Childhood marriage

Childhood marriage 3 !! Part- 02

ভোরের আলো এখনও ঠিকভাবে ফুটতে শুরু করেনি,মিসেস আসমা চৌধুরী একরকম ছুটতে ছুটতে বাড়িতে ঢুকলেন কারণ একটায়,বাচ্চাদুটোর টেনশনে সারারাত ঘুমাতে পারেননি তাই ফজরের নামাজ পড়েই বেরিয়ে পড়েছেন।
সায়নের রুমের সামনে আসতেই থমকে দাঁড়ালেন,ছোঁয়া দরজায় হেলান দিয়ে জড়োসড়ো হয়ে ঘুমাচ্ছে
আসমাঃ ছোঁয়া!ছোঁয়া মা…
ছোঁয়াঃ (ঘুম ঘুম চোখে)উ…
আসমাঃ এখানে ঘুমাচ্ছিস কেন?কি হয়েছে?
ছোঁয়াঃ ভেতরে…ভেতরে ঘুমাতে দেয় নি,আর আমার ভয়…
আসমাঃ এসব কি বলছিস?দেখি,উঠতো মা ঘরে গিয়ে ঘুমাবি চল
ছোঁয়াঃ হুম…
(ছোঁয়ার গায়ে হাত দিতেই চমকে উঠলেন মিসেস চৌধুরী,পুরো শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে)
আসমাঃ ফুলি…ফুলি…
ফুলিঃ জ্বি চাচী?আমারে ডাকতাছেন?
আসমাঃ এসব কি?তোমরা সব কোথায় থাকো?
ফুলিঃ ও আল্লাহ,ছোট আপায় এইখানে ঘুমাইতাছে কেন?
আসমাঃ সেটাতো আমার তোমাদের জিজ্ঞেস করার কথা
ফুলিঃ আমিতো কিছুই জানিনা,এইসব কখন…
আসমাঃ হয়েছে হয়েছে,এখন কথা বন্ধ করে ওকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা কর আর রহিমকে বল ডক্টর এহসানকে খবর দিতে
ফুলিঃ জ্বি চাচী
(দুদিন পর)

মহসিন চৌধুরী বাড়ি ফিরেছেন কিছুক্ষণ আগে,ফিরেই ছোঁয়ার কাহিনী শুনে একেবারে হাইপার হয়ে গেছেন।প্রায় সাথে সাথেই সায়নের ডাক পড়েছে,সায়ন এখন বাবার সামনে মাথা নিচু করে বসে আছে
বাবাঃ এসব কি শুনছি সায়ন?কাজটা কি ঠিক হয়েছে?
সায়নঃ কো..ন কাজটা বাবা?
বাবাঃ ভেবো না আমি কিছু বুঝিনা,যদিও ছোঁয়া স্বীকার করেনি কিন্তু আমি ঠিক জানি ওর এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণভাবে তুমিই দায়ী
সায়নঃ কিন্তু বাবা আমি…
বাবাঃ দেখো বাবা তুমি সেয়ানা হতে পারো কিন্তু আমিও তোমার বাবা,তাই সবার চোখকে ফাঁকি দিতে পারলেও আমার চোখকে কিছুতেই পারবে না
সায়নঃ ফাঁকি দিতে চাইও না
বাবাঃ মানে?
সায়নঃ মানে আর কি?সবকিছুর জন্য আমিই দায়ী এণ্ড তাতে আমার কোন আফসোস নেই
বাবাঃ (রেগেমেগে)সায়ন…
সায়নঃ ভেবেছেন আপনার চোখ রাঙানোতে আমি ভয় পেয়ে যাবো!মোটেও না,কান খুলে শুনে রাখুন যদি ভালো চান ওই পাগলিটাকে আমার থেকে দূরে থাকতে বলবেন নাহলে এর থেকেও খারাপ কিছু হয়ে যেতে পারে
বাবাঃ তুমি কি ভুলে গেছো কার সাথে কথা বলছো?
সায়নঃ কেন?আমার বাবা আই মিন মি. মহসিন চৌধুরীর সাথে…
বাবাঃ ছেলেটার গালে ঠাস করে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।বেয়াদব ছেলে,বাবার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটাও ভুলে গেছো!
সায়নঃ (অবাক হয়ে)আ..আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন!
