Childhood marriage

Childhood marriage 2 !! Part- 37

#পর্ব-৩৭
#লেখিকা-সানজিদা সেতু
ছোঁয়াঃ আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি?
সায়নঃ জানিনা
ছোঁয়াঃ তাহলে?
সায়নঃ আপাতত রাতটা এখানেই কাটাতে হবে,কাল সকালে এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তা খোঁজা যাবে
ছোঁয়াঃ এখানে!এই জঙ্গলে!
সায়নঃ তাছাড়া আর কি করব?আপনার কাছে কি এর চেয়ে বেটার কোন আইডিয়া আছে?
ছোঁয়াঃ কিন্তু তাই বলে…
সায়নঃ আচ্ছা তোমাদের মেয়েদের মাথায় কি বুদ্ধি শুদ্ধি বলতে কিছুই নেই?
ছোঁয়াঃ মানে!
সায়নঃ দেখো এমনিতেই এই ঘুটঘুটে অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছে না তাই এই সময়ে বের হওয়ার রাস্তা খোঁজা মানেই বোকামি,যা করার কাল সকালেই করতে হবে।এই সিম্পল বিষয়টা বুঝতে এত সময় লাগে!
ছোঁয়াঃ ওকে ফাইন,আমার ভুল হয়ে গেছে স্যার,এখন কি করতে হবে বলুন স্যার,আপনি যা বলবেন তাই হবে স্যার…
সায়নঃ শেষ?

ছোঁয়াঃ না মানে হ্যাঁ
সায়নঃ যদি ফালতু বকবক শেষ হয়ে থাকে তাহলে প্লিজ একটু জোরে পা চালান আকাশের অবস্থা বেশি ভাল না,যখন তখন বৃষ্টি চলে আসতে পারে
ছোঁয়াঃ ইয়েস স্যার…
সায়নঃ শাট আপ
(বেশ কিছুক্ষণ হাঁটার পর ওরা কুঁড়েঘরের মত একটা জায়গা খু্ঁজে পেল,সায়ন ছোঁয়াকে নিয়ে ওদিকেই এগোতে লাগলো)
ছোঁয়াঃ আমরা আজকে আমি এখানেই থাকবো!
সায়নঃ কেন কোন সমস্যা?
ছোঁয়াঃ না না সমস্যা কেন হবে,পারফেক্ট একদম পারফেক্ট…
সায়নঃ দ্যাটস বেটার
(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়াঃ এই যে শুনছেন?
সায়নঃ কি?

