয়েটা আমার বুকে ঝাপিয়ে পড়লো,শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই কথাগুলো বললো।আমি রীতিমতো জমে গেছি,এই পরিস্থিতিতে কি করা উচিত ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না
– হঠাৎই বুঝতে পারলাম আমি ঠিক কি করে বসেছি,ঝটপট উনাকে ছেড়ে দূরে সরে দাঁড়ালাম
– ইয়ে মানে…বলছিলাম যে…
– এখন কি করব?কি বলব?ধুর ছাই কেন যে এতোটা এক্সাইটেড হয়ে গেলাম…(মনে মনে)
চলবে…