বাবাঃ হ্যাঁ তুললাম,দরকার পড়লে আবার তুলবো।আসলে আমারই ভুল হয়েছে,বেশি আদর দিয়ে দিয়ে তোমাকে একেবারে মাথায় তুলে ফেলেছি বাট আর না এখন থেকেই লাগামটা না ধরলে হয়তো একেবারে নাগালের বাইরে চলে যাবে তাই…
সায়নঃ সবকিছু হয়েছে ওই মেয়েটার জন্য,আজ নিজের ছেলের চেয়ে ওই মেয়েটা আপনাদের কাছে বড় হয়ে গেল!ওর জন্য আপনি আমার গায়ে পর্যন্ত হাত তুললেন!ঠিক আছে,আমিও দেখে নিব ওকে…
বাবাঃ সায়ন…কোথায় যাচ্ছো?আমার কথা এখনও শেষ হয়নি,ছেলেটা দিনদিন একেবারে বেয়াড়া হয়ে যাচ্ছে কি যে করি…

দেখতে দেখতেই কেটে গেছে বেশ কয়েকটি বছর।গেল বছরই ছোঁয়া সায়নের স্কুলে ভর্তি হয়েছে যদিও ওর আর সায়নের ব্যপারে কেউ তেমন কিছুই জানে না।
ছোঁয়ার ভুলে যাওয়া স্মৃতিগুলো এখনো ফিরে আসেনি,সবকিছুই কোন এক রহস্যময় গোপন কুটিরে বন্দী হয়ে আছে যদিও মাঝে মাঝে ঝাঁপসা হয়ে স্বপ্নে ওর কাছে ফিরে আসার চেষ্টা করে কিন্তু তার আগেই ওর ঘুম ভেঙ্গে যায়।যার প্রভাব পড়েছে ওর চাল চলনে,ছোঁয়া আগে ঠিক কেমন ছিল এ বাড়ির কেউই জানেনা কিন্তু ওরা যেই ছোঁয়াকে চেনে সে একটু বেশিই চুপচাপ।প্রয়োজন ছাড়া যে কারো সাথে একটা কথাও বলে না আর কিছু জিজ্ঞেস করলেও বেশিরভাগ উত্তরই আসে হ্যাঁ অথবা না দিয়ে বলতে পারেন যেটুকু না বললেই না তার বেশি একটা কথাও বলে না ও।বন্ধু বান্ধবের ধারে কাছেও যায় না ও,একা থাকতেই বেশি পছন্দ করে।
দিন যত যাচ্ছে এ বাড়ির সবারই চোখের মণি হয়ে উঠছে শান্ত শিষ্ট লক্ষ্মী এই মেয়েটি,ব্যতিক্রম শুধু একজন,সায়ন।
সবাই যত ছোঁয়াকে কাছে টেনে নিচ্ছে ও যেন তত বেশি দূরে সরে যাচ্ছে সবার কাছ থেকে।সায়নের ধারণা একমাত্র ছোঁয়ার জন্য বাবা-মা ওকে আর আগের মতো ভালোবাসে না,ওর সবকিছুতেই এই মেয়েটা ভাগ বসাচ্ছে।ছোঁয়াকে দুচোখে দেখতে পারেনা সায়ন,সবসময় ওকে ইগনোর করে চলে,নানাভাবে কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করে আর ছোঁয়া?মুখ বুজে সব সহ্য করে।
আগের মতো মোটাসোটা আর নেই ছোঁয়া,অনেকটাই শুকিয়ে গেছে কিন্তু সায়নের চোখে ও এখনও সেই নাদুস নুদুস গোলয়ালুই আছে তারসাথে যুক্ত হয়েছে ওর এই চুপচাপ স্বভাব যার জন্য সায়নের ধারণা হয়েছে ছোঁয়া মানসিক প্রতিবন্ধী আই মিন অটিস্টিক তাই কারো সাথে মিশতে পারে না।ফলশ্রুতিতে ছোঁয়াকে কখনও মুটকি,গোলয়ালু,কখনও পাগলী,কখনও বা গাধা,স্টুপিড,ইডিয়ট,সাইকো এসব নামেই ডাকে।দেখে মনে হয় যেন ছোঁয়ার আসল নামটাই ভুলে গেছে….
