Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 38

#লেখিকা-সানজিদা সেতু
জঙ্গলের মাঝে থাকার একটা সুবিধা আছে,শহরের যান্ত্রিকতা আর কৃত্রিমতার বাইরে এখানে একটা অন্যরকম প্রশান্তি আর নিরবতা বিরাজ করে।ভোরের আলোটা হয়তো এখানে একটু দেরিতে নিজের অস্তিত্বের আভাস দেয় কিন্তু তাতে কি পাখিরা কিন্তু যথাসময়েই ভোর হওয়ার ইঙ্গিত ঠিকই দিয়ে দেয়।আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি,ভোর হওয়ার সাথে সাথেই পাখিরা যার যার মিষ্টি মধুর গান গেয়ে সবাইকে জানান দিচ্ছে যে ভোর হয়ে গেছে।তার সাথে যোগ হয়েছে সকালের মৃদুমন্দ বাতাস,যেন এক অন্যরকম প্রশান্তির পরশ বুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।একেবারে নিরস,কাঠখোট্টা একজন মানুষকেও এমন পরিবেশ নিঃসন্দেহে মুগ্ধ করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
সায়ন বা ছোঁয়া ওরা কিন্তু এসবের কিছুই টের পাচ্ছে না,ভোরের একটু আগে আগে ছোঁয়ার জ্বরটা ঘাম দিয়ে ছেড়ে গেছে তাই মেয়েটা এখন শান্তির একটা ঘুম দিচ্ছে আর সায়ন?সারারাত ছোঁয়াকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারেনি,শেষমেশ একটু আগে ঘুমিয়ে পড়েছে।সকালের শিরশিরে বাতাসে দুজনেই একটু পরপর কেঁপে কেঁপে উঠছে আর তাই দুজন দুজনকে আরও গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে আছে।ছোঁয়ার ঘুমটা হঠাৎ করেই ভেঙ্গে গেল,আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠতে যাবে তখনই বুঝতে পারলো একজোড়া হাত ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে।ভয়ে ভয়ে পাশ ফিরে তাকাতেই সায়নের ঘুমন্ত মুখটা দেখতে পেল,কি নিশ্চিত মনে যে ছেলেটা ঘুমাচ্ছে!কিন্তু একটু ভাল করে খেয়াল করলেই যে কেউ বুঝতে পারবে সায়নের চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
ওর দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিজের দিকে তাকালো ছোঁয়া,একি সায়নের জামা কাপড় ওর পরনে কেন?হঠাৎ করেই কাল রাতের কথা মনে পড়ে গেল,জ্বরের ঘোরে আবছাভাবে শুধু একজন মানুষের মুখই বারবার ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে সে আর কেউ নয়,সায়ন।আর তেমন কিছু মনে না পড়লেও সায়নের উদ্বিগ্ন মুখটা আর ওর জন্য ছুটোছুটি করার কথাগুলো ভাসা ভাসাভাবে সবই মনে পড়ছে।অদ্ভুতভাবে সায়নের উপর রাগে ফেটে পড়ার বদলে উল্টো মৃদু একটা লজ্জারাঙা হাসি ফুটে উঠলো ছোঁয়ার চোখে মুখে আর তারপরই আলতো হাতে নিজেকে সায়নের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে ফেললো।আর দেরি না করে কিছুটা দূরেই মেলে রাখা নিজের জামা কাপড়গুলো নিয়ে আড়ালে চলে গেল,এখন আর সেগুলো একটুও ভেজা নেই,সারারাত মেলে রাখার কারনে এখন পুরোপুরি শুকনো।যাই হোক ঝটপট ড্রেস চেঞ্জ করে আবারও সায়নের কাছে ফিরে আসলো।ততক্ষণে সায়নের ঘুম ভাঙলেও ঘোরটা কিন্তু এখনও কাটেনি
ছোঁয়াঃ গুড মর্নিং
সায়নঃ মর্নিং…

(উত্তরটা দিয়েই সায়ন লাফ দিয়ে উঠে বসলো,ও একরকম ভুলেই গিয়েছিল কোথায় আছে,কোন সিচুয়েশনে আছে।ছোঁয়ার দিকে চোখ পড়তেই দেখলো মেয়েটা লজ্জায় চোখ নামিয়ে নিল।অজানা এক ভয়ে বুকের ভেতরটা ধ্বক করে উঠলো ওর,একরকম লাফ দিয়েই তাই ছোঁয়ার দিকে ছুটে গেল)
সায়নঃ ছোঁয়া আমি…Let me explain আমি আসলে ইচ্ছে করে কিছু করিনি।কাল রাতে তুমি যেই সিচুয়েশনে ছিলে আমি আদলে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম তোমার কিছু হয়ে যাবে ভেবে…প্লিজ আমাকে ভুল বুঝো না,আই স্যয়ার আমার কোন বাজে ইন্টেনশন একদমই ছিল না।যা কিছুই হয়েছে একেবারে হিট অফ দ্য মোমেন্টে হয়ে গেছে,ওই সময় আমার কাছে যেটা ঠিক মনে হয়েছে আমি তাই করেছি।বিলিভ মি,নরমাল সিচুয়েশনে আমি এমন কিছু কক্ষনো করতাম না প্লিজ একটু বোঝার চেষ্টা কর প্লিজ প্লিজ প্লিজ…আই স্যয়ার জীবনে আর কক্ষনো এমন কিছু…
ছোঁয়াঃ শসসসস…

সায়নঃ ছোঁয়া প্লিজ আমার কথাটা একবার…
ছোঁয়াঃ আমি পানি খাব
সায়নঃ (অবাক হয়ে)মানে?
