Childhood marriage 2 !! Part- 40
#পর্ব-৪০
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
পা টিপে টিপে কিছুদূর এগোতেই ওরা থমকে দাঁড়ালো
ছোঁয়াঃ কি হল?
সায়নঃ শসসস…শুনতে পাচ্ছো?
ছোঁয়াঃ কি?
সায়নঃ আরে ভয়েজগুলো খুব চেনা চেনা লাগছে না?
ছোঁয়াঃ হ্যাঁ তাইতো
সায়নঃ শসসস…ওয়েট আগে দেখতে দাও ব্যাপারটা
(আরও একটু সামনে এগোতেই ওদের চোখ কপালে উঠে গেল,সায়নের বন্ধুরা নিজেদের মধ্যে কিছু একটা নিয়ে কথা বলছে।সবারই চোখে মুখে স্পষ্ট টেনশনের ছাপ ফুটে উঠেছে)
তানিঃ এখন কি হবে,মামাতো বলছিল ওরা আশেপাশেই কোথাও আছে তাহলে ওরা এখানে নেই কেন?আ..আমার না খুব ভয় করছে,কি রে তোরা কেউ কিছু বলছিস না কেন?বল না ওরা কোথায় গেল…
রাকিবঃ আরে ইয়ার,তুই এভাবে রিয়্যাক্ট করলে কিভাবে হবে বল?এখন একটু মাথা ঠাণ্ডা করতো আমরা সবাই মিলে একটা উপায় বের করে ফেলব ডোন্ট ওয়ারি
তানিঃ ডোন্ট ওয়ারি!আমার দোস্তটা এভাবে গায়েব হয়ে গেল আর তোরা আমাকে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে বলছিস!
দীপুঃ তো আর কি করব?সবতো তোর জন্যই হয়েছে,এমন একটা ডেঞ্জারাস প্ল্যানিং কেমনে করলি!
তানিঃ ওহ এখন সব দোষ আমার তাইনা?তখন তাহলে তোরা আমার সাথে লাফাচ্ছিলি কেন?নিষেধ করে দিলেই পারতি…
আসিফঃ তাই করা উচিত ছিল,আমরা যদি আগেই বুঝতে পারতাম প্ল্যানটা কতটা রিস্কি তাহলে হয়তো কখনই রাজি হতাম না
তানিঃ তা সেটাও কি আমার দোষ?
লোপাঃ আচ্ছা এসব কি হচ্ছে!আমরা শুধু শুধু নিজেদের মধ্যে ঝামেলা কেন করছি?এটা কিন্তু মোটেও ঠিক হচ্ছে না
রাকিবঃ ঠিক বলেছো লোপা,জানি সবাই খুব টেনশনে আছে কিন্তু তাই বলে এভাবে মাথা গরম করলেতো চলবে না।ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করতে হবে কি করা যায়
মারুফঃ কিন্তু আমার মাথায় একটা জিনিস ঢুকছে না,মামার হিসেব মতে ওরা কালরাতে এখানকার কটেজটাতে ছিল তাহলেতো এখন আশেপাশেই থাকার কথা কিন্তু…
দীপুঃ শালা আমরা এদিকে টেনশনে মরছি আর ওই শালা হারামীটা…আরে বাবা সবকিছু আমাদের প্ল্যানিং মত করলে কি এমন ক্ষতি হয়ে যেত?কত চিন্তা করে সবাই প্ল্যানটা বের করলাম অথচ ওই শালা সব গুবলেট করে দিল!
(তখনই সায়ন আড়াল থেকে বেরিয়ে আসলো)
সায়নঃ ওহ তারমানে এসবই তোদের বুদ্ধি!
(সবাই একসাথে সায়নের দিকে ঘুরে তাকালো,সবার চোখে মুখেই আন্নদের একটা ঝলক ফুটে উঠলো।কিন্তু সায়ন আর এক মুহূর্তও দেরি না করে ওদের দিকে ছুটে গেল আর গিয়েই বন্ধুদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো,সবাইকে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারতে লাগলো)
মারুফঃ আরে ইয়ার,থাম না লাগছেতো…
সায়নঃ লাগুক,লাগার জন্যইতো মারছি
দীপুঃ বিশ্বাস কর দোস্ত আমরা তোদের ভালোর জন্যি এসব করেছি
সায়নঃ ভালোর জন্য!শালা তোদের জন্য এই তোদের জন্য এই কয়দিন আমাদের কত কষ্ট করতে হয়েছে জানিস?
