Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 04

আর কতদূর?
– কি?
– সেই কখন থেকে হেঁটেই যাচ্ছি,বাসস্টপ কখন আসবে?
– সেটা আমি কি করে বলব?আমি কি আগে কখনও এই পথে এসেছি নাকি…
– এ্যা হ্যাঁ আমি আর পারবো না..
– এই আর একটু গেলেই পেয়ে যাবো,আর একটু কষ্ট করেন প্লিজ
– পারব না,সেই কখন থেকে বলছেন আরেকটু আরেকটু।আমার আর একটুও শক্তি নেই আমি আর হাঁটতে পারব না
– আর একটু প্লিজ…
– হুম একটু কষ্ট করে আরও কিছুক্ষণ হাঁটলাম কিন্তু কপাল খারাপ হলে যা হয় আর কি,হঠাৎ করে পা টা মচকে গেল!হাঁটাতো দূরে থাক আর দাঁড়িয়ে থাকাও সম্ভব হলো না তাই রাস্তার মাঝেই বসে পড়লাম
– আবার কি হলো,এখানে বসে পড়লেন যে?উঠুন…উঠুন বলছি
– পারব না
– মানে?
– আরে আমি কি ইচ্ছে করে বসে পড়েছি নাকি,পা মচকে গেছে তাইতো…
– হোয়াট?কই দেখি,ওর সামনে বসে পড়লাম।পায়ে হাত দিতেই চেঁচিয়ে উঠলো
– আউচ!কি করছেন লাগছেতো…
– আচ্ছা আপনি কি আর একটুও হাঁটতে পারবেন না?দেখুন না একটু কষ্ট করে প্লিজ
– বললামতো পারবো না,বাংলা ভাষা বোঝেন না নাকি?
– পারব না বললেই হলো?এমনিতেই বেশ রাত হয়ে গেছে এর থেকে দেরি করলে হয়তো আর কোন বাসই পাবো না।দেখুন আপনার জন্য না আমি বাস মিস করতে পারব না
– তো আমি কি করব?আমি কি বলেছি আমার জন্য ওয়েট করতে?আমি আর এক পাও হাঁটতে পারব না ব্যাস,আপনার তাড়া থাকলে আপনি একাই চলে যান জাস্ট লিভ মি এ্যলোন
– তা বললেতো হবে না ম্যাডাম,আমিতো ইচ্ছে করে আপনাকে সাথে নিয়ে ঘুরছি না আপনিইতো জোর করে আমার গলায় ঝুলে পড়েছেন…
– কিহ আমি আপনার গলায় ঝুলে পড়েছি!এই আপনি আয়নায় কখনও নিজের চেহারাটা দেখেছেন?
– দেখুন অনেক হয়েছে,এখন এসব নিয়ে ঝগড়া করে ওয়েস্ট করার মতো টাইম নেই তাই বলছি দয়া করে উঠে পড়ুন প্লিজ
– আমি উঠবো না আপনার যা ইচ্ছা করেন,আমি ওসবের মধ্যে নেই
– যা ইচ্ছে করতে পারিতো?
– হুম
– ওকে ফাইন,এই আপনার কুটুসকে একটু ধরবেন?
– কেন?
– ধরুন তাহলেই বুঝতে পারবেন
– ওকে