ছোঁয়াঃ প্রচণ্ড পিপাসা লেগেছে,একটু পানি এনে দেবেন?
সায়নঃ ওহ,আচ্ছা তুমি একটু ওয়েট কর আমি এক্ষুনি নিয়ে আসছি
ছোঁয়াঃ আচ্ছা
সায়নঃ আর শোন
ছোঁয়াঃ জ্বি?
সায়নঃ কাল রাতের মত আবার গায়েব হয়ে যেও না প্লিজ,এখান থেকে এক পাও নড়বে না ঠিক আছে?
ছোঁয়াঃ হুম
(সায়ন বেরিয়ে গেল,ছোঁয়া বিছানায় বসে মুচকি মুচকি হাসি দিতে লাগলো)
ছোঁয়াঃ উনি আসলেই একটা পাগল,কি এমন অপরাধ করেছেন যে এভাবে রিগ্রেট করতে হবে?আরে বাবা,আমিতো উনার স্ত্রী সো আমার সাথে একটু আধটু…অবশ্য এর আগে আমিইতো এটার জন্য উনার সাথে অনেক মিসবিহেভ করেছি তাই হয়তো উনি…যাই হোক,এবার আর উনাকে ভুল বুঝব না।কিন্তু উনার এই শুকনো মুখ আর বার বার সরি বলাটা যে খুব মজা লাগছে তাইতো তখন কিছুই বললাম না,দেখিই না উনি আর কি কি করতে পারেন…
(ছোঁয়া যখন মনে মনে এসব ছক কষছে,তখনই সায়ন চলে আসলো)
সায়নঃ তোমার পানি
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)আপনি এত তাড়াতাড়ি চলে এসেছেন!
সায়নঃ কেন কোন সমস্যা?
ছোঁয়াঃ না তো,কোন সমস্যা নেই
সায়নঃ আচ্ছা শোন,এই কিছু ফলমূল পেয়েছি,এগুলো খেয়েই আমরা বেরিয়ে পড়বো
ছোঁয়াঃ বেরিয়ে পড়ব!
সায়নঃ কেন তোমার কি সারাজীবন এখানেই থেকে যাওয়ার ইচ্ছে আছে নাকি?
ছোঁয়াঃ থেকে গেলেতো মন্দ হয় না,আপনি সাথে থাকলে শুধু এই জঙ্গল কেন আমাজানে থাকতেও আমার কোন আপত্তি নেই (বিড়বিড় করে)
সায়নঃ কিছু বললে?
ছোঁয়াঃ কই নাতো
সায়নঃ ঠিক আছে,ঝটপট রেডি হয়ে নাও।এক্ষুণি না বের হতে পারলে হয়তো সন্ধ্যার আগে আর বের হতে পারব না
(কিছুক্ষণ পর)
সায়ন ছোঁয়াকে নিয়ে কিছুক্ষণ আগেই বেরিয়ে পড়েছে।দুজনের হাতই বলতে গেলে একেবারে খালি,লাগেজ পার্স সবকিছুইতো ট্রেনেই ফেলে এসেছে তাই ভারি কিছুই নেই কারো সাথে।কিন্তু তাতে কি,এই উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তায় হাঁটতে সায়নকেই প্রচণ্ড বেগ পেতে হচ্ছে আর ছোঁয়ারতো কথায় নেই,জ্বরটা ছাড়লেও শরীর প্রচণ্ড দুর্বল তাই রীতিমত টলছে।একটা বেশ উঁচু জায়গা থেকে নিচে নামতে গিয়ে হঠাৎ করেই ছোঁয়ার পা পিছলে গেল,পড়েই যাচ্ছিল তখনই সায়ন ওকে দুহাতে জড়িয়ে নিজের দিকে টেনে নিল…

সায়নঃ একটু সাবধানে হাঁটবে না?আমি যদি খেয়াল না করতাম কি হত বুঝতে পারছো?
