Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 39

#পর্ব-৩৯
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
ছোঁয়াঃ এই যে…আপনি কি শুনতে পাচ্ছেন?আপনি ঠিক আছেনতো?দেখুন আমার ভীষণ ভয় করছে,সন্ধ্যা হতে চললো অথচ আপনি আমার পাশে নেই!প্লিজ একবার সাড়া দিন,আমার কিন্তু খুব টেনশন হচ্ছে।যেখানেই থাকুন না কেন প্লিজ আমার সামনে চলে আসুন…সায়ন…সায়ন…
(ছোঁয়া আরও কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করলো কিন্তু সায়নের কোন খোঁজ মিলল না,ছোঁয়াও একসময় হাঁপিয়ে গিয়ে একটা গাছের নিচে বসে নিরবে চোখের পানি ফেলতে লাগলো…)

সায়নের যখন জ্ঞান ফিরল তখন সন্ধ্যা প্রায় হয়েই এসেছে,চারদিকে আস্তে আস্তে আবছা অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে,ঘরে ফেরা পাখিদের কলকাকলিতে পুরো জঙ্গলটা একেবারে মুখরিত হয়ে উঠেছে আর তারসাথে ঝিঁ ঝিঁ পোকা আর আরও কিছু অজানা শব্দতো আছেই,রাত যত বাড়বে শব্দগুলো তত তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকবে।
চোখ মেলেই আস্তে আস্তে উঠে দাঁড়ালো,পায়ের গোড়ালির একটু উপরে বেশ অনেকখানি কেটে গেছে,কাটা জায়গা দিয়ে এখনও রক্ত পড়ছে।প্রচণ্ড ব্যথা করছে,ঠিকমত দাঁড়িয়ে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে।মাথাটাও প্রচণ্ড রকমে ধরে আছে,সায়ন আলতো করে একবার মাথায় হাত দিয়েই বুঝলো সামনের দিকে বেশ ভাল রকমের আঘাত লেগেছে,চুলগুলো এখনও রক্তে ভিজে আছে।আশেপাশে একবার চোখ বুলিয়েই আঁতকে উঠলো সায়ন,ছোঁয়া কোথায়?হঠাৎই অজানা এক ভয় গ্রাস করে ফেললো ওকে,পায়ের আর মাথার ব্যথাকে উপেক্ষা করে ছুটলো ছোঁয়ার সন্ধ্যানে….
সায়নঃ ছোঁয়া…ছোঁয়া…কোথায় তুমি?ছোঁয়া…
(কিছুক্ষণ পর)
টিলার এইপাশটায় আসতে একটা গাছের নিচে চোখ আটকে গেল সায়নের,ছোঁয়া গাছের নিচে বসে পায়ের মাঝে মাথা গুঁজে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে।বুকের বাপাশে চিনচিনে একটা ব্যথা অনুভব করলো সায়ন,আর এক মুহূর্তও দেরি না করে ছুটলো ছোঁয়ার দিকে….
সায়নঃ ছোঁয়া…
(সায়নের কণ্ঠ শুনেই ছোঁয়া চমকে উঠে সামনে তাকালো,তারপর সায়নকে দেখেই ছুটে এসে ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো।ওকে জড়িয়ে ধরতেই কান্নার বেগ যেন আরও বেড়ে গেল…)
সায়নঃ এই পাগলী,এভাবে কাঁদছো কেন?আরে বাবা আমিতো এখনও বেঁচে আছি তাইনা…
(সায়নের কথা শুনে ছোঁয়া ওকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিতে লাগলো)
সায়নঃ কি আশ্চর্য!এভাবে মারছো কেন?
ছোঁয়াঃ তো আর কি করব?আপনি জানেন আমি কতটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম?আপনি না বলেছিলেন আমার কিছু হতে দেবেন না,এখান থেকে সুস্থ স্বাভাবিকভাবে ফেরত নিয়ে যাবেন তাহলে আমাকে ছেড়ে গিয়েছিলেন কেন?
সায়নঃ (কানে ধরে)আচ্ছা বাবা,আমার ভুল হয়ে গেছে I am sorry…
ছোঁয়াঃ হুম আর কক্ষনো যেন এমন না হয়…
সায়নঃ একটা কথা বলবো?