আজ সকাল থেকেই গুড়িগুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে,আকাশে ঘন কালো মেঘের ঘনঘটা স্পষ্ট জানান দিচ্ছে এই বৃষ্টি এতো সহজে ছাড়বে না।বৃষ্টির দোহাই দিয়ে মা একরকম জোর করেই ছোঁয়াকে সায়নের সাথে পাঠিয়ে দিয়েছে
সায়নঃ আদিখ্যেতা দেখে বাঁচি না,বলি এতো বড় ধিঙ্গি মেয়ে একা একা স্কুলে যেতে পারবে না!অন্যদিনতো ঠিকই যায় তাহলে আজকে কি সমস্যা?(বিড়বিড় করে)
ছোঁয়াঃ কিছু বলছেন?
সায়নঃ খুব খুশি লাগছে তাইনা?
ছোঁয়াঃ মানে?

সায়নঃ মানে এই যে সকাল সকাল মা তোমাকে আমার গলায় ঝুলিয়ে দিলো,আমি কিছু বুঝিনা ভেবেছো?
ছোঁয়াঃ দেখুন আমি ওসব কিছুই জানিনা,সবই মা…
সায়নঃ বুঝি বুঝি সব বুঝি…একি এভাবে গা ঘেঁষে বসেছো কেন?দূরে সরে বসো…
ছোঁয়াঃ দূরেইতো বসে আছি
সায়নঃ তাতে কি আরও একটু সরে বসো
ছোঁয়াঃ জ্বি আচ্ছা
সায়নঃ আর শোন মনু মামার ফুড কর্ণারের কাছে আসলেই কিন্তু গাড়ি থেকে নেমে যাবে
ছোঁয়াঃ কিন্তু বাইরেতো বৃষ্টি হচ্ছে…
সায়নঃ বৃষ্টি হচ্ছে তো আমি কি করব?সাথে ছাতা নিয়ে বের হওনি?
ছোঁয়াঃ না মানে আসলে…
সায়নঃ ছাতা যখন আনোনি তো বৃষ্টিতেই ভেজো,তাতে আমার কি?
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ কোন কিন্তু না আর স্কুলে কিন্তু আমরা কেউ কাউকে চিনি না মনে থাকে যেন…
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ আর হ্যাঁ আজকেতো হাফ পিরিয়ড,ক্লাস শেষে তিন রাস্তার মোড়ে বটতলায় দাঁড়িয়ে থাকবে।ড্রাইভার চাচাকে আজ আসতে মানা করেছি তাই…আপনাকে না নিয়ে বাড়ি ফিরলেতো আবার মা আমাকে…
ছোঁয়াঃ জ্বি আচ্ছা
সায়নঃ আমি যতক্ষণ না বলব ওখান থেকে এক পাও নড়বে না মনে থাকে যেন
ছোঁয়াঃ জ্বি থাকবে

বিকেল গড়িয়ে আসছে,তার সাথে বৃষ্টির প্রকোপও বাড়ছে।সায়ন বন্ধুদের সাথে ফুটবল খেলে সবে বাড়ি ফিরেছে,বৃষ্টির দিনে ফুটবল খেলার মজাই আলাদা।বাড়ি ফিরতেই মার চেঁচামেচি শুনতে পেল
মাঃ কি রে তুই একা যে!ছোঁয়া কোথায়?
সায়নঃ ও কোথায় আমি কিভাবে জানব?
মাঃ কি করে জানবি মানে?সকালেই না তোকে বললাম ফেরার সময় ওকে সাথে নিয়ে আসবি
সায়নঃ কিহ ওই ইডিয়টটা এখনও ফেরেনি!তার মানে…
মাঃ একি তুই আবার কোথায় যাচ্ছিস?ছোঁয়া কোথায়…
সায়নঃ হঠাৎ করেই সকালের কথা মনে পড়ে গেল,ওই মাথামোটা পাগলীটা কি তাহলে এখনও ওখানেই…ওহ শিট কিভাবে যে পাগলিটার কথা ভুলে গেলাম…
(সায়নের আশঙ্কায় সত্যি প্রমাণ হলো,বটলার কাছাকাছি যেতেই দেখলো একটা বেঞ্চের উপর ছোঁয়া চুপটি করে বসে আছে।বৃষ্টিতে একদম কাকভেজা হয়ে গেছে,শীতে থরথর করে কাঁপছে তবু্ও ওভাবেই বসে আছে এক চুলও নড়াচড়ার নাম নেই)
সায়নঃ ছুটে গিয়েই ওর হাত ধরে টেনে তুললাম।এই স্টুপিড,এখানে কি করছো?