ছোঁয়াঃ আমার না প্রচণ্ড ক্ষুধা লেগেছে
সায়নঃ ওহ,আচ্ছা তুমি এখানেই থাকো আমি একটু আসছি
ছোঁয়াঃ আসছি মানে!এই আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
সায়নঃ কোথায় আবার,খাবারের সন্ধ্যানে
ছোঁয়াঃ মানে!খাবার আবার খুঁজে দেখার কি আছে?
সায়নঃ মানে কি,এই জঙ্গলে কেউ কি তোমার জন্য কোরমা পোলাও রান্না করে বসে আছে নাকি?এটা কি শ্বশুর বাড়ি পেয়েছো?
ছোঁয়াঃ আচ্ছা ঠিক আছে কিন্তু একটা কথা কান খুলে শুনে রাখেন,আমি কিন্তু বেয়ার গ্রিলসের মত পোকামাকড় খেতে পারব না
সায়নঃ (মুচকি হেসে)আচ্ছা ঠিক আছে আমি আসছি
ছোঁয়াঃ আসছি মানে?
সায়নঃ কোন খাবার পাওয়া যায় কিনা দেখে আসি।নাহলে তোমার এমন বকবক শুনলে আর যাই হোক পেট ভরবে না আর তখন এই জঙ্গল থেকে বের হতে পারি বা না পারি না খেতে পেয়েতো অবশ্যই মারা যাব সো…
ছোঁয়াঃ তাহলে আমিও যাব
সায়নঃ না তোমাকে যেতে হবে না,একটু পরেই টায়ার্ড হয়ে যাবে তখন তোমাকে ঘাড়ে করে নিয়ে আসতে পারব না
ছোঁয়াঃ মোটেও না,আমাকে নিয়ে আপনার টেনশন করতে হবে না আমি একাই চলে আসতে পারব
সায়নঃ কথা না বাড়িয়ে যা করতে বলছি কর,অযথা টাইম ওয়েস্ট করার কোন মানেই হয় না
ছোঁয়াঃ আ..আপনি…
সায়নঃ কি?
ছোঁয়াঃ কিছু না…
সায়নঃ আচ্ছা আমি আসছি,এই ঘরটা থেকে একদম বের হবে না কেমন?
(সায়ন বেরিয়ে গেল)
ছোঁয়াঃ দুর ছাই,আমি কি এমনি এমনি যেতে চেয়েছি নাকি?উনি কেন বুঝছেন না,একা একা এখানে থাকতে আমার খুব ভয় করছে তাইতো উনার সাথে…কিন্তু উনিতো…আস্ত একটা পাষাণ,রগচটা,বদমেজাজি আর একরোখা লোক,নিজে যা চাইবে তাই হবে অন্য কারো কথা কি কখনও ভাবেন?(মনে মনে)
(ছোঁয়া যখন বসে বসে এসব ভাবছে,সায়ন ততক্ষণে আবারও ফিরে এসেছে)
সায়নঃ এই নাও ধরো
ছোঁয়াঃ এগুলো কি?
সায়নঃ আমি কোথায় যাচ্ছি তারতো কোন ঠিক নেই তাই এই লতাটার একপ্রান্ত তোমার হাতে বেঁধে ফেলো,আরেক প্রান্ত আমার হাতে থাকবে।আমি যদি আধা ঘণ্টার মধ্যে ফিরে না আসি বা কোন কারণে যদি তোমার ভয় লাগে তাহলে এটা ধরে ধরে সামনে এগোতে থাকবে বুঝেছো?
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ আর হ্যাঁ কোন কারণে যদি লতাটা ছিড়ে যায় বা খুঁজে না পাও তারজন্য অন্য ব্যবস্থা আছে।এই যে নুড়ি পাথরগুলো দেখছো,আমি এগুলো আমার যাওয়ার পথে ফেলতে ফেলতে যাব তুমি ওটা দেখেও আমাকে খু্ঁজে নিতে পারবে…
(সায়ন চলে গেল)
ছোঁয়াঃ নাহ বেচারাকে এতক্ষণ শুধু শুধুই ভুল বুঝছিলাম,আসলে কিন্তু মানুষটা অতটাও খারাপ না…