ছোঁয়াঃ কি?
সায়নঃ কান্না করলে না তোমাকে আরও বেশি কিউট লাগে
ছোঁয়াঃ আ..আপনি কিন্তু…দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা…
সায়নঃ আহ ছোঁয়া,কি করছো!লাগছেতো…
ছোঁয়াঃ লাগুক,লাগার জন্যেইতো মারছি
সায়নঃ Stop it Chowa,সিরিয়াসলি লাগছে।কি দজ্জাল মেয়েরে বাবা,নিজের স্বামীকে কেউ এভাবে মারে!
ছোঁয়াঃ বেশ করেছি,সবসময় আমার সাথে ফাযলামি!আজকে এর একটা উচিত শিক্ষা দিয়েই ছাড়বো…
(সায়ন ছোঁয়ার হাত থেকে বাঁচতে ওর থেকে দূরে সরতে লাগলো কিন্তু হঠাৎ পায়ের কাটা জায়গায় একটু আঘাত লাগতেই বিকট চিৎকার দিয়ে মাটিতে বসে পড়লো।ছোঁয়া ছুটে গিয়ে ওকে ধরে ফেললো)
ছোঁয়াঃ একি,আপনি এমন করছেন কেন?কি হয়েছে আপনার?আপনি ঠিক আছেনতো?কি হল কথা বলছেন না কেন?কিছু একটাতো বলুন…
সায়নঃ পায়ে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে কিন্তু তবুও ওর অবস্থা দেখে খুব হাসি পাচ্ছে।এই মেয়ে নাকি আমাকে ভালোবাসে না,আমাকে সহ্য করতে পারে না কিন্তু এখন ও যেভাবে রিয়্যাক্ট করছে তাতে যে কেউ চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারবে ও আমার প্রেমে পড়ে গেছে।কথাটা ভাবতেই ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠলো
ছোঁয়াঃ একি আপনি হাসছেন!আরমানে আবারও আমার সাথে…আপনাকেতো আমি…
সায়নঃ আহ!পায়ের ব্যথায় আবারও চিৎকার করে উঠলাম
ছোঁয়াঃ আ..আপনি…দেখুন আর ফাযলামি করবেন না প্লিজ আমার কিন্তু ভীষণ ভয় করছে,আপনার কি সত্যিই কিছু…
সায়নঃ ওসব নিয়ে পরেও ভাবা যাবে,আপাতত রাতটা কাটানোর জন্য একটা জায়গা খুঁজে বের করতে হবে এমনিতেই বেশ রাত হয়ে গেছে,এখানে আর এভাবে থাকা ঠিক হবে না…
ছোঁয়াঃ আচ্ছা চলুন যাওয়া যাক

এদিকে সায়নের বন্ধুরা জঙ্গলের রেস্টহাউজে শুকনো মুখে বসে আছে।আসলে ঘটনাটা হচ্ছে সন্ধ্যার একটু আগে ওরা রিয়াকে জঙ্গল থেকে বের হতে দেখেছে তারপর থেকেই টেনশনে সবার মুখ শুকিয়ে আছে।
মারুফঃ I can’t believe it.দুটো মানুষ এভাবে গায়েব হয়ে গেল!কিভাবে সম্ভব?
দীপুঃ সব তোর দোষ,কে বলেছিল এমন একটা রিডিকুলাস আইডিয়া বের করতে?
রাকিবঃ শুধু শুধু ওকে কেন দোষারোপ করছিস!তখনতো ওর আইডিয়াটা শুনে সবাই এক লাফে রাজি হয়ে গিয়েছিলি তাহলে এখন কেন সব দোষ ওর উপর চাপাচ্ছিস?
আসিফঃ আমরা রাজি হয়েছিলাম কারণ ভেবেছিলাম এভাবে হয়তো ওদেরকে কাছে আনা যাবে কিন্তু ব্যপারটা যে এমন রিস্কি হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি
রাকিবঃ তো সেটা কি ওর ফল্ট?
দীপুঃ তা নয়তো আর কার?