– আর টাইম ওয়েস্ট না করে মেয়েটাকে কোলে তুলে নিলাম
– উনি যে আচমকা এমন একটা কাজ করে বসবেন বুঝতে পারিনি তাই বুঝতে একটু সময় লাগলো।আরে আরে এসব আপনি…এসব কোন ধরণের অসভ্যতামি?নামান আমাকে…নামিয়ে দিন বলছি…
– নো ওয়ে,আপনিইতো বললেন আর হাঁটতে পারবেন না আর আমার যা ইচ্ছে হয় করতে পারি আমিতো আপনার কথা মতোই কাজ করছি
– দেখুন আপনি কিন্তু খুব বাড়াবাড়ি করে ফেলছেন
– দেখুন আপনার হাঁটতে প্রবলেম হচ্ছে আর আপনাকে এই অবস্থায় রেখে চলে যাবো সেটাও আমার পক্ষে সম্ভব না so it’s the best solution for all these problems.just consider it like that please…
– আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু…
– আবার কি?
– আসলে আমার না এভাবে খুব আনইজি লাগছে তাই বলছিলাম যে…
– কি?
– এভাবে কোলে না নিয়ে যদি পিগিব্যাক করে…
– পিগিব্যাক!সেটা আবার কি?
– ওই যে কোরিয়ান ড্রামাগুলোতে নায়ক নায়িকাকে যেভাবে ক্যারি করে আর কি,এই আপনি কখনো কোরিয়ান ড্রামা দেখেননি?
– না
– ওহ তাই বলেন এই জন্যই বোধহয় আপনি এমন আনরোমান্টিক
– হোয়াট!
– না মানে আমি বলতে চাইছিলাম আনসোসিয়াল
– আপনার কথা কি শেষ?
– হুম
– তাহলে চুপচাপ যা করতে চাইছিলেন আই মিন ওই পিগিব্যাক না কি যেন,করে ফেলেন
– কিন্তু তারজন্যতো আপনাকে বসতে হবে
– কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ বসে পড়লাম,আর বসতে না বসতেই ম্যাডাম লাফ দিয়ে আমার পিঠে ঝুলে পড়লো!
(কিছুক্ষণ পর)
– একটা কথা বলবো?
– কথাটা কি খুব ইম্পর্টেন্ট?যদি হয় তাহলে বলে ফেলুন নাহলে থাক
– আচ্ছা আপনি কি সবসময়ই এমন কম কথা বলেন?
– এটাই আপনার ইম্পর্ট্যান্ট কথা?
– এই না না,এটা না
– তাহলে?
– আপনাকে অনেক কষ্ট দিচ্ছি তাইনা?
– কখনও কাউকে পিগিব্যাক করেছেন?
– উহু

– যদি করতেন তাহলে আর এই প্রশ্নটা করতেন না
– I am sorry
– হোয়াট!সরি কেন?আমি কি ভুল কিছু শুনলাম?
– আপনাকে প্রথমে সাইকো বলার জন্য,আসলে আপনি না অনেক ভালো
– ইটস ওকে
– ভাবছি আপনাকে আর মি.সাইকো বলব না কিন্তু তাহলে কি বলা যায় বলুনতো?মি.ইনোসেন্ট,মি.জেন্টলম্যান,নাকি মি.নোবেলম্যান?
– আর আপনি মিস ড্রামাকুইন(বিড়বিড় করে)
– কিছু বললেন?
– কই নাতো
– I think noble man is okay.what do you think?
– দেখুন,আপাতত একটু চুপ থাকবেন প্লিজ?এসব নিয়ে নাহয় পরেও ভাবা যাবে
– ওকে এই চুপ করলাম,আর আপনি না বলা পর্যন্ত একটা কথাও বলব না
– রিয়েলি?থ্যাংক গড…