ছোঁয়াঃ আসলে…আমি…
সায়নঃ এই তোমার কণ্ঠ এমন লাগছে কেন?আবার কি শরীর খারাপ লাগছে?
ছোঁয়াঃ না না আমি একদম ঠিক আছি
সায়নঃ বললেই হল!কই দেখি আবার জ্বর আসছে নাকি…
(ছোঁয়ার কপালে হাত দিতেই সায়ন আবারও চমকে উঠলো,মেয়েটার জ্বর আবার বাড়তে শুরু করেছে)
ছোঁয়াঃ দেখলেনতো আমার কিচ্ছু হয় নি,আপনাকেতো আগেই বলেছিলাম।আপনি শুধু শুধুই টেনশন করছিলেন,আচ্ছা চলুন যাওয়া যাক নাহলে আবার দেরি হয়ে যাবে
(সায়ন সামনে না এগিয়ে ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকলো,ছোঁয়া ততক্ষণে অনেকটাই এগিয়ে গেছে,ওর হাঁটাটা অনেকটাই অসংলগ্ন।সায়ন আর দাঁড়িয়ে না থেকে ওর দিকে ছুটে গেল)
সায়নঃ ছোঁয়া..ওয়েট…
ছোঁয়াঃ কিছু বলবেন?
সায়নঃ হ্যাঁ এই একটু…কথা বলতে বলতেই ওকে কোলে তুলে নিলাম
ছোঁয়াঃ এই এই কি করছেন আপনি!নামিয়ে দিন বলছি…
সায়নঃ চুপ একদম চুপ,নড়াচড়া বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকো ট্রাস্ট মি তোমাকে ফেলে দিব না…
ছোঁয়াঃ কিন্তু আমিতো একা একাই…
সায়নঃ যেই স্পিডে হাঁটছিলে,তাতে আর এখান থেকে বের হওয়া লাগবে না সো যা বলছি তাই কর…
ছোঁয়াঃ না না সত্যি বলছি,এবারে আমি জোরেই হাঁটবো প্লিজ নামিয়ে দিন না…
সায়নঃ শসসস…
ছোঁয়াঃ ধ্যাত এভাবে পুতুলের মত বসে থাকতে কি ভাল লাগে?দেখুন আপনি কিন্তু মোটেও ঠিক করছেন না…
সায়নঃ তোমার কাজ লাগবে তাইতো?
ছোঁয়াঃ হুম

সায়নঃ আচ্ছা ঠিক আছে কাজ দিচ্ছি,এই যে ফলগুলো দেখছো ওগুলো গাছ থেকে পেড়ে নিজের কাছেই রেখে দাও
ছোঁয়াঃ কিন্তু কেন?
সায়নঃ জঙ্গল থেকে কখন বের হব তারতো ঠিক নেই,যদি সামনে আর কিছু খুঁজে না পাই তখন…
ছোঁয়াঃ তা নাহয় বুঝলাম বাট আপনি কি পুরো রাস্তা এভাবেই আমাকে কোলে করে নিয়ে যাবেন নাকি!
সায়নঃ কেন কোন সমস্যা?
ছোঁয়াঃ না মানে এভাবেতো আপনারই প্রবলেম হওয়ার কথা তাইনা?
সায়নঃ কেন?কি প্রবলেম?
ছোঁয়াঃ না মানে এভাবে হাঁটতে আপনার কষ্ট হচ্ছে না?
সায়নঃ কেন কষ্ট কেন হবে?তোমার মত শুটকি একটা মেয়েকে কোলে নিয়ে হাঁটতে যদি প্রবলেম হয় তাহলে আমিতো পুরুষ মানুষের কাতারেই পড়ি না
ছোঁয়াঃ এই শুনুন,আমি কিন্তু মোটেও শুটকি না
সায়নঃ তাহলে কি,মুটকি?