ছোঁয়াঃ আপনিইতো বলেছিলেন এখানে ওয়েট করতে
সায়নঃ কিন্তু সেটাতো দুপুরের কথা আর এখনতো সন্ধ্যা হয়ে আসছে আর এতো জোরে বৃষ্টি হচ্ছে কোন দোকানের নিচে গিয়ে দাঁড়ালেওতো পারতে,পাগলের মতো এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
ছোঁয়াঃ কি করে যাবো,আপনি না আসা পর্যন্ত এক পাও নড়তে নিষেধ করেছিলেন যে…
সায়নঃ হোয়াট!এই মেয়েরতো দেখছি আসলেই মাথায় সমস্যা!এখন চলেন ম্যাডাম ওদিকে মা হয়তো আমার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করছে যত্তসব…
বাড়ি ফিরেই ছোঁয়ার ধুম জ্বর আর তার পুরো দায়ভার পড়লো সায়নের উপর।দিনগুলো এভাবেই কাটছে,ছোঁয়ার বোকামীতে সায়ন রীতিমতো ফেড আপ আর ওর সাথে যা কিছুই হোক না কেন শেষ পর্যন্ত দেখা যায় তার পেছনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সায়নেরই অবদান রয়েছে।
(কিছুদিন পর)
পুরো চৌধুরী বাড়িতে হুলস্থুল কাণ্ড শুরু হয়েছে,স্কুল ছুটির পর থেকে ছোঁয়াকে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না।ড্রাইভার ওকে স্কুল থেকে নিয়ে আসতে গিয়েছিল কিন্তু না পেয়ে খালি হাতেই ফিরে এসেছে।
দিন গড়িয়ে রাত হয়ে গেল কিন্তু বাড়িভর্তি লোকজন হাজার চেষ্টা করেও ছোঁয়াকে খুঁজে বের করতে পারলো না।অবশেষে ছোঁয়ার খোঁজ মিললো তাও আবার সায়নেরই গাড়ির ডিকিতে!
ছোঁয়া ওখানে কিভাবে এলো কেউ জানেনা,মেয়েটা তখন অজ্ঞান ওর নিথর দেহে প্রাণ আছে কিনা তাও বোঝা যাচ্ছে না।পালস ঠিকমতো বোঝা যাচ্ছে না,চোখে মুখে পানি ছিটিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না দেখে আর সময় নষ্ট না করে ওকে নেওয়া হলো হসপিটালে।ডক্টর যখন গম্ভীর মুখে আইসিইউ থেকে বেরিয়ে আসলেন সবাই ছুটলো উনার দিকে
ডক্টরঃ ঠিক কি বলবো বুঝতে পারছি না
মহসিনঃ কেন?খারাপ কিছু?
ডক্টরঃ সেই চার বছর আগের অ্যাক্সিডেন্টটা,মেয়েটার যে আর কি কি ক্ষতি করেছে একমাত্র উপর ওয়ালাই জানেন
মহসিনঃ ওটার সাথে এটার কি সম্পর্ক তাইতো বুঝতে পারছি না
ডক্টরঃ ক্লস্ট্রোফোবিয়া কি জানেন?মানে এই রোগের রোগীরা আবদ্ধ অন্ধকার কোন স্থানে বেশিক্ষণ আটকে থাকলে প্যানিক এ্যাটাক করে,ব্যাপারটা খুবই ভয়ংকর,অনেক সময় রোগী হার্টএ্যাটাক করে মারাও যেতে পারে
মহসিনঃ বলেন কি!
ডক্টরঃ সম্ভবত সেই চার বছর আগের অ্যাক্সিডেন্টের ফলেই ছোঁয়ার সাথে এমনটা হচ্ছে।যা শুনেছি তাতে ওই সময় বেশ লম্বা একটা সময় মেয়েটা ওই গাড়ির ভেতরে আটকা পড়ে ছিল তাই…আপনাদের ভাগ্য ভালো এ যাত্রায় অল্পের উপর দিয়ে গেছে নাহলে হয়তো…
মহসিনঃ ভয়ের কোন কারণ নেই তো?
ডক্টরঃ আমরা ওকে ২৪ ঘণ্টা অবজারভেশনে রাখছি,জ্ঞান ফেরার পর বোঝা যাবে কি অবস্থা

(পরদিন)
মা বাবার সামনে মাথা নিচু করে বসে আছে সায়ন,ঠিক কি কারণে ওকে এভাবে তলব করা হয়েছে ঠিক বুঝতে পারছে না
বাবাঃ সত্যি করে বলবে ঠিক কি হয়েছে?ছোঁয়া তোমার গাড়ীতে কি করে এলো?