আসিফঃ সরি দোস্ত আর এমন ভুল হবে না
সায়নঃ বেঁচে থাকলেতো ভুল করবি,আজকেতো তোদের মেরেই ফেলব আমার সাথে ফাযলামি!
রাকিবঃ আরে ছোঁয়া,ওভাবে দাঁড়িয়ে না থেকে এই পাগলটাকে আটকাও প্লিজ নাহলেতো ও আজকে আমাদের মেরেই ফেলবে
ছোঁয়াঃ এই যে শুনছেন,আরও মারেন।পারলে আমার পক্ষ থেকেও দুই চারটা চড় থাপ্পড় লাগিয়ে দেন
মারুফঃ আরে ছোঁয়া…
সায়নঃ শালা তোরা বন্ধু নাকি শত্রু?শালা হারামিগুলা তোদের মত বন্ধু থাকার চেয়ে না থাকাই ভাল
মারুফঃ ছি!দোস্ত এমন করে বলতে পারলি!মনে খুব কষ্ট পাইলাম…
সায়নঃ তোর কষ্টের গুষ্টি কিলাই
তানিঃ দোস্ত ছেড়ে দে না,আর কত মারবি
সায়নঃ তোরেতো আমি পরে দেখছি আগে এগুলার ব্যবস্থা করি
লোপাঃ ছোঁয়া…দোস্ত তুই একটু দেখ না…
ছোঁয়াঃ তোকেতো আমি…আচ্ছা ঠিক আছে এই যে শুনছেন,অনেকতো হল এবার নাহয় বেচারাদের ছেড়েই দেন
সায়নঃ বেচারা!এদেরকে কি তোমার বেচারা মনে হয়?শালারা একেকটাতো আস্ত শয়তানের হাড্ডি
ছোঁয়াঃ আচ্ছা আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু এবার ছেড়ে দিন প্লিজ…
সায়নঃ ওকে ফাইন,এইবারের মত ছেড়ে দিলাম নেক্সট টাইম এমনকিছু হলে কিন্তু…
রাকিবঃ যা ইচ্ছে হয় করিস
মারুফঃ ছোঁয়া,ইউ আর সিম্পলি গ্রেট
সায়নঃ অনেক হয়েছে,এবার কি আমরা যেতে পারি?
(ওরা সবাই সায়নের সাথে সম্মতি দিয়ে হাঁটতে শুরু করল,ছোঁয়ার কাছে থেকে অলরেডি সবাই সায়নের পায়ের ব্যপারে জানতে পেরেছে তাই সবাই একটু আস্তে আস্তেই হাঁটছে।এদিকে সবাইকে পাশ কাটিয়ে ছোঁয়া সায়নের কাছে চলে এসেছে,এসেই ওর হাত ধরে হাঁটতে শুরু করলো।সায়ন অবাক হয়ে ওর দিকে তাকালো আর বাঁকিরা আড়চোখে ওদের দুজনকে দেখছে)
ছোঁয়াঃ এভাবে কি দেখছেন?আপনার হাটতে কষ্ট হচ্ছে তাই…এটাকে এত সিরিয়াসলি নেওয়ার কিছু নেই
সায়নঃ আমার মোটেও কষ্ট হচ্ছে না বলেই হাতটা ছাড়িয়ে নিলাম
ছোঁয়াঃ আবারও উনার হাত টেনে নিলাম
সায়নঃ ছোঁয়া…
ছোঁয়াঃ আসার সময় আপনি ধরেছিলেন তাই এখন আমি হাত ধরে হাঁটব,চুপচাপ আমার সাথে সাথে চলুন নাহলে কিন্তু অন্য ব্যবস্থা করব…
সায়নঃ আর কিছুই বলতে পারলাম না,পাগলিটার সাথে চুপচাপ হেঁটে যেতে লাগলাম…
(রাতে)
তানির মামার বাংলোটাতে ছোটখাট একটা পার্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে,সায়ন আর ছোঁয়ার ফিরে আসার ব্যপারটাতো আছেই তারসাথে আজকেই এখানে ওদের শেষ রাত আগামীকাল বিকেলেই ওরা ফিরে যাবে তাই সবাই মিলে একটু সেলিব্রেট করছে।এমনিতেই জঙ্গলের বাংলো বাড়ি তাই অন্যরকম একটা পরিবেশ,কিছুটা সৌন্দর্য্য আর কিছুটা বন্য রহস্যে ঘেরা তার উপর চারপাশটা সাজানো হয়েছে একেবারে গ্রাম্য উপকরণ দিয়ে।