লোপাঃ শাট আপ ইউ গাইজ,ওদিকে দুটো মানুষ কি অবস্থায় আছে,বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে তার ঠিক নেই আর তোমরা আছো কার দোষ সেটা নিয়ে!
আসিফঃ Everybody cool down please.আমি বুঝতে পারছি না,ওই ডাইনিটা এখানে কি করছিল
তানিঃ কি করছিল সেটাইতো চিন্তার বিষয়,এই মেয়ে পারে না এমন কোন কাজ নেই।আমারতো টেনশন হচ্ছে ও আবার সায়ন আর ছোঁয়ার কোন ক্ষতি করে আসেনিতো…

রাকিবঃ চিন্তা করিস না,সায়ন যেহেতু ছোঁয়ার সাথে আছে ওদের দুজনের কিছুই হবে না
মারুফঃ গাইজ গাইজ গাইজ লিসেন টু মি,এখন আর এসব নিয়ে চিন্তা করার একদম সময় নেই।আপাতত যেভাবেই হোক ওদেরকে খুঁজে বের করার ব্যবস্থা করতে হবে
দীপুঃ আচ্ছা তানি,তোর না মামার সাথে কথা বলার কথা ছিল।উনি কি কোন ব্যবস্থা করতে পেরেছেন?
তানিঃ হ্যাঁ আমি অলরেডি মামার সাথে কন্ট্যাক্ট করেছি,উনি আর কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসবেন
লোপাঃ বলছিলাম যে মামা কি বলল?ওদের কিছু হবে নাতো?
তানিঃ চিন্তা কর না মামা বলেছে চিন্তার কোন কারণ নেই,এই জঙ্গলে হিংস্র কোনকিছু নেই।ওরা হয়তো পথ হারিয়ে ফেলেছে তাই…
(ওরা যখন কথা বলছে তখনই তানির মামার গাড়ি এসে থামলো,তানি উনার দিকে ছুটে চলে গেল)
মামাঃ কি রে মা,কি হয়েছে?তোর চোখ মুখের এ অবস্থা কেন?
তানিঃ তুমিতো সবই জানো,you know mama he is my best friend.এখন আমার জন্য যদি ওদের কিছু একটা হয়ে যায় তাহলে…
মামাঃ শোন না,আমি বলছি ওদের কিচ্ছু হবে না।মামাকে বিশ্বাস হয়তো?
তানিঃ হুম
মামাঃ আচ্ছা ওরাইতো তোর ফ্রেণ্ড তাইনা?চল ওদের সাথে আলাপ করিয়ে দিবি…
তানিঃ হুম চলো…

সায়ন আর ছোঁয়া অবশেষে থাকার মত একটা জায়গা খুঁজে পেয়েছে,আপাতত ওরা ওখানেই বসে আছে।অদ্ভূতভাবে এই জায়গাটাতে ইলিক্ট্রিসিটিও আছে!এক কথায় এটাকে একটা ছোটখাটো কটেজ বলা যায়।অবাক হওয়ার পালা শেষ হতেই ছোঁয়া আঁতকে উঠলো কারণ এতক্ষণে ওর চোখ সায়নের পায়ের উপর পড়েছে
ছোঁয়াঃ এ..এসব!আপনার পায়ে কি হয়েছে?এখন বুঝতে পারছি আপনি তখন অমন কেন করছিলেন আর হাঁটার সময় অমন খোঁড়াচ্ছিলেন কেন।আপনি আমাকে আফে কেন বলেননি?তখন অন্ধকারে কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না তাই…কিন্তু আপনিতো বলতে পারতেন তাইনা?
সায়নঃ কেন আগে থেকে জানতে পারলে কি করতে?
ছোঁয়াঃ দেখি চুপচাপ এখানে বসুনতো
সায়নঃ কেন কি করবে?
ছোঁয়াঃ যা বললাম চুপচাপ তাই করেন নাহলে কিন্তু…
সায়নঃ নাহলে কি?
ছোঁয়াঃ উনাকে একরকম জোর করেই বসিয়ে দিলাম
সায়নঃ আহ!কি করছো,লাগছেতো…
ছোঁয়াঃ লাগুক চুপচাপ বসে থাকুন নাহলে কিন্তু…
সায়নঃ কিন্তু কি?