সায়নঃ সেটা আমি কি করে বলবো?তোমরা ওকেই জিজ্ঞেস করো না…
বাবাঃ তাতো করবই কিন্তু তার আগেতো ওর জ্ঞান ফেরা লাগবে তাইনা?তবে ও বলুক বা না বলুক আমি জানি এসবের পেছনে তোমারই হাত আছে
সায়নঃ না বাবা,সত্যি বলছি আমি এসবের কিছুই করিনি
বাবাঃ শেষ বারের মতো বলছি,সত্যিটা বলো নাহলে কিন্তু…
সায়নঃ বললামতো আমি কিছু করিনি,ও মা মা দেখোনা বাবা আমার কথা বিশ্বাস করছে না,তুমি একটু বাবাকে বলো না আমি…
মাঃ কাজটা কিন্তু তুই একদম ঠিক করিসনি,আরেকটু দেরি হলেতো মেয়েটা…
সায়নঃ মা তুমিও!
মাঃ এখনও সময় আছে সত্যিটা বাবাকে বলে দে,আমি কথা দিচ্ছি কেউ তোকে কিচ্ছু বলবে না
সায়নঃ তোমরা…ঠিক আছে কাউকে আমার কথা বিশ্বাস করতে হবে না,তোমরা যখন এটাই চাইছো তাহলে তাই।আমিই ওই গোলআলুটাকে ওখানে বন্ধ করে রেখেছিলাম,আমারই ভুল ওকে এতো তাড়াতাড়ি বের করে আনা একদম ঠিক হয়নি…
মাঃ খোকা…এসব তুই কি বলছিস
সায়নঃ ঠিকইতো বলছি,ওই মেয়ে যেদিন থেকে এ বাড়িতে এসেছে আমার জীবনটাকে অতিষ্ট করে তুলেছে।আমার থেকে ওর গুরুত্বই তোমাদের কাছে বেশি!কাজটা আমার আরও আগেই করা উচিত ছিল,আগে যদি জানতাম তাহলে ওকে পুরো রাতটাই ওখানে বন্ধ করে রাখতাম আর সকালে বের হতো ওর লাশ।সারাজীবনের জন্য ওই সাইকোটা আমার জীবন থেকে দূরে সরে যেতো…
বাবাঃ সায়ন…ঠাস করে ওর গালে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।তোমার এতো বড় সাহস…বেরিয়ে যাও,বেরিয়ে যাও এ বাড়ি থেকে,তোমার মুখও আমি দেখতে চাই না…
মাঃ ওগো…ওগো তুমি এসব কি বলছো!একটু শান্ত হও…
সায়নঃ (অবাক হয়ে)বাবা…আ..আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন!তাও ওই মেয়েটার জন্য!আমাকে বাড়ি ছেড়ে যেতে বললেন!ঠিক আছে আপনি যখন চাইছেন তাই হবে,আমি চলে যাচ্ছি এখান থেকে,আপনারা থাকুন আপনাদের মেয়েকে নিয়ে…
মাঃ খোকা…খোকা যাস নে..ওগো ছেলেটা যে সত্যি সত্যিই চলে যাচ্ছে!তুমি ওকে আটকাও প্লিজ…
বাবাঃ ওকে যেতে দাও আসমা,কোথায় আর যাবে?রাগ ঠান্ডা হলে ঠিকই আবার বাড়ি ফিরে আসবে…
চলবে…
#নোটঃ কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন দশ বছরের বাচ্চা হিসেবে সায়নের কথাগুলো ঠিক মানাচ্ছে না,তাদের জন্য বলছি একটা জিনিস মনে রাখবেন এটা নিছকই একটা গল্প আর তার পুরোটাই আমার কল্পনা।আর তাছাড়া এখনকার বাচ্চারা যে পরিমাণ এ্যাডভান্স তাতে দশ কেন তার থেকে ছোট বয়সের বাচ্চারাও এর থেকে অনেক বেশি পাকা পাকা কথা বলে।যাই হোক আমি আমার মতো করে লিখে যাচ্ছি,আপনাদের সুচিন্তিত মতামত আশা করছি…