ছোট ছোট কুপি বাতি আর তারসাথে গ্রামের চিরাচরিত লণ্ঠণ জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে চারপাশে,বৈদ্যুতিক বাতিগুলোর বেশিরভাগই বন্ধ করে রাখা হয়েছে তার বদলে যুক্ত হয়েছে চাঁদের হালকা স্নিগ্ধ আলো।একপাশে যে মঞ্চটা বানানো হয়েছে সেটার চারপাশে তার টেনে তেনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে পাটের শিকায় ঝোলানো মাটির হাড়ি আর রঙবেরঙের তালের পাখা আর বিচিত্র ডিজাইনের কাগজের ফুল।সব মিলিয়ে ওরা যে শহর ছেড়ে গ্রামে এসেছে সেটা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছে ওরা
তবে অদ্ভূত ব্যপার হচ্ছে শুধু ওরাই না ওদের ভার্সিটির আরও কিছু ফ্রেণ্ড হঠাৎ করেই এখানে চলে এসেছে,অফকোর্স তাদের মধ্যে রিয়াও আছে।আর তাছাড়া সেদিন সন্ধ্যায় রিয়া ওই জঙ্গলে কি করছিল সেটা নিয়েও সবার প্রশ্ন আছে,ব্যপারটা ওদের কাছে বেশ খটকা লাগছে কিন্তু কেউই কিছু বলতে পারছে না।সবাই ক্যম্পাসে ফিরে যাওয়ার জন্য ওয়েট করছে,ফিরে গিয়েই একটা ব্যবস্থা করবে।
তানির মামা খুবই শৌখিন মানুষ,গান বাজনা খুবই পছন্দ করেন।উনার নিজের একটা শখের পিয়ানোও আছে,সায়ন ভাল গান গায় শোনার প্রায় সাথে সাথেই পিয়ানোটা বের করে এই মঞ্চে নিয়ে আসিয়েছেন,উনার ইচ্ছা সায়ন আজকে পিয়ানোটা বাজিয়ে একটা গান গাইবে।
যাইহোক রাত একটু গভীর হতেই সবার অনুরোধে সায়ন মঞ্চে উঠে গেল আর উঠেই পিয়ানোতে সুর তুলতে শুরু করলো…
ছিল ভাবে ভরা দুটি আঁখি চঞ্চল
তুমি বাতাসে উড়ালে ভীরু অঞ্চল
ওই রূপের মাধুরী মোর সঞ্চয়ে রেখেছি
আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি
বাজে কিনকিনি রিনিঝিনি
তোমারে যে চিনি চিনি
মনে মনে কত ছবি এঁকেছি
আমি দূর হতে তোমারেই দেখেছি
আর মুগ্ধ এ চোখে চেয়ে থেকেছি।।
সায়ন গান গাইছে ঠিকই কিন্তু পুরোটা সময় শুধুমাত্র ছোঁয়ার দিকেই আড়চোখে তাকিয়ে আছে আর ছোঁয়াও যেন সায়নের গানের মাঝেই হারিয়ে গেছে।দুজনের হুঁশ ফিরল যখন সবাই সমস্বরে হাততালি দিয়ে উঠল।
এখন প্রায় মাঝরাত,সবাই যে যার মত ঘুমিয়ে পড়েছে।ছোঁয়া কিন্তু এখনও ঘুমায়নি,কি করে ঘুমাবে চোখ বন্ধ করলেই যে চোখের সামনে সায়নের মুখটা ভেসে উঠছে।জঙ্গলে এই কয়দিন ওর আর সায়নের মধ্যে যা যা হয়েছে কিছুতেই ভুলতে পারছে না তাইতো কিছুক্ষণ বিছানায় এপাশ ওপাশ করে শেষমেশ বিরক্ত হয়ে উঠে এসেছে,আপাতত রুমের সামনের বারান্দাতে বসে আকাশের চাঁদ আর তারার মিষ্টি আলো উপভোগ করছে।কখন যে সায়ন পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে বুঝতেও পারেনি
সায়নঃ এখনও ঘুমাওনি?