ছোঁয়াঃ উনার পায়ের কাটা জায়গায় আলতো করে চাপ দিলাম
সায়নঃ আহ!লাগছেতো…
ছোঁয়াঃ আমার কথামত কাজ না করলে এর থেকেও বেশি লাগার ব্যবস্থা করব
সায়নঃ বাপরে এটা বউ নাকি হিটলার!আগে ইগনোর করছিল সেটাইতো ভাল ছিল,এখনতো কেয়ারের বদলে রীতিমতো টর্চার শুরু করেছে!
ছোঁয়াঃ কিছু বলছিলেন?
সায়নঃ আরে না না,আমি এখানেই বসছি তুমি তোমার কাজ কর যাও…
(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ পুরো বাড়িটা তন্ন তন্ন করে খুঁজেও উনার পায়ে বা মাথায় বাঁধার মত কোন কাপড় খুঁজে পেলাম না কিন্তু ভাল ব্যপার হল এখানকার কিচেনটা পেয়ে গেছি।ঝটপট পানি গরম করে নিয়ে উনার কাছে ফিরে গেলাম
সায়নঃ আরে এসব কি?
ছোঁয়াঃ দেখি এখানে এসে বসুনতো
সায়নঃ কিন্তু কেন?
ছোঁয়াঃ বসবেন নাকি…
সায়নঃ ওকে ওকে বসছি,এবার কি?
ছোঁয়াঃ অনেক ভেবে চিন্তে ওড়নাটা ছিড়ে ফেললাম তারপর গরম পানিতে কাপড় ডুবিয়ে উনার ক্ষত পরিষ্কার করতে লাগলাম
সায়নঃ আরে আরে এসব কি করছো?
ছোঁয়াঃ চুপ…
সায়নঃ ওর বলার আগেই আমি চুপ হয়ে গেছি কারণ ছোঁয়া যেভাবে আমার কাটা জায়গা পরিষ্কার করছে তাতে মনে হচ্ছে আমার না ওরই কেটে গেছে আমার থেকে মনে হচ্ছে ওরই বেশি কষ্ট হচ্ছে।আমি অবাক হয়ে শুধু ওর দিকেই তাকিয়ে আছি
ছোঁয়াঃ উনার পা আর মাথায় ওড়না দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিলাম
সায়নঃ ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি একটা হাসি দিলাম
ছোঁয়াঃ এভাবে না হেসে চুপচাপ এগুলো খেয়ে নিন
সায়নঃ এগুলো আবার কোথায় পেলে?
ছোঁয়াঃ সকালে আপনিইতো এগুলো আমার কাছে রাখতে বলেছিলেন,ভাগ্যিস তখন রেখে দিয়েছিলাম
সায়নঃ কিন্তু…
ছোঁয়াঃ যা বলছি করেন নাহলে কিন্তু…
সায়নঃ কিন্তু কি?
ছোঁয়াঃ জোর করে খাইয়ে দিব
সায়নঃ রিয়েলি!তাহলে তাই দাও প্লিজ…
ছোঁয়াঃ আপনি…
সায়নঃ একটা অসুস্থ মানুষ একটা জিনিস চাইছে আর তুমি…
ছোঁয়াঃ ঠিক আছে ঠিক আছে দিচ্ছি,দেখি হা করুনতো…
(ছোঁয়া নিজ হাতে সায়নকে খাইয়ে দিল,সায়নও অবশ্য সুযোগটা হাতছাড়া করেনি,ছোঁয়াকেও খাইয়ে দিয়েছে।অদ্ভূতভাবে ছোঁয়া আর আজকে কোন প্রতিবাদ করেনি)
সায়নঃ তা ম্যাডাম আর কোন হুকুম আছে?
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ চুপচাপ শুয়ে পড়ুন অনেক রাত হয়ে গেছে
সায়নঃ আর তুমি?