সায়ন যখন ফিরে আসলো ততক্ষণে প্রচণ্ড জোরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে,রীতিমত দৌঁড় দিয়ে ভেতরে ঢুকতেইতো ওর চোখ ছানাবড়া,ছোঁয়া কোথায়?এখানেতো কোন মানুষের অস্তিত্ব আছে বলে মনে হচ্ছে না তাহলে…
সায়নঃ ছোঁয়া…ছোঁয়া…এই মেয়ে,কোথায় তুমি?দেখো যদি আমার সাথে ফাযলামি করার জন্যে কোথাও লুকিয়ে থাকো তাহলে এক্ষুনি বেরিয়ে আসো বলছি,নাহলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে…
(সায়ন আরও কিছুক্ষণ চিৎকার করে যখন বুঝতে পারলো ছোঁয়া আশেপাশে কোথাও নেই,তখন আপনা আপনিই ভয়ে ভেতরটা শিউরে উঠলো।ছুটে বেরিয়ে যাবে তখনই হাতে হালকা টান অনুভব করলো,সেদিকে তাকাতেই মুখে হালকা হাসি ফুটে উঠলো)
সায়নঃ আরে,এটার কথাতো আমি ভুলেই গিয়েছিলাম।এটা এখনও যখন আমার হাতেই আছে তারমানেতো ছোঁয়ার হাতেও…নাহ আর দেরি করা যাবে না,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওকে খুঁজে বের করতে হবে…
(কিছুক্ষণ পর)
সায়ন উঁচুনিচু রাস্তা ভেঙে কিছুদূর এগোতেই ছোঁয়ার দেখা পেয়ে গেল,মহারাণী এখানে মনের আনন্দে বৃষ্টিতে ভিজছেন!ওকে এভাবে দেখেই সায়নের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল,আর দেরি না করে ওর দিকে ছুটে গেল।গিয়েই কষে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিল,ছোঁয়াতো সায়নের এমন ব্যবহারে রীতিমত অবাক হয়ে গেছে তাই কিছু না বলে বড় বড় চোখ করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে…
সায়নঃ কি?কি দেখছো এভাবে?এই মেয়ে কি সমস্যা তোমার?কতবার করে বলে গেলাম একদম বের হবে না,আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত ওখানেই থাকবে কিন্তু তোমার কানেতো কোন কথায় ঢোকে না।আসলে আমারই দোষ হয়েছে,তুমিতো এমনিতে শোনার বান্দা না তাই তোমার হাত পা বেঁধে রেখে যাওয়া উচিত ছিল
ছোঁয়াঃ আপনি আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন?আমিতো জাস্ট বৃষ্টিতে ভিজতে…
সায়নঃ বৃষ্টিতে ভিজবে তাইনা?ঠিক আছে এখান থেকে একবার বের হই,ফিরে গিয়ে তোমাকে সারাদিন বৃষ্টির মধ্যেই দাঁড় করিয়ে রাখব।সত্যিকারের বৃষ্টি না হলে কৃত্রিম বৃষ্টিতেই ভেজাবো,দেখি তুমি কত ভিজতে পারো
ছোঁয়াঃ এমন করছেন যেন আমি মারাত্মক কোন অন্যায় করে ফেলেছি,আরে বাবা একটুতো বৃষ্টিতেই ভিজেছি তারজন্য এতকিছু!
সায়নঃ একটু বৃষ্টিতে ভিজেছো তাইনা?এই মেয়ে এটা কি তুমি তোমার বাড়ি পেয়েছো নাকি হোস্টেল?নাকি ভেবে নিয়েছো এটা ফাইভস্টার কোন হোটেল আর আমরা দুজন এখানে হানিমুনে এসেছি?
ছোঁয়াঃ কি যা-তা বলছেন!
সায়নঃ এখন যা-তা তাইনা?এই মেয়ে তোমার মাথায় কি বুদ্ধি শুদ্ধির একটু ছিটেফোটাও নেই!এই যে একা একা এই রাত্রিবেলা জঙ্গলের মধ্যে বৃষ্টিতে ভিজছো,যদি বাঘ ভাল্লুক কিছু সামনে চলে আসতো?আচ্ছা ঠিক আছে বাঘ ভাল্লুক বাদ দিলাম,কোন বদলোকের খপ্পড়েও তো পড়তে পারতে তখন?
ছোঁয়াঃ আপনি কিন্তু শুধু শুধু আমাকে ভয় দিচ্ছেন
সায়নঃ শুধু শুধু ভয় দিচ্ছি!আচ্ছা ঠিক আছে যদি তাই হয় তাহলে এক কাজ কর,আমি এখানেই দাঁড়িয়ে আছি তুমি আবার যেখানে থাকতে বলেছিলাম,ওখানেই ফিরে যাও।কি পারবে?