ছোঁয়াঃ দেখুন আপনি কিন্তু…
সায়নঃ আচ্ছা ছোঁয়া,একটা কথা জিজ্ঞেস করব?
ছোঁয়াঃ কি কথা?
সায়নঃ তোমার কিছু জানার নেই?না মানে কাল রাতে…
ছোঁয়াঃ আচ্ছা শুনুন এ ব্যাপারে আমরা পরে কথা বলি?আপাতত এসব নিয়ে কিছু বলতে ইচ্ছে করছে না
সায়নঃ কিন্তু আমারতো গিল্টি ফিল হচ্ছে তাই…
ছোঁয়াঃ শুনুন শুধু শুধু এসব নিয়ে চিন্তা করবেন নাতো।আপনার এমন চামচিকে মার্কা মুখ দেখে প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছে
সায়নঃ কিহ আমি চামচিকে?
ছোঁয়াঃ এখন যেভাবে মুখটা শুকিয়ে রেখেছেন তাতেতো তাই মনে হচ্ছে
সায়নঃ আচ্ছা তোমার কাহিনী কি বলতো,না মানে এতকিছুর পরেও এমন রিল্যাক্স মুডে…আমি না কিছুই বুঝতে পারছি না
ছোঁয়াঃ তো আপনি কি চাইছেন,আমি আবারও আপনার উপর রাগ ঝাড়লে,ঝামেলা করলে তবেই আপনি শান্তি পাবেন তাইতো?
সায়নঃ এই না না,আমি ওসব কিছুই চাই না।দেখো যা কিছুই হয়েছে জাস্ট পরিস্থিতির চাপেই হয়েছে,আমি ইচ্ছে করে কিছু করিনি সো প্লিজ আমাকে ভুল বুঝো না…
ছোঁয়াঃ কথা শেষ?
সায়নঃ মানে!
ছোঁয়াঃ এবার কি আমি কিছু বলতে পারি?
সায়নঃ দেখো ছোঁয়া,যদিও আমার কাছে কোন প্রমাণ নেই কিন্তু তবুও জাস্ট এটুকু বলতে পারি আমি জেনে বুঝে কিছু করিনি এণ্ড যা কিছুই হয়েছে তারজন্য আমি রিয়েলি অনেক সরি
ছোঁয়াঃ আপনাকে কোনকিছু প্রমাণ করতে হবে না আর সরিও বলার দরকার নেই কারণ আমি সবই জানি
সায়নঃ মানে!
ছোঁয়াঃ মানে কাল রাতে ঠিক কি কি হয়েছে আমি সবকিছুই জানি,আমার সবই মনে আছে সো জাস্ট রিল্যাক্স
সায়নঃ হোয়াট!আ..ম..তারমানে তুমি…
(ছোঁয়া সায়নের অবস্থা দেখে সেই মজা পাচ্ছে,শুধু মুখ টিপে হাসছে আর ওর শুকনো মুখের দিকে একটু পর পর তাকাচ্ছে)

ছোঁয়াঃ আচ্ছা আর কতদূর?দুপুরতো গড়িয়ে গেল কিন্তু এখনও কোনকিছুর দেখা পাচ্ছি না!কাহিনী কি বলুনতো?
সায়নঃ কি করে বলব?আমিওতো কিছুই বুঝতে পারছি না,একটা জনমানুষতো দূরে থাক কোন পশুপাখিরওতো দেখা পাচ্ছি না…
ছোঁয়াঃ তাহলে এখন আমরা কি করব?
সায়নঃ আপাতত কোথাও বসে একটু রেস্ট নেই,এই রৌদ্রের মধ্যেতো ঠিকমত হাঁটাও যাচ্ছে না
(কিছুক্ষণ পর)
সায়ন আর ছোঁয়া একটা বেশ বড় গাছের নিচে বসে আছে।সায়ন প্রচণ্ড টায়ার্ড তাই কিছুক্ষণের মধ্যেই ছোঁয়ার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েছে,ছোঁয়া আর কি করবে চুপচাপ বসে আশপাশটায় একবার করে চোখ বুলাচ্ছে আর মাঝে মাঝেই সায়নের ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকাচ্ছে।অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করছে ওকে এমন শান্তিতে ঘুমোতে দেখে তাই আলতো হাতে মাঝে মাঝেই ওর মাথার চুলগুলোতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতে চললো,সায়ন এখনও ঘুমাচ্ছে,ছোঁয়া ইচ্ছে করেই ওকে এতক্ষণ ডাকেনি কিন্তু আর না ডেকে পারলো না।অনেক্ষণ ধরেই ওর কেন যেন মনে হচ্ছিল কেউ ওদেরকে ফলো করছে কিন্তু ব্যপারটা নিয়ে ও শিওর ছিল না কিন্তু কিছুক্ষণ আগেই ওদের ঠিক পেছনেই কোনকিছুর আনাগোনা টের পেয়েছে,মনে হচ্ছে পেছনের ঝোঁপের মধ্যে কোনকিছু নড়াচড়া করছে তাই ভয়ে ভয়েই সায়নকে ডাকতে লাগলো ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ এই যে শুনছেন?একবার একটু উঠবেন?আমার না ভীষণ ভয় করছে…
(সায়ন লাফ দিয়ে উঠে বসলো)
সায়নঃ ভয় পাচ্ছো মানে!কি হয়েছে?