ছোঁয়াঃ আমার চিন্তা আপনাকে করতে হবে না,আপনি শুয়ে পড়ুনতো
সায়নঃ আরে এক রাত জেগে থাকলে কিছু হবে না
ছোঁয়াঃ দেখুন এই রাত্রিবেলা আপনার সাথে আর ঝামেলা করতে একদম ইচ্ছে করছে না তাই যা বলছি করেন
সায়নঃ আচ্ছা ঠিক আছে গুড নাইট
ছোঁয়াঃ গুড নাইট

(মাঝরাতে)
সায়ন বিছানায় ঘুমাচ্ছে আর ছোঁয়া ওর পাশেই বসে আছে।ঘুমে চোখদুটো ধরে আসছে কিন্তু কিছুই করার নেই,সায়ন ঘুমাচ্ছে কিন্তু মাঝে মাঝেই ব্যথায় কঁকিয়ে উঠছে তাই ছোঁয়া চাইলেও ঘুমাতে পারছে না।সায়নকে এভাবে দেখতে ওর খুব কষ্ট হচ্ছে কিন্তু কি করবে কিছুই বুঝতে পারছে না।
কালকের মত আজকেও ওর কেন জানি মনে হচ্ছে কেউ ওদের ফলো করছে,কেন এমন মনে হচ্ছে কিছুতেই বুঝতে পারছে না।জানালার পাশে মাঝেমাঝেই হালকা একটা আলোর রেখা ফুটে উঠছে কিন্তু সেটা কিসের বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও বের করতে পারেনি।অগত্যা সব চিন্তা বাদ দিয়ে সায়নের দিকেই মনোযোগ দিয়েছে…
মোটামুটি নির্ঘুম একটা রাত পার করে ভোরের দিকে ঘুমিয়ে পড়লো ছোঁয়া।বিছানায় বসেই সায়নের বুকে মাথা রেখে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল…
সায়নের ঘুম ভাঙতেই ছোঁয়াকে এভাবে দেখে ঠোঁটের কোণে এক চিলতে হাসির রেখা ফুটে উঠলো।আলতো হাতে ওকে নিজের বুক থেকে নামিয়ে বিছানায় ভাল করে শুইয়ে দিল তারপর কপালে ছোটত একটা ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিয়েই বেরিয়ে গেল…

ছোঁয়াঃ আচ্ছা আমরা আজকে না গেলে হয় না?আই মিন আপনারতো হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে
সায়নঃ না হয় না,এমনিতেই বের হতে অনেক দেরি হয়ে গেছে এখন কথা না বলে জোরে জোরে পা চালাও।আজকের রাতটা আর এই জঙ্গলে কাটানোর বিন্দুমাত্র ইচ্ছেও আমার নেই
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ আমাকে নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না,আমি ঠিক পারব।আরে একটুখানি কেটে গেছে এটা নিয়ে এত চিন্তা করার কি আছে?
ছোঁয়াঃ এটাকে আপনি একটুখানি বলছেন!
সায়নঃ তুমি কি হাঁটবে নাকি এভাবেই বকবক করবে?
(ছোঁয়া আর দেরি না করে সায়নের কাছে ছুটে গেল তারপর ওর হাতটা টেনে নিজের কাঁধের উপর নিয়ে নিল)
সায়নঃ (অবাক হয়ে)এটা কি হল?
ছোঁয়াঃ আমার কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটুন,আপনার কষ্ট কম হবে
সায়নঃ লাগবে না
ছোঁয়াঃ যা বলছি করুন নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে
সায়নঃ তুমি…
(হঠাৎ কিছু শব্দ শুনে ওরা থমকে দাঁড়ালো)
ছোঁয়াঃ শুনতে পেলেন?আমি বলেছিলাম না কেউ আমাদের ফলো করছে…
সায়নঃ শসসস…ভাল করে শুনতে দাও
(সায়ন একটু সামনের দিকে এগিয়ে গেল,ছোঁয়া শক্ত করে ওর হাত চেপে ধরে আছে)
ছোঁয়াঃ শুনুন আমার না ভীষণ ভয় করছে আপনি আর সামনে এগোবেন না প্লিজ
সায়নঃ ভয় পেও না,আমিতো আছি তোমার কিচ্ছু হবে না….
(সায়নের চোখে মুখে আবারও সেই নির্ভরতার ছাপ ফুটে উঠলো,ছোঁয়া না চাইতেও ওর চোকের মাঝে হারিয়ে গেল…)
চলবে….