ছোঁয়াঃ না মানে আসলে…আমি…
সায়নঃ জানিতো পারবে না,শুধু শুধু কেন যে এসব পাগলামি কর বুঝি না
ছোঁয়াঃ আপনি জানেন না বৃষ্টি আমার কতটা পছন্দ?
সায়নঃ জানিনা আবার?কিন্তু তাই বলে এখানেও!
ছোঁয়াঃ আপনি না আস্ত একটা খাটাশ,যখন ছোট ছিলাম তখনও আমাকে ভিজতে দিতেন না আর এখনও
সায়নঃ ফালতু বকবক না করে তাড়াতাড়ি চলো
ছোঁয়াঃ না গেলে কি করবেন?
সায়নঃ কি আর করব,একেবারে ঘাড়ে করে নিয়ে যাব কি চলবেতো?
ছোঁয়াঃ এই না না তার আর দরকার হবে না,আমি একাই যেতে পারবো
(কিছুক্ষণ পর)
সায়নঃ ইশ রে এই মেয়ের পাল্লায় পড়ে আমার জামা কাপড়ও সব ভিজে শেষ,এখন কি করব?সাথেতো আর কোন কাপড়ও নেই আর বৃষ্টির কারণে এখন বেশ ঠান্ডা পড়ছে,এই ভেজা কাপড়ে থাকলে নিশ্চিত জ্বর চলে আসবে।এক কাজ করি গায়ের জামাটা খুলে ফেলি,তাতে যদি একটু…
ছোঁয়াঃ এই আপনি কি করছেন?দেখুন এসব কিন্তু একদম ঠিক না…
সায়নঃ কি ঠিক না হুম?এখানে কি অন্য কেউ আছে নাকি যে কোন প্রবলেম হবে?
ছোঁয়াঃ আমিতো আছি তাহলে…
সায়নঃ তুমি থাকলে কি প্রবলেম?তুমিতো আমার বউ তাই তোমার সামনে…চাইলে তুমিও তোমারটা খুলে ফেলতে পারো আমি কিন্তু কিছু মনে করব না…
ছোঁয়াঃ কিহ!এ…এই..আপ..নার মুখে কি কিছুই আটকায় না?অসভ্য কোথাকার…
সায়নঃ কি আশ্চর্য!আমি আবার অসভ্যতামির কি করলাম?আমিতো তোমার ভালোর জন্যই বললাম,ভেজা কাপড়ে বেশিক্ষণ এভাবে থাকলেতো ঠান্ডা লেগে যাবে তাই…
ছোঁয়াঃ আমার চিন্তা আপনাকে করতে হবে না,আপাতত আপনি নিজের চিন্তা করেন…

সায়নঃ Okey as your wish
(সায়ন গায়ের ভেজা জামাটা খুলে একপাশে মেলে দিল তারপর ঘরের এক কোণে কিছু শুকনো কাঠ আর কাগজ দিয়ে আগুন জ্বেলে দিল।এবার কিছু খড় বিছিয়ে বিছানা বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।এদিকে ছোঁয়ার চোখ আটকে গেছে সায়নের দিকেই,ওর লোমশ বুক,প্রশস্ত বাহু আর মেদহীন শরীরের দিক থেকে কিছুতেই চোখ ফেরাতে পারছে না।ব্যাপারটা বোধহয় সায়নও আঁচ করতে পেরেছে তাই মুখে দুষ্টুমির হাসি ফুটিয়ে ছোঁয়ার দিকে তাকালো)
সায়নঃ কি মিসেস মাহবুব,কি দেখছেন এভাবে?
(ছোঁয়া ততক্ষণে নিজেকে সামলে নিয়েছে,প্রসঙ্গ পাল্টাতে অন্য বিষয়ে কথা শুরু করলো)
ছোঁয়াঃ আপনিতো দেখছি প্রচণ্ড স্বার্থপর একটা মানুষ
সায়নঃ কেন আবার কি করলাম?
ছোঁয়াঃ এই যে আমি এখনও রীতিমত শীতে কাঁপছি অথচ আপনি ঘুমানোর প্রিপারেশন নিচ্ছেন তাও আবার একেবারে আগুনের পাশেই!
সায়নঃ আচ্ছা তুমি কি ভুলবশতও কখনও ঠিক জিনিসটা ভাবতে পারো না?
ছোঁয়াঃ মানে?
সায়নঃ মানে এই বিছানাটা আমি আপনার জন্য রেডি করছি আর আগুনের পাশে করছি বলে আবার ভাববেন না যে আপনাকে পুড়িয়ে মারার প্ল্যান করছি,আগুনের তাপে যাতে আপনার জামা কাপড় তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায় তাই এই ব্যবস্থা
ছোঁয়াঃ উফস!সরি…
সায়নঃ ঠিক আছে,এখন তাহলে ঘুমিয়ে পড়,অনেক রাত হয়ে গেছে
ছোঁয়াঃ আর আপনি?
সায়নঃ আমি ঘুমালে আর তোমাকে পাহারা দেবে কে?
ছোঁয়াঃ পাহারা!
সায়নঃ হুম,যদি হঠাৎ করে কোনকিছু এ্যাটাক করে বসে তখন?
ছোঁয়াঃ কিন্তু…
সায়নঃ কোন কিন্তু না,আর কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়…
(নিতান্ত অনিচ্ছা স্বত্ত্বেও ছোঁয়া শুয়ে পড়লো কিন্তু চোখ বন্ধ করার বদলে সায়নের দিকেই তাকিয়ে রইলো)
সায়নঃ চিন্তা কর না এমন দুই একটা রাত জাগলে আমার কিছুই হবে না
ছোঁয়াঃ হুম
সায়নঃ আর শোন…
ছোঁয়াঃ জ্বি?
সায়নঃ এটলিস্ট গায়ের ওড়নাটা খুলে রাখো,বেশিক্ষণ এভাবে ভেজা কাপড় পেঁচিয়ে থাকলে জ্বর এসে যাবে
ছোঁয়াঃ এই লোক বলে কি!উনি এখানে আর আমি ওড়না খুলে…ইম্পসিবল(মনে মনে)
সায়নঃ ট্রাস্ট মি,আমি খারাপ কোন উদ্দেশ্যে বলিনি।তোমার ভালোর জন্যেই…অবশ্য তুমি যদি আনকমফোর্টেবল ফিল কর তাহলে থাক…
ছোঁয়াঃ উনিতো ঠিকই বলেছেন,এভাবে থাকলেতো আমারই…আর তাছাড়া উনিতো আমার…ওড়নাটা খুলে পাশেই রেখে দিলাম তারপর উনার দিকে পেছন ফিরে শুয়ে পড়লাম…
সায়নঃ গুড নাইট
ছোঁয়াঃ গুড নাইট