ছোঁয়াঃ (চমকে উঠে)আ..আপনি!
সায়নঃ সরি বোধহয় ডিস্টার্ব করলাম
ছোঁয়াঃ না না ডিস্টার্ব কেন করবেন,আমিতো এমনিতেই…দাঁড়িয়ে আছেন কেন বসুন না…
সায়নঃ হুম তা ম্যাডাম এত রাতে এখানে কি করা হচ্ছে?
ছোঁয়াঃ আসলে ঘুম আসছিল না তাই
সায়নঃ কেন?কাউকে নিয়ে খুব গভীরভাবে কিছু ভাবছিলেন নাকি
ছোঁয়াঃ (উনি কি করে জানলেন!)না না তেমন কিছু না এই এমনিই…তক আপনি এখনও ঘুমাননি যে?
সায়নঃ কি করে ঘুমাবো,একজনকে খুব মিস করছিলাম তাই…
ছোঁয়াঃ ওহ
সায়নঃ জানতে চাইলে নাতো কাকে মিস করছিলাম
ছোঁয়াঃ দরকার নেই
সায়নঃ যার কথা ভাবছিলাম সেও না ঠিক তোমারই মত,আমাকে একটুও বুঝতে চায় না,সবসময় এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।মনে হয় আমার প্রতি তার কোন ফিলিংসই নেই,থাকবে কি করে সেতো আর মানুষ না সে হচ্ছে আস্ত একটা অনুভূতি শুন্য রোবট
ছোঁয়াঃ কি বললেন আপনি?
সায়নঃ ঠিকইতো বলেছি,যদি রোবট না হত আর মানুষ হিসেবে তার নূন্যতম কোন অনুভূতিও থাকতো তাহলে আমি যে তাকে কতটা ভালোবাসে এতদিনে ঠিকই বুঝতে পারতো
ছোঁয়াঃ কিহ আমি রোবট!আমার কোন ফিলিংসই নেই!
সায়নঃ কি আশ্চর্য!তুমি এমন রেগে যাচ্ছো কেন?আমি কি তোমাকে বলেছি নাকি আমিতো আমার বউয়ের কথা বলছিলাম
ছোঁয়াঃ ওই মিয়া,কে আপনার বউ?আর কয়টা বউ আছে আপনার?
সায়নঃ আছে হয়তো আরও দুই চার দশটা
ছোঁয়াঃ কিহ!আপনি…দাঁড়ান দেখাচ্ছি মজা
সায়নঃ আরে আরে কি করছো!আরে বাবা আমিতো মজা করছিলাম
ছোঁয়াঃ করাচ্ছি আপনাকে মজা,আমার সাথে ফাযলামি!আজকেতো আপনাকে…
সায়নঃ সাবধানে,পড়ে যাবে তো…
সায়নের শুধু কথাটা বলতে দেরি,ছোঁয়া সায়নকে নিয়েই একেবারে হুড়মুড় করে পড়ে গেল।দুজন দুজনের এতটা কাছাকাছি চলে এসেছে যে একজন আরেকজনের নিঃশ্বাসের শব্দও শুনতে পারছে।ছোঁয়ার দিকে একবার তাকাতেই সায়ন যেন অন্য কোন জগতে হারিয়ে গেল,নিজেকে আর সামলাতে পারলো না তাই ছোঁয়ার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট জোড়া মিলিয়ে দিল।ছোঁয়াও আজকে কিছুই বললো না,চোখ বন্ধ করে সায়নের ভালোবাসার মাঝে হারিয়ে গেল।
দুজনের যখন হুঁশ ফিরল তখন হুট করেই দুজন দুজনকে ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়ালো,দুজনেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে,কেউ কারো সাথে একটা কথাও বলছে না,তারপর কিছুই হয়নি এমন ভাব করে দুজন দুজনের রুমের দিকে দৌঁড় দিল…
(পরদিন)