ছোঁয়াঃ মনে হচ্ছে ওদিকটাতে কেউ আছে
সায়নঃ মানে?এখানে আবার কে আসবে?সারাদিনে একটা জনমানুষের দেখা পর্যন্ত পেলাম না আর তুমি বলছো…
ছোঁয়াঃ আমি সত্যি বলছি,অনেক্ষণ ধরেই মনে হচ্ছিল কেউ আমাদের ফলো করছে আর একটু আগেই ওই ঝোঁপটার মধ্যে কি যেন নড়ে উঠল তাই…
সায়নঃ কি পাগলের মত কথা বলছো বলতো…
ছোঁয়াঃ আপনি বিশ্বাস করুন আমি…
(তখনই ঝোঁপটা আবারও একটু নড়ে উঠলো আর তাতে ছোঁয়া ভয় পেয়ে সায়নকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো)
ছোঁয়াঃ ওই দেখুন..আমি বলেছিলাম না…
সায়নঃ শসসস…কে ওখানে?যেই হও না কেন বেরিয়ে এসো বলছি…
ছোঁয়াঃ এই আপনি…ওদিকে এগিয়ে যাচ্ছেন কেন!সরে আসুন বলছি…
সায়নঃ শসসস…একদম ভয় পাবে না,আমি আছিতো তাইনা?
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ কে ওখানে?আমি আবারও বলছি বেরিয়ে এসো নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে…
(ঝোঁপটা আবারও একটু নড়ে উঠলো,সায়ন মনে হল এবার একটু ভয় পেয়ে গেল।একটু পিছিয়ে এসে ছোঁয়ার হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো)
ছোঁয়াঃ ব..বলছি যে,এ..এখানে কি ভয়ংকর কিছু…
সায়নঃ না না,তেমন কিছু থাকলে কি এভাবে চুপ করে বসে থাকতো?
(হঠাৎই ভয়ংকর শরীর হিম করে দেওয়ার মত একটা গর্জন শোনা গেল)
ছোঁয়াঃ এ..এটা..এটা কিসের শব্দ?
সায়নঃ ও কিছু না এমনিই…তুমি একটু বেশিই ভয় পাচ্ছো তো তাই একটু বেশিই শুনতে পাচ্ছো
ছোঁয়াঃ কিন্তু…

সায়নঃ ছোঁয়া,আই থিঙ্ক আমাদের এখান থেকে যাওয়া উচিত
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ কিন্তু…
(ছোঁয়াকে আর কিছু না বলতে দিয়েই সায়ন ওর হাতটা শক্ত করে চেপে ধরলো তারপর এক পা এক পা করে পেছাতে লাগলো।পেছনে সরতে সরতে কখন যে একেবারে কিনারায় চলে এসেছে বুঝতেই পারেনি,ছোঁয়াও ব্যপারটা ফার্স্টে খেয়াল করেনি,যখন খেয়াল করলো ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে )
ছোঁয়াঃ এই কি করছেন আপনি!সাবধানে…
ছোঁয়া কথা শেষ করার আগেই ঝোঁপের আড়াল থেকে তীব্র একটা আলোকছটা দেখা গেল আর তখনই সায়ন তাল সামলাতে না পেরে পা ফসকে নিচে পড়ে গেল,ছোঁয়া সায়নের হাত ধরে ছিল তাই ছোঁয়াও পড়ে গেল।পাহাড়ি ঢাল বেয়ে ওরা দুজনেই দুদিকে ছিটকে পড়ে গেল,ছোঁয়ার খুব বেশি আঘাত না লাগলেও সায়ন একটা গাছের সাথে বাড়ি খেল আর তারপরই জ্ঞান হারালো…
চলবে…