সায়ানরা যখন বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছলো তখন অনেক রাত,এখানকার চারপাশের অবস্থা দেখে অন্তত তাই মনে হচ্ছে।এসেই একটা দুঃসংবাদ পেয়েছে,লাস্ট ট্রিপটা নাকি কিছুক্ষণ আগেই ছেড়ে গেছে!
ছোট খাটো একটা বাজার বসে এখানে,শেষ বাসটা ছেড়ে যাওয়ার সাথে সাথে বাজার ভাঙতে শুরু করেছে।এখন হাতে গোনা দুই একটা দোকান খোলা আছে বাঁকি সবই বন্ধ
– এই সবকিছু আপনার জন্যই হয়েছে
– কি আশ্চর্য!আমি আবার কি করলাম?
– কি করলেন মানে?তখন ঢং করে রাস্তায় বসে না পড়ে যদি একটু কষ্ট সহ্য করতেন তাহলে হয়তো বাসটা মিস হতো না
– তাই না?আচ্ছা পা টা কার মচকেছিলো শুনি,আমার না আপনার?
– অফকোর্স আপনার
– ঠিক তাই,যদি আপনার মচকাতো না,তাহলে বুঝতেন কেমন লাগে,তাহলে আর এ কথা বলতে পারতেন না…
– আমার পা মচকালেও আমি ঠিকই হাঁটতে পারতাম,আপনার মতো নাটক করতাম না বুঝেছেন?
– সে যখন সত্যি সত্যিই হবে তখন দেখা যাবে
– এই আপনি কি আমাকে বদদোয়া দিচ্ছেন?
– যদি তাই মনে করেন তো তাই…
– এই দেখুন খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছে কিন্তু…
– এ্যা হ্যাঁ…পঁচা লোক,বাজে লোক এমনিতেই আমার পায়ে ব্যথা করছে তার উপর এই লোক শুধু শুধু আমাকে বকা দিচ্ছে!এ্যা এ্যা এ্যা…
– এই দেখো আবার নাকে কান্না শুরু করেছে,একটু চুপ করুন প্লিজ সবাই দেখছেতো…
– আগে সরি বলেন…
– কেন সরি কেন বলতে যাবো?আমি আবার কি করলাম?
– এ্যা এ্যা কি বাজে লোক!দোষ করেছে আবার সরিও বলছে না!এ্যা এ্যা এ্যা আমি আর আপনার সাথে যাবো না…
– এতো আচ্ছা ভেজালে পড়লাম!আচ্ছা ঠিক আছে সরি,আমারই ভুল হয়েছে,শুধু শুধু আপনার সাথে লাগতে যাওয়া একদম উচিত হয়নি।এবারতো চুপ করবেন নাকি?
– হুম এবার ঠিক আছে,সো কান্নাকাটি ক্যান্সেল
– যাক বাবা,বাঁচা গেল কিন্তু এখন কি করব?কোথায় যাবো?সকালের আগেতো এখান থেকে আর কিছুই পাওয়া যাবে না…
– সে আমি কি জানি,আপনিই ভাবেন কি করবেন কিন্তু আপাতত এটার একটা ব্যবস্থা করেন প্লিজ…
– কোনটার?

– না মানে কুটুসের প্রচণ্ড ক্ষুধা লেগেছে আর আমারও…
– তো ক্ষুধা লেগেছে খান,আমি কি নিষেধ করেছি?
– ইয়ে মানে…বিলটা কিন্তু আপনাকে দিতে হবে
-কেন?আমি কেন দিতে যাবো?আপনার কাছে কি টাকা পয়সা কিছু নেই নাকি?
– আমার কি দোষ,পার্সটা ব্যাগে ছিল আর ব্যাগতো গাড়িতে…
– হোয়াট!Are you kidding?আরে আমিতো জাস্ট ফাযলামি করছিলাম…
– দেখুন এখান থেকে আমার সব খরচ আপনি দেবেন,আমি প্রমিজ করছি বান্দরবান পৌঁছেই আপনার সব পাওনা পরিশোধ করে দিব
– তারমানে সত্যিই…
– হুম(মাথা নিচু করে)
– তা..বান্দরবান গিয়ে কিভাবে পরিশোধ করবেন শুনি?আপনার ব্যাগতো বাসে আর বাসতো…
– ওহ তাইতো,এটাতো ভেবে দেখিনি।আচ্ছা ঠিক আছে,আপনার ফোন ফোন নাম্বারটা দিন আমি বাড়ি ফিরেই আপনার টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করব
– মুচকি করে একটা হাসি দিলাম,চলুন আমার সাথে
– কোথায়?
– আপনার না ক্ষুধা লেগেছে?তাড়াতাড়ি চলুন নাহলে হয়তো খাবারের হোটেলটাও বন্ধ হয়ে যাবে
– ঠিক আছে চলুন
(কিছুক্ষণ পর)
– এই নিন ধরুন
– এটা কি?
– ফোন নাম্বার তবে আমার না
– তাহলে?
– আপনার ব্যাগ আর লাগেজ বান্দরবান কাউন্টারে পাঠিয়ে দেবে,আপনি জাস্ট এই নাম্বারটায় একটা কল দিলেই হবে
– ওহ
– আচ্ছা আপনার ফোনটা সাথে আছেতো?
– উহু ওটাও ব্যাগে
– হোয়াট!আচ্ছা আপনি পাগলাগারদ থেকে পালিয়ে আসেননিতো?