আজ সকাল থেকেই ছোঁয়া সায়নকে এড়িয়ে চলছে,সারাদিনে একবারের জন্যও সায়নের সামনে আসেনি।কি করে আসবে?চোখ বন্ধ করলেই যে কাল রাতের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে,খুব আনকমফর্টেবল ফিল হচ্ছে,সায়নকে কিভাবে ফেস করবে সেটাই ভেবে পাচ্ছে না তাই যাতে ওর চোখের সামনে না পড়ে যায় তারই চেষ্টা করে যাচ্ছে।
ওরা যখন রওনা দিল তখন প্রায় সন্ধ্যা হয়েই এসেছে,ছোঁয়া চুপচাপ লোপার পাশে বসে আছে।সায়ন আর মারুফ পাশাপাশি বসেছে আর একটু পর পর আড়চোখে ওদের দিকে তাকাচ্ছে।হঠাৎ সায়ন লোপার দিকে তাকিয়ে ওকে উঠে আসার ইশারা করল,লোপাও সোজা গিয়ে মারুফের পাশের সিটে বসে পড়লো আর সায়নও আর এক মুহূর্তও দেরি না করে ছোঁয়ার পাশে বসে পড়লো।ছোঁয়া আর কি করবে,রাগী চোখে একবার লোপার দিকে আর একবার সায়নের দিকে তাকাতে লাগলো…
(কিছুক্ষণ পর)
রিয়াঃ শোন আমার সাথে সিটটা এক্সচেঞ্জ করতে হবে,সায়নের সাথে আমার কিছু কথা আছে
ছোঁয়াঃ (খুশি হয়ে)রিয়েলি!আচ্ছা ঠিক আছে আমি এক্ষুণি ওখানে চলে যাচ্ছি
(ছোঁয়া উঠে দাঁড়াতেই,সায়ন খপ করে ওর হাত চেপে ধরলো।ছোঁয়া ভয়ে ভয়ে ওর দিকে তাকাতেই সায়ন ইশারায় ওকে বসে পড়তে বললো)
সায়নঃ মিস রিয়া,আমার সাথে কথা বলার জন্য সিট এক্সচেঞ্জ করার কি দরকার?যা বলার এখনই বলতে পারেন
রিয়াঃ না মানে আসলে…
ছোঁয়াঃ দেখুন শুধু শুধু কেন ঝামেলা করছেন বলুনতো,আমি বরং উঠে যাই আপনারা কথা বলুন
সায়নঃ এই মেয়ে,তোমাকে বসতে বলেছি না?চুপচাপ বসে থাকো আর রিয়া,তোমার কিছু বলার থাকলে বল না হলে নিজের সিটে গিয়ে বসে থাকো।অযথা আমাদের ডিস্টার্ব কর না প্লিজ…
(রিয়া রাগে ফোঁস ফোঁস করতে করতে নিজের সিটে গিয়ে বসে পড়লো)
রিয়াঃ আমাকে অপমান!ঠিক আছে এর শোধ আমি কড়ায় গণ্ডায় আদায় করে নিব মি.সায়ন(মনে মনে)
এখন প্রায় মাঝরাত,বাসের প্রায় সবাই গভীর ঘুমে মগ্ন।ছোঁয়ার ঘুমটা হঠাৎ করেই ভেঙে গেল,চোখ মেলে তাকাতেই দেখলো ও সায়নের বুকে মাথা রেখে শুয়ে আছে আর সায়ন ওকে দুহাতে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।সায়নের হাতদুটো আলতো করে সরিয়ে দিয়ে ছোঁয়া সিটে হেলান দিয়ে বসলো তারপর সায়নের ঘুমন্ত মুখটার দিকে চোখ পড়তেই অন্যরকম একটা টান অনুভব করলো।সায়নের কপালে ছোট্ট করে একটা ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিল তারপর আবারও ওর বুকে মাথা রেখে ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল….
চলবে…