এখন প্রায় মাঝরাত
ছোঁয়া ঘুমিয়ে পড়েছে বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেছে,সায়ন একটু দূরেই বসে আছে।দূর থেকেই ওর ঘুমন্ত মুখটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতেই একটু ঝিমুনির মত এসেছিল হঠাৎই একটা শব্দে ঘুমটা কেটে গেল।ছোঁয়ার দিকে চোখ পড়তেই চমকে উঠল সায়ন,ছোঁয়া একেবারে ছোট বাচ্চাদের মত জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছে!রীতিমতো শীতে থরথর করে কাঁপছে আর মাঝে মাঝে খুশখুশে কাশিতো আছেই।সায়ন একরকম ছুটে গিয়ে ওর পাশে বসে পড়লো,গায়ে হাত দিতেই চমকে উঠলো জ্বরে পুরো শরীর পুড়ে যাচ্ছে মেয়েটার আর কাঁপুনির মাত্রাটাও যেন একটু একটু করে বাড়ছে,তার উপর গায়ের জামা-কাপড় এখনও বেশ ভেজা!সায়ন আর এক মুহুর্তও দেরি করল না,ওর শুকনো জামা-কাপড়গুলো নিয়ে ওর দিকে ছুটে গেল।একবার ওর দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবলো তারপর কাঁপাকাঁপা হাতে ওর ভেজা কাপড়গুলো খুলে নিজের শুকনো কাপড়গুলো পরিয়ে দিল।ছোঁয়া জ্বরে প্রায় বেঁহুশ হয়ে আছে তাই কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না।

(কিছুক্ষণ পর)
ছোঁয়ার জ্বরটা কিছুতেই কমছে না,ভেজা কাপড় দিয়ে পউরো শরীর মুছে দেওয়ার পরেও কোন ইমপ্রুভমেন্ট হচ্ছে না,উল্টো কাঁপুনির মাত্রা যেন আরও বেড়ে যাচ্ছে!মনে হচ্ছে যেন হাইপোথার্মিয়া বা এই টাইপসের কিছু হচ্ছে,আর কোন উপায় না পেয়ে সায়ন এবার ওর পাশেই শুয়ে পড়লো।ওকে দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে একেবারে বুকের কাছে টেনে নিল তারপর আরও নীবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরলো,এমনভাবে জড়িয়ে রেখেছে যেন নিজের শরীরের সমস্ত উত্তাপ উজাড় করে দিয়ে ওর কষ্টগুলো দূর করে দিতে চাইছে।কোন এক অজানা ভয়ে তবুও একটু পর পর শিউড়ে উঠছে,এই ভয় অন্য কোনকিছুর নয়,ছোঁয়াকে হারিয়ে ফেলার ভয়।ওকে যে কোনভাবেই হারানো যাবে না,তাহলে যে নিজের অস্তিত্বও বিলীন হয়ে যাবে…
চলবে….