– মানে?
– মানে এই যুগে মোবাইল ফোন আর পার্স ছাড়া কেউ বের হয়?আপনি কোন আক্কেলে ওগুলো রেখে বাস থেকে নেমে আসলেন বলুনতো
– আমি কি করে জানবো যে বাসটা আমাকে রেখেই চলে যাবে?
– তা জানবেন কেন আপিনিতো কচি খুকি…
– এই দেখুন,আমাকে একদম খুকি বলবেন না,আমি ১৮+ বুঝেছেন?
– রিয়েলি?দেখেতো বোঝা যায় না(এতো দেখছি সত্যিই গাছে ধরা পাগল,আমি কি বলি আর এই মেয়ে কি বোঝে!)
– কিছু বলছিলেন?
– জ্বি না ম্যাডাম,আপনাকে কিছু বলিনি এখন চলুন
– আবার কোথায়?
– খাওয়াতো শেষ এখন থাকার একটা ব্যবস্থা করতে হবেতো নাকি?আপনাকে নিয়েতো আর গাছতলায় রাত কাটাতে পারি না…
– কেন?এখানেইতো ঠিক আছি
– হ্যাঁ তা আছেন তবে এটা খাবার হোটেল,আবাসিক হোটেল না বুঝেছেন?আপনার জন্যতো আর সারারাত খুলে বসে থাকবে না
– কেন খোলা রাখলে কি সমস্যা?আমি বুঝিনা সবকিছু এতো কমপ্লিকেটেড কেন?আরে বাবা হোটেলতো হোটেলই,এর মধ্যে আবার পার্থক্য করার কি আছে?কে যে এসব ডিসক্রিমিনেশন করেছিল,তাকে যদি একবার পেতাম না…
– আপনার বকবক শেষ হলে দয়া করে উঠবেন প্লিজ…রাততো কম হলো না সো…
– কি করে যাবো?পায়েতো এখনও ব্যথা করছে
– তো কি করতে হবে?আবারও পিগিব্যাক করব?
– আরে না না,এতকিছু লাগবে না।এখন অবস্থা একটু ভালো,আপনার কাঁধে ভর দিয়েই হাঁটতে পারব
– যাক বাবা বাঁচা গেল,এখন চলুন যাওয়া যাক
– হুম চলুন

ছোট শহরের আবাসিক হোটেলগুলো যেমন হয়,এই হোটেলটাও ঠিক তেমনই।কোন রকম জাক জমকের বালাই নেই,রংচটা পুরনো দেয়াল,এখানে ওখানে প্লাস্টার খসে পড়ছে আর রুমগুলো?রুম না বলে ছোটো খাটো খুপরি ঘর বলাই শ্রেয়।
তিনতলা হোটেলের নিচতলায় রিসিপশন,রিসিপশন বলতে একটা চেয়ার আর টেবিল পেতে কাউন্টারের মতো বানানো হয়েছে আর সেই চেয়ারে বসে আছে মোটাসোটা ইয়া ভুড়িওয়ালা এক লোক।ওদেরকে আসতে দেখে পান চিবাতে চিবাতেই বললো
– কি চাই?
সায়ানঃ বলছি যে আপনিইতো এখানকার ইনচার্জ তাইতো?
– জ্বে আমিই এইহানকার কেয়ারটেকার
সায়ানঃ আচ্ছা কোন রুম কি খালি পাওয়া যাবে?
কেয়ারটেকারঃ কেমন রুম লাগবো বলেন,সিঙ্গেল,ডাবল,ট্রিপল নাকি স্পেশাল রুমের ব্যবস্থা করতে হবে।যা চাইবেন তাই পাইবেন তয় রেট একটু বেশি পড়বো
সায়ানঃ দেখুন আমাদের দুটো রুম লাগবে,সিঙ্গেল ডাবল কোন ব্যাপার না তবে পাশাপাশি হতে হবে
কেয়ারটেকারঃ (অবিশ্বাস্য চোখে)দুইডা রুম!কিন্তু আপনেরা মানুষতো মাত্র দুইজন,একডা ডাবল রুম নিলেইতো কাজ হইয়া যায়
সায়ানঃ আপনাকে যা বলছি…
(সায়ান কথা শেষ করার আগেই কেউ ওর মুখ চেপে ধরলো)
– এই যে শুনুন আমরা একটা রুমই নিব,আপনি বরং ভালো দেখে একটা ডাবল রুমের ব্যবস্থা করেন…
সায়ানঃ নিজের কান বা চোখ কোনটাকেই বিশ্বাস হচ্ছে না,এই মেয়ে বলে কি!আমি আর ও এক রুমে এক বিছানায়…কিভাবে সম্ভব